“১৯৪৭ সালের পরে যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁরা বিছানা-বেডিং বেঁধে রাখুন! ১৬ মে-র পরে তাঁদের বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে।”
মোদির এই হুংকার থেকে ক্রমশই বেরিয়ে আসছে আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, সারা ভারত ব্রাহ্মণ সভা, বজরং দল প্রভৃতি গৈরিক সন্ত্রাসবাদীদের প্রলয় মিশনের গোপন এজেন্ডা।
পলাশ বিশ্বাস
প্রিয়বন্ধু শরদিন্দু উদ্দীপন আমার তুলনায় অনেক ভালো,ঝরঝরে বাংলা লিখতে পারেন,আমি বরং বাংলা লেখায় অভ্যস্ত নই।শরদিন্দু একেবারে যথার্থ লিখেছেন,আসলে বাংলায় এসে ভোটের বাজারে তুবড়ি জ্বালানোর কিস্সা নয় বাংলাদেশি বিতাড়নের নমো সংকল্প।প্রবাসী বাঙালি ও উদ্বাস্তু বাঙালির সম্পত্তি,জায়গা জমি দখল করার হিন্দুত্ব করপোরেট এজেন্ডা হল এই।পারাদ্বীপ ও মহাকালপাড়া,ভিতরকণিকা অভয়ারণ্য সন্নিকট অন্চলসমুহে পুনর্বাসিত ভারত ভাগের পর পরই ভারতে আসা নোয়াখালির বাঙালিদের বিতাড়ন ঔ অন্ছলেক যাবতীযজমি করপোরেট স্বার্থে দখল করার প্রকল্প।ঠিক সেই মত সারা দন্ডকারণ্যের খণি ঐশ্বর্য্য অন্চল গুলিতে আদিবাসীদের উত্খাত করা হলেও বাঙালিকা জমি কামড়ে পড়ে আছেন,তাঁদের উত্খাত করতেই নাগরিকত্ব সংশোধণী আইন ও বায়োমেট্রিক ডিজিটাল ইউনিক আইডেন্টিটি অসংবৈধাণিক নজরদারি বন্দোবস্ত।আন্দামান থেকে উত্তরাখন্ড,উত্তরপ্রদেশ,বিহার,ঝারখন্ড,রাজস্থান,নয়াদিল্লী ,মুম্বাই,গুজরাত,মহারাষ্ট্র,অন্ধ্র,তামিলনাডু,কর্ণাটক,অসম,মণিপুর সর্বত্র হিন্দুত্ব ও বাঙালি বিদ্বেষকে হাতিয়ার করে বাঙালি উত্খাতের চক্রান্ত।
সবচেয়ে দর্ভাগ্যজনক হল যে আসম,বাংলা ঔ সারা দেশের বাঙালি ও অবাঙালি মানুষ সংঘ প্রচারকদের এই মুসলিম বিরোধী প্রচারে আরএসএস এর করপোরেট এজেন্ডা দেখতেই পাচ্ছে না যে বাংলাদেশী বলতে শুধু মুসলমান।ভারতভাগের পর ভারতে আসা মুসলিমদের বিতাড়নরের অসংবৈধাণিক মানবাদিকারবিরোধী বেআইনি এই রণহুন্কারকে বাঙালিও হিন্দুত্বের মুসলিম বিরোধী যুদ্ধ মেনে নিয়ে বাংলার মাটিতে পদ্ম ফোটাতে ব্যস্ত। সংঘ পরিবারের বাঙালি বিরোধী বর্ণবিদ্বেষী বাঙালি খেদাও এজেন্ডায় বাঙালির অস্তিত্ব এি উপ মহাদেশে বিপর্যস্ত সে কথা তাঁরা বুঝতেই চাইছেন না।
এমনকি পশ্চিমবঙ্গের হাঁড়ির হালের জন্য যারা বাঙালদের দায়ী মনে করেন আজও,তাঁরাও দুহাত তুলে নমোময় হিন্দু রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখছেন বাঙালি জাতি সত্তার সমুঙ সর্বনাশ নজরঅন্দাজ করে।
শরদিন্দু ঠেকই লিখেছে।
মোদি আসলে মনুবাদীদের প্রলয় মিশনের নরপিশাচ
“১৯৪৭ সালের পরে যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁরা বিছানা-বেডিং বেঁধে রাখুন! ১৬ মে-র পরে তাঁদের বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে।”
মোদির এই হুংকার থেকে ক্রমশই বেরিয়ে আসছে আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, সারা ভারত ব্রাহ্মণ সভা, বজরং দল প্রভৃতি গৈরিক সন্ত্রাসবাদীদের প্রলয় মিশনের গোপন এজেন্ডা। এবং এটাও পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার সেই প্রাচীনতম হিংস্রতার পথে মূলনিবাসীদের ধ্বংস করার কাজে কিছু দাস, গোলাম, চাটুকার, চরণামৃত ও উচ্ছিষ্ট ভোগীদের সন্ধান মনুবাদীরা খুব সহজেই পেয়ে যাচ্ছে। রামবিলাস, আতাউলে, উদিতরাজ এবং সর্বোপরি নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি এরকমই কিছু কুলংগার যারা ব্রাহ্মন্যবাদীদের উচ্ছিষ্ট ভক্ষণ করার জন্য ভ্রাতৃঘাতি প্রলয় মিশনে বামুনদের পক্ষ নিয়েছে। — withপ্রজন্ম শাহবাগ.
