ক্ষীণ হচ্ছে হিন্দমোটরের ঘুরে দাঁড়ানোর আশা
এই সময়: ডুবে যাওয়ার আগে সাঁতার না জানা ব্যক্তি যেমন খড়-কুটো যা হাতের কাছে পায় সেটাই আঁকড়ে ধরতে চায়, ঠিক তেমনি দশা হয়েছে সি কে বিড়লা গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত হিন্দুস্তান মোটরসের উত্তরপাড়া কারখানার কর্তৃপক্ষের৷ ক্রমশ রুগ্ন হয়ে পড়া কারখানা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়া ঠেকাতে এখন অ্যাম্বাসাডার গাড়ি তৈরির ঢালাই ও কামারশাল বিক্রি করে দিতে চাইছে কর্তৃপক্ষ৷ সেই সঙ্গে মূলধন জোগাড়ের জন্য নতুন বিনিয়োগকারী খোঁজাও শুরু করা হয়েছে বলে জানান হিন্দুস্তান মোটরসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর উত্তম বসু৷
টেলিফোনে এই সময়কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে উত্তমবাবু জানান, 'আমরা নতুন বিনিয়োগকারী খোঁজা শুরু করেছি এবং বেশ কিছু বিনিয়োগকারী লগ্নি করতে আগ্রহীও৷ কিন্ত্ত, পদ্ধতিগত কারণে পুরো বিষয়টিই পিছিয়ে যাচ্ছে৷' তবে, ইচ্ছুক বিনিয়োগকারীদের নাম জানাতে অস্বীকার করেন উত্তমবাবু৷
বস্ত্তত, গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, হিন্দুস্তান মোটরসের মোট দেনার পরিমাণ মোট সম্পত্তির চেয়ে ৩২.৯২ কোটি টাকা বেশি হয়ে গিয়েছে৷ মোট ক্ষতির পরিমাণ ১২৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে৷ এই অবস্থায় আইনত হিন্দুস্তান মোটরস কোনও নতুন বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে মূলধন জোগাড় করতে পারে না৷
কোনও সংস্থার মোট দেনা ও মোট সম্পত্তির ফারাককে বলে সংস্থার নেটওয়ার্থ৷ কোনও সংস্থার নেটওয়ার্থ সংস্থাটির শেয়ার মূলধনের ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে সেটিকে পুরোপুরি রুগ্ন সংস্থা বলা হয় এবং পুনরুজ্জীবনের জন্য সংস্থাটি বোর্ড ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল রিকন্সট্রাকশন বা বিআইএফআর-এর আওতায় চলে যায়৷ হিন্দুস্তান মোটরসের নেটওয়ার্থ শেয়ার মূলধনের ৩৫.৬ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে গত সেপ্টেম্বর মাসেই৷
উত্তরপাড়ায় অ্যাম্বাসাডার গাড়ির উত্পাদন জারি রাখতে হিন্দুস্তান মোটর তাদের লাভদায়ী চেন্নাই কারখানা ইতিমধ্যেই আরেক শাখা সংস্থা হিন্দুস্তান মোটরস ফিনান্স কর্পোরেশন লিমিটেডকে (এইচএমএফসিএল) বিক্রি করে দিয়েছে৷ চেন্নাই কারখানা থেকেই মিত্সুবিসি ল্যান্সার ও পাজেরোর মতো এসইউভিগুলি তৈরি করত বিড়লা সংস্থাটি৷
উত্তমবাবু এ দিন বলেন, 'উত্তরপাড়া কারখানা পুনরুজ্জীবনের জন্য চেন্নাই কারখানা বিক্রি ও মালিকানা হস্তান্তর করে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে৷ কিছুদিনের মধ্যেই ওই টাকা আমাদের হাতে চলে আসবে৷ তখন ওই টাকা খরচ করা হবে উত্তরপাড়া কারখানার দেনা মেটাতে৷ উত্তরপাড়া কারখানার বর্তমান দেনার পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি৷'
'এর পাশাপাশি উত্তরপাড়া কারখানার ফাউন্ড্রি ও ফোর্জিং ইউনিটটিও (ঢালাই ও কামারশালা) বিক্রি করা হবে,' উত্তমবাবু বলেন৷ 'এ ব্যাপারে ঋণদাতা ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির সম্মতি চাওয়া হয়েছে৷ তবে, যে সংস্থাই ফাউন্ড্রি ও ফোর্জিং শাখা কিনুক না কেন তাদের ওই শাখার দেনার দায়ও নিতে হবে৷ কাজেই ইউনিটটি বিক্রি করে খুব একটা বেশি দাম পাওয়া যাবে না,' তিনি স্বীকার করেন৷ তারপর বলেন, 'এ ছাড়া, বর্তমানে সংস্থার হাতে এমন কোনও সম্পত্তি নেই যা বিক্রি করে টাকা তোলা যাবে৷ তবে, ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাওয়ার কোনও চিন্তা ভাবনা আমাদের নেই৷'
কিন্ত্ত, ওই টাকায় কতদিন চলবে হিন্দুস্তান মোটরসের উত্তরপাড়া কারখানা?
