হিন্দিবলয়ে পদ্মফুলের ঘুম কাড়ছেন মায়া-লালু
গৌতম হোড়
নয়াদিল্লি: ছ'পর্বের ভোট চুকে যাওয়ার পর বিজেপির অন্দরে গোবলয়ের দুই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তরপ্রদেশ ও বিহারকে নিয়ে দুশ্চিন্তার মেঘ৷ এই দুই রাজ্যই নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে৷ আবার এখানে সামান্যতম হোঁচট মানে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনাটা দূরে সরে যাওয়া৷
উত্তরপ্রদেশে ও বিহারে বিজেপি-র চিন্তার কারণ হলেন দলিত নেত্রী মায়াবতী ও অনগ্রসর নেতা লালুপ্রসাদ যাদব৷ উত্তরপ্রদেশে ভোটের মেরুকরণের ফলে মুসলিম ভোটও একটি দলের দিকে চলে যাচ্ছে৷ এর ফলে বেশ কিছু আসনে বিএসপি ও সমাজবাদী পার্টি এবং সামান্য কিছু আসনে কংগ্রেস লাভবান হচ্ছে৷ বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট হল, উত্তরপ্রদেশে প্রথম দফায় তাদের ভালো ফল হবে৷ কিন্ত্ত পরের দু'দফা নিয়ে কিছুটা চিন্তায় আছে বিজেপি৷ আগামী তিন দফায় ভোট কেমন হবে, তা নিয়ে আশা ও আশঙ্কায় দুলছেন নরেন্দ্র মোদীর দলের নেতারা৷
মায়াবতী এ বার খুব বেশি হইচই করেননি৷ সমাজবাদী পার্টিতে যে ধরনের গন্ডগোল, হইচই, গরমাগরম বিবৃতি দেওয়া চলছে, বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী তার ধারকাছ দিয়েও হাঁটেননি৷ তিনি বরং নীরবে কাজ করে গিয়েছেন৷ তাঁর দুই বিশ্বস্ত সঙ্গী, মুসলিম মুখ নাসিমুদ্দিন সিদ্দিকি এবং ব্রাহ্মণ নেতা সতীশচন্দ্র মিশ্রকে নিয়ে রাজ্য চষে বেড়িয়েছেন৷ তাঁর দলিত ভোটের সঙ্গে মুসলিম ভোটও যদি যুক্ত হয়, তা হলে কিন্ত্ত বহু কেন্দ্রে হিসাব উল্টে দিতে পারেন মায়াবতী৷ বিজেপি নেতৃত্বের চিন্তাটা সে কারণেই৷ উত্তরপ্রদেশের মেরুকরণের সুফল বিজেপি পাচ্ছে ঠিকই, কিন্ত্ত মায়াবতীও বঞ্চিত হচ্ছেন না৷ বরং বেশ কিছু কেন্দ্রে সমাজবাদী পার্টি ছেড়ে মুসলিমরা তাঁর দিকে হেলে পড়েছেন, এমন রিপোর্ট বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও এসেছে৷
নরেন্দ্র মোদীর কাছে আদর্শ পরিস্থিতি হত, যদি মুসলিম এবং অ-বিজেপি ভোট কংগ্রেস, বিএসপি ও সমাজবাদী পার্টির মধ্যে পুরো ভাগাভাগি হয়ে যেত৷ কিন্ত্ত দলের রিপোর্ট হল, উত্তরপ্রদেশের অনেক জায়গাতেই মুসলিমরা সেই প্রার্থীকেই পছন্দ করেছেন, যিনি বিজেপি-কে হারাতে পারবেন৷ আর সে কৌশলে এ বার লাভবান হতে পারেন মায়াবতী, মুলায়ম ও কংগ্রেস৷ কংগ্রেস ও তার সহযোগী অজিত সিংয়ের রাষ্ট্রীয় লোকদল গোটা দশেক কেন্দ্রে লড়াইয়ে আছে৷ তার মধ্যে গোটা সাতেক কেন্দ্রে হয়তো তাঁরা জিততে পারবেন৷ বাকি জায়গায় লড়াইটা হয়ে যাচ্ছে বিজেপি বনাম বিএসপি বা