মহাকাল বিয়ন্ড দ্যা টাইম মনে হয় মোদী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। ..............নত কারো পক্ষ্যে এইরকম উন্মাদের বক্তব্য রাখা সম্ভব হয় কি করে //////////////
Jyotish Kumar Deb পলাশ বিশ্বাস নিশ্চয় আসামবাসী নন !
বাংলাদেশে ইসলাম আক্রান্ত আর ভারতে হিন্দু ধর্ম আক্রান্ত বললে মনে হয় যেন ভাবান্দোলন কোথাও গিয়ে একি মোহনাতে মিশে যায়। যাই হোক , মনে হচ্ছে বাবা রামদেব এবারে জেলেই যাবেন এবং আমরা চাইব তিনি জেলেই যানঃhttp://timesofindia.indiatimes.com/videos/news/SC/ST-Act-slapped-yoga-guru-Ramdev-faces-arrest/videoshow/34365263.cms
Biplob Rahman shared Arup Rahee's post.
Wednesday, April 30 at 5:00pm in UTC+06
'হানিমুনে'র জেরে গ্রেপ্তার হতে পারেন রামদেব
|কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাহুল গান্ধী সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করায় গ্রেপ্তার হতে পারেন এই যোগগুরু। তিনি বলেছিলেন, 'দলিত গ্রামগুলিতে রাহুল পিকনিক ও মধুচন্দ্রিমা করতে যান'।
এবার ঘোড়া মুখে শুনুনঃ
PLEASING RSS
RSS Cheers Modi’s Anti B’deshi Rant
Modi separates Bangladeshi ‘refugees’ (Hindus) & ‘infiltrators’ (Muslims)
BHAVNA VIJ-AURORA NEW DELHI
When Narendra Modi asked ‘Bangladeshi immigrants’ to be ready to leave India after May 16, at a rally in West Bengal’s Serampore on Sunday, he was trying to please RSS apart from polarising voters on religious lines.
Modi, who has been changing his tone and tenor to suit the political landscape, donned his Hindutva poster-boy avatar in West Bengal. He tore into Trinamool Congress chief Mamata Banerjee, accusing her of vote bank politics and “rolling out the red carpet for the Bangladeshis.”
Though he refrained from specifying whether the threat was only for Bangladeshi Muslims, Modi had made the distinction at an earlier rally in Assam. Addressing a rally in Silchar in February, he had announced that Hindu migrants from Bangladesh must be accommodated in the country and promised to do away with their detention camps.
This was in keeping with RSS view that has always made the distinction between Bangladeshi refugees (Hindus) and Bangladeshi infiltrators (Muslims). A senior RSS functionary said that Muslim immigrants have over 30 countries in the world where they can go but the Hindus can only come to India. He said that unabated illegal immigration from Bangladesh had changed the demographic and political profile of neighbouring Indian states of West Bengal, Assam and Tripura. Assam has 34% Muslim population as per the 2011 census, up from 23% in 1971.
The RSS has talked about this issue during several internal meetings, and even passed resolutions on it. In fact, one of the resolutions passed after the RSS national executive council meeting in November 2012 stated that the “unabated influx” of Bangladeshi infiltrators posed a serious threat to national integration. Condemning the July 2012 ethnic violence in Assam, the resolution alleged that migrant Bangaldeshi Muslims had perpetrated it.
Claiming that Bangladeshi infiltrators had “spread all over the country”, the RSS demanded that the Centre and state governments take steps to check the border, detect and deport them.
The RSS, in fact, had been asking states run by BJP governments to take urgent steps to identify and deport them. Of all the BJP-run states, maximum number of Bangladeshis are believed to be settled in Chhattisgarh. “Chief minister Raman Singh has been asked several times what he is doing about it,” said the RSS leader. A spokesman for the Chhattisgarh government confirmed that Bangladeshi infiltrators settled in the state were a serious issue. “The Muslim population in the state has gone up from two to three per cent in the past decade, and it is mostly owing to illegal immigrants,” the spokesman said.