উত্তমবাবু কথায়, না লাভ না ক্ষতির (ব্রেক ইভেন) অবস্থায় পৌঁছতে উত্তরপাড়া কারখানা থেকে প্রতি মাসে ১,২০০ থেকে ১,৫০০টি অ্যাম্বাসাডার গাড়ি বিক্রির দরকার৷ অথচ, বর্তমানে মাসে গড়পড়তা ১৫০টি অ্যাম্বাসাডারও বিক্রি হয় না৷ গত মার্চে কেবল ১০১টি গাড়ি বিক্রি করতে পেরেছে ১৯৪৮ সালে স্থাপিত উত্তরপাড়ার এই সংস্থাটি৷
এর উপর কারখানার ২,৬০০-র বেশি কর্মী সংস্থার মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান উত্তমবাবু৷ উত্পাদন খরচ কমাতে হিন্দুস্তান মোটরস কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটবে কী না প্রশ্ন করা হলে উত্তমবাবু বলেন, 'আমাদের সে রকম কোনও পরিকল্পনা নেই৷' তবে, তিনি জানান, প্রতি মাসে সংস্থাটির ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ছয় থেকে সাত কোটি টাকা৷
তবে, উত্তরপাড়া কারখানা পুনরুজ্জীবনের এই প্রয়াস প্রথম নয়৷ কারখানার পুনরুজ্জীবনের জন্য ২০০৬ সালে বামফ্রন্ট সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে ৩১৪ একর লীজ নেওয়া জমি বেঙ্গালুরুর শ্রীরাম প্রপার্টিজের কাছে বিক্রি করে ২৮০ কোটি টাকা তোলে হিন্দুস্তান মোটরস৷ যদিও সংস্থার পুনরুজ্জীবনের জন্য মাত্র ৮৫ কোটি টাকা প্রয়োজন ছিল বলে তখন রাজ্য সরকারকে জানিয়েছিল বিড়লা গোষ্ঠীর সংস্থাটি৷ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তমবাবু বলেন, 'এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না৷'
টেলিফোনে এই সময়কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে উত্তমবাবু জানান, 'আমরা নতুন বিনিয়োগকারী খোঁজা শুরু করেছি এবং বেশ কিছু বিনিয়োগকারী লগ্নি করতে আগ্রহীও৷ কিন্ত্ত, পদ্ধতিগত কারণে পুরো বিষয়টিই পিছিয়ে যাচ্ছে৷' তবে, ইচ্ছুক বিনিয়োগকারীদের নাম জানাতে অস্বীকার করেন উত্তমবাবু৷
বস্ত্তত, গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, হিন্দুস্তান মোটরসের মোট দেনার পরিমাণ মোট সম্পত্তির চেয়ে ৩২.৯২ কোটি টাকা বেশি হয়ে গিয়েছে৷ মোট ক্ষতির পরিমাণ ১২৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে৷ এই অবস্থায় আইনত হিন্দুস্তান মোটরস কোনও নতুন বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে মূলধন জোগাড় করতে পারে না৷
কোনও সংস্থার মোট দেনা ও মোট সম্পত্তির ফারাককে বলে সংস্থার নেটওয়ার্থ৷ কোনও সংস্থার নেটওয়ার্থ সংস্থাটির শেয়ার মূলধনের ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে সেটিকে পুরোপুরি রুগ্ন সংস্থা বলা হয় এবং পুনরুজ্জীবনের জন্য সংস্থাটি বোর্ড ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল রিকন্সট্রাকশন বা বিআইএফআর-এর আওতায় চলে যায়৷ হিন্দুস্তান মোটরসের নেটওয়ার্থ শেয়ার মূলধনের ৩৫.৬ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে গত সেপ্টেম্বর মাসেই৷
