Wednesday, April 30, 2014

ছেলেকে দেখে চোখ মুছলেন সুদীপ্ত

ছেলেকে দেখে চোখ মুছলেন সুদীপ্ত

sudipto
এই সময়: দীর্ঘ অপেক্ষার পর পিতা-পুত্রের 'দূরত্ব' মিটিয়ে দিল কাঠগড়া৷

লক-আপ দুটো ছিল আলাদা৷ কিন্ত্ত বাবা-ছেলেকে তোলা হল একই কাঠগড়ায়৷ আর সেটা করতেই আবেগবিহ্বল বাবা৷ ছেলেকে দেখে ছলছল করে উঠল তাঁর চোখ৷ হাতের চেটো দিয়ে মুছে নিলেন চোখটা৷

বাবার নাম? সুদীপ্ত সেন!

স্বামীর কান্না দেখে নিঃশব্দে ফুঁপিয়ে উঠলেন কিছুটা দূরে বসে থাকা দ্বিতীয় স্ত্রী পিয়ালিও৷ তবু সামলাতেই হল নিজেকে৷ বুড়ি শাশুড়ি পাশে রয়েছেন যে৷ কখনও শাশুড়ির পিঠে রাখলেন সান্ত্বনার হাত, কখনও বা তাঁর দিকে এগিয়ে দিলেন জলের বোতল৷ বুধবার দুপুরে সারদা কেলেঙ্কারির শুনানিপর্বে ব্যাঙ্কশাল আদালত সাক্ষী রইল এই নাটকীয় পারিবারিক দৃশ্যের৷

ইডি-র তরফে সুদীপ্ত সেন ও তাঁর ছেলে শুভজিতকে কাঠগড়ায় তোলা হয় ১২টা ৩৫ মিনিটে৷ মঙ্গলবার কুণাল ঘোষকে নিয়ে নাজেহাল হাওয়ার পর এ দিন সকাল ১০টা থেকে আদালত চত্বরে ছিল নজিরবিহীন পুলিশি প্রহরা৷ সংবাদমাধ্যম যাতে কোনও মতেই সুদীপ্ত-শুভজিত্‍কে কোনও প্রশ্ন করতে না-পারে, সে কারণেই এই ব্যবস্থা বলে ইঙ্গিত৷ তবে যে মামলায় ওই দু'জনকে আদালতে তোলা হয়, সেটিতে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন সুদীপ্ত৷ তিনি এসেছিলেন নিয়মমাফিক হাজিরা দিতে৷ তবে সেই হাজিরার কল্যাণেই সারদা কেলেঙ্কারির পর এই প্রথম মুখোমুখি হলেন বাবা-ছেলে৷

তবে শুভজিতের কপালে শিকে ছেঁড়েনি৷ তার জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক মহম্মদ মমতাজ খান৷ ইডি-র তরফে আগেই সওয়াল করা হয়েছিল, আড়াই কোটি টাকা কোথায় গেল অথবা কোথায় তা খরচ করা হল, তা স্পষ্ট নয়৷ ফলে ইডি-র আইনজীবীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, শুভজিত্‍কে ছাড়া হলে প্রয়োজনীয় নথি বিকৃত হতে পারে৷ শুভজিতের আইনজীবীর দাবি ছিল, সুদীপ্ত-দেবযানীকে ৯০ দিন হেফাজতে রেখেও তদন্তে কোনও অগ্রগতি হয়নি (শারীরিক অসুস্থতার কারণে দেবযানীদেবী এ দিন হাজিরা দিতে আসতে পারেননি)৷ কিন্ত্ত সেই সওয়ালে কাজ হয়নি৷ বিচারক জানিয়ে দেন, ১৪ মে শুভজিতকে ফের আদালতে তুলতে হবে৷ সে দিনই ফের হাজিরার কথা সুদীপ্তরও৷ দু'পক্ষেরআইনজীবীদের মধ্যে যখন সওয়াল-জবাব চলছে, তখন একরাশ উত্‍কণ্ঠা ধরা পড়েছে পিয়ালিদেবী ও শুভজিতের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায় সেনের বিধ্বস্ত মুখে৷

আর বাবা-ছেলে? পরিচিত সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরনে সুদীপ্ত অথবা গোল-গলা খয়েরি টি-শার্ট পরা শুভজিতের মধ্যে তখন কাঠগড়ায় নিশ্চুপে চলেছে কথোপকথন৷ শুনানিশেষে প্রথমে পিয়ালি ও প্রিয়াঙ্কা, অনেক পরে আলাদা ভাবে সুদীপ্ত ও শুভজিত্‍কে বের করা হয়৷ যে কাঠগড়া দূরত্ব মিটিয়েছিল পিতা-পুত্রের দূরত্বের, তা ছাড়ার সময় অবশ্য আর ছলছল করেনি কারও চোখই৷

No comments:

Post a Comment