Wednesday, April 30, 2014

ক্ষীণ হচ্ছে হিন্দমোটরের ঘুরে দাঁড়ানোর আশা

ক্ষীণ হচ্ছে হিন্দমোটরের ঘুরে দাঁড়ানোর আশা

AMBASSADOR
এই সময়: ডুবে যাওয়ার আগে সাঁতার না জানা ব্যক্তি যেমন খড়-কুটো যা হাতের কাছে পায় সেটাই আঁকড়ে ধরতে চায়, ঠিক তেমনি দশা হয়েছে সি কে বিড়লা গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত হিন্দুস্তান মোটরসের উত্তরপাড়া কারখানার কর্তৃপক্ষের৷ ক্রমশ রুগ্ন হয়ে পড়া কারখানা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়া ঠেকাতে এখন অ্যাম্বাসাডার গাড়ি তৈরির ঢালাই ও কামারশাল বিক্রি করে দিতে চাইছে কর্তৃপক্ষ৷ সেই সঙ্গে মূলধন জোগাড়ের জন্য নতুন বিনিয়োগকারী খোঁজাও শুরু করা হয়েছে বলে জানান হিন্দুস্তান মোটরসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর উত্তম বসু৷

টেলিফোনে এই সময়কে দেওয়া এক সাক্ষাত্‍কারে উত্তমবাবু জানান, 'আমরা নতুন বিনিয়োগকারী খোঁজা শুরু করেছি এবং বেশ কিছু বিনিয়োগকারী লগ্নি করতে আগ্রহীও৷ কিন্ত্ত, পদ্ধতিগত কারণে পুরো বিষয়টিই পিছিয়ে যাচ্ছে৷' তবে, ইচ্ছুক বিনিয়োগকারীদের নাম জানাতে অস্বীকার করেন উত্তমবাবু৷

বস্ত্তত, গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, হিন্দুস্তান মোটরসের মোট দেনার পরিমাণ মোট সম্পত্তির চেয়ে ৩২.৯২ কোটি টাকা বেশি হয়ে গিয়েছে৷ মোট ক্ষতির পরিমাণ ১২৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে৷ এই অবস্থায় আইনত হিন্দুস্তান মোটরস কোনও নতুন বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে মূলধন জোগাড় করতে পারে না৷
কোনও সংস্থার মোট দেনা ও মোট সম্পত্তির ফারাককে বলে সংস্থার নেটওয়ার্থ৷ কোনও সংস্থার নেটওয়ার্থ সংস্থাটির শেয়ার মূলধনের ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে সেটিকে পুরোপুরি রুগ্ন সংস্থা বলা হয় এবং পুনরুজ্জীবনের জন্য সংস্থাটি বোর্ড ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল রিকন্সট্রাকশন বা বিআইএফআর-এর আওতায় চলে যায়৷ হিন্দুস্তান মোটরসের নেটওয়ার্থ শেয়ার মূলধনের ৩৫.৬ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে গত সেপ্টেম্বর মাসেই৷

উত্তরপাড়ায় অ্যাম্বাসাডার গাড়ির উত্‍পাদন জারি রাখতে হিন্দুস্তান মোটর তাদের লাভদায়ী চেন্নাই কারখানা ইতিমধ্যেই আরেক শাখা সংস্থা হিন্দুস্তান মোটরস ফিনান্স কর্পোরেশন লিমিটেডকে (এইচএমএফসিএল) বিক্রি করে দিয়েছে৷ চেন্নাই কারখানা থেকেই মিত্‍সুবিসি ল্যান্সার ও পাজেরোর মতো এসইউভিগুলি তৈরি করত বিড়লা সংস্থাটি৷

উত্তমবাবু এ দিন বলেন, 'উত্তরপাড়া কারখানা পুনরুজ্জীবনের জন্য চেন্নাই কারখানা বিক্রি ও মালিকানা হস্তান্তর করে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে৷ কিছুদিনের মধ্যেই ওই টাকা আমাদের হাতে চলে আসবে৷ তখন ওই টাকা খরচ করা হবে উত্তরপাড়া কারখানার দেনা মেটাতে৷ উত্তরপাড়া কারখানার বর্তমান দেনার পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি৷'

'এর পাশাপাশি উত্তরপাড়া কারখানার ফাউন্ড্রি ও ফোর্জিং ইউনিটটিও (ঢালাই ও কামারশালা) বিক্রি করা হবে,' উত্তমবাবু বলেন৷ 'এ ব্যাপারে ঋণদাতা ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির সম্মতি চাওয়া হয়েছে৷ তবে, যে সংস্থাই ফাউন্ড্রি ও ফোর্জিং শাখা কিনুক না কেন তাদের ওই শাখার দেনার দায়ও নিতে হবে৷ কাজেই ইউনিটটি বিক্রি করে খুব একটা বেশি দাম পাওয়া যাবে না,' তিনি স্বীকার করেন৷ তারপর বলেন, 'এ ছাড়া, বর্তমানে সংস্থার হাতে এমন কোনও সম্পত্তি নেই যা বিক্রি করে টাকা তোলা যাবে৷ তবে, ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাওয়ার কোনও চিন্তা ভাবনা আমাদের নেই৷'

কিন্ত্ত, ওই টাকায় কতদিন চলবে হিন্দুস্তান মোটরসের উত্তরপাড়া কারখানা?

উত্তমবাবু কথায়, না লাভ না ক্ষতির (ব্রেক ইভেন) অবস্থায় পৌঁছতে উত্তরপাড়া কারখানা থেকে প্রতি মাসে ১,২০০ থেকে ১,৫০০টি অ্যাম্বাসাডার গাড়ি বিক্রির দরকার৷ অথচ, বর্তমানে মাসে গড়পড়তা ১৫০টি অ্যাম্বাসাডারও বিক্রি হয় না৷ গত মার্চে কেবল ১০১টি গাড়ি বিক্রি করতে পেরেছে ১৯৪৮ সালে স্থাপিত উত্তরপাড়ার এই সংস্থাটি৷

এর উপর কারখানার ২,৬০০-র বেশি কর্মী সংস্থার মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান উত্তমবাবু৷ উত্‍পাদন খরচ কমাতে হিন্দুস্তান মোটরস কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটবে কী না প্রশ্ন করা হলে উত্তমবাবু বলেন, 'আমাদের সে রকম কোনও পরিকল্পনা নেই৷' তবে, তিনি জানান, প্রতি মাসে সংস্থাটির ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ছয় থেকে সাত কোটি টাকা৷

