Tuesday, April 29, 2014

আজ সোনিয়া ও মোদির আসনে ভোট, পাঞ্জাবে নেই মোদি হাওয়া

আজ সোনিয়া ও মোদির আসনে ভোট, পাঞ্জাবে নেই মোদি হাওয়া
লোকসভা নির্বাচন ’১৪
কাওসার রহমান ॥ ভোরের আলো ফুটলেই ভোটের ময়দানে নামছেন দুই যুযুধান প্রতিদ্বন্দ্বী। একজন বিজেপির বহুল আলোচিত প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি এবং অন্যজন কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধী। দীর্ঘ বাগযুদ্ধ আর কাদা ছোড়াছুড়ির পর সরাসরি ভোটের রণক্ষেত্রে নামছেন এ দু’জন ভিভিআইপি। প্রধান দুই দলের দুই কান্ডরির এ ভোটের লড়াই নিয়ে উত্তেজিত গোটা ভারত। সবারই নজর দুটি আসন বরোদা আর রায়বেরেলি।
‘আত্মবিশ্বাসী মোদি বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হলেও ঘরের মাঠে নিজের জন্য বেছে নিয়েছেন সবচেয়ে নিরাপদ আসনটিই। দাঁড়িয়েছেন গুজরাটের বরোদা থেকে। একই সঙ্গে অবশ্য বারানসি আসন থেকেও লড়ছেন তিনি। সোনিয়া গান্ধীও নির্বাচনী আসন বেছেছেন অনেক ভেবেচিন্তে। শেষ পর্যন্ত স্বামী ও শাশুড়ির আসন থেকেই তৃতীয়বারের মতো লোকসভা নির্বাচন করছেন। ২০০৪ সাল থেকে পর পর দু’বার তিনি রায়বেরেলি আসন থেকে লোকসভায় জিতেছেন। মোদি-হাওয়া নেহাতই কোনও ‘মিরাকল’ না ঘটালে রায়বেরেলিতে এবারই হ্যাটট্রিক করে ফেলবেন সোনিয়া গান্ধী।
তবে আজকের নির্বাচনে শুধু মোদি-সোনিয়ার ওপরেই নজর থাকছে না। কংগ্রেসকে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে আজ বিজেপির হয়ে ভোটের মাঠে থাকছেন লালকৃষ্ণ আদভানি এবং বিজেপি প্রধান রাজনাথ সিংও। ঘরের মাঠ গান্ধীনগরে জেদ করে প্রার্থী হয়েছেন বিজেপির এ সিনিয়র নেতা আদভানি। তিনি যে জিতবেনই সে ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত বিজেপি। ‘ডিফেন্স’ খেলার ধার ধারেননি রাজনাথ। গতবারের জেতা লোকসভা আসনে না দাঁড়িয়ে লখনৌ থেকে ভাগ্য পরীক্ষা করতে চলেছেন তিনি। মোদি হাওয়ার ভরসাতেই যে এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ তা, বলার অপেক্ষা রাখে না।
আজ বুধবার সপ্তম দফায় ভোট হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের সাতটি রাজ্য ও দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে। রাজ্যগুলো হলো পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট এবং জম্মু-কাশ্মীর। দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হলো দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন-দিউ। সব মিলিয়ে ৮৯টি নির্বাচনী আসনে আজ ভোট। মোদি, সোনিয়া, আদভানি, রাজনাথ ছাড়াও যেসব ওজনদার প্রার্থীরা আজ লড়াইয়ের ময়দানে নামছেন তাঁদের মধ্যে বিজেপি শিবিরে অন্যতম অরুণ জেটলি, মুরলী মোহন যোশী, নেত্রী উমা ভারতী, পরেশ রাওয়াল ও বিনোদ খান্না।