উত্তরপাড়ায় অ্যাম্বাসাডার গাড়ির উত্পাদন জারি রাখতে হিন্দুস্তান মোটর তাদের লাভদায়ী চেন্নাই কারখানা ইতিমধ্যেই আরেক শাখা সংস্থা হিন্দুস্তান মোটরস ফিনান্স কর্পোরেশন লিমিটেডকে (এইচএমএফসিএল) বিক্রি করে দিয়েছে৷ চেন্নাই কারখানা থেকেই মিত্সুবিসি ল্যান্সার ও পাজেরোর মতো এসইউভিগুলি তৈরি করত বিড়লা সংস্থাটি৷
উত্তমবাবু এ দিন বলেন, 'উত্তরপাড়া কারখানা পুনরুজ্জীবনের জন্য চেন্নাই কারখানা বিক্রি ও মালিকানা হস্তান্তর করে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে৷ কিছুদিনের মধ্যেই ওই টাকা আমাদের হাতে চলে আসবে৷ তখন ওই টাকা খরচ করা হবে উত্তরপাড়া কারখানার দেনা মেটাতে৷ উত্তরপাড়া কারখানার বর্তমান দেনার পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি৷'
'এর পাশাপাশি উত্তরপাড়া কারখানার ফাউন্ড্রি ও ফোর্জিং ইউনিটটিও (ঢালাই ও কামারশালা) বিক্রি করা হবে,' উত্তমবাবু বলেন৷ 'এ ব্যাপারে ঋণদাতা ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির সম্মতি চাওয়া হয়েছে৷ তবে, যে সংস্থাই ফাউন্ড্রি ও ফোর্জিং শাখা কিনুক না কেন তাদের ওই শাখার দেনার দায়ও নিতে হবে৷ কাজেই ইউনিটটি বিক্রি করে খুব একটা বেশি দাম পাওয়া যাবে না,' তিনি স্বীকার করেন৷ তারপর বলেন, 'এ ছাড়া, বর্তমানে সংস্থার হাতে এমন কোনও সম্পত্তি নেই যা বিক্রি করে টাকা তোলা যাবে৷ তবে, ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাওয়ার কোনও চিন্তা ভাবনা আমাদের নেই৷'
কিন্ত্ত, ওই টাকায় কতদিন চলবে হিন্দুস্তান মোটরসের উত্তরপাড়া কারখানা?
উত্তমবাবু কথায়, না লাভ না ক্ষতির (ব্রেক ইভেন) অবস্থায় পৌঁছতে উত্তরপাড়া কারখানা থেকে প্রতি মাসে ১,২০০ থেকে ১,৫০০টি অ্যাম্বাসাডার গাড়ি বিক্রির দরকার৷ অথচ, বর্তমানে মাসে গড়পড়তা ১৫০টি অ্যাম্বাসাডারও বিক্রি হয় না৷ গত মার্চে কেবল ১০১টি গাড়ি বিক্রি করতে পেরেছে ১৯৪৮ সালে স্থাপিত উত্তরপাড়ার এই সংস্থাটি৷
এর উপর কারখানার ২,৬০০-র বেশি কর্মী সংস্থার মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান উত্তমবাবু৷ উত্পাদন খরচ কমাতে হিন্দুস্তান মোটরস কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটবে কী না প্রশ্ন করা হলে উত্তমবাবু বলেন, 'আমাদের সে রকম কোনও পরিকল্পনা নেই৷' তবে, তিনি জানান, প্রতি মাসে সংস্থাটির ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ছয় থেকে সাত কোটি টাকা৷
তবে, উত্তরপাড়া কারখানা পুনরুজ্জীবনের এই প্রয়াস প্রথম নয়৷ কারখানার পুনরুজ্জীবনের জন্য ২০০৬ সালে বামফ্রন্ট সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে ৩১৪ একর লীজ নেওয়া জমি বেঙ্গালুরুর শ্রীরাম প্রপার্টিজের কাছে বিক্রি করে ২৮০ কোটি টাকা তোলে হিন্দুস্তান মোটরস৷ যদিও সংস্থার পুনরুজ্জীবনের জন্য মাত্র ৮৫ কোটি টাকা প্রয়োজন ছিল বলে তখন রাজ্য সরকারকে জানিয়েছিল বিড়লা গোষ্ঠীর সংস্থাটি৷ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তমবাবু বলেন, 'এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না৷'
No comments:
Post a Comment