RSS spokesperson Manmohan Vaidya said Modi raising the issue of Bangladeshi immigrants was a positive thing. “Is there any country in the world that will allow illegal immigrants to stay? It is the duty of any country, first of all, to prevent their entry but if they do come in, then the government has to find them and send them back,” Vaidya told ET.
read the article and share your views on economictimes.com
বাংলা ভাষায় কথা বললেই 'বাক্স-প্যাঁটরা সমেত ছুড়ে ফেলে দেবে'?১৯৪৭ সালের পরে যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁরা বিছানা-বেডিং বেঁধে রাখুন! ১৬ মে-র পরে তাঁদের বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে।” আসুন সংকল্প করি ,এই পৃথীবীতে বাংলা ভাষায় যারা কথা বলেন,তারা পৃথীবীর কোথাও এই বর্ণবিদ্বেষী নররক্তপিপাষুর সমর্থনে একটি ভোটও দেব না। ভোট 12 মেতে শেষ হচ্ছে,কিন্তু সারা ভারতে বাঙালির অস্থ্ব বিপর্যয়ে বাটের রাজনীতির উর্ধে বাঙালি জাতিসত্তার সব সীমান্ত ভেঙে ফেলার এই সংক্রমণকালে বাঙালি একজোট না হলে সারা ভারতবর্ষ কিন্তু পর্ব বঙ্গ হয়ে যাবে।
http://shudhubangla.blogspot.in/2014/04/12.html
বাংলাদেশী জিগির তুলে ভারত ভাগের বলি মানুষদেরই নাগরিকত্ব থেকে বন্চিত করে সারা দেশ ব্যাপী অভিযান চলছে কংগ্রেস বিজেপি যোগসাজসে।
বাংলাভাগের পর হিন্দূ রাষ্ট্রের নয়া জিগির আবার ভারত ভাগের বলি বাঙালি উদ্বাস্তুদের জন্য অশনিসংকেত বাংলার বুকে দাঁড়িযে সঙ্ঘ পরিববারের কুলশিরোমণি বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ ইস্যুক সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আবার হিন্দূ মুসলিম বিভাজনে বাংলা জয়ের ঘোষণা করে গেলেন।
আসলে নজরুল ইসলাম ও রেজ্জাক মোল্লার নেতৃত্বে যে দলিত মুসলিম সংগঠন আগামি বিধানসভা নির্বাচনে ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক আধিপাত্যের অবসাণে অন্ত্যজদের ক্ষমতায়ণের যুদ্ধঘোষণা করেছে,তাঁরই প্রতিক্রিয়া ও ক্ষমতাগোষ্ঠির রণকৌশল হল গৌরিক পতাকার এই আক্রামক আস্ফালন,হিন্দু মুসলিম বিভাজন ও কখনো ভারত ভাগের আগের মত দলিত মুসলিম একতায় ক্ষমতাবেদখল হতে না দেওয়ার জোর প্রস্তুতি।
Narendra Modi threatens to deport Bangaldeshis if BJP comes to power
Sushanta Kar
8 hrs
অসমে এসে নমো বলেছিলেন উদ্বাস্তু হিন্দু বাঙালিদের গোটা দেশে বসতি করে দেবেন। তো কেমন আছেন তেলেঙ্গানার দলিত বাঙালি প্রতিবেদনে দেখুন, সেই সঙ্গে নমো বিজ্ঞাপন এবং বাস্তবতা। দু'টোই এখানে আছেঃhttp://www.dainikjugasankha.in/index.php?city=2&edition=29042014#
Like · · Share
তিন বছরে ভারত থেকে ২৩ হাজার বাংলাদেশি শরণার্থী বিতাড়িত
অনলাইন ডেস্ক | তারিখ: ১৭-০৮-২০১২
২০০৯ থেকে ২০১১ সাল—এই তিন বছরে ভারত থেকে ২৩ হাজার ৬০০ বাংলাদেশি শরণার্থীকে বিতাড়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রীনিত কাউর। প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, আজ শুক্রবার ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানান তিনি।
প্রীনিত কাউরের তথ্যমতে, ভারতে বাংলাদেশি শরণার্থীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ৪০০। এ ছাড়া ২০০৯ সালে ১০ হাজার ৬০২, ২০১০ সালে ৬ হাজার ২৯০ ও ২০১১ সালে ৬ হাজার ৭৬১ জন বাংলাদেশি শরণার্থীকে ভারত থেকে বিতাড়িত করেছে ভারত।
প্রীনিত কাউর আরও জানিয়েছেন, তাঁদের তালিকায় ভারতে মোট ৪০টি দেশের ৬৭ হাজার ৯৪৫ জন শরণার্থী রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের পাশাপাশি আফগানিস্তানের ১৩ হাজার ৭৪৪, পাকিস্তানের ৮ হাজার ৩৭, যুক্তরাষ্ট্রের দুই হাজার ১৬৮, ইরাকের দুই হাজার ৩৮ এবং যুক্তরাজ্যের এক হাজার ৯৪ জন দেশটিতে অবস্থান করছে।
বাংলাদেশি শরণার্থীদের ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা আধার নম্বর দেওয়া হবে কি না, এ প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রীনিত কাউর।
কাউর বলেন, আধার ভারতে বসবাসরত প্রত্যেক মানুষের একটি স্বতন্ত্র শনাক্তকারী নম্বর, আধার নাগরিকত্ব সনদ নয়।
'দেশে কালো দিন টেনে আনা হচ্ছে। কাউকে কাউকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ভাবা হচ্ছে। যিনি দেশের ইতিহাস জানেন না, ভূগোল জানেন না! তিনি বলছেন, বাংলাদেশীদের বাক্সপেটরা নিয়ে ফিরে যেতে হবে। এমন অধিকার ওকে কে দিয়েছে?' বললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশীদের বিতাড়নের যে হুমকি দিয়েছেন তার প্লাটা জবাব দিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে ভিন্ন ভাষাভাষী এবং ধর্মীয় সংগঠনের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে সংঘর্ষ বাঁধাতে চাইছেন মোদী। রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, বাংলায় জাতপাতের রাজনীতি আনার চেষ্টা করবেন না! রাজনীতি করছেন করুন, কিন্তু এই ধরনের কথাবার্তা কেন?'
পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়ে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশীদের বিতাড়নের যে হুমকি দিয়েছেন তার প্লাটা জবাব দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সোমবার সন্ধ্যায় সচিবালয় নবান্নে সাংবাদিকদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে কালো দিন টেনে আনা হচ্ছে। কাউকে কাউকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ভাবা হচ্ছে। যিনি দেশের ইতিহাস জানেন না, ভূগোল জানেন না! তিনি বলছেন, বাংলাদেশীদের বাক্সপেটরা নিয়ে ফিরে যেতে হবে। এমন অধিকার ওকে কে দিয়েছে? প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ঝগড়া করা সমীচীন কিনা সেই প্রশ্ন তুলে মমতা বলেছেন, ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি, নেহরু-লিয়াকত চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সাল পর্যন্ত যারা এদেশে এসেছেন, তারা সবাই ভারতীয় নাগরিক। তারপরও কেউ বিপদে পড়ে এলে তাদের ঠেলে ফিরিয়ে দেয়া যাবে না। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটা নিয়ম আছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, কোচবিহারেও অনেক বাংলাদেশী আছেন। তাতে কি হয়েছে! আসামের গোলমালের পরে অনেকে এ রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছে। এটাই মানবিকতার ধর্ম। গত রোববারই কলকাতার পার্শ¦বর্তী শ্রীরামপুরে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে এসে মোদী বলেন, মমতাজি ভোটব্যাংকের দিকে তাকিয়ে এই রাজ্যে রাজনীতি শুরু করেছেন। বিহার, ওড়িশা থেকে এই রাজ্যে গরিব মানুষ কাজে এলে ওঁর রাগ হয়। তাদের পর মনে হয়। হেনস্থা হন তারা। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে কেউ এলে উনি তাদের ‘আদর’ করে এই রাজ্যে রেখে দেন। ১৯৪৭ সালের পরে যারা ভারতে এসেছেন, তারা বিছানা-বেডিং বেঁধে রাখুন! ১৬ই মে’র পরে তাদের বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে। মোদীর সমালোচনা করতে গিয়ে তাকে ‘হরিদাস’ সম্বোধন করে মমতা বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ভিন্ন ভাষাভাষী এবং ধর্মীয় সংগঠনের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে সংঘর্ষ বাঁধাতে চাইছেন মোদী। রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, বাংলায় জাতপাতের রাজনীতি আনার চেষ্টা করবেন না! রাজনীতি করছেন করুন, কিন্তু এই ধরনের কথাবার্তা কেন? কোন ইতিহাস জানে না! তবে মোদীর বক্তব্যে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থী আর অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ফারাক আছে। আমাদের এই অবস্থান বহু দিনের। শরণার্থীদের জন্য কিছুই বলেননি মোদী। তিনি বলেছেন, অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে। সম্প্রতি আসামে গিয়ে মোদী এ ব্যাপারে আরও স্পষ্ট করে তার মত জানিয়েছিলেন বলেও রাহুলবাবু উল্লেখ করেছেন। বিজেপি’র অভিযোগ, মোদীর কথাকে হাতিয়ার করে পূর্ববঙ্গের মানুষজনের ভাবাবেগ উস্কে দেয়ার চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু মোদী আদৌ ওপার বাংলা থেকে সব মানুষকে এক করে কিছু বলেননি বলে তাদের দাবি।
"আরএসএস একটা বিষাক্ত সংগঠন"
সর্দার পটেলের এই বক্তব্যটাই তুলে ধরলেন রাহুল গাঁধী। সর্দার পটেল সঙ্ঘ পরিবার নিয়ে কি বলেছিলেন সেটাই দাবি করলেন রাহুল।
ভিডিও: এবিপি আনন্দ , কলকাতা, ২০ মার্চ, ২০১৪
বেণীপ্রসাদ বর্মা
ভোটের আগে `হেট স্পিচ`-এর তালিকায় নয়া সংযোজন। এ বার বক্তা হলেন কংগ্রেস নেতা তথা কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রী বেণীপ্রসাদ বর্মা। ৭১ বছরের এই কংগ্রেস শীর্ষস্থানীয় বর্ষীয়ান নেতা বললেন, নরেন্দ্র মোদী আসলে আরএসএস-এর পোষা গুন্ডা। সঙ্গে বেণীপ্রসাদ বলছেন, বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিং হলেন আসলে নরেন্দ্র মোদীর ক্রীতদাস।
এরপর মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর চড়িয়ে এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, আরএসএস আর বিজেপির জন্যই মহাত্মা গান্ধীকে খুন হতে হয়েছে।