বিজেপির দুই তারকা প্রার্থী বিনোদ খান্না ও পরেশ রাওয়াল দাঁড়াচ্ছেন যথাক্রমে পাঞ্জাবের গুরদাসপুর ও আমেদাবাদ (পূর্ব) আসন থেকে। গুরদাসপুরে আগেও দাঁড়িয়েছেন বিনোদ। পরেশ রাওয়াল অবশ্য এই প্রথমবার ভোটের ময়দানে। অরুণ জেটলি প্রথমবার লোকসভায় দাঁড়িয়েছেন অমৃতসর আসন থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী অমরিন্দর সিংয়ের বিরুদ্ধে। রাজ পরিবার থেকে উঠে আসা পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দরও ওজনদার প্রার্থী। ভরসার জায়গাও বটে। পাঞ্জাবে অমরিন্দর কংগ্রেসের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘুঁটি হলেন অম্মিকা সোনি। আনন্দপুর সাহিব লোকসভা আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সোনি। আজকের ভোটে দেশের নজর আরও একজনের দিকেও থাকবে। তিনি হলেন মধুসূদন মিস্ত্রি। কংগ্রেসের বহুদিনের কর্মী ভাদোদরা থেকে দাঁড়িয়েছেন নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে।
এসব আসনের ওজনদার প্রার্থীর প্রতিপক্ষরা এতই দুর্বল যে, তারা এখন চরম অনিশ্চয়তার দোলাচলে রয়েছেন। অলৌকিক কিছু না ঘটলে এই হেভিওয়েট প্রার্থীরাই ভোটযুদ্ধে বিজয়ী হবেন। গত মঙ্গলবারই এ ৮৯ আসনের যাবতীয় প্রচারের কাজ শেষ হয়েছে। ফলে নতুন করে এখন আর কিছু করার নেই। আজ বুধবার ভোরের আশায় তাই প্রহর গুণছে সব দল।
নয়টি ধাপের মধ্যে আজ বুধবার সপ্তম ধাপে মোট ৮৯টি আসনের ভোট হচ্ছে। এর মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশে ১৭ আসন, বিহারে ৭ আসন, গুজরাটে ২৬ আসন, পাঞ্জাবে ১৩ আসন, উত্তরপ্রদেশে ১৪ আসন, পশ্চিমবাংলায় ৯ আসন এবং দাদরা ও নগর হাভেলি, দামান-দিউ ও জম্মু-কাশ্মিরে একটি করে আসনে নির্বাচন হচ্ছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ হচ্ছে উত্তর প্রদেশ। এ রাজ্যের ১৪টি আসনে সবচেয়ে বেশি ভিভিআইপিরা ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছেন। এ আসনগুলোতে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল কংগ্রেস ও বিজেপির প্রধানসহ ২৩৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধী (রায়বেরেলি), বিজেপি প্রধান রাজনাথ সিং (লখনৌ), কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জইশওয়াল ও বিজেপি নেতা মুরলী মোহন যোশী (কানপুর), কেন্দ্রীয় পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী প্রদীপ জৈন আদিত্য ও বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী (ঝাঁসী), সিডিউল কাস্ট কমিশনের চেয়ারম্যান ও কংগ্রেস নেতা পিএলপুনিয়া (বড়াবানকি), বিজেপি নেতা সাকসি মহারাজ (উনাও) এবং কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী জিতিন প্রসাদ।
এ ছাড়া গুজরাটের ২৬টি আসনের মধ্যে দুটি আসনে দিকে ভারতবাসীর দৃষ্টি থাকবে। কারণ দুই ভিভিআইপি এই দুই আসনে ভোটে লড়ছেন। এঁরা হলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি (ভদোদরা) ও দলটির প্রতিষ্ঠাতা নেতা এলকে আদভানি (গান্ধীনগর)।

