Monday, April 28, 2014

চিটফান্ড চলে কেন্দ্রের আইনে: মমতা

চিটফান্ড চলে কেন্দ্রের আইনে: মমতা
Aajkaal: the leading bengali daily newspaper from Kolkata
Google plus shareFacebook shareTwitter shareLinkedIn share
প্রিয়দর্শী বন্দ্যোপাধ্যায়
‘চিটফান্ড চলে কেন্দ্রের আইনে৷‌ রাজ্যের আইনে নয়৷‌ অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় সরকার৷‌ নজরদারির দায়িত্ব রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও সেবি-র৷‌ এতে রাজ্যের কী করার আছে?’ রবিবার সন্ধ্যায় হাওড়ার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী প্রসূন ব্যানার্জির সমর্থনে জনসভায় এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷‌ এদিন তিনি সালকিয়ার জটাধারী পার্ক ও হাওড়া ময়দানে দু’টি সভা করেন৷‌ দুই সভাতেই চিটফান্ডের রমরমা নিয়ে কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তোলেন মমতা৷‌ বলেন, ‘১৯৮০ সাল থেকে চিটফান্ডের রমরমা চলছে৷‌ তখন এ রাজ্যে ক্ষমতায় সি পি এম৷‌ কেন্দ্রে কংগ্রেস৷‌ কেন্দ্রের অনুমতিতেই একের পর এক চিটফান্ড খোলা হয়েছিল৷‌ আটের দশকে সঞ্চয়িতায় মতো একাধিক চিটফান্ডের কবলে পড়ে মানুষ সর্বস্বাম্ত হয়েছিলেন৷‌ তখন কারও নজর পড়েনি৷‌ এখন কংগ্রেস, বি জে পি এবং সি পি এম এক হয়ে গেল গেল রব তুলেছে৷‌ সারদার টাকায় সি পি এম, কংগ্রেস চলেছে৷‌ আর এখন তারাই কুৎসা রটাচ্ছে৷‌ এখন ওরা সি বি আই, সি বি আই করে চিৎকার করছে৷‌ আমিও সি বি আই-কে সম্মান করতাম৷‌ এখন সি বি আই কংগ্রেস ব্যুরো অফ ইন্ডিয়া হয়ে গেছে৷‌ নোবেল চুরি, সিঙ্গুরে তাপসী মালিক খুন, নন্দীগ্রাম, নেতাই, জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ডের কোনও কিনারা হয়নি, উল্টে দোষীরা ছাড়া পেয়ে গেছে৷‌ আমরা সারদার মূল অভিযুক্তকে কার্গিল থেকে গ্রেপ্তার করে এনেছি৷‌ ৪ লাখ প্রতারিত মানুষকে টাকা ফেরত দিয়েছি৷‌ আমরা বলি, এই ধরনের মানুষ-ঠকানো চিটফান্ড থাকবে কেন? আইন তো কেন্দ্রের, কিন্তু ওদের কোনও হেলদোল নেই!’ তীব্র ভাষায় কেন্দ্রকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘মানুষের ওপর বুলডোজার চালাতে বসে আছে কেন্দ্র৷‌ গ্যাস, পেট্রল, ডিজেলের দাম হু-হু করে বাড়িয়েছে, মানুষের কথা ভাবেনি৷‌ আমরা এর প্রতিবাদ করেছিলাম বলে কংগ্রেস, বি জে পি, সি পি এম এক হয়ে প্রতিশোধ নিতে আমাদের বিরুদ্ধে রটাতে নেমেছে৷‌ ওরা বাংলার উন্নয়ন চায় না৷‌ আমি জীবন বাজি রেখে বাংলার উন্নয়নের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি৷‌ আমরা মানুষের টাকায় চলি৷‌ কংগ্রেস, বি জে পি কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রচার করছে, এত টাকা ওরা পেল কোথা থেকে?’ নরেন্দ্র মোদির নাম করে তিনি বলেন, ‘যিনি নিজের স্ত্রীকে সম্মান দেন না, তিনি দেশবাসীকে সম্মান দিয়ে দেশ চালাবেন কী করে৷‌ দাঙ্গা করে জেতা যায় না৷‌ যাদের হাতে রক্তের দাগ থাকে তারা দেশের নেতা হয় না৷‌ তিন বছর ধরে কেন্দ্র যখন আমাদের আয়ের সব টাকা কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছিল, তখন এরা কোথায় ছিল? এখন ভোটের আগে বাংলাকে ভাগ করতে এসেছে৷‌’ শিশুমৃত্যুর হার থেকে ১০০ দিনের কাজ, নানা উন্নয়নে বাংলা গুজরাটের থেকে অনেক এগিয়ে দাবি করে মোদিকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘গ্যাসবেলুনবাবু গুজরাটে ১০০ দিনের কাজে কত টাকা খরচ করেছেন? আসলে টাকা ছড়িয়ে ওরা মোদি-হাওয়া মোদি-হাওয়া বলে ফাঁপা প্রচার চালাচ্ছে৷‌ কংগ্রেস, বি জে পি এবং সি পি এম অপপ্রচার, কুৎসা শুরু করেছে৷‌ এবারের নির্বাচন সেই অপমান, অসম্মান ও লাঞ্ছনার বদলা নেওয়ার নির্বাচন৷‌’ এন ডি এ-তে থাকার ব্যাপারে সাফাই গেয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘অটলজি আলাদা ছিলেন৷‌ তাঁকে সম্মান করতাম৷‌ ওঁর জন্য এ ডি এ-তে কিছুদিন ছিলাম৷‌ কোনও দিন বি জে পি-র সঙ্গে ছিলাম না৷‌’ মমতা বলেন, ‘এক বছরের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসকে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করব৷‌ দিল্লি থেকে বাংলার প্রাপ্য ছিনিয়ে আনব৷‌ বেশি সংখ্যক সাংসদ হলে এই অধিকার আরও বাড়বে৷‌ এই লক্ষ্যেই আমরা বোতাম টিপব এখানে, কেন্দ্রের ক্ষমতা দখল করব ওখানে৷‌’ দু’টি সভাতেই প্রার্থী প্রসূন ব্যানার্জি, মন্ত্রী অরূপ রায়, রাজীব ব্যানার্জি, মেয়র রথীন চক্রবর্তী, বিধায়ক অশোক ঘোষ, জটু লাহিড়ী প্রমুখ উপস্হিত ছিলেন৷‌

No comments:

Post a Comment