জসবন্ত সিংয়ের বহিষ্কার প্রসঙ্গে বেণীপ্রসাদ বলছেন, আসলে বিজেপি এখন সম্পূর্ণভাবে মোদীর কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। তাই অভিজ্ঞ, বর্ষীয়ান নেতাদের এভাবে অপমান করা হচ্ছে। সঙ্গে বলেন, কংগ্রেস কখনো তাদের বর্ষীয়ান নেতাদের এভাবে অপমান করে না।
বিজেপিকে ফ্যাসিস্ট শক্তি বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। বিজেপিকে দেশ সহ্য করবে না বলেও জানান উত্তরপ্রদেশের এই সাংসদ।
নির্বাচনী বিধিভঙ্গের দায়ে বেণীপ্রসাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সূত্র: জিনিউজ।
- See more at: http://www.timenewsbd.com/news/detail/8495#sthash.hoMVJzaf.dpuf
ভারতের আরএসএস আল-কায়েদার চেয়ে হাজারগুণে ভয়ঙ্কর-----উইকিলিকস
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:৫৪ |
শেয়ারঃ
221
ভারতীয় সমাজবাদী দলের সংসদ সদস্য আবু অসীম আজামীর বলেছেন, ভারতের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় উগ্রবাগী হিন্দু সংগঠন রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘ (আরএসএস) আল-কায়েদার চেয়ে হাজারগুণে ভয়ঙ্কর।
বিশ্বজুড়ে তোলপাড় করা উইকিলিকস-এর ফাঁস করে দেয়া তথ্যের সূত্র ধরে আজামী রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘ আরএসএসকে আল-কায়েদার চেয়ে হাজার গুণ বেশি বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করেন। আর এতেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে আর এসএসএর। আজামীর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), শিবসেনা (এসএস) এবং মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)'র সংসদ সদস্যরা। উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, তিনি অধিবেশন ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন। উত্তেজিত আজমী বলেন, বিধানসভার নিয়ম-কানুন লঙ্ঘন করে আমাকে এই ইস্যুতে বক্তব্য দিতে বাঁধা দেয়া হচ্ছে।
বিধানসভায় আজামী বলেন, আরএসএস'এর মুখোশ খুলে দিয়েছে উইকিলিকস। ভয়ঙ্কর এই সংগঠনটি কেন আল-কায়েদার চেয়ে হাজার গুণ বেশি বিপজ্জনক তা জনসম্মুখে প্রমাণ করে দিয়েছে উইকিলিকস।
আজামীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করে এনজিপির সংসদ সদস্য দেবেন্দ্র পদনাভিস প্রচন্ড উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আজামী অপ্রাসঙ্গিক এবং অবান্তর বিষয় সামনে এনে বিধানসভাকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। বিজেপির অন্যান্য সংসদ সদস্যরা এ সময় আজামীর বিরুদ্ধে দেয়া দেবেন্দ্রর বক্তব্যকে সমর্থন করেন।
বক্তৃতাকালে বিরোধীদের পক্ষ থেকে লাগাতার বাধা আসায় হতাশা প্রকাশ করে আজামী তার বক্তব্য দিতে সুযোগ করে দেয়ার জন্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার বসন্ত পুরককে অনুরোধ করেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার বলেন, তিনি যে বিষয়টি উপস্থাপন করছেন সেটা অপ্রাসঙ্গিক। তবে বিষয়টির সাথে জনস্বার্থ জড়িত রয়েছে বিধায় তিনি আলোচনার অনুমতি দেন। কিন্তু এরপরও শিবসেনা এবং বিজেপির সংসদ সদস্যরা প্রচন্ড হৈ চৈ করতে থাকে এবং আজামীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। বক্তব্য দিতে না পেরে গেরুয়া বসনধারী সংসদ সদস্যদের ঘৃণ্য আচরণের প্রতিবাদে ‘ওয়াক আউট' করেন আজামী। এর আগে কংগ্রেস দলীয় সংসদ সদস্য বাবা সিদ্দিকীর এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সংসদ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
সিদ্দিকী অভিযোগ করেন শিবসেনার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদ্ধব থ্যাকারে মুম্বাইভিত্তিক দু'টি বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে অবৈধভাবে অর্থ গ্রহণ করেছেন। টাটা গ্রুপের মুখপাত্র শাহলানী এবং গণসংযোগ প্রধান নিরা রাধিয়ার রেকর্ড করা ফোনালাপ থেকে এটা জানা গেছে। সিদ্দিকী অভিযোগ করেন উদ্ভব রিলায়েন্স এবং টাটা গ্রুপ থেকে অর্থ গ্রহণ করেছেন। তবে তিনি তার এ বক্তব্য ইংরেজিতে দেয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তা বুঝতে ব্যর্থ হন সেনার সংসদ সদস্যরা। সেজন্য তাৎক্ষণিকভাবে এর কোন প্রতিবাদ হয়নি। তবে বিজেপির সংসদ সদস্য পদনভিস সিদ্দিকীর বক্তব্যের জবাব দিয়ে বলেন, এর সাথে উদ্ধভের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