রায়বেরেলিতে কি ভোটের
ব্যবধান বাড়বে?

গান্ধী-নেহরু পরিবার ও কংগ্রেসের দুর্গ বলে পরিচিত রায়বেরেলি। এখানে মায়ের হয়ে একটানা প্রচার চালিয়েছেন সোনিয়া কন্যা প্রিয়াঙ্কা। তাঁর প্রচারের মূল লক্ষ্য ছিল মায়ের জয়ের ব্যবধান আরও বাড়াতে হবে। গতবার ৩ লাখ ৭২ হাজার ভোটে জিতেছিলেন সোনিয়া গান্ধী। এবার যেন ব্যবধানের অঙ্কটা আরও বড় হয়। সোনিয়া গান্ধী শুধু কংগ্রেসের নেতা নন, তিনি স্থানীয় কংগ্রেস নেতাকর্মীদের মা। আর মায়ের হাতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাহুলের অভিষেক এবার দেখতে চায় রায়বেরেলি। স্থানীয় কংগ্রেস নেতারা জানান, রায়বেরেলিতে কোনও স্থানীয় লোক সোনিয়ার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চাননি। প্রায় সব দলেরই এক অবস্থা এ বিষয়ে।
শহর কংগ্রেসের সভাপতি শহিদুল হাসান বলেন, সোনিয়াজির লহর চলছে রায়বেরেলিতে। এখানে মোদি-লহর বলে কিছু নেই। রায়বেরেলিতে সোনিয়ার বিরুদ্ধে কারা লড়ছেন তা প্রায় দুরবিন দিয়ে খুঁজতে হয়। অন্য কোনও প্রার্থীর প্রচারও চোখে না পড়ার মতো।
সোনিয়ার বিরুদ্ধে লড়ছেন অজয় আগরওয়াল। বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী রাজি না হওয়ার পাশাপাশি বিজেপি স্থানীয় কোনও নেতানেত্রীকেও রাজি করাতে পারেনি। আগরওয়াল কানপুরের আইনজীবী। এ ছাড়া আছেন বহুজন সমাজ পার্টির প্রার্থী প্রবেশ সিং। ইনি হায়দরগড়ের বাসিন্দা। আপ একমাত্র স্থানীয় একজনকে দাঁড় করিয়েছে। তিনি হলেন অর্চনা শ্রীবাস্তব। তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছে সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে। প্রার্থীর নাম অঞ্জু সিং। ইনি কলকাতাতেই থাকেন। ব্যবসা করেন। বাড়ি মধ্যপ্রদেশের সাতনায়।
গত বিধানসভা ভোটে রায়বেরেলি লোকসভা আসনের পাঁচটি বিধানসভা আসনের একটিতেও কংগ্রেস জিতেনি। চারটি বিধানসভা আসনে জিতেছে সমাজবাদী পার্টি ও একটিতে নির্দল। রায়বেরেলি বা আমেথিতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থী দেয়নি সমাজবাদী পার্টি।
শহিদুল হাসান উল্লেখ করেন বিজেপি দু’বার জিতেছিল রায়বেরেলিতে। এ ছাড়া ১৯৭৭-এ রাজনারায়ণ ইন্দিরাকে হারিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে মোট তিনবার রায়বেরেলিতে কংগ্রেসের হার হয়েছে স্বাধীনতার পর। বাদ বাকি সময় কংগ্রেসই জিতেছে এবং জিতেছেন নেহরু-গান্ধী পরিবারের লোকেরা বা তাঁদের ঘনিষ্ঠজনরা। তিনি বলেন, সোনিয়া গান্ধী তিনবার জিতেছেন রায়বেরেলি থেকে। একবার উপনির্বাচনে। ২০০৪, ২০০৬ ও ২০০৯ সালে সোনিয়া জেতেন এবং প্রত্যেক বারই সোনিয়ার জয়ের ব্যবধান কিছু কিছু করে বেড়ে যায়। ২০১৪ তেও সেই ধারাবাহিকতার ব্যতিক্রম হবে না। বিপুল ভোটে রায়বেরেলি থেকে সোনিয়া গান্ধীর জেতার অন্যতম কারণ হলো এখানকার সংখ্যালঘু ভোট। রায়বেরেলিতে সংখ্যালঘু ভোটারদের সংখ্যা সাড়ে তিন লাখের মতো। শতাংশের হিসেবে যা ১৮-১৯ শতাংশ।
শহিদুল হাসানই উন্নয়নের দীর্ঘ তালিকা দিয়ে বলেন, ভারতের প্রথম মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে রায়বেরেলিতে। এটাও সোনিয়া গান্ধীর অবদান।
ইন্দিরা গান্ধী মেডাক থেকে যখন সাংসদ, তখনও তিনি রায়বেরেলির মানুষদের সঙ্গে পরমাত্মীয়ের মতো ব্যবহার করেছেন। সেই থেকেই গান্ধী-নেহরু পরিবারের সঙ্গে রায়বেরেলির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। সেই সম্পর্কই রায়বেরেলির প্রতিটি মানুষের সঙ্গে সোনিয়া গান্ধীর।

