অস্তিত্ব সংকটে ভৈরব-কপোতাক্ষ
ইন্দ্রজিৎ রায়, যশোর ব্যুরো
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল, ২০১৪
দখল, নাব্যতা সংকট ও নদী শাসনের ফলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম নদ ভৈরব ও কপোতাক্ষ। পানির অভাবে মরা গাঙে পরিণত হয়েছে এই দুটি নদ। নদ দখল করে তৈরি করা হচ্ছে পুকুর ও ভবনসহ অবৈধ স্থাপনা। একই সঙ্গে অপরিকল্পিতভাবে নদের ওপর সংকুচিত ব্রিজ নির্মাণ করে নদী শাসন ও পলি অপসারণ না করায় মরে গেছে ঐতিহ্যবাহী এ দুটি নদ। এতে গ্রীষ্ম মৌসুমে খরায় চৌচির আর বর্ষায় জলাবদ্ধতা এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে দেয়। নদ দুটি সংস্কার করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে এ অঞ্চলের সচেতন মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করছে।
ভৈরব ও কপোতাক্ষ নদ নিয়ে গবেষণা করছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইবুর রহমান মোল্যা। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ভৈরবের উৎপত্তি স্থল থেকে যশোর সদর উপজেলার রাজারহাট পর্যন্ত মরে গেছে। এরপর থেকে আফরা ঘাট পর্যন্ত নদীর পানি প্রবাহ থাকলেও কোনো নৌযান চলাচল করতে পারে না।
অপরদিকে কপোতাক্ষ নদও হারিয়েছে তার নাব্যতা। পানি সংকটে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান এই দুটি নদ মরে যাওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল- নদের বুকে বাঁধ নির্মাণ, অপরিকল্পিতভাবে নদের তুলনায় স্বল্পদৈর্ঘ্যরে ব্রিজ নির্মাণ, পলি জমা, কচুরিপানার স্তূপ, ময়লা-আবর্জনা ফেলা ও দখল করে পুকুর কাটা। যশোর অংশে দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে বড় বড় ভবন, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে শিল্প শহর নওয়াপাড়ায় তীরবর্তী খাস জমি দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে গুদাম, ঘাট, আবাসিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনা। দখলকারীরা অবৈধ নামপত্তন ও রেকর্ড সংশোধন করে নদের জমি দখল করেছে বলে জানা গেছে।
তিনি আরও বলেন, ভৈরব ও কপোতাক্ষ নদের প্রস্থ কমপক্ষে ৩শ ফুট। কিন্তু বর্তমানে ১৫-২০ ফুটের বেশি কোথাও পাওয়া যায় না। এর অন্যতম কারণ হল- দখল করে ভবন নির্মাণ করা। অসংখ্য ভবন নির্মাণ করে দখল করে নেয়া হয়েছে ভৈরব। একই অবস্থা কপোতাক্ষ নদে। চৌগাছা ও ঝিকরগাছা এলাকায় নদ দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে মার্কেট। একই সঙ্গে নদ দুটি দখল করে বিভিন্ন স্থানে চাষাবাদ করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, কপোতাক্ষ নদ চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর, ঝিনাইদহের মহেশপুর, চৌগাছা, কেশবপুর, মনিরামপুর ও সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া, তালা, আশাশুনি, শ্যামনগর হয়ে খুলনার কয়রা উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর সঙ্গে মিশেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ২৬২ কোটি টাকা প্রকল্পের আওতায় কপোতাক্ষ নদ খনন কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে সাতক্ষীরার অংশ থেকে যশোরের সাগরদাঁড়ি পর্যন্ত খনন হবে। এরপর পর্যাক্রমে অর্থ বরাদ্দের ওপর ভিত্তি করে বাকি অংশ খনন কাজ হবে। তবে কবে নাগাদ পুরোপুরি নদ খনন হবে সেটি কেউ নিশ্চিত নয়। অপরদিকে ভৈরব নদ খনন প্রকল্পের সমীক্ষা চলছে। প্রকল্প পাস, অর্থ বরাদ্দসহ বহু প্রক্রিয়া এখনও বাকি রয়েছে। এটিরও বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