তিনি বলেন, সিদ্দিকী উদ্ধভের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই অভিযোগ করছেন।
বিজেপির কৌশল ও সংখ্যালঘু মুসলিম ভোট
আবদুল গাফফার চৌধুরী
বিলাতে একসময় এশিয়ান ভোটব্যাংকটি লেবার পার্টির করায়ত্ত ছিল। অর্থাৎ এশিয়ানদের (সঙ্গে আফ্রিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশেরও) ভোট টোরিরা পাবে না, লেবার পার্টি পাবে- এটা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। লেবার পার্টি বর্ণবৈষম্যের বিরোধী, ইমিগ্রেশন আইন শিথিল করার পক্ষপাতী, ওয়েলফেয়ার স্টেটের কল্যাণমূলক ধারাগুলো তারা অব্যাহত রাখতে চায় ইত্যাদি কারণে লেবার পার্টির একটা নিশ্চিত দখল ছিল আফ্রো-এশিয়ান ভোটের ওপর।
বাঙালি অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনে বাঙালি ও সোমালিয়ান ভোটের ওপর নির্ভর করে প্রয়াত পিটার শোর (পরে লেবার দলীয় লর্ড হয়েছেন) ৩০ বছর একটানা পূর্ব লন্ডনের একটি নির্বাচনকেন্দ্র থেকে লেবার পার্টির এমপি ছিলেন এবং লেবার গভর্নমেন্টের মন্ত্রীও ছিলেন। এশিয়ান ভোটব্যাংক নিয়ে ব্রিটিশ লেবার পার্টির সেই রমরমা যুগ আর নেই। যদিও আফ্রো-এশিয়ান ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনো লেবার পার্টির সঙ্গে রয়েছে; কিন্তু এই ভোটে এখন ভাগ বসিয়েছে টোরি ও লিবারেল দলও।
লেবার পার্টির সেই সমাজতান্ত্রিক ও আদর্শনিষ্ঠ চরিত্রটি এখন নেই। টনি ব্লেয়ার প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে লেবার পার্টিতে যে ব্লেয়ারপন্থীদের অভ্যুদয় ঘটে, তাঁরা দলটিকে নীতি ও চরিত্রের ক্ষেত্রে অনেকটাই টোরি দলের কাছাকাছি নিয়ে আসেন। যদিও এখন নতুন নেতা ব্লেয়ারপন্থীদের কবজা থেকে দলকে অনেকটা মুক্ত করেছেন, কিন্তু দলে বাম সোশ্যালিস্ট অংশ এখনো কোণঠাসা। ওয়েলফেয়ার কাট থেকে শুরু করে ইমিগ্রেশন আইন ক্রমাগত কঠোর করার ব্যাপারে টোরিদের সঙ্গে বর্তমান লেবার পার্টির পার্থক্য খুব কম।
এখন লেবার পার্টির ভোটব্যাংকে ভাগ বসানোর জন্য টোরি দলও ব্রিটেনের বাঙালি অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনে কাউন্সিলর ও এমপি পদে বাঙালি প্রার্থী দাঁড় করায়। বাঙালি ভোটও এভাবে ভাগ হয়ে গেছে। বাংলাদেশেও আমরা প্রায় একই অবস্থার অনুবৃত্তি দেখি। আগে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও পাহাড়িয়া সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের একটি শক্তিশালী ভোটব্যাংক ছিল। সেটি এখন আগের মতো নেই। সে জন্য আমরা সাম্প্রতিক উপজেলা নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকায়ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত হতে দেখেছি।
এর প্রধান কারণ দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষায় আওয়ামী লীগ তেমন সাফল্য দেখাতে পারেনি। সাম্প্রতিক সংখ্যালঘু নির্যাতনের সময়ও দেখা গেছে এলাকার এক শ্রেণির আওয়ামী লীগ এমপি নির্বিকার। তাঁরা নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়াননি। বরং তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে নির্যাতনকারীদের সঙ্গে নানা ধরনের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছে। শেখ হাসিনা একা কত দিক সামলাবেন? তাঁর প্রশাসন ও এক শ্রেণির মন্ত্রী ও এমপির ঢিলেঢালা অবস্থার জন্য সংখ্যালঘুরা এখনো দেশে তেমন শান্তি ও স্বস্তিতে বাস করতে পারছে না।
ফলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর একটা বড় অংশ মনে করে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসেও যখন তাদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না, বরং আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে বিএনপি ও জামায়াতের হাতে নির্যাতিত হতে হয় (সেই নির্যাতন আওয়ামী লীগ ঠেকাতে পারে না) তখন বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীকেই নির্বাচনে ভোট দিয়ে তারা অন্তত নিজেদের নিরাপত্তার একটা বলয় তৈরি করতে পারে।
