Tuesday, April 29, 2014

মোদি একটা শয়তান প্রধানমন্ত্রী হওয়া ভারতের জন্য দুঃস্বপ্ন ॥ মমতা ‘বাংলাভাষী মানেই বাংলাদেশী নয়’

মোদি একটা শয়তান
প্রধানমন্ত্রী হওয়া ভারতের জন্য দুঃস্বপ্ন ॥ মমতা ‘বাংলাভাষী মানেই বাংলাদেশী নয়’
মোদি একটা ‘শয়তান’। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলে তা দেশের জন্য ‘দুঃস্বপ্ন’ বয়ে আনবে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জী ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে এই কথা বলেন। মমতা ব্যানার্জী এ প্রসঙ্গে ২০০২ সালে মোদির রাজ্য গুজরাটে ভয়াবহ দাঙ্গার কথা উল্লেখ করেন। দাঙ্গার প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, আমরা গুজরাটের মানুষকে ভালবাসি। গর্ভবতী নারীসহ বিপুলসংখ্যক মানুষ গুজরাটের ঐ দাঙ্গায় নিহত হয়েছিলেন। তিনি একটা শয়তান। মমতা ব্যানার্জী সোমবার হাওড়ায় পশ্চিমবঙ্গের অস্থায়ী সচিবালয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা (মিডিয়া) ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঐ ব্যক্তিটিকে তুলে ধরায় আমরা যেন এক দুঃস্বপ্নের দিকে তাকিয়ে আছি। নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এলে অবৈধ বাংলাদেশীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবেÑ বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীর এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জী। মমতা বলেন, বাংলার মানুষ তাকেই ছুঁড়ে ফেলে দেবে। মোদির উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাভাষী মানেই বাংলাদেশী নয়। খবর জিনিউজ/এনডিটিভি/ ও ওয়েবসাইটের।
মমতা ব্যানার্জী বলেন, মোদি ইতিহাস জানেন না। তিনি জানেন না যে বালা ভাষায় কথা বললেই একজন বাংলাদেশী হয়ে যান না। তিনি বলেন, মোদি বাঙালী ও অবাঙালীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চান। ভারতের কেউ বাংলাভাষায় কথা বললেই তাকে বাংলাদেশী হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এটা বৈষম্য। বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে যদি মোদি বলেন যে, বাংলাদেশীদের ব্যাগ গুটিয়ে চলে যেতে হবে তাহলে বাংলার মানুষ তাকেই ছুঁড়ে ফেলে দেবে। মমতা বলেন, নির্বাচন কমিশনের উচিত মোদির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মোদী পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে উল্লেখ করে মমতা বলেন, তিনি বলছেন বাংলাদেশ থেকে আসা বাঙালীদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে। কেন? তিনি একথা বলার কে? বাংলাদেশ একটি প্রতিবেশী দেশ। আমাকে কি এই ইস্যুতে তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে লিপ্ত হতে হবে? আমরা তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বালার মানুষকে বিভক্ত করা যাবে না। তিনি বলেন, মোদি বাঙালী ও অবাঙালীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চান। তৃণমূল প্রধান আরও বলেন, মোদি বাঙালী ও হিন্দুস্তানীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। তিনি বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলে বিদ্বেষ ছড়াতে চেয়েছেন।
নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি দাঙ্গাবাজ বলে আক্রমণ করে ক্ষুব্ধ মমতা মোদির সম্পর্কে এও বলেন, ‘তাঁর কাছ থেকে কোন সার্টিফিকেট নেয়ার প্রয়োজন নেই। হাঁড়ি খুলে দিলে একটি ভাতও আর থাকবে না। আমি সব উত্তর জনগণের কাছে দেব। আমি কী, তা আমি নিজেই জানি।’ রবিবার শ্রীরামপুরে নরেন্দ্র মোদি প্রচার করতে এসে মমতাকে আক্রমণ করেন। সোমবার মমতা নবান্ন থেকে ফেরার সময় সাংবাদিকদের কাছে তাঁর জবাব দেন। অন্যদিকে, এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় ও সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। তিনি বলেন, মমতা ছবি বিক্রি করে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন মোদি। গল্প ফাঁদা হচ্ছে। মমতা নিজের লেখা বই থেকে ও তাঁর আঁকা ছবি থেকে যে টাকা পেয়েছেন তা সবই দলের জন্য আর স্প্যাস্টিক সোসাইটির জন্য দিয়ে দিয়েছেন। সব টাকার হিসাব আছে। আয়কর দপ্তরকেও হিসাব দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনও সব জানে। নবান্নে দাঁড়িয়ে এদিন মমতা বলেন, ‘মোদি দেশের ইতিহাস জানেন না।’ মিডিয়ার একাংশের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘একজনের হয়ে প্রচার করছেন আপনারা। সংবাদ বিক্রি করে দেশে কালো দিন টেনে আনছেন। একজনকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে দিচ্ছেন, যিনি কোন ইতিহাস জানেন না। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা এখানে এসেছেন, তাঁদের তিনি বাক্স প্যাটরা নিয়ে ফেরত যেতে বলেছেন। তিনি বলার কে?’ মিডিয়ার একাংশের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যাঁরা ওঁর হয়ে প্রচার করছেন, তাঁরা কালো দিনের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। কেন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।’ মোদিকে একসময় মমতা তুই করেও সম্বোধন করেন মমতা।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এনে মমতা বলেন, ‘কেন এঁরা আবার ফিরে যাবেন। এসব কথা বলার সাহস তিনি পান কোথা থেকে। এত বড় বুকের পাটা। কে ভাই তুমি? কোন হরিদাস। বাঙালী-অবাঙালীর মধ্যে বিভেদ করতে এসেছেন তিনি। আমি বলি, বাংলায় জাতপাতের রাজনীতি করবেন না। বাংলাদেশ আমার প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে ঝগড়া করব। না কি তাদের ভালবাসব। ’ বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, তাদের একটি ভোটও দেবেন না। মোদি সম্পর্কে বলেন, ঔদ্ধত্য, সাহস থাকা ভাল। দুঃসাহস থাকা ভাল নয়। মোদি সম্পর্কে মমতা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, তিনি যদি দিল্লীর আসনে বসেন, তাহলে দেশে দুঃসহ কালো দিন, ভয়ঙ্কর দিন আসবে। গুজরাটের মানুষদের আমি ভালবাসি। ওখানকার মানুষের দুর্ভাগ্য যে, এমন একজন ভয়ঙ্কর, শয়তান লোক ওঁরা পেয়েছেন। এখানে শিল্প হয়নি। মোদিকে তিনি দাঙ্গাবাজ, দাঙ্গারাজ বলে মন্তব্য করেন। মমতা বলেন, ওঁর তাকানো যেন ভয়ঙ্কর। শুধু তাকাচ্ছেন আর ধ্বংস করছেন। সংখ্যালঘুদের তিনি গালিগালাজ করছেন। এসব করলে ভোটের ব্যাঙ্ক জবাব পাবেন। দার্জিলিং ভাগ করতে চাইছে। আমরা ভাগ করতে দেব না।
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html

No comments:

Post a Comment