এসপি-র মধ্যে৷ এই অবস্থায় বিজেপি-র রক্ষণশীল হিসেব হল, উত্তরপ্রদেশে ৩৫ থেকে ৪০টি আসনে দল জিতবে৷ আর মোদী হাওয়ার পুরো সুফল পেলে সেই অনুকূল পরিস্থিতিতে বা বিরোধী ভোট প্রবল ভাবে ভাগাভাগি হলে সংখ্যাটা পঞ্চাশের উপরে চলে যাবে৷ কিন্ত্ত চিন্তাটা হল, মায়াবতী যত ভালো করবেন, মুলায়মও যদি যাদবের পাশাপাশি কিছু কেন্দ্রে পুরো মুসলিম ভোট পেয়ে যান, তা হলে বিজেপি-র আসন কমার সম্ভাবনা থাকছে৷ ফলে আশঙ্কার একটা কাঁটাও খচখচ করছে বিজেপি নেতৃত্বের মনে৷
বিহারে প্রথমে ৩০টি আসন পাওয়ার দাবি করছিলেন বিজেপি নেতারা৷ কিন্ত্ত সেখানেও লালুপ্রসাদ চিন্তায় ফেলেছেন বিজেপি নেতৃত্বকে৷ বেশ কিছু আসনে যাকে বলে 'কাঁটে কা টক্কর' হচ্ছে৷ যার মধ্যে পাটলিপুত্রে লালু-কন্যা মিসা ভারতীর সঙ্গে রামকৃপাল যাদবের লড়াই আছে৷ বিজেপি-র রিপোর্ট হল, নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল গোটা কয়েক আসনে জিতলে খুব ভালো ফল করলেন বলে ধরে নিতে হবে৷ ভোট যত কাছে এসেছে, ততই বিহারে একটা নতুন প্রবণতা দেখা দিয়েছে৷ মুসলিমরা পুরোপুরি লালু-কংগ্রেস জোটের দিকে ঢলে পড়েছেন৷ কারণ, কেন্দ্রীয় স্তরে মোদীকে ঠেকাতে পারলে কংগ্রেস বা তাদের সমর্থিত জোট সরকার গড়তে পারবে বলে তাঁদের আশা৷ প্রথম দিকে যাদবদের ভোট ভাগ হওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল৷ হিন্দুত্ব ও মোদীর প্রভাবে যদুবংশীরা লালুকে ছেড়ে বিজেপি-র দিকে কিছুটা ঢলেছিলেন৷ তবে সময় যত এগিয়েছে, ততই যাদবরা লালুর দিকে এসেছেন৷
একটা প্রচারও ভিতরে ভিতরে কাজ করেছে- লালুকে শক্তিশালী করতে না-পারলে তাঁকে এ বার জেলেই কাটাতে হবে৷ মুসলিম-যাদবের মিলে যাওয়া মানে প্রায় ২৩ শতাংশ ভোট চলে আসা৷ তাই ইদানীং লালুর মুখে কিছুটা হাসি ফুটেছে৷ চলনে-বলনে আত্মবিশ্বাসও দেখা যাচ্ছে৷ এর ফলে বিজেপি নেতারা যদি কিছুটা সিঁদুরে মেঘ দেখতে পান, তা হলে তাঁদের দোষ দিয়ে লাভ নেই৷ কারণ, তেমন হলে তাঁদের আসনসংখ্যাও যে ১৫ থেকে ২০-র মধ্যে সীমিত হয়ে যেতে পারে৷
সব মিলিয়ে ২২০ থেকে ২৫০-এর যে আপাত লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেখানে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে প্রবল অসুবিধা হয়ে যাবে৷ এই হিসেবের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ ও বিহার মিলিয়ে ৬৫ থেকে ৭০টি আসনও যে ধরা আছে৷ তাই এই দুই রাজ্যে আসন কমলে, খুব কাছে এসে থামতে হতে পারে৷ সেই চিন্তাটাই ভাবাচ্ছে বিজেপিকে৷ তবে বিজেপি নেতারা এ-ও বলছেন, যদি মোদী-ঝড় কাজ করে, তা হলে অবশ্য আর চিন্তার কিছু নেই৷
