মোদি-হাওয়া কি বাংলাদেশেও ঝড় তুলবে?
| আপডেট: ০০:০৭, এপ্রিল ৩০, ২০১৪
জরিপ বলছে, ভারতের লোকসভা নির্বাচনে এবার বিজেপি জোট একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। অবশ্য বিশেষ পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটলে কংগ্রেসের পক্ষে কোয়ালিশন সরকার গঠনের সম্ভাবনার কথাও কেউ কেউ বলছেন। তবে বিজেপির দিকেই পাল্লা ভারী। বলা হয়, ভারতে এখন ‘মোদি-হাওয়া’ চলছে। এটা উদ্বেগের, কারণ বিজেপির গায়ে একটা কালো দাগ আছে। তারা, এককথায় একটি সাম্প্রদায়িক দল। ‘পুশব্যাকের’ কথা তারা বেশ জোরেশোরেই বলছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র। আর তাদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি নিজের রাজ্য গুজরাটে চরম সাম্প্রদায়িক তৎপরতায় মূল ইন্ধনদাতারূপে চিহ্নিত। এখন প্রশ্ন হলো, ভারতের মতো অসাম্প্রদায়িক একটি দেশে যদি মোদি-হাওয়া স্থান করে নেয়, তাহলে কি তার ধাক্কা বাংলাদেশেও পড়তে পারে? যদিও আমাদের দেশে নির্বাচন একটা হয়ে গেছে এবং যেহেতু সেই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে, তাই বলা যায়, সামনে আবার নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশেও কি মোদি-হাওয়ার মতো ভবিষ্যতে ‘জামায়াতি-হাওয়া’ উঠতে পারে?
এককথায় এর উত্তর হলো, না। ভারত ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি এক নয়। এ বিষয়ে একটু পরেই আসছি।
ভারতে মোদির প্রতি ঝোঁক ক্রমেই বাড়ছে। এটা বোঝা যায়, যখন দেখি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সৎভাই দলজিৎ সিং কোহলিও মোদির হাত ধরে দাঁড়িয়ে গেছেন। গত শুক্রবার অমৃতসরে তিনি নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেস ভেতর থেকে বড় রকমের ধাক্কা খেয়েছে। এর আগের দিন আসামে ভোট দেওয়ার পর মনমোহন সিং বলেছিলেন, ‘মোদি-হওয়া’ বলে কিছু নেই, এটা গণমাধ্যমের সৃষ্টি। ভাইয়ের দলত্যাগে তিনি ব্যথিত হয়েছেন। কিন্তু দলজিৎ বলছেন, কংগ্রেস তাঁর ভাই মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে যে ‘আচরণ’ করেছে, তাতে বিরক্ত হয়ে তিনি বিজেপিতে গেছেন।
তবে দলজিৎ মুখে যা-ই বলুন, আদর্শিক কারণেই তিনি বিজেপিতে গেছেন। তিনি বিজেপির নেতা অনুপ জেটলির দর্শন পছন্দ করেন। এই আদর্শগত বিশ্বাস তাঁকে টেনে নিয়ে গেছে মোদির পাশে। কংগ্রেসের অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ ছেড়ে তিনি একটি সাম্প্রদায়িক শিবিরে যোগ দিয়েছেন। গণতন্ত্রমনা যে কেউ এতে দুশ্চিন্তায় পড়বেন।
মোদির মুখ্যমন্ত্রিত্বকালে ২০০২ সালে গুজরাটে সাম্প্রদায়িক হানাহানিতে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। তাদের বেশির ভাগই মুসলিম। যদিও আদালতে তিনি সুনির্দিষ্টভাবে দোষী সাব্যস্ত হননি, কিন্তু মানুষের ধারণায় সব দায় তাঁর ওপরই বর্তায়। আরএসএসের সদস্য থাকার সময় থেকে মোদির খুব কাছের বন্ধু, গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী অমিত শাহ সপ্তাহ দুয়েক আগে উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাংশে মোজাফফরনগরে নির্বাচনী জনসভায় হিন্দুদের ‘প্রতিশোধ’ গ্রহণের জন্য ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সেখানে হিন্দু-মুসলিম রায়টে ৪০ জনের প্রাণহানির ঘটনার প্রতি প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি এভাবে উসকানি দেন। এ জন্য অবশ্য নির্বাচন কমিশন তাঁর প্রকাশ্য নির্বাচনী প্রচার পরিচালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। মোদির নির্বাচনী প্রচারের সাম্প্রদায়িক দিকটি প্রকটভাবেই সবার চোখে পড়ে।
অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে মোদি-ঝড় উঠল কেন? হয়তো ১০ বছর ধরে কংগ্রেস ক্ষমতায়, তাই তাদের ভুলত্রুটি, ব্যর্থতায় বিরক্ত হয়ে ভোটাররা বিরোধীদের দিকে ঝুঁকছেন। সেটা একটা ব্যাখ্যা হতে পারে। কিন্তু ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর ৬৭ বছরের মধ্যে অধিকাংশ সময়ই কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। তাহলে আজ কেন সেখানে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে?