তবে, উত্তরপাড়া কারখানা পুনরুজ্জীবনের এই প্রয়াস প্রথম নয়৷ কারখানার পুনরুজ্জীবনের জন্য ২০০৬ সালে বামফ্রন্ট সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে ৩১৪ একর লীজ নেওয়া জমি বেঙ্গালুরুর শ্রীরাম প্রপার্টিজের কাছে বিক্রি করে ২৮০ কোটি টাকা তোলে হিন্দুস্তান মোটরস৷ যদিও সংস্থার পুনরুজ্জীবনের জন্য মাত্র ৮৫ কোটি টাকা প্রয়োজন ছিল বলে তখন রাজ্য সরকারকে জানিয়েছিল বিড়লা গোষ্ঠীর সংস্থাটি৷ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তমবাবু বলেন, 'এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না৷'

বিদেশি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্টধারীদের তালিকা দিল কেন্দ্র

বিদেশি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্টধারীদের তালিকা দিল কেন্দ্র

SC
নয়াদিল্লি: বিদেশি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, ভোটের মধ্যেই এমন ২৬ জনের নাম সুপ্রিম কোর্টে জমা দিল কেন্দ্র৷ যাঁদের নাম জমা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে লিখটেনস্টাইনের একটি ব্যাঙ্কে৷

বিদেশি ব্যাঙ্কে গচ্ছিত কালো টাকা ফিরিয়ে আনার দাবিতে সরব বিজেপি৷ এ নিয়ে ভোটযুদ্ধে তারা সরকারের উপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ ঘটনা হল, ২০০৯ সালেই ওই নামগুলি জার্মানির তরফে ভারত সরকারকে জানানো হয়েছিল৷ সেগুলি আদালতে জমা দিতে গড়িমসি করার জন্য গত ২২ এপ্রিল কেন্দ্রীয় সরকারকে ভত্‍র্‌সনাও করেছিল সর্বোচ্চ আদালত৷

কেন্দ্র জানিয়েছে, ওই ২৬ জনের মধ্যে ১৮ জনের ক্ষেত্রে আয়কর সংক্রান্ত তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে৷ তাঁদের নামও প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে৷ বাকি ছ'জনের পরিচয় অবশ্য মুখবন্ধ খামে করেই আদালতে পেশ করা হয়েছে৷ যাঁদের নাম প্রকাশিত হয়েছে, তাঁদের ৫ জনই ধুপেলিয়া পরিবারভুক্ত৷ তাঁরা আমব্রুনোভা ট্রাস্টের সদস্য৷ মনিচি ট্রাস্ট থেকে রয়েছেন ৪ জন৷ রুশিভা ট্রাস্টের ৪ জনের নামও প্রকাশ পেয়েছে৷ ওয়েবস্টার ফাউন্ডেশনের কেএম মাম্মেনের নামও ওই তালিকায় রয়েছে৷ পাশাপাশি, শেয়ার দালাল হর্ষদ মেহতার নাম সামনে এলেও, তদন্ত চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়৷ কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া নথি নিয়ে আলোচনা এবং সংশ্লিষ্ট মামলার পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷

গত ২২ এপ্রিল শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে জানায়, সরকার যাতে লিখস্টেনটাইন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের নাম আদালতকে জানানোর জন্য ২০১১ সালের ৪ জুলাই কেন্দ্রীয় সরকারকে 'সুস্পষ্ট নির্দেশ' দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্ত্ত গত তিনবছর ধরে ওই নির্দেশটিকে ঠান্ডাঘরে ফেলে রাখা হয়েছে৷ রাজস্ব সচিবের সঙ্গে কথাবার্তা বলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য ওই দিনই কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত৷ -সংবাদসংস্থা

ফের ভালোবাসার সাজা মৃত্যু

ফের ভালোবাসার সাজা মৃত্যু

murder
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: ভালোবাসা নাকি সব প্রতিকুলতা জয় করতে পারে। এই ভাবনাটি পৃথিবীর আর যেখানেই সত্যি বলে প্রমাণিত হোক না কেন, ভারতে এখনও তা সত্যি বলে ভাবার স্বপ্ন দেখলেও হয়তো মৃত্যুদণ্ডের আদেশ আসবে! অ-সম ভালোবাসার 'অপরাধে' প্রাণ হারানোর ঘটনা এ দেশে লক্ষাধিক হলেও প্রতিবার যেন আরও বেশি নৃশংসভাবে ফিরে আসে। ঠিক তেমনটিই হল সোমবার আহমেদনগরের জামখেদ তালুকের খরদা গ্রামে। এক উচ্চবর্ণের নাবালিকাকে ভালোবাসার স্পর্ধায় যবনিকা নেমে এল ১৭ বছর বয়সী এক দলিত ছেলের জীবনে।

এই ব্যাপারে কারজাত ডিভিশনের ডেপুটি পুলিশ সুপার ধীরজ পাটিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি যানান যে মৃতের নাম নিতীন রাজু আঘে। তাকে গ্রামের মাঠে উচ্চশ্রেণীর এক নাবালিকার সঙ্গে কথা বলতে দেখে নাবালিকার দাদা সহ গ্রামের আরও কয়েকজন। পরে নিতীনকে একা পেয়ে প্রথমে তারা লাঠিপেটা করে এবং পরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মেরে ফেলা হয়। এতেও রাগ না মেটায় ছেলেটির মৃতদেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয় গাছের ডালে। শুরুতে অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে মনে করলেও পরে পুলিশ খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে মেয়েটির দাদা সচিন গোলেকার (২১) এবং শেষরাও ইওলে-কে(৪২)।

এবার পুলিশের নোটিশ সুজনকে, হাজিরা দেবেন না তিনিও

এবার পুলিশের নোটিশ সুজনকে, হাজিরা দেবেন না তিনিও

sujan
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: গৌতম দেবের পর এবার থানায় তলব করা হল সুজন চক্রবর্তীকে। এক বছর পুরনো একটি মামলায় তাঁকে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানা তলব করেছে বলে জানা গিয়েছে। এদিন দুই নেতাই জানিয়েদেন, নির্বাচন চলাকালীন তাঁরা হাজিরা দেবেন না। আইনজীবী মারফত্‍‌ ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় চিঠিও পাঠিয়ে দিয়েছেন গৌতম দেব।

মঙ্গলবার রাতে গৌতম দেবের বাড়ি গিয়ে থানায় হাজিরার নোটিশ দিয়ে এসেছিল পুলিশ। এর পর এদিন সুজন চক্রবর্তীর বাড়িতে নোটিশ ঝোলালো ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানা। বৃহস্পতিবার থানায় উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।

এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে সুজনবাবু জানান, এ মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন এক বছর আগের ১০২ নম্বর মামলায় তাঁকে তলব করা হয়েছে।

তবে তিনি কি বৃহস্পতিবার থানায় হাজিরা দেবেন? এ ক্ষেত্রে গৌতম দেবের পথেই হাঁটলেন তিনি। সাফ জানিয়ে দিলেন নির্বাচন চলাকালীন থানায় হাজিরা দেবেন না তিনি। বলেন, 'আমি কাল যাব না। ১৭ তারিখ নির্বাচিত সাংসদ হিসেবে থানায় গিয়ে চা-মিষ্টি খেয়ে আসব।' তাঁকে হয়রান করার জন্য ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুজন চক্রবর্তী।