ভৈবর বাঁচাও আন্দোলন-সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অনিল বিশ্বাস যুগান্তরকে বলেন, ১৯৩৮ সালে ভৈরব-কপোতাক্ষ নদের উজানে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পানি প্রবাহ না থাকায় পলি জমে নদ ভরাট হয়েছে। উজানের মাথাভাঙ্গা ও পদ্মার নদীর সঙ্গে ভৈরব- কপোতাক্ষের সংযোগ স্থাপন করলে দীর্ঘদিনের সংকট নিরসন হবে।
- See more at: http://www.jugantor.com/bangla-face/2014/04/30/94142#sthash.5KR5dRYV.dpufভৈরব ও কপোতাক্ষ নদ নিয়ে গবেষণা করছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইবুর রহমান মোল্যা। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ভৈরবের উৎপত্তি স্থল থেকে যশোর সদর উপজেলার রাজারহাট পর্যন্ত মরে গেছে। এরপর থেকে আফরা ঘাট পর্যন্ত নদীর পানি প্রবাহ থাকলেও কোনো নৌযান চলাচল করতে পারে না।
অপরদিকে কপোতাক্ষ নদও হারিয়েছে তার নাব্যতা। পানি সংকটে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান এই দুটি নদ মরে যাওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল- নদের বুকে বাঁধ নির্মাণ, অপরিকল্পিতভাবে নদের তুলনায় স্বল্পদৈর্ঘ্যরে ব্রিজ নির্মাণ, পলি জমা, কচুরিপানার স্তূপ, ময়লা-আবর্জনা ফেলা ও দখল করে পুকুর কাটা। যশোর অংশে দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে বড় বড় ভবন, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে শিল্প শহর নওয়াপাড়ায় তীরবর্তী খাস জমি দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে গুদাম, ঘাট, আবাসিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনা। দখলকারীরা অবৈধ নামপত্তন ও রেকর্ড সংশোধন করে নদের জমি দখল করেছে বলে জানা গেছে।
তিনি আরও বলেন, ভৈরব ও কপোতাক্ষ নদের প্রস্থ কমপক্ষে ৩শ ফুট। কিন্তু বর্তমানে ১৫-২০ ফুটের বেশি কোথাও পাওয়া যায় না। এর অন্যতম কারণ হল- দখল করে ভবন নির্মাণ করা। অসংখ্য ভবন নির্মাণ করে দখল করে নেয়া হয়েছে ভৈরব। একই অবস্থা কপোতাক্ষ নদে। চৌগাছা ও ঝিকরগাছা এলাকায় নদ দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে মার্কেট। একই সঙ্গে নদ দুটি দখল করে বিভিন্ন স্থানে চাষাবাদ করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, কপোতাক্ষ নদ চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর, ঝিনাইদহের মহেশপুর, চৌগাছা, কেশবপুর, মনিরামপুর ও সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া, তালা, আশাশুনি, শ্যামনগর হয়ে খুলনার কয়রা উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর সঙ্গে মিশেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ২৬২ কোটি টাকা প্রকল্পের আওতায় কপোতাক্ষ নদ খনন কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে সাতক্ষীরার অংশ থেকে যশোরের সাগরদাঁড়ি পর্যন্ত খনন হবে। এরপর পর্যাক্রমে অর্থ বরাদ্দের ওপর ভিত্তি করে বাকি অংশ খনন কাজ হবে। তবে কবে নাগাদ পুরোপুরি নদ খনন হবে সেটি কেউ নিশ্চিত নয়। অপরদিকে ভৈরব নদ খনন প্রকল্পের সমীক্ষা চলছে। প্রকল্প পাস, অর্থ বরাদ্দসহ বহু প্রক্রিয়া এখনও বাকি রয়েছে। এটিরও বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
ভৈবর বাঁচাও আন্দোলন-সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অনিল বিশ্বাস যুগান্তরকে বলেন, ১৯৩৮ সালে ভৈরব-কপোতাক্ষ নদের উজানে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পানি প্রবাহ না থাকায় পলি জমে নদ ভরাট হয়েছে। উজানের মাথাভাঙ্গা ও পদ্মার নদীর সঙ্গে ভৈরব- কপোতাক্ষের সংযোগ স্থাপন করলে দীর্ঘদিনের সংকট নিরসন হবে।
No comments:
Post a Comment