পশ্চিমবাংলায় তৃতীয়
দফায় ভোট

প্রথম ও দ্বিতীয় দফা শান্তিতে হওয়ার পর আজ রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোট। সবটাই দক্ষিণবঙ্গের আসনে। তৃণমূলের প্রভাবও রয়েছে এসব আসনে। পাশাপাশি বামফ্রন্টের নিজেদের দখলে থাকা আসন হাতছাড়া হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাই নজর প্রতি আসনেই। টানটান উত্তেজনায় ভোট হবে বীরভূম, বর্ধমান, হাওড়া ও হুগলি জেলার নয় আসনে। বীরভূমের দুই আসন হলো বীরভূম ও বোলপুর।
বর্ধমানের তিনটি আসনের মধ্যে আসানসোল বাদে ভোট হবে বর্ধমান-দুর্গাপুর ও বর্ধমান-পূর্বে। হুগলি জেলায় তিনটি আসন হলো আরামবাগ, শ্রীরামপুর ও হুগলি।
ভোটের আগ পর্যন্ত প্রচারে সবকটি আসনেই এগিয়ে ছিল তৃণমূল। কোথাও কোথাও প্রচারে তৃণমূলকে সমানে টক্কর দিয়েছে বিজেপি ও সিপিএম। কোনও আসনের কিছু বুথে অবশ্য চতুর্মুখী লড়াই হবে। এ ৯টি আসনের মধ্যে বিশেষ করে নজরে থাকছে তিন আসনে। বীরভূম, শ্রীরামপুর ও হাওড়া। এই তিন আসনেই তারকা প্রার্থীরা রয়েছেন। বীরভূমে তৃণমূলের শতাব্দী রায়ের পাশাপাশি বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও ফিল্ম জগতের লোক। শ্রীরামপুরে তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া বিজেপির হেভিওয়েট তারকা প্রার্থী বাপি লাহিড়ী। তাঁর সমর্থনে প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদি বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোড়ন ফেলেছেন। আর হাওড়া আসনে রয়েছেন বিজেপির অভিনেতা প্রার্থী জর্জ বেকার। তাঁর লড়াই তৃণমূলের ফুটবল তারকা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ও সিপিএমের শ্রীদীপ ভট্টাচার্যর সঙ্গে। তিনটি আসনেই সিপিএমের তুলনায় বিজেপি প্রার্থী চমক দিয়েছেন। বীরভূমে আকাশপথে কপ্টার নজরদারি চলবে। আগেই আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা টহল দিচ্ছে।