সব ভেন্টিলেটরই খারাপ, রোগীদের ভোগান্তি এনআরএসে

সব ভেন্টিলেটরই খারাপ, রোগীদের ভোগান্তি এনআরএসে

nrs
এই সময়: ১৯ এপ্রিলের সেই সন্ধের অভিজ্ঞতা কোনও দিন ভুলতে পারবে না পৃথ্বীরাজ দাসের পরিজন৷

একটি ইনটেনসিভ থেরাপিউটিক ইউনিট (আইটিইউ) কেবিনের অভাবে সেদিন প্রাণ হারিয়েছিলেন মধ্যবয়স্ক পৃথ্বীরাজ৷ মাথায় চোট ছিল তাঁর৷ পরিজন তাঁকে বারাসত থেকে কলকাতায় নিয়ে এসেছিলেন৷ প্রথমেই হোঁচট খেতে হয় আরজি করে৷ সেখানকার ডাক্তারের পরামর্শে অ্যাম্বুল্যান্সে এনআরএসে নিয়ে গিয়েও শেষরক্ষা হয়নি৷ সেখানে প্রাণ বাঁচানোর জন্য জরুরি আইটিইউ থাকা সত্ত্বেও তা অকেজো ছিল৷ এর পর সরকারি হাসপাতালে খালি আইটিইউ বেড খুঁজে পাওয়ার আগেই মারা যান হতভাগ্য পৃথ্বীরাজ৷

এনআরএস হাসপাতালে এসে একই অভিজ্ঞতা হয় শ্রীরামপুর থেকে সেরিব্রাল হেমারেজে আক্রান্ত রফিকুল ইসলামেরও৷ তবে প্রাণ যায়নি তাঁর৷ পরিস্থিতি বুঝে পরিজন তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়৷ বিল মেটাতে অবশ্য পরিবারকে জমি বিক্রি করতে হয়৷ একই হাল হয় নিউরোলজি বিভাগে ভর্তি জয়তী রাহার নামে এক নাবালিকারও৷ অপারেশনের পর পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাওয়াতে নাবালিকাকে নিউরো আইটিইউতে দেওয়া হলেও, ভেন্টিলেটরের অভাবে বাঁচানো যায়নি৷

শুধু গরিব রোগীই কেন? একই অভিজ্ঞতা হয়েছে হাসপাতালেরই এক প্রশাসনিক কর্তারও৷ তাঁর মা ভর্তি হয়েছিলেন৷ পরবর্তী সময় পরিস্থিতি জটিল হয়৷ ভেন্টিলেটর না-থাকায় তাঁর মাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মিন্টো পার্কের এক বেসরকারি হাসপাতালে৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা অসংখ্য রোগীকেই এই ভাবে প্রাণের বিনিময়ে, পরিকাঠামো অকেজো থাকার মাসুল গুণতে হচ্ছে৷

কেন এই রকমের সঙ্কটের মুখে পড়ছেন গরিব রোগীরা? এনআরএস হাসপাতালের নিউরো আইটিইউয়ের পাঁচটি বেডের পাঁচটি ভেন্টিলেটরই দেড় মাস ধরে অকেজো৷ প্রত্যেকটি মেশিনের কিছু না কিছু যন্ত্রাংশ খারাপ হওয়ায় পুরো মেশিন কাজ করছে না৷ আইটিইউ আপাতত ব্যবহার করা হচ্ছে সাধারণ বেডের মতো৷ প্রত্যেকটি বেডের সঙ্গে যুক্ত করা ভেন্টিলেটর না-থাকায় সঙ্কটে থাকা রোগীদের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না৷ প্রচণ্ড হতাশ নিউরো বিভাগের চিকিত্‍সকরা৷ সূত্রের খবর, হাসপাতালের প্রশাসনিক গাফিলতিতে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে বিগত এক মাসে বার বার মেডিক্যাল সুপার তথা উপাধ্যক্ষ দেবাশিস গুহকে জানানো সত্ত্বেও কোন ফল হয়নি৷ লিখিত এবং মৌখিক দৃষ্টি আকর্ষণ সত্ত্বেও মেশিন সারানোর কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি৷ যদিও কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি, বিশাল হাসপাতাল এবং বহু যন্ত্র খারাপ৷ একে একে সব মেরামত করা হচ্ছে৷

২০১২ সালে মে মাসে এটি উদ্বোধন করেছিলেন হাসপাতালের পরিচালন সমিতির সভাপতি পূর্ণেন্দু বসু৷ এসএসকেএম হাসপাতালের বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজির পর রাজ্যে দ্বিতীয় স্নায়ু বিশেষজ্ঞ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে এনআরএস হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগটি এই পরিকাঠামো তৈরি হয়৷ কিন্ত্ত প্রাথমিক এই সংস্কারও কর্তৃপক্ষের ঢিলেমিতে নষ্ট হতে বসেছে৷

ছেলেকে দেখে চোখ মুছলেন সুদীপ্ত

ছেলেকে দেখে চোখ মুছলেন সুদীপ্ত

sudipto
এই সময়: দীর্ঘ অপেক্ষার পর পিতা-পুত্রের 'দূরত্ব' মিটিয়ে দিল কাঠগড়া৷

লক-আপ দুটো ছিল আলাদা৷ কিন্ত্ত বাবা-ছেলেকে তোলা হল একই কাঠগড়ায়৷ আর সেটা করতেই আবেগবিহ্বল বাবা৷ ছেলেকে দেখে ছলছল করে উঠল তাঁর চোখ৷ হাতের চেটো দিয়ে মুছে নিলেন চোখটা৷

বাবার নাম? সুদীপ্ত সেন!