বিজেপি আগেও পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু তখন নেতৃত্বে ছিলেন বাজপেয়ি, এল কে আদভানি প্রমুখ। তাঁরা বিজেপির মধ্যে অনেকটা উদারপন্থী ছিলেন। আর আজ নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সম্পূর্ণ ভিন্ন চেহারায় এসেছে। কংগ্রেস সরকারের কিছু বড় ব্যর্থতা মোদির উত্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। ভারতের ভোটাররা দক্ষ অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিংয়ের ওপর আস্থা স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু কী পেলেন তাঁরা? কংগ্রেস জোটের ১০ বছরে প্রবৃদ্ধি অর্ধেক কমে ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর অর্থ, চাকরির সুযোগ কমে গেছে। উপরন্তু রাজনীতিবিদ ও কর্মকর্তারা
এককথায় এর উত্তর হলো, না। ভারত ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি এক নয়। এ বিষয়ে একটু পরেই আসছি।
ভারতে মোদির প্রতি ঝোঁক ক্রমেই বাড়ছে। এটা বোঝা যায়, যখন দেখি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সৎভাই দলজিৎ সিং কোহলিও মোদির হাত ধরে দাঁড়িয়ে গেছেন। গত শুক্রবার অমৃতসরে তিনি নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেস ভেতর থেকে বড় রকমের ধাক্কা খেয়েছে। এর আগের দিন আসামে ভোট দেওয়ার পর মনমোহন সিং বলেছিলেন, ‘মোদি-হওয়া’ বলে কিছু নেই, এটা গণমাধ্যমের সৃষ্টি। ভাইয়ের দলত্যাগে তিনি ব্যথিত হয়েছেন। কিন্তু দলজিৎ বলছেন, কংগ্রেস তাঁর ভাই মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে যে ‘আচরণ’ করেছে, তাতে বিরক্ত হয়ে তিনি বিজেপিতে গেছেন।
তবে দলজিৎ মুখে যা-ই বলুন, আদর্শিক কারণেই তিনি বিজেপিতে গেছেন। তিনি বিজেপির নেতা অনুপ জেটলির দর্শন পছন্দ করেন। এই আদর্শগত বিশ্বাস তাঁকে টেনে নিয়ে গেছে মোদির পাশে। কংগ্রেসের অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ ছেড়ে তিনি একটি সাম্প্রদায়িক শিবিরে যোগ দিয়েছেন। গণতন্ত্রমনা যে কেউ এতে দুশ্চিন্তায় পড়বেন।
মোদির মুখ্যমন্ত্রিত্বকালে ২০০২ সালে গুজরাটে সাম্প্রদায়িক হানাহানিতে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। তাদের বেশির ভাগই মুসলিম। যদিও আদালতে তিনি সুনির্দিষ্টভাবে দোষী সাব্যস্ত হননি, কিন্তু মানুষের ধারণায় সব দায় তাঁর ওপরই বর্তায়। আরএসএসের সদস্য থাকার সময় থেকে মোদির খুব কাছের বন্ধু, গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী অমিত শাহ সপ্তাহ দুয়েক আগে উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাংশে মোজাফফরনগরে নির্বাচনী জনসভায় হিন্দুদের ‘প্রতিশোধ’ গ্রহণের জন্য ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সেখানে হিন্দু-মুসলিম রায়টে ৪০ জনের প্রাণহানির ঘটনার প্রতি প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি এভাবে উসকানি দেন। এ জন্য অবশ্য নির্বাচন কমিশন তাঁর প্রকাশ্য নির্বাচনী প্রচার পরিচালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। মোদির নির্বাচনী প্রচারের সাম্প্রদায়িক দিকটি প্রকটভাবেই সবার চোখে পড়ে।
অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে মোদি-ঝড় উঠল কেন? হয়তো ১০ বছর ধরে কংগ্রেস ক্ষমতায়, তাই তাদের ভুলত্রুটি, ব্যর্থতায় বিরক্ত হয়ে ভোটাররা বিরোধীদের দিকে ঝুঁকছেন। সেটা একটা ব্যাখ্যা হতে পারে। কিন্তু ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর ৬৭ বছরের মধ্যে অধিকাংশ সময়ই কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। তাহলে আজ কেন সেখানে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে?
বিজেপি আগেও পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু তখন নেতৃত্বে ছিলেন বাজপেয়ি, এল কে আদভানি প্রমুখ। তাঁরা বিজেপির মধ্যে অনেকটা উদারপন্থী ছিলেন। আর আজ নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সম্পূর্ণ ভিন্ন চেহারায় এসেছে। কংগ্রেস সরকারের কিছু বড় ব্যর্থতা মোদির উত্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। ভারতের ভোটাররা দক্ষ অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিংয়ের ওপর আস্থা স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু কী পেলেন তাঁরা? কংগ্রেস জোটের ১০ বছরে প্রবৃদ্ধি অর্ধেক কমে ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর অর্থ, চাকরির সুযোগ কমে গেছে। উপরন্তু রাজনীতিবিদ ও কর্মকর্তারা
No comments:
Post a Comment