লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াল রাজকোষে ঘাটতি
এই সময়: ফেব্রুয়ারি মাসে পেশ করা অন্তবর্তী বাজেটে রাজকোষ ঘাটতির অঙ্কে গোঁজামিলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম৷ কিন্তু, সমালোচকরাই যে সঠিক ছিলেন তা প্রমাণ হল সোমবার৷ এ দিন কনট্রোলার জেনারেল অফ অ্যাকাউন্টস (সিজিএ) চলতি অর্থবর্ষে ফেব্রুয়ারি মাস অবধি রাজকোষ ঘাটতির যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে তাতে দেখা যায়, এপ্রিল-ফেব্রুয়ারি পর্বেই রাজকোষ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫,৯৯,২৯৯ কোটি টাকায়৷ অথচ, অন্তবর্তী বাজেটে চিদম্বরম বলেছিলেন, ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে এই ঘাটতির পরিমাণ হবে ৫,২৪,৫৩৯ কোটি টাকা৷ অর্থাত্, এগারো মাসেই রাজকোষ ঘাটতি বাজেট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেকটাই বেশি (১১৪.৩ শতাংশ) হয়ে গিয়েছে৷ মার্চ মাসে কর ও অন্যান্য রাজস্ব আদায় এবং স্পেকট্রাম বিক্রির টাকায় কী রাজকোষ ঘাটতি 'লক্ষণরেখা'র নীচে সীমাবদ্ধ রাখতে পারবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী?
সিজিএর পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিল-ফেব্রুয়ারি পর্বে নিট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬.২৭ লক্ষ কোটি টাকা৷ আর ব্যয় হয়েছে মোট ১৪ লক্ষ কোটি টাকা৷ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চলতি অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি মোট জাতীয় উত্পাদনের ৪.৮ শতাংশেও বেঁধে রাখা অসম্ভব হতে পারে চিদম্বরমের পক্ষে৷
রাজকোষ ঘাটতির এই পরিসংখ্যান নিয়ে একটি কথা না বললেও, সোমবার অর্থমন্ত্রী সরব ছিলেন বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার সাফল্য নিয়ে৷ এ দিন তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ বর্ষে বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি খাতের ঘাটতি ৩৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের মধ্যেই সীমিত থাকবে৷ গত অর্থবর্ষে এই ঘাটতি পৌঁছেছিল ৮৮০০ কোটি মার্কিন ডলারে৷ সোনার আমদানিতে কড়াকড়ি বসিয়ে চলতি খাতের ঘাটতি রুখতে পেরেছে এ বছর সরকার৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় চিদম্বরম বলেন, মঙ্গলবার ঋণনীতি ঘোষণার পর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে সোনা-আমদানির নিয়ম-কানুন শিথিল করার বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে পারে সরকার৷
চলতি খাতের ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় ডলারের নিরিখে টাকার মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে৷ কিন্ত্ত, রাজকোষের ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলে সুদের হার এবং টাকার বিনিময় দরে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য৷ সেক্ষেত্রে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও ভারতীয় শেয়ার ও ঋণপত্রের বাজারে লগ্নি করার বিষয়ে অনেক সমঝে চলবে৷ চলতি অর্থবর্ষে দেশের শেয়ার বাজারগুলিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ইতিমধ্যে ৮০,০০০ কোটি টাকা নিট লগ্নি করেছে, কিন্ত্ত ঋণপত্রের বাজার থেকে ২৮,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে৷ রাজকোষের ঘাটতি মোট জাতীয় উত্পাদনের ৫ শতাংশ বা তার বেশি হলে, তারা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগও কমিয়ে দেবে৷ ফলে, ডলারের সাপেক্ষে টাকার দর ফের নিম্নমুখী হতে পারে৷ বস্ত্তত, বিশেষজ্ঞদের অনুমান ডলার প্রতি টাকার দর ৬০-এর বেশি উঠবে না৷
বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছেন, ভর্তুকির একটা বিপুল ভার চিদম্বরম পরবর্তী অর্থবর্ষে ঠেলে দিয়েছেন৷ অন্তবর্তী বাজেটেই চিদম্বরম ঘোষণা করেছেন, ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষের ৩৫,০০০ কোটি টাকা জ্বালানি ভতুর্কি টেনে নিয়ে যাওয়া হবে ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে৷ ফলে, রাজকোষের ঘাটতি সামাল দিতে বিপাকে পড়বে নতুন সরকার৷
২০১২-১৩ বর্ষে এক লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছিল এ দেশের শেয়ার বাজারে৷ ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে ওই পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৮০,০০০ কোটি টাকায়৷ তবুও, বিদেশি বিনিয়োগের ঘাড়ে চেপেই চলতি বর্ষে সেনসেক্স সূচক ৩,৫৫০.৫০ পয়েন্ট উঠে ১৮.৮ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে৷ ৬৮-র তলানি থেকে টাকাও ৫৯-এর ঘরে আসতে পেরেছে৷
বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার গঠন হবে এই আশায় আরও বিদেশি লগ্নি এসেছে মার্চে৷ যার জন্য গোটা মার্চ মাসে ১২৬৬ পয়েন্ট যোগ করে সর্বকালের রেকর্ড গড়েছে সেনসেক্স-নিফটি৷ সোমবারও ৪৭ পয়েন্ট মতো উঠে সেনসেক্স বন্ধ হয়েছে ২২,৩৮৬.২৭ পয়েন্টে৷ ৬৭০০ পেরিয়ে সর্বকালের সেরা উচ্চতায় বন্ধ হয়েছে নিফটি সূচকও৷
রাজকোষের ঘাটতি বাড়লে, মূল্যবৃদ্ধি বাড়বে৷ আর, ঘাটতি পূরণ করতে বাজার থেকে বেশি টাকা ধার করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে৷ এই অবস্থায়, মঙ্গলবার ঋণনীতি ঘোষণায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমাবে না বলেই মনে করেন ওয়াকিবহাল মহল৷ তবে, আশার কথা এই যে দেশের পরিকাঠামো ক্ষেত্র ফেব্রুয়ারিতে ৪.৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে৷ জানুয়াতিে এই বৃদ্ধির হার ছিল ১.৬ শতাংশ৷ বিদ্যুত্, তেল পরিশোধনাগার, ইস্পাত উত্পাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঙ্গা হয়েছে পরিকাঠামো শিল্প৷ পরিকাঠামোর মতো মূল শিল্প ক্ষেত্র, অর্থাত্ যাকে ভরকেন্দ্র করে আনুষাঙ্গিক শিল্প গড়ে ওঠে, সেটা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় সমগ্র শিল্প ক্ষেত্র একটু চাঙ্গা হওয়ার আশা দেখা যাচ্ছে৷ যেটা দেশের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সুখবর৷
সিজিএর পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিল-ফেব্রুয়ারি পর্বে নিট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬.২৭ লক্ষ কোটি টাকা৷ আর ব্যয় হয়েছে মোট ১৪ লক্ষ কোটি টাকা৷ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চলতি অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি মোট জাতীয় উত্পাদনের ৪.৮ শতাংশেও বেঁধে রাখা অসম্ভব হতে পারে চিদম্বরমের পক্ষে৷
রাজকোষ ঘাটতির এই পরিসংখ্যান নিয়ে একটি কথা না বললেও, সোমবার অর্থমন্ত্রী সরব ছিলেন বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার সাফল্য নিয়ে৷ এ দিন তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ বর্ষে বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি খাতের ঘাটতি ৩৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের মধ্যেই সীমিত থাকবে৷ গত অর্থবর্ষে এই ঘাটতি পৌঁছেছিল ৮৮০০ কোটি মার্কিন ডলারে৷ সোনার আমদানিতে কড়াকড়ি বসিয়ে চলতি খাতের ঘাটতি রুখতে পেরেছে এ বছর সরকার৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় চিদম্বরম বলেন, মঙ্গলবার ঋণনীতি ঘোষণার পর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে সোনা-আমদানির নিয়ম-কানুন শিথিল করার বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে পারে সরকার৷