স্বামীর কান্না দেখে নিঃশব্দে ফুঁপিয়ে উঠলেন কিছুটা দূরে বসে থাকা দ্বিতীয় স্ত্রী পিয়ালিও৷ তবু সামলাতেই হল নিজেকে৷ বুড়ি শাশুড়ি পাশে রয়েছেন যে৷ কখনও শাশুড়ির পিঠে রাখলেন সান্ত্বনার হাত, কখনও বা তাঁর দিকে এগিয়ে দিলেন জলের বোতল৷ বুধবার দুপুরে সারদা কেলেঙ্কারির শুনানিপর্বে ব্যাঙ্কশাল আদালত সাক্ষী রইল এই নাটকীয় পারিবারিক দৃশ্যের৷

ইডি-র তরফে সুদীপ্ত সেন ও তাঁর ছেলে শুভজিতকে কাঠগড়ায় তোলা হয় ১২টা ৩৫ মিনিটে৷ মঙ্গলবার কুণাল ঘোষকে নিয়ে নাজেহাল হাওয়ার পর এ দিন সকাল ১০টা থেকে আদালত চত্বরে ছিল নজিরবিহীন পুলিশি প্রহরা৷ সংবাদমাধ্যম যাতে কোনও মতেই সুদীপ্ত-শুভজিত্‍কে কোনও প্রশ্ন করতে না-পারে, সে কারণেই এই ব্যবস্থা বলে ইঙ্গিত৷ তবে যে মামলায় ওই দু'জনকে আদালতে তোলা হয়, সেটিতে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন সুদীপ্ত৷ তিনি এসেছিলেন নিয়মমাফিক হাজিরা দিতে৷ তবে সেই হাজিরার কল্যাণেই সারদা কেলেঙ্কারির পর এই প্রথম মুখোমুখি হলেন বাবা-ছেলে৷

তবে শুভজিতের কপালে শিকে ছেঁড়েনি৷ তার জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক মহম্মদ মমতাজ খান৷ ইডি-র তরফে আগেই সওয়াল করা হয়েছিল, আড়াই কোটি টাকা কোথায় গেল অথবা কোথায় তা খরচ করা হল, তা স্পষ্ট নয়৷ ফলে ইডি-র আইনজীবীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, শুভজিত্‍কে ছাড়া হলে প্রয়োজনীয় নথি বিকৃত হতে পারে৷ শুভজিতের আইনজীবীর দাবি ছিল, সুদীপ্ত-দেবযানীকে ৯০ দিন হেফাজতে রেখেও তদন্তে কোনও অগ্রগতি হয়নি (শারীরিক অসুস্থতার কারণে দেবযানীদেবী এ দিন হাজিরা দিতে আসতে পারেননি)৷ কিন্ত্ত সেই সওয়ালে কাজ হয়নি৷ বিচারক জানিয়ে দেন, ১৪ মে শুভজিতকে ফের আদালতে তুলতে হবে৷ সে দিনই ফের হাজিরার কথা সুদীপ্তরও৷ দু'পক্ষেরআইনজীবীদের মধ্যে যখন সওয়াল-জবাব চলছে, তখন একরাশ উত্‍কণ্ঠা ধরা পড়েছে পিয়ালিদেবী ও শুভজিতের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায় সেনের বিধ্বস্ত মুখে৷

আর বাবা-ছেলে? পরিচিত সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরনে সুদীপ্ত অথবা গোল-গলা খয়েরি টি-শার্ট পরা শুভজিতের মধ্যে তখন কাঠগড়ায় নিশ্চুপে চলেছে কথোপকথন৷ শুনানিশেষে প্রথমে পিয়ালি ও প্রিয়াঙ্কা, অনেক পরে আলাদা ভাবে সুদীপ্ত ও শুভজিত্‍কে বের করা হয়৷ যে কাঠগড়া দূরত্ব মিটিয়েছিল পিতা-পুত্রের দূরত্বের, তা ছাড়ার সময় অবশ্য আর ছলছল করেনি কারও চোখই৷

মমতার ছবি-হিসেব নিয়ে তুঙ্গে তরজা

মমতার ছবি-হিসেব নিয়ে তুঙ্গে তরজা

KUNAL-10-(2)
এই সময়: শ্রীরামপুরে নরেন্দ্র মোদী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকায় কে কিনল, সেই প্রশ্ন তোলার পর তাঁর ছবি-বিতর্ক ক্রমশই জটিল হচ্ছে৷ সোমবার সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন দাবি করেছিলেন, তিনি টাকা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি কেনেননি৷ ছবি কে কিনেছেন, তাও তিনি জানেন না৷ মঙ্গলবার সুদীপ্তের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষ বিধাননগর আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছেন, 'আমার সঙ্গে জেলে সুদীপ্তবাবুর সঙ্গে ছবি বিক্রি নিয়ে যে কথা হয়েছিল, তার সঙ্গে তাঁর ওই মন্তব্যের কোনও মিল নেই৷' তবে দু'জনের মধ্যে কী কথা হয়েছিল, তা কুণালবাবু জানাতে চাননি৷ এদিনও বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি কে বা কারা কিনলেন, তা প্রকাশ্যে জানানোর দাবি করেছেন৷ শাসক তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা কিন্ত্ত সেই দাবির প্রসঙ্গ এড়িয়ে ফের বলেছেন, 'বিরোধীরা ভোটের মুখে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে নেত্রীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত কুত্‍সা রটনায় নেমেছে৷'

এর মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস তাদের যে আয়কর রিটার্ন দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, দলনেত্রীর ছবি বিক্রি তাদের দলের আয়ের একটা বড় উত্‍স৷ দলের এমপি, এমএলএ-রা যে চাঁদা দেন, তার থেকে অনেক বেশি টাকা আসে মমতার ছবি বিক্রি বাবদ৷ ২০১২ এবং ২১১৩ সালে পেশ করা আয়কর রিটার্নে তৃণমূল এমপি, এমএলএ-দের চাঁদা বাবদ ২০১১ এবং ২০১২ অর্থবর্ষে দলের আয় হয়েছে যেখানে মাত্র ৭৬ লক্ষ ২২ হাজার টাকা, সেখানে শুধু নেত্রীর ছবি বিক্রি করে আয় হয়েছে ৬ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ৯০ হাজার টাকা৷

এদিকে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দেব আবার এদিনই সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন, ২০০৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেস এবং তার মুখপত্র জাগো বাংলার আয়কর রিটার্নে নেত্রীর ছবি বিক্রি বাবদ আয় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে৷ তাঁর প্রশ্ন, বাকি ছবি তবে কারা কিনলেন? তিনি বলেন, '২০০৪ সাল থেকে মমতার ছবি বিক্রি শুরু হয়৷ পরে ক্রমশই তাঁর ছবির 'চাহিদা' বাড়তে থাকে৷ এই মহিলা কোনও দিন সত্য কথা বলেন না৷ এটা তাঁর ডিএনএ-গত সমস্যা৷' এই গৌতমবাবুই গত বছর প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর ছবি কে বা কারা কিনলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন৷ তাঁর প্রশ্ন ছিল, উনি কি পিকাসো না লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি যে, তাঁর ছবি লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়?