দেখা গেছে, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, মন্দির, বিগ্রহ ভাঙচুর করার পর আওয়ামী লীগ সরকার তা দ্রুত মেরামত করার ও আরো উন্নত বাড়িঘর, মন্দির তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু সংখ্যালঘুরা তো নতুন ও সুন্দর বাড়িঘর চায় না। তারা চায় নিরাপত্তা, নির্যাতন থেকে মুক্তি। তাদের পুরনো বাড়িঘর, মন্দিরের সুরক্ষার ব্যবস্থা। মার খাওয়ার পর আহত শরীরে মলম লাগিয়ে তো তাদের খুশি করা যায় না।
বাংলাদেশের মতো ভারতেও সংখ্যালঘুদের স্বার্থ, অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষায় অতীতের ও বর্তমানের কংগ্রেস সরকারগুলোর ব্যর্থতা খুবই প্রকট। অধিকৃত কাশ্মীরে 'সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের' দমনের নামে বছরের পর বছর ধরে মুসলিম নির্যাতন ভারতের মুসলমানদের মনে একটি ক্ষোভের কারণ। বাবরি মসজিদটি ভাঙা হয়েছিল দিলি্লতে কংগ্রেসের নরসিমা রাওয়ের কংগ্রেস সরকারের আমলে। এই মসজিদ রক্ষা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ব্যাপারে কংগ্রেস সরকার কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি। বলেছে, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের এখতিয়ারভুক্ত বিষয় নয়। এটা রাজ্য সরকারের বিষয়। রাজ্য সরকার এই মসজিদ ভাঙা ও দাঙ্গার সময় নির্বিকার ছিল।
গুজরাট দাঙ্গার সময় যেমন কংগ্রেস দল দাঙ্গা প্রতিরোধে এগিয়ে যায়নি, তেমনি দিলি্লতে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর তারা এই দাঙ্গা বাধানোর জন্য অভিযুক্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্রুত বিচারের কোনো ব্যবস্থা করেনি। বরং নরেন্দ্র মোদি পুচার অব গুজরাট আখ্যা পাওয়ায় যখন মার্কিন সরকার তাঁকে আমেরিকায় যেতে ভিসা দেয়নি; তখন মনমোহন সরকার তার প্রতিবাদ করেছে ও আমেরিকা মোদিকে ভিসা না দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এটা অনেকটা সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান কর্তৃক একাত্তরের ঘাতক ও যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে বাংলাদেশে ডেকে এনে বিচার না করে রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠাদানের মতো।
তা ছাড়া ইন্দিরা গান্ধী হত্যার পর হাজার হাজার সংখ্যালঘু শিখ নিধনের কলঙ্ক জড়িয়ে আছে পরবর্তী কংগ্রসে সরকারের শরীরে। ভারতে দলিত নির্যাতন আমেরিকায় এককালের অশ্বেতাঙ্গ নির্যাতনের মতোই ভয়াবহ। কংগ্রেস সরকার এই দলিত সম্প্রদায়গুলোর অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার ব্যাপারেও তেমন সাফল্যের পরিচয় দিতে পারেনি। ১০ বছর আগে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করে কংগ্রেসের সোনিয়া-মনমোহন সরকার দেশটির কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় বসেছিল সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতার স্লোগান মুখে নিয়ে। কিন্তু এই ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিকেও ভারতের রাজনীতিতে তেমন প্রতিষ্ঠা দিতে পারেনি কংগ্রেস সরকার।
তথাপি বছরের পর বছর সংখ্যালঘুদের একটা বিশাল ভোটব্যাংক ছিল, যা বহুকাল কংগ্রেসের নির্বাচন-বিজয় নিশ্চিত করেছে। দিলি্লর জামে মসজিদের খতিব প্রতিবছরই খুতবা পাঠের সময় ভারতের মুসলমানদের আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার জন্য। ভারতে বিজেপির মাধ্যমে উগ্র হিন্দুত্ববাদের অভ্যুদয় ও ক্ষমতা দখলের ভয়ে মুসলমানরা কংগ্রেসকে তাদের নিরাপত্তার আশ্রয় ভেবে দলে দলে ভোট দিয়েছে।
ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনেও মুসলিম ভোটদাতাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ হয়তো কংগ্রেসকেই ভোট দিতে চাইবে। কারণ এবারের নির্বাচনে উগ্র হিন্দুত্ববাদের উলঙ্গ প্রতীক স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচন-প্রার্থী। ফলে দিলি্লর জামে মসজিদের খতিব আগে কংগ্রেসকে সরাসরি সমর্থনদানে কিছুদিনের জন্য বিরত থাকলেও এবার বিজেপি সম্পর্কে ভারতের মুসলমানদের সুস্পষ্ট ভাষায় সতর্ক করে দিয়েছেন।
