Tuesday, April 1, 2014

বদলির শূন্যপদে ‘ব্রাত্য’ সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষিকারা

বদলির শূন্যপদে ‘ব্রাত্য’ সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষিকারা

স্নেহাশিস নিয়োগী

পর্বতের মুষিকপ্রসব!

সাধারণ বদলির জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) প্রকাশিত শূন্যপদে কার্যত ব্রাত্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বড় অংশ৷ বাম জমানায় মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাধারণ বদলি চালু হলেও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনস্থ উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের সে সুযোগ ছিল না৷ রাজ্যে পালাবদলের পর ঢাকঢোল পিটিয়ে স্কুলশিক্ষা দপ্তর এই পদ্ধতি চালু করেছিল৷ কিন্ত্ত শনিবার এসএসসি সাধারণ বদলির জন্য শূন্যপদের তালিকা প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, নানা বিষয়ে সাধারণ জাতিভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা কার্যত আবেদনের কোনও সুযোগই পাবেন না৷ পাশ ও অনার্স/স্নাতকোত্তর দুটি ক্ষেত্রের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই এই অবস্থার শিকার৷ কারণ, পাঁচটি আঞ্চলিক কেন্দ্রের অন্তর্গত বাংলা মাধ্যমের বহু স্কুলেই বাণিজ্য, অর্থনীতি, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস, কম্পিউটার সায়েন্স, এডুকেশন, নিউট্রিশন এবং ভূগোলে তাঁদের জন্য শূন্যপদ একেবারেই হাতে-গোনা৷ কোনও বিষয়ে একটিও নেই৷ কোথাও বা একটি-দুটি৷

এই বেহাল দশা কেন?

কমিশনের এক কর্তার কথায়, এমবিবিএস উত্তীর্ণ হওয়ার পর ওয়েস্ট বেঙ্গল হেল্থ সার্ভিসে যোগ দিতে হলে গ্রামীণ এলাকায় চাকরি জীবন শুরু করা বাধ্যতামূলক৷ অন্ততঃ তিন বছর চাকরি করার পরই কোনও চিকিত্‍সক বদলির আবেদন করতে পারবেন৷ সে কথা মাথায় রেখেই স্কুলে সাধারণ বদলির ক্ষেত্রে এই নিয়ম পাঁচ বছর করা হয়েছিল৷ সেইসঙ্গে নিয়োগের পর শূন্যপদ ও অবসরজনিত কারণে শূন্যপদ মিলিয়েই সাধারণ বদলির তালিকা প্রকাশের কথা বলা হয়েছিল৷ কিন্ত্ত এখন শুধু ২০১১-র ডিসেম্বরে বিজ্ঞাপিত রিজিওন্যাল লেভেল সিলেকশন টেস্টের চতুর্থ দফায় নিয়োগের পর পড়ে থাকা সাড়ে ১৬ হাজার পদে সাধারণ বদলির আবেদন চাওয়া হয়েছে৷ অথচ ২০১২ ও ২০১৩ সালে অবসরজনিত কারণে শূন্যপদের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি৷ সেজন্য এই সমস্যার সম্মুখীন হাজার হাজার কর্মরত শিক্ষক৷ যা নিয়মবিরুদ্ধ৷

বাম আমল থেকে কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগপত্র পাওয়া এক লক্ষ ২০ হাজারের বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকার সাধারণ বদলির আবেদনে সরব হয়েছে বেঙ্গল টিচার্স ফোরাম৷ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তাপস মণ্ডলের দাবি, ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলির আবেদন করেছিলেন৷ কিন্ত্ত কমিশনের দ্বিচারিতায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন৷ রাজ্যজুড়ে কলা বিভাগের বিভিন্ন বিষয়ে সাধারণ জাতিভুক্ত শিক্ষকদের বদলির কোনও সুযোগ-ই নেই৷ অথচ হাজার হাজার শিক্ষক ব্যাংক ডাফ্রট কেটে বসে আছেন৷ তাঁরা কী করবেন?

এখানেই শেষ নয়৷ কোনও রকমে বদলির তালিকা প্রকাশ করলেও কবে থেকে পার্ট-এ ফরমপূরণ শুরু হবে, বদলির জন্য নো অবজেকশন পাওয়া শিক্ষকরা স্কুল পছন্দ না হওয়ায় তা কর্তৃপক্ষের কাছে কতদিনের মধ্যে ফেরত দিতে হবে এবং সেইসঙ্গে দ্বিতীয় পর্বে কবে এনওসি পাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে? এরকম নানা প্রশ্নের জবাব পেতে কমিশনের চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যর সঙ্গে সোমবার বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনও উত্তর দেননি৷



পূর্বাঞ্চলে বিভিন্ন বিষয়ে শূন্যপদের তালিকা- বাণিজ্য শাখা (অনার্স/স্নাতকোত্তর)- পর্বতপুর হাইস্কুল জামালপুর, বর্ধমান অর্থনীতি (অনার্স/স্নাতকোত্তর)-কাইজুলি হেমচন্দ্র হাইস্কুল, বীরভূম এডুকেশন (অনার্স/স্নাতকোত্তর)-সাধারণ জাতির কোনও পদ নেই কম্পিউটার সায়েন্স (অনার্স/স্নাতকোত্তর)-সাধারণ জাতির কোনও পদ নেই নিউট্রিশন (অনার্স/স্নাতকোত্তর)-সাধারণ জাতির কোনও পদ নেই ইতিহাস (অনার্স/স্নাতকোত্তর)-চারটি বাংলা (পাশ) চারটি পদ রাষ্ট্রবিজ্ঞান (অনার্স/স্নাতকোত্তর)-কানপুর কৃষ্ণবাটি বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউশন, আরামবাগ, হুগলি দর্শন (অনার্স/স্নাতকোত্তর)-বাংলা মাধ্যমে সাধারণ জাতির কোনও পদ নেই

(কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য) 
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/school-service-comission-vacant-posts-west-bengal/articleshow/33064898.cms?

No comments:

Post a Comment