লোকসভা ভোট চলাকালীন ফের মমতার ছবি বিক্রির বিতর্ক সামনে চলে আসায় শাসক দল খুবই বিব্রত৷ সোমবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল, জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন এবং রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছিলেন, তাঁদের আয়ের কিছুই লুকানোর নেই৷ দল নিয়মিত আয়কর রিটার্ন দিয়ে আয়ের সব কিছু জানিয়ে দেয়৷ তবে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি কে বা কারা কিনেছেন, তা তাঁরা বলতে অস্বীকার করেন৷ মঙ্গলবার কলকাতায় এক সাংবাদিক বৈঠকে এবং পরে বাসন্তীতে নির্বাচনী সভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, 'তৃণমূলের ব্যালান্স শিটে সব তথ্য সত্য, এটাই বা কে বলল?' তাঁর দাবি, সারদা-কেলেঙ্কারি নিয়ে সিবিআই তদন্ত হবেই৷ তার পর দিদির (মমতা) দলের প্রায় সব নেতা-মন্ত্রী আলিপুর এবং প্রেসিডেন্সি জেলে যাবেন৷'

তমলুকে এক সভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর এমনই দুরবস্থা যে, তাঁকে প্রতারক সুদীপ্ত সেনের সার্টিফিকেট নিতে হচ্ছে৷' তিনি এদিনও বলেন, 'ইডি সবে কান টেনেছে৷ কান টানলে এর পর মাথাও আসবে৷ সিবিআই তদন্ত হলে সব প্রকাশ্যে আসবে৷ মুখ্যমন্ত্রী আর বেশি দিন দোষীদের আড়াল করতে পারবেন না৷'

মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-বিতর্ককে এদিন আরও উসকে দিয়েছেন দলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষ৷ বিধাননগর আদালতে তোলার আগে তিনি বলেন, 'সুদীপ্ত সেনের কথা ঠিক নয়৷' তাঁর অভিযোগ, শাসক দল সারদার সুবিধাভোগীদের আড়াল করছে৷ মুখ্যমন্ত্রীও একই কাজ করে চলেছেন৷ পুলিশ আবার সরকারের দালালি করছে৷ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা থেকে কুণালবাবুকে নিবৃত্ত করার জন্য পুলিশ তাঁকে ঠেলে ভ্যানে তুলে দেয়৷ সেই অবস্থাতেই তিনি বলতে থাকেন, 'কেন মন্ত্রী মদন মিত্র এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিত্‍ কর পুরকায়স্থকে পুলিশ আজও জেরা করছে না৷ আমি বারবার বলছি, আমার অনেক কিছু বলার আছে৷ ইডি আমাকে এবং সুদীপ্ত সেনকে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করুক৷ পুলিশ আমাকে নানা ভাবে বাধা দিচ্ছে৷' পুলিশকে উদ্দেশ্য করে এক সময় তাঁকে বলতে শোনা যায়, 'আপনারা আমাকে বলতে বাধা দিলে আমি এখানেই বসে পড়ব৷' বিধাননগর আদালত থেকে বেরিয়ে আসার পর ফের তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন৷ তখনই পুলিশ তাঁকে ঠেকাতে তত্‍পর হয়ে ওঠে৷ চারটি থানার পুলিশ নিয়ে আসা হয় তাঁকে বাগে আনতে এবং সাংবাদিকদের কব্জা করতে৷

এদিন বালুরঘাটের তৃণমূল প্রার্থী নাট্যকর্মী অর্পিতা ঘোষ এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, ইডি তাঁকে ভাউচার সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন করেনি৷ সারদার কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা আর্থিক ব্যাপারেও তাঁকে জেরা করা হয়নি৷ তাঁর আরও দাবি, ইডি তাঁকে ফের ডাকবে বলেও জানায়নি৷ তবে অর্পিতা জানিয়েছেন, তদন্তের প্রয়োজনে তিনি তাদের সহযোগিতা করবেন৷

মেদিনীপুরে এক সভায় পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, 'রোজই আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ইডি আমাকে ডেকেছে কি না৷ কিন্ত্ত এখনও পর্যন্ত আমাকে কেউ ডাকেনি৷ দিল্লি যেন মনে রাখে, তোমাদের যেমন ইডি আছে, আমাদের তেমন দিদি আছে, যাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷'

আমহার্স্ট স্ট্রিট ধর্ষণ-কাণ্ডে ধোঁয়াশা

আমহার্স্ট স্ট্রিট ধর্ষণ-কাণ্ডে ধোঁয়াশা

এই সময়: আমহার্স্ট স্ট্রিট ধর্ষণ-কাণ্ডে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার না হলেও অভিযোগের 'চরিত্র' নিয়ে ধোঁয়াশা বাড়ছে পুলিশের৷ ঘটনার পর দু'দিন কেটে গেলেও বুধবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনার জড়িত সন্দেহে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি লালবাজার৷ তবে তাপস নামধারী মেডিক্যাল কলেজের যে 'গাইনোকলজিস্ট'-এর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী, সেই অভিযোগ প্রশ্ন বাড়াচ্ছে তদন্তকারীদের৷

অভিযোগকে কেন্দ্র করে সে সব ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, সেগুলি হল: (এক) সোমবার রাতে বিবেকানন্দ রোড-বিধান সরণি সংযোগস্থলে দ্বিতীয়বার 'এই মেয়ে, এই মেয়ে' বলে যিনি তাকে ডাকলেন, তাকে চিনতে না পারলেও কেন তার সঙ্গে সংকীর্ণ গলিতে গেলেন তিনি? (দুই) যদি তাপস জোর করে তাঁকে গলিতে নিয়ে যান, তাহলে উক্ত সংযোগস্থল থেকে সেদিকে যাওয়ার সময় তিনি চিত্‍কার করলেন না কেন? (তিন) তাপস ওই ছাত্রীকে বলেছিলেন, তাঁর শরীরের ঊর্ধ্বাংশের 'বৃদ্ধি' ঠিকমতো হচ্ছে না৷ ছাত্রীর মা নাকি তাপসকে তাঁর দেখভাল করতে বলেছেন৷ ঊর্ধ্বাংশের 'বৃদ্ধি' হচ্ছে না বলে তাঁকে যখন 'টপ' খুলতে বলেছিলেন তাপস, তখনই বা কেন চিত্‍কার করেননি তিনি? (চার) ছাত্রীর অভিযোগ, তাঁকে জড়িয়ে ধরেছিলেন তাপস৷ সেই সঙ্গে তাঁকে 'বাধ্য' করেছিলেন, তিনি যেন তাপসকে জড়িয়ে ধরেন৷ তখনও কেন ওই ছাত্রী প্রতিবাদ করেননি?