নয়াদিল্লি: ছ'পর্বের ভোট চুকে যাওয়ার পর বিজেপির অন্দরে গোবলয়ের দুই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তরপ্রদেশ ও বিহারকে নিয়ে দুশ্চিন্তার মেঘ৷ এই দুই রাজ্যই নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে৷ আবার এখানে সামান্যতম হোঁচট মানে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনাটা দূরে সরে যাওয়া৷
উত্তরপ্রদেশে ও বিহারে বিজেপি-র চিন্তার কারণ হলেন দলিত নেত্রী মায়াবতী ও অনগ্রসর নেতা লালুপ্রসাদ যাদব৷ উত্তরপ্রদেশে ভোটের মেরুকরণের ফলে মুসলিম ভোটও একটি দলের দিকে চলে যাচ্ছে৷ এর ফলে বেশ কিছু আসনে বিএসপি ও সমাজবাদী পার্টি এবং সামান্য কিছু আসনে কংগ্রেস লাভবান হচ্ছে৷ বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট হল, উত্তরপ্রদেশে প্রথম দফায় তাদের ভালো ফল হবে৷ কিন্ত্ত পরের দু'দফা নিয়ে কিছুটা চিন্তায় আছে বিজেপি৷ আগামী তিন দফায় ভোট কেমন হবে, তা নিয়ে আশা ও আশঙ্কায় দুলছেন নরেন্দ্র মোদীর দলের নেতারা৷
মায়াবতী এ বার খুব বেশি হইচই করেননি৷ সমাজবাদী পার্টিতে যে ধরনের গন্ডগোল, হইচই, গরমাগরম বিবৃতি দেওয়া চলছে, বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী তার ধারকাছ দিয়েও হাঁটেননি৷ তিনি বরং নীরবে কাজ করে গিয়েছেন৷ তাঁর দুই বিশ্বস্ত সঙ্গী, মুসলিম মুখ নাসিমুদ্দিন সিদ্দিকি এবং ব্রাহ্মণ নেতা সতীশচন্দ্র মিশ্রকে নিয়ে রাজ্য চষে বেড়িয়েছেন৷ তাঁর দলিত ভোটের সঙ্গে মুসলিম ভোটও যদি যুক্ত হয়, তা হলে কিন্ত্ত বহু কেন্দ্রে হিসাব উল্টে দিতে পারেন মায়াবতী৷ বিজেপি নেতৃত্বের চিন্তাটা সে কারণেই৷ উত্তরপ্রদেশের মেরুকরণের সুফল বিজেপি পাচ্ছে ঠিকই, কিন্ত্ত মায়াবতীও বঞ্চিত হচ্ছেন না৷ বরং বেশ কিছু কেন্দ্রে সমাজবাদী পার্টি ছেড়ে মুসলিমরা তাঁর দিকে হেলে পড়েছেন, এমন রিপোর্ট বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও এসেছে৷
নরেন্দ্র মোদীর কাছে আদর্শ পরিস্থিতি হত, যদি মুসলিম এবং অ-বিজেপি ভোট কংগ্রেস, বিএসপি ও সমাজবাদী পার্টির মধ্যে পুরো ভাগাভাগি হয়ে যেত৷ কিন্ত্ত দলের রিপোর্ট হল, উত্তরপ্রদেশের অনেক জায়গাতেই মুসলিমরা সেই প্রার্থীকেই পছন্দ করেছেন, যিনি বিজেপি-কে হারাতে পারবেন৷ আর সে কৌশলে এ বার লাভবান হতে পারেন মায়াবতী, মুলায়ম ও কংগ্রেস৷ কংগ্রেস ও তার সহযোগী অজিত সিংয়ের রাষ্ট্রীয় লোকদল গোটা দশেক কেন্দ্রে লড়াইয়ে আছে৷ তার মধ্যে গোটা সাতেক কেন্দ্রে হয়তো তাঁরা জিততে পারবেন৷ বাকি জায়গায় লড়াইটা হয়ে যাচ্ছে বিজেপি বনাম বিএসপি বা এসপি-র মধ্যে৷ এই অবস্থায় বিজেপি-র রক্ষণশীল হিসেব হল, উত্তরপ্রদেশে ৩৫ থেকে ৪০টি আসনে দল জিতবে৷ আর মোদী হাওয়ার পুরো সুফল পেলে সেই অনুকূল পরিস্থিতিতে বা বিরোধী ভোট প্রবল ভাবে ভাগাভাগি হলে সংখ্যাটা পঞ্চাশের উপরে চলে যাবে৷ কিন্ত্ত চিন্তাটা হল, মায়াবতী যত ভালো করবেন, মুলায়মও যদি যাদবের পাশাপাশি কিছু কেন্দ্রে পুরো মুসলিম ভোট পেয়ে যান, তা হলে বিজেপি-র আসন কমার সম্ভাবনা থাকছে৷ ফলে আশঙ্কার একটা কাঁটাও খচখচ করছে বিজেপি নেতৃত্বের মনে৷
বিহারে প্রথমে ৩০টি আসন পাওয়ার দাবি করছিলেন বিজেপি নেতারা৷ কিন্ত্ত সেখানেও লালুপ্রসাদ চিন্তায় ফেলেছেন বিজেপি নেতৃত্বকে৷ বেশ কিছু আসনে যাকে বলে 'কাঁটে কা টক্কর' হচ্ছে৷ যার মধ্যে পাটলিপুত্রে লালু-কন্যা মিসা ভারতীর সঙ্গে রামকৃপাল যাদবের লড়াই আছে৷ বিজেপি-র রিপোর্ট হল, নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল গোটা কয়েক আসনে জিতলে খুব ভালো ফল করলেন বলে ধরে নিতে হবে৷ ভোট যত কাছে এসেছে, ততই বিহারে একটা নতুন প্রবণতা দেখা দিয়েছে৷ মুসলিমরা পুরোপুরি লালু-কংগ্রেস জোটের দিকে ঢলে পড়েছেন৷ কারণ, কেন্দ্রীয় স্তরে মোদীকে ঠেকাতে পারলে কংগ্রেস বা তাদের সমর্থিত জোট সরকার গড়তে পারবে বলে তাঁদের আশা৷ প্রথম দিকে যাদবদের ভোট ভাগ হওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল৷ হিন্দুত্ব ও মোদীর প্রভাবে যদুবংশীরা লালুকে ছেড়ে বিজেপি-র দিকে কিছুটা ঢলেছিলেন৷ তবে সময় যত এগিয়েছে, ততই যাদবরা লালুর দিকে এসেছেন৷
একটা প্রচারও ভিতরে ভিতরে কাজ করেছে- লালুকে শক্তিশালী করতে না-পারলে তাঁকে এ বার জেলেই কাটাতে হবে৷ মুসলিম-যাদবের মিলে যাওয়া মানে প্রায় ২৩ শতাংশ ভোট চলে আসা৷ তাই ইদানীং লালুর মুখে কিছুটা হাসি ফুটেছে৷ চলনে-বলনে আত্মবিশ্বাসও দেখা যাচ্ছে৷ এর ফলে বিজেপি নেতারা যদি কিছুটা সিঁদুরে মেঘ দেখতে পান, তা হলে তাঁদের দোষ দিয়ে লাভ নেই৷ কারণ, তেমন হলে তাঁদের আসনসংখ্যাও যে ১৫ থেকে ২০-র মধ্যে সীমিত হয়ে যেতে পারে৷
সব মিলিয়ে ২২০ থেকে ২৫০-এর যে আপাত লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেখানে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে প্রবল অসুবিধা হয়ে যাবে৷ এই হিসেবের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ ও বিহার মিলিয়ে ৬৫ থেকে ৭০টি আসনও যে ধরা আছে৷ তাই এই দুই রাজ্যে আসন কমলে, খুব কাছে এসে থামতে হতে পারে৷ সেই চিন্তাটাই ভাবাচ্ছে বিজেপিকে৷ তবে বিজেপি নেতারা এ-ও বলছেন, যদি মোদী-ঝড় কাজ করে, তা হলে অবশ্য আর চিন্তার কিছু নেই৷
http://eisamay.indiatimes.com/-/BJP-worried-about-Maya-Lalu-factor-in-UP-and-Bihar/articleshow/34388130.cms
No comments:
Post a Comment