চলতি খাতের ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় ডলারের নিরিখে টাকার মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে৷ কিন্ত্ত, রাজকোষের ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলে সুদের হার এবং টাকার বিনিময় দরে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য৷ সেক্ষেত্রে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও ভারতীয় শেয়ার ও ঋণপত্রের বাজারে লগ্নি করার বিষয়ে অনেক সমঝে চলবে৷ চলতি অর্থবর্ষে দেশের শেয়ার বাজারগুলিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ইতিমধ্যে ৮০,০০০ কোটি টাকা নিট লগ্নি করেছে, কিন্ত্ত ঋণপত্রের বাজার থেকে ২৮,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে৷ রাজকোষের ঘাটতি মোট জাতীয় উত্পাদনের ৫ শতাংশ বা তার বেশি হলে, তারা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগও কমিয়ে দেবে৷ ফলে, ডলারের সাপেক্ষে টাকার দর ফের নিম্নমুখী হতে পারে৷ বস্ত্তত, বিশেষজ্ঞদের অনুমান ডলার প্রতি টাকার দর ৬০-এর বেশি উঠবে না৷
বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছেন, ভর্তুকির একটা বিপুল ভার চিদম্বরম পরবর্তী অর্থবর্ষে ঠেলে দিয়েছেন৷ অন্তবর্তী বাজেটেই চিদম্বরম ঘোষণা করেছেন, ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষের ৩৫,০০০ কোটি টাকা জ্বালানি ভতুর্কি টেনে নিয়ে যাওয়া হবে ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে৷ ফলে, রাজকোষের ঘাটতি সামাল দিতে বিপাকে পড়বে নতুন সরকার৷
২০১২-১৩ বর্ষে এক লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছিল এ দেশের শেয়ার বাজারে৷ ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে ওই পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৮০,০০০ কোটি টাকায়৷ তবুও, বিদেশি বিনিয়োগের ঘাড়ে চেপেই চলতি বর্ষে সেনসেক্স সূচক ৩,৫৫০.৫০ পয়েন্ট উঠে ১৮.৮ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে৷ ৬৮-র তলানি থেকে টাকাও ৫৯-এর ঘরে আসতে পেরেছে৷
বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার গঠন হবে এই আশায় আরও বিদেশি লগ্নি এসেছে মার্চে৷ যার জন্য গোটা মার্চ মাসে ১২৬৬ পয়েন্ট যোগ করে সর্বকালের রেকর্ড গড়েছে সেনসেক্স-নিফটি৷ সোমবারও ৪৭ পয়েন্ট মতো উঠে সেনসেক্স বন্ধ হয়েছে ২২,৩৮৬.২৭ পয়েন্টে৷ ৬৭০০ পেরিয়ে সর্বকালের সেরা উচ্চতায় বন্ধ হয়েছে নিফটি সূচকও৷
রাজকোষের ঘাটতি বাড়লে, মূল্যবৃদ্ধি বাড়বে৷ আর, ঘাটতি পূরণ করতে বাজার থেকে বেশি টাকা ধার করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে৷ এই অবস্থায়, মঙ্গলবার ঋণনীতি ঘোষণায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমাবে না বলেই মনে করেন ওয়াকিবহাল মহল৷ তবে, আশার কথা এই যে দেশের পরিকাঠামো ক্ষেত্র ফেব্রুয়ারিতে ৪.৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে৷ জানুয়াতিে এই বৃদ্ধির হার ছিল ১.৬ শতাংশ৷ বিদ্যুত্, তেল পরিশোধনাগার, ইস্পাত উত্পাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঙ্গা হয়েছে পরিকাঠামো শিল্প৷ পরিকাঠামোর মতো মূল শিল্প ক্ষেত্র, অর্থাত্ যাকে ভরকেন্দ্র করে আনুষাঙ্গিক শিল্প গড়ে ওঠে, সেটা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় সমগ্র শিল্প ক্ষেত্র একটু চাঙ্গা হওয়ার আশা দেখা যাচ্ছে৷ যেটা দেশের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সুখবর৷
No comments:
Post a Comment