মেডিক্যাল কলেজে খোঁজ করে অবশ্য তাপস নামের কাউকে পায়নি পুলিশ৷ অভিযোগকারিণীর কাছ থেকে তাঁর শারীরিক বিবরণ শুনে তাপসের খোঁজ করছে লালবাজার৷

ওয়েব প্রযুক্তি কাজে এল না ভোটের নজরদারিতে

ওয়েব প্রযুক্তি কাজে এল না ভোটের নজরদারিতে

evm
সুগত বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় সাফল্য এলেও প্রযুক্তির ত্রুটিতে রাজ্যে তৃতীয় পর্যায়ের লোকসভা ভোটে ওয়েবে স্পর্শকাতর বুথের নজরদারি ব্যবস্থা বিশেষ কাজেই এল না৷ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর থেকে এ জন্য লিঙ্ক-ফেলিওরকেই দায়ী করা হয়েছে৷

বুধবার ভোট হয়েছে চার জেলার ৯টি লোকসভা কেন্দ্রে৷ বুথের সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার ৩৩০৷ এর মধ্যে ৮ হাজার ৩১৪টি বুথই স্পর্শকাতর বা অতি-স্পর্শকাতর৷ আর এই সব বুথে নজরদারি চালাতে হরেক রকম আয়োজন ছিল নির্বাচন কমিশনের৷ গুচ্ছ ব্যবস্থার অন্যতম অত্যাধুনিক ওয়েব-সম্প্রচার৷ শেষে একটা কিন্ত্ত রয়েই গেল৷

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর থেকে জানা গিয়েছে, অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য শুধু সরকারি বিএসএনএল পরিষেবা নয়, এমটিএস, ভোডাফোন, রিলায়েন্স, এয়ারটেল, এয়ারসেল-সহ বেসরকারি থ্রি-জি পরিষেবার সাহায্য নেওয়া হয়েছিল৷ মোট ৩২৮টি বুথে ব্যবস্থা করা হয়েছিল ওয়েব-সম্প্রচারের৷ কিন্ত্ত সার্ভারে গোলমাল থাকায় সকাল থেকেই বেশির ভাগ বুথই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে৷ কখনওই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর থেকে পঞ্চাশ শতাংশ বুথেও এই ব্যবস্থাকে হাতিয়ার করে নজরদারি চালানো যায়নি৷ ফলে দিনের বিভিন্ন সময়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি শাসকদলের বিরুদ্ধে এজেন্টকে বসতে না দেওয়া, বুথ দখল, ছাপ্পা ভোটের হাজারও অভিযোগ তুললেও টের পায়নি কমিশন৷ কারণ, কমিশনের কম্পিউটার মনিটারে যে বুথের ছবি পাওয়া যাচ্ছে, তা দেখলে মনে হবে, ভোট চলছে নিরুপদ্রবেই৷

আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের খানাকুলে একটি বুথের ছবিতে শুধু ভেসে ওঠে এক প্রার্থীর এজেন্টের মুখ৷ অগত্যা টিভিই ভরসা৷ টিভিতেই দেখা যায়, আরামবাগের মৈগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য এক বয়স্ক ব্যক্তিকে নিয়ে ভোট দেওয়াতে সটান ঢুকে পড়ছেন কাপড়-ঘেরা অংশে৷ মঙ্গলকোটেও একটি মাদ্রাসায় একই ঘটনা দেখে কমিশনের পক্ষ থেকে তত্‍ক্ষণাত্‍ ব্যবস্থা নেওয়া হয়৷ প্রযুক্তি নয়, নজরদারিতে নিযুক্ত ২ হাজার ৮৮৯ জন মাইক্রো-অবজারভারই ছিলেন এ দিন কমিশনের বিপত্তারণ৷
http://eisamay.indiatimes.com/state/web-technology-proved-to-be-a-failure-in-bengal-polls-3rd-phase/articleshow/34438833.cms?

ভোট আর গরমের গুঁতোয় অদৃশ্য বাস, ভোগান্তি চরমে

ভোট আর গরমের গুঁতোয় অদৃশ্য বাস, ভোগান্তি চরমে

bus
এই সময়: মৌলালির মোড়ে প্রায় আধ ঘণ্টা তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করেও হাওড়া যাওয়ার বাস পেলেন না ভদ্রলোক৷ অগত্যা কয়েক গুন বেশি খরচের ট্যাক্সিতেই চড়তে হল তাঁকে৷
শ্যামবাজারের বাসিন্দা পরিতোষ হালদার হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরার জন্য দু'ঘণ্টা আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বুধবার সকালে৷ কিন্ত্ত রাস্তায় বাস চলাচলের হাল দেখে মাথায় হাত পড়ল তাঁর৷ এমনকী ট্যাক্সিরও দেখা নেই৷ যে দু'-একটি ট্যাক্সির দেখা মিলল, সেগুলি আবার হাওড়া যেতে নারাজ৷ যুক্তি, ভোটের মধ্যে হাওড়া যাওয়া যাবে না৷ ট্রেন ফস্কে যাওয়ার আশঙ্কায় এক আত্মীয়ের গাড়িতেই হাওড়া রওনা দেন তিনি৷

গত দু'দিনে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেকেরই৷ এক দিকে হাওড়ায় ভোটের উত্তাপ, অন্য দিকে চাঁদিফাটা গরম৷ তার জেরে গত দু'দিন হাওড়ার পাশাপাশি কলকাতাতেও বাস চলাচল কমেছে অস্বাভাবিক ভাবে৷ দিনের ব্যস্ত সময়ে শহরের পথে বাস না থাকায় বিপাকে পড়ছেন নিত্যযাত্রীরা৷ ধর্মতলায় কে সি দাসের সামনে বাসের প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়েছিলেন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী সুকান্ত চক্রবর্তী৷ ক্ষোভ উগরে দিয়ে বললেন, 'শুধু ভোটের ঘাড়ে দোষ চাপালে হবে না৷ গত এক বছর ধরেই রাস্তায় বাসের সংখ্যা ক্রমে কমছে৷ এখন তীব্র গরমে দুপুরের দিকে আরওই বাস কম৷ কিন্ত্ত যাঁদের নিরুপায় হয়ে এই গরমেও বাড়ি থেকে বের হতে হয়, তাঁদের নাস্তানাবুদ দশা নিয়ে কি সরকার কিছুই ভাববে না?'

অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়েরও স্বীকারোক্তি, 'গত রবিবার থেকেই রাস্তায় বাস-মিনিবাসের সংখ্যা কমেছে৷ হাওড়ার পাশাপাশি, দুই মেদিনীপুর এবং দুই চব্বিশ পরগনার জেলা প্রশাসনও নির্বাচনের কাজে প্রচুর বাস তুলে নিয়েছে৷ আর তার ফলেই রাস্তায় বেরিয়ে নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ৷'

বুধবার হাওড়া এবং উলুবেড়িয়া কেন্দ্রে লোকসভা ভোটের জন্য তিন দিন আগেই বহু বাস তুলে নেয় হাওড়া জেলা প্রশাসন৷ তাতে হাওড়া শহর এবং গ্রামীণ অঞ্চলের পরিবহণ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে৷ ধাক্কা খেয়েছে শহর কলকাতার পরিবহণ ব্যবস্থাও৷ নিত্যযাত্রীদের অনেকেই গত কয়েক দিন ধরে নদীপথেই যাতায়াত করছেন৷

ভোটের মুখে রাজ্যে গণ-পরিবহণ ব্যবস্থা ধাক্কা খাওয়া অবশ্য নতুন ঘটনা নয়৷ পরিবহণ দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, 'গত লোকসভা ভোটের মতো এ বারও নির্বাচনের কাজের জন্য বাস তুলে নিয়েছে প্রশাসন৷ তবে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে মূলত গরমের কারণেই৷'

সন্দেশখালিতে বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য আক্রান্ত

সন্দেশখালিতে বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য আক্রান্ত
এই সময়, বারাসত: প্রচারে বেরিয়ে এক নির্যাতিতা কিশোরীর বাড়ি যাওয়ার পথে বুধবার সন্দেশখালিতে আক্রান্ত হলেন বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য৷ স্থানীয় লোকজনের চেষ্টায় তাঁকে উদ্ধার করা গেলেও দুষ্কৃতীদের হামলায় ১৫ জন বিজেপি কর্মী জখম হন৷ তাঁদের মধ্যে তিন জন হাসপাতালে ভর্তি৷ শমীকবাবুর অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা তৃণমূল আশ্রিত৷ তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করা হয়৷ যদিও তৃণমূল নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷ উল্টে তৃণমূল নেতা এবং খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেন, শমীকবাবুর নেতৃত্বে বিজেপির লোকজন তৃণমূল সমর্থকদের উপর হামলা করেছে৷ 

গত সোমবার রাতে বেড়মজুর ২ পঞ্চায়েতে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি হয়৷ ডাকাতরা পর্যাপ্ত টাকা না-পেয়ে ওই বাড়ির এক কিশোরীকে তুলে নিয়ে যায়৷ পরে এলাকার লোকজন খোঁজ করে ঘণ্টাখানেক পর একটি ধানখেত থেকে প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন৷ সে এখন বসিরহাট হাসপাতালে ভর্তি৷ বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ শমীকবাবু দলের কয়েক জন কর্মীকে নিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন৷ ধুপখালির কাছে এলাকার কয়েক জন লোক শমীকবাবুদের গাড়ি দাঁড় করিয়ে বলে, গ্রামে উত্তেজনা আছে, সেখানে যাওয়া যাবে না৷ তাতে কান না দিয়ে এগিয়ে গেলে ওই লোকেরা শমীকবাবুর গাড়ির উপর চড়াও হয়৷ গাড়ি ভাঙচুর করা হয়৷ বাধা দেওয়ায় লাঠি, রড ইত্যাদি নিয়ে তারা বিজেপি সমর্থকদের আক্রমণ করে৷ শমীকবাবু জানান, ব্লক তৃণমূল নেতা শেখ শাজাহানের নেতৃত্বে ওই হামলা হয়৷ পরে তাঁরা থানায় লিখিত অভিযোগ জানান৷ শেখ সাজাহানের অভিযোগ, ধর্ষণ নিয়ে রাজনীতি করতে এসেছিল বিজেপি৷ এলাকার লোকজন তা রুখে দিয়েছে৷ এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই৷ 

‘শান্ত’ লাভপুর ৪০ হাজার লিড দেবে, বলছেন নিশ্চিন্ত মনিরুল

‘শান্ত’ লাভপুর ৪০ হাজার লিড দেবে, বলছেন নিশ্চিন্ত মনিরুল

mqdefault
কমলেশ চৌধুরী ও হেমাভ সেনগুপ্ত

লাভপুর (বীরভূম): দুপুর গড়িয়ে বিকেল, ভোটগ্রহণ পর্ব প্রায় শেষের পথে৷ নবগ্রামের বাড়িতে বসে লস্যির গ্লাসে আয়েসি চুমুকের সঙ্গে মনিরুল ইসলামের মুখে শুধুই শান্তির কথা৷ তিনি বলছেন, 'আজ কিন্ত্ত কোনও চ্যানেল লাভপুরের গণ্ডগোল দেখাতে পারছে না৷ মানুষ শান্তিতেই ভোট দিয়েছেন৷' এলাকায় খুন-জখম হলেও হয়তো শাসকদলের নেতা হিসেবে তাঁকে শান্তির বাণীই আওড়াতে হত৷ তবে সত্যিই সারা রাজ্যের নজর থাকা লাভপুর তো বটেই, গোটা বীরভূম জেলায় তেমন কোনও হিংসার খবর ছিল না বুধবার৷

এই জেলায় দু'টি লোকসভা কেন্দ্র বীরভূম ও বোলপুরে ভোট হয়েছে এ দিন৷ বোলপুরে অবশ্য দুপুর না-হতেই ভোটে প্রহসনের অভিযোগ তুলে ৩০০-এরও বেশি বুথে পুনর্নির্বাচন দাবি করেন সিপিএম প্রার্থী রামচন্দ্র ডোম৷ তাঁর দেওয়া তথ্যই বলছে, লাভপুর বিধানসভা এলাকায় সেই বুথের সংখ্যাটা বড়জোর ৮-১০টি৷ আর যে বুথগুলিতে রামবাবু আবার ভোটগ্রহণ চান, সেগুলি পড়েছে নানুর, বোলপুরের পাশাপাশি বর্ধমানের মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম, আউসগ্রামে৷

বিকেল পর্যন্ত লাভপুর থানায় নির্বাচনী অশান্তির একটি মাত্র অভিযোগ জমা পড়েছে৷ সেটা বিরোধীদের এজেন্টকে বসতে না-দেওয়া নিয়েই৷ সকাল ছ'টা নাগাদ বিপ্রটিকুরি গ্রামের হাইস্কুল বুথে সিপিএমের পোলিং এজেন্ট হয়ে ঢুকতে যান সঞ্জিত্‍ ভট্টাচার্য৷ অভিযোগ, তখন তৃণমূলের লোকজন তাঁকে রাস্তায় ফেলে বাঁশ, লোহার রড দিয়ে পেটায়৷ মাথায় তিনটি সেলাই পড়েছে সঞ্জিত্‍বাবুর৷ ঘটনাস্থল ঘুরে এসে লাভপুর থানার ওসি দেবাশিস ঘোষ বলেন, 'আমরা অভিযোগ পেয়ে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করেছি৷ কিন্ত্ত অভিযুক্তরা পালিয়ে গিয়েছে৷ আমরা ধরার চেষ্টা করছি৷' বিপ্রটিকুরি গ্রামে গিয়ে অবশ্য দেখা হয়ে গেল তৃণমূলের নিধু দাসের সঙ্গে, মারধরে যিনি অন্যতম অভিযুক্ত৷ তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে আর এক অভিযুক্ত ঝুলন দাস৷ নিধুবাবু বলেন, 'উনি সাইকেলে যাচ্ছিলেন৷ ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে মাথা ফেটেছে৷' লাভপুরে অন্য অভিযোগটি সন্ধে নাগাদ জানান রামচন্দ্র ডোম নিজেই৷ তিনি বলেন, 'রাইপুর গ্রামে আমাদের মহিলা ভোটকর্মী তৃণমূলের লোকজনের হাতে বেধড়ক মারধর খেয়ে আহত৷ হাসপাতালে ভর্তি৷'

