বুদ্ধদেব দাস: ঘাটাল, ২৭ এপ্রিল– ঘাটালে সি পি এম কর্মী খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল বিধায়কের শ্যালককে গ্রেপ্তার করল না পুলিস৷ কর্মী খুনে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার গভীর রাত পর্যম্ত সি পি এম কর্মীরা পথ অবরোধ করায় পুলিস ৭ জন তৃণমূলকর্মীকে গ্রেপ্তার করে৷ ধৃতদের রবিবার ঘাটাল মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক বাপি দিয়াশি, দেবব্রত সরকার, উত্তম পাত্রকে ৫ দিন পুলিসি হেফাজতে এবং সুকুমার হক, সোমনাথ বেজকে ২ মে পর্যম্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন৷ মূল অভিযুক্ত ঘাটালের তৃণমূল বিধায়ক শঙ্কর দোলইয়ের শ্যালক সম্তোষ দিয়াশিকে পুলিস গ্রেপ্তার করতে পারেনি৷ তিনি তৃণমূল নেতা ও ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ৷ শনিবার রাতে ঘাটালে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ডাঃ সূর্যকাম্ত মিশ্রর সভা সেরে ফেরার পথে রাধানগর ও বড়দা চৌকানের কাছে তৃণমূলকর্মীরা একটা বাস ও পিকআপ ভ্যানে হামালা চালান৷ পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় প্রহ্লাদ রায়কে৷ ঝুঁকে পড়ায় গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে তাঁকে মারা হয়৷ গাড়ি ভাঙচুর করা হয়৷ পুলিস এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ সেখানেই তিনি মারা যান৷ মৃতদেহ ময়নাতদম্ত করা নিয়ে টালবাহানা করে পুলিস ও ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ প্রথমে বলা হয়, এখানেই ময়নাতদম্ত হবে৷ দুপুর ২টোয় জানানো হয়, এখানে হবে না৷ মৃতদেহ ময়নাতদম্তের জন্য ৭০ কিলোমিটার দূরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে৷ ততক্ষণে ঘাটালে মরদেহ নিয়ে মিছিলের জন্য কর্মী-সমর্থকেরা পৌঁছে যান৷ চলে আসেন ঘাটাল কেন্দ্রের বামপ্রার্থী সম্তোষ রানা৷ ঘাটালের সি পি এম জোনাল সম্পাদক উত্তম মণ্ডল অভিযোগ করেন, তাঁরা যাতে মরদেহ নিয়ে মিছিল করতে না পারেন এজন্যে তৃণমূল বিধায়কের কথামতো পুলিস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহ অন্যত্র পাঠানোর ব্যবস্হা করছেন৷ এটা তাঁরা মানবেন না৷ হাসপাতাল সুপারের কাছে গিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান৷ এবং প্রার্থী জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেন৷ জেলাশাসকের হস্তক্ষেপে ঘাটচালের ময়নাপুকুরে ময়নাতদম্ত হয়৷ বিকেলে মরদেহ নিয়ে মিছিল করেন হাজারখানেক সি পি এম কর্মী-সমর্থক৷ প্রহ্লাদের বাড়ি চন্দ্রকোনার পুরশুড়িতে এদিন সারাদিন চাপা শোক ছিল৷ ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠছিলেন তাঁর মা লক্ষ্মী রায় ও বাবা বিশ্বনাথ রায়৷ ঘরের দাওয়ায় দুই ছেলেকে নিয়ে অপলক চোখে স্বামীর ফেরার আশায় প্রহর গুনছিলেন স্ত্রী মালতি৷
|
No comments:
Post a Comment