পাঞ্জাবে মোদি হাওয়া নেই

গোটা দেশের নজর কাড়ছে পাঞ্জাবের অমৃতসর। আজ এ আসনে অগ্নিপরীক্ষা দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর। কংগ্রেসের ৭২ বছরের প্রবীণ নেতা ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং ও তাঁর চেয়ে ১১ বছরের ছোট বিজেপির অরুণ জেটলি। ২০০৭ ও ২০১২ এর বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়া অমরিন্দর মোটেও ভোটে দাঁড়াতে চাননি। কিন্তু সোনিয়ার চাপাচাপিতেই রাজি হন। কে ভূমিপুত্র এ নিয়েই দুজনে একে অপরকে আক্রমণ করেছিলেন। জেটলি নিজেকে ভূমিপুত্র প্রমাণে অমৃতসরে বাড়ি কিনে ফেলেছেন।
অমৃতসরসহ পাঞ্জাবের ১৩টি আসনে শেষ দফার নির্বাচন হচ্ছে। ইতোমধ্যে সব প্রার্থী প্রচারের কাজ শেষ করেছেন। গত দুদিন এ রাজ্য ঘুরে দেখা গেছে, রাজ্যের কোথায় মোদি হাওয়া নেই। বরং কংগ্রেস এখানে প্রচারে এগিয়ে আছে। পাঞ্জাবে মূল ফাইট হচ্ছে কংগ্রেস ও বিজেপির শরীক শিরোমনি আকালী দলের মধ্যে। তবে কোথায় কোথাও আম আদমী পার্টি কংগ্রেসের ভোট কাটতে পারে। শেষ পর্যন্ত লুধিয়ানায় আম আদমী পার্টি চমক দেখালেও আশ্চর্যের কিছু থাকবে না।
কংগ্রেস এ রাজ্যে গত নির্বাচনে ১৩টির মধ্যে আটটি আসন জিতেছিল। সেই আসনগুলো ধরে রাখার জন্য এবার কংগ্রেস ভিন্ন কৌশল নিয়েছে। পাশাপাশি নতুন আসনও আনতে চাইছে। কৌশল হিসেসে কংগ্রেস অমৃতসর আসনে প্রবীণ রাজনীতিক অমরিন্দর সিংকে মনোনয়ন দিয়েছে। গত তিনটি নির্বাচনে এ আসনটি কংগ্রেসের বাইরে রয়েছে। তবে এখানে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির প্রভাবশালী নেতা অরুণ জেটলি। যাঁকে এখন ম্যাজিক সংখ্যা না পেলে মোদি পরবর্তী বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর সৎ ভাইকে দলে ভিড়িয়েও পাঞ্জাবে সুবিধা করতে পারেনি বিজেপি। এ কারণেই মিষ্টি কথায় চিড়ে ভেজানোর জন্য প্রচারের শেষ দিনে বহুল প্রচারিত দৈনিক হিন্দুস্থান টাইমসের প্রথম পৃষ্ঠার ওপর এক পাতাজুড়ে পদ্মফুল মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য বিজেপি বিজ্ঞাপন দিয়ে পাঞ্জাববাসীর কাছে ভোট চেয়েছে। ইংরেজী ভাষায় দেয়া বিজ্ঞাপনে নরেন্দ্র মোদি ও আকালী দলের প্রধান প্রকাশ সিং বাদলের বড় করে ছবি ছাপা হয়েছে। বিজ্ঞাপনে বিজেপি বিজয়ী হলে পাঞ্জাবের উন্নয়নে কি কি করবে তার প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘এটাই সময় পাঞ্জাবের বৈষম্য দূর, এটাই সময় পরিবর্তনের এবং মোদির।’ এতে পাঞ্জাবের উন্নয়নে ছয়টি প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে পাঞ্জাববাসীকে।
মোদি ভাটায় দিশেহারা হয়েই যে এ বিশাল বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়েছে তা বুঝতে বাকি নেই পাঞ্জাববাসীর। আর প্রচারের পেছনে বিজেপি কি পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে এটাও তার একটি নমুনা মাত্র।

ভোটারদের টাকা দেয়ার
অভিযোগ

ভোটারদের মধ্যে টাকা বিলির অভিযোগ উঠেছে হুগলি আসনের বিজেপি প্রার্থী চন্দন মিত্রের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে চুঁচুড়া স্টেশনে প্রচার শেষে তিনি টাকা বিলি করছিলেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানাজানি হতেই এদিন সকালে রীতিমতো উত্তেজনা তৈরি হয়। চন্দন মিত্রকে মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তপন দাশগুপ্ত জানান, এ বিষয়ে তাঁরা নির্বাচনে কমিশনে অভিযোগ জানাবেন। যদিও বিজেপি সূত্রে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। ভিত্তিহীন বলে এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত প্রার্থী।
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html

No comments:

Post a Comment