মনিরুল ইসলাম অবশ্য দুপুরে জানিয়েছিলেন, 'বিরোধীরা উল্টে রাইপুরে আমাদের পার্টি অফিস ভেঙে দিয়েছে৷ আমি শুনেই ছেলেদের শান্ত করতে ছুটে গিয়েছিলাম৷ সব জায়গায় ছেলেদের বলেছি, বিরোধীরা যেন কিছু বলার সুযোগ না পায়৷' লাভপুরের বিধায়কের পাশে দিনভর দেখা গেল রমজান আলিকে, যিনি ১৮ বছর সিপিএমের বীরভূম জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন৷ ছিলেন লাভপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক৷

বিধায়ক বললেন, 'লাভপুরে যা উন্নয়ন হচ্ছে, এর পর বিরোধীদের সবাই আমাদের দলে চলে আসবে৷ সামনের বিধানসভা ভোটে সিপিএম ৯৫ শতাংশ বুথে পোলিং এজেন্ট দিতে পারবে না৷' বিরোধীদের পুনর্নির্বাচনের দাবির প্রসঙ্গ তুললে বললেন, 'এমনিতেই ৪০ হাজার লিড পাব লাভপুর থেকে, পুনর্নির্বাচন হলে মার্জিন আরও বাড়বে৷' স্ত্রী রোসুলা, ছেলে আসিফ, মেয়ে ফারহিনকে নিয়ে সকাল সকাল ভোট দিয়েছেন তিনি৷ বাকি দিনটা পার্টি অফিস আর গাড়ি নিয়ে এলাকা চক্কর মেরে কাটালেন৷

লাভপুরের অনেক তৃণমূল কর্মীর অবশ্য আরও একটা অনিশ্চিত দিন কাটল৷ লাঘাটার দেবাশিস ওঝা সকালে আক্ষেপ করছিলেন, 'নির্বাচন কমিশন এত আশ্বাস দিল! অথচ, বহু বুথে তো কেন্দ্রীয় বাহিনীই দেখতে পেলাম না৷' দলের ঘরছাড়া চয়ন, রামকুমার, সুজন, হিরণদের মতো অনেকে ভোট দিতেও পারলেন না৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনে অনুব্রত গোষ্ঠীর ভূমিকায় রাগে-ক্ষোভে 'নির্দল' হয়ে যাওয়া তৃণমূল কর্মী বিরাজুল শেখ বুথ থেকে বেরিয়ে খোলাখুলিই বললেন, 'ভোটটা তৃণমূলের বিরুদ্ধেই দিয়েছি৷'

বোলপুর কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের দাবি উঠলেও তেমন অভিযোগ ছিল না কোনও দলেরই৷ বীরভূম কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ফুরফুরে মেজাজে৷ তিনি বলেন, 'ভোট ভালোই হয়েছে৷' তবে এ জন্য সবার প্রতি তাঁর 'আই লাভ ইউ' বার্তার সাফল্য দাবি করছেন অভিনেতা জয়৷ বীরভূমের অভিনেত্রী প্রার্থী, তৃণমূলের শতাব্দী রায় বলেন, 'আমি খুশি যে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিতে পেরেছেন৷ বেশি ভোট পড়া শুভ সঙ্কেত৷' সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য অভিযোগ করেন, 'কেন্দ্রীয় বাহিনী বহু বুথে ছিল না৷ যেখানে ছিল, সেখানে তাদের বসিয়ে রাখা হয়েছে৷'

মণিরুলের লাভপুরই যদি শান্ত থাকে, তবে আর ঝামেলা খুঁজে লাভ কি?
http://eisamay.indiatimes.com/election-news/monirul-hussain-sure-of-tmc-win-at-birbhum/articleshow/34440995.cms?

আচরণবিধি ভাঙায় মোদীর বিরুদ্ধে ২টি এফআইআর

আচরণবিধি ভাঙায় মোদীর বিরুদ্ধে ২টি এফআইআর

namo
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক - ভোট দিয়ে বেরিয়ে বিজেপির নির্বাচনী প্রতীক দেখানোয় বিপাকে নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নমোর বিরুদ্ধে দাখিল হয়েছে দু'টি এফআইআর। দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর দু' বছরের জেল হতে পারে। তাঁর বিরুদ্ধে বেদম চটেছে নির্বাচন কমিশনও। ভোটারদের প্রভাবিত করা চেষ্টায় মোদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মোদী বেশ কয়েকটি ধারায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে জানিয়েছে কমিশন। বুধবার বিকেল ৬টার মধ্যে মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগের রিপোর্ট জমা করতে গুজরাত প্রশাসনকেও নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এদিন গুজরাটের আমেদাবাদ কেন্দ্রে ভোট দেন এনডিএ-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। ভোট দিয়ে বেরিয়ে কালিলাগা আঙুল সমর্থকদের দেখান তিনি। তারপর বিজেপির নির্বাচনী প্রতীকও দেখান। সেই সময় পোলিং বুথে উপস্থিত ভোটারদের প্রভাবিত করার মতো বক্তব্যও তিনি রেখেছেন বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানায় কমিশন। অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখে নমোর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।

এদিকে ভোটের কালি লাগা আঙুলের সেলফি ট্যুইটারে পোস্ট করলেন নমো। এবার নির্বাচনে তারকা ভোটার থেকে আম আদমি, প্রায় সকলেই ভোট দিয়ে কালিমাখা আঙুলের ছবি পোস্ট করেছেন। চলতি লোকসভা নির্বাচনের এই ট্রেন্ড থেকে পিছিয়ে রইলেন না এনডিএ-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। এদিন ভোট দিয়েই সেলফি তুলেছেন নমো। সাদা কুর্তা পরিহিত সেই ছবি পোস্ট করেছেন ট্যুইটারেও।

মোদীর সভা নিষিদ্ধ করার হুঁশিয়ারি মমতার

মোদীর সভা নিষিদ্ধ করার হুঁশিয়ারি মমতার


mamata
এই সময়, আসানসোল এবং কুলতলি: নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সুর আরও এক ধাপ চড়িয়ে এ বার তাঁর সভা নিষিদ্ধ করার হুমকি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বুধবার আসানসোলে এক নির্বাচনী জনসভায় তিনি মোদীর নাম না-করে বলেন, 'বাংলা বলে এখনও আপনার সভা-সমিতি নিষিদ্ধ করিনি৷ এটা আমাদের ভদ্রতা, সৌজন্যতা৷ যে ভাবে এই রাজ্যে এসে আপনি জাতিদাঙ্গা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন, তাতে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে আমি আপনার সভাগুলো নিষিদ্ধ করতে পারতাম৷' এদিনও তিনি মোদীকে 'দাঙ্গাবাজ' আখ্যা দিয়