তা সত্ত্বেও ভারতের সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিম ভোটব্যাংক এখন আর কংগ্রেসের জন্য সুরক্ষিত নয়। সংখ্যালঘুরা নিজেদের অস্তিত্ব ও অধিকার রক্ষার জন্য তাদের দেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে গড়ে ওঠা বিজেপির সঙ্গে একটা সমঝোতার ভাব রক্ষা করে চলতে চায়। এর প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায়, যখন কংগ্রেসের প্রয়াত নেতা মওলানা আবুল কালাম আজাদের নাতনি বিজেপি একটি সাম্প্রদায়িক দল জেনেও তাতে যোগ দেন। তারপর আরো কিছু মুসলিম নেতা তাতে যোগ দেন।
বিজেপিও ক্রমশ বুঝতে পারে, ভারতে ক্ষমতায় যেতে হলে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিম ভোট তাদের দরকার। ফলে বিজেপির প্রবীণ নেতৃত্ব- যেমন অটল বিহারি বাজপেয়ি, লালকৃষ্ণ আদভানি, যশোবন্ত সিং তাঁদের উগ্র হিন্দুত্ববাদের নখর লুকিয়ে ফেলে উদারপন্থী সাজেন। ক্ষমতায় থাকার শেষদিকে বাজপেয়ি পাকিস্তান সফরে গিয়ে জিন্নাহ যে ধরনের শেরওয়ানি ব্যবহার করতেন, সে ধরনের ছয়টি শেরওয়ানির অর্ডার দিয়ে তৈরি করে দিলি্লতে এসে ব্যবহার করা শুরু করেন। সাংবাদিক সভায় বলেন, কৈশোরে শেরওয়ানি পরা জিন্নাহকে দেখে তিনি শেরওয়ানি ব্যবহারে আগ্রহী হন।
অন্যদিকে লালকৃষ্ণ আদভানি করাচি সফরে গিয়ে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সমাধিতে যান শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে এবং জিন্নাহ সেক্যুলার নেতা ছিলেন বলে ঘোষণা দেন। বিজেপির আরেক নেতা যশোবন্ত সিং জিন্নাহর ওপর বই লিখে তাঁকে মহান অসাম্প্রদায়িক নেতা বলে প্রশংসা করেন। বিজেপির কট্টরপন্থী শিবসেনা ও আরএসএস অবশ্য এই উদ্ধারপন্থা পছন্দ করেনি। ফলে আদভানির আর বাজপেয়ির পর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনি। যশোবন্ত সিং দল থেকে বহিষ্কৃত হন। তিনি বর্তমান নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী।
এই পরিস্থিতিতেই মূলত শিবসেনা ও আরএসএসের পছন্দের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে গুজরাট দাঙ্গার নায়ক নরেন্দ্র মোদির অভ্যুদয়। তা জেনেও ভারতীয় মুসলমানদের এলিট শ্রেণি বা সুধীসমাজের কিছু শীর্ষ ব্যক্তি বিজেপিতে সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিখ্যাত সাংবাদিক এম জে আকবর। বাংলাদেশের একটি সুধীসমাজের মতোই ভারতের মুসলিম সুধীসমাজের এই অংশটি সুযোগসন্ধানী ও সুবিধাবাদী। নরেন্দ্র মোদি যত কট্টর হিন্দুত্ববাদী হোন, তিনি এবার ক্ষমতায় যেতে পারেন, এটা ভেবে এই সুবিধাবাদীরা নিজেদের সামাজিক কায়েমি স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখার জন্য বিজেপির দিকে ঝুঁকেছেন। প্রমাণ হয়েছে ভারতেও মুসলিম গয়েশ্বর রায়দের অভাব নেই।
নরেন্দ্র মোদি ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠদের ভোট কুড়ানোর আশায় বারবার ঘোষণা করেছেন, তিনি হিন্দু জাতীয়তাবাদী। অন্যদিকে মুসলিম ভোট পাওয়ার আশায় দলের সভাপতিকে দিয়ে বলিয়েছেন, মুসলমানদের ওপর অন্যায়-অবিচার করা হয়ে থাকলে তাঁরা নত মস্তকে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত। যদিও আরএসএসের ধমকে বিজেপিকে এই বক্তব্য সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করতে হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদি তাঁর উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও মুসলিমবিদ্বেষ ঢেকেছেন এক নতুন কৌশলে। তিনি আগামী ১৬ মের পর (নির্বাচন শেষে ক্ষমতায় বসতে পারলে) ভারত থেকে বাংলাদেশি বিতাড়ন শুরু করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এখানে মুসলিম বিতাড়ন কথাটি উহ্য রাখা হয়েছে। বাংলাদেশেও বিএনপি 'হিন্দুবিদ্বেষ' প্রচার করে না। বরং ভারতবিদ্বেষ প্রচারের আড়ালে এই বিদ্বেষ প্রচারকে ঢাকা দিয়েছে। ভারতের সংখ্যালঘুরা, বিশেষ করে মুসলমান ভোটদাতারা যদি নরেন্দ্র মোদির এই কৌশল বুঝতে না পেরে কংগ্রেসের প্রতি তাদের হতাশা প্রকাশের জন্য বিজেপিকে ভোট দেয়, তাহলে তা পরিণামে তাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।
এখন দেখার রইল, বিজেপি এই নির্বাচনে তাদের সংখ্যালঘু-তাসটি কেমন খেলে এবং তাতে কতটা সফল হয়!
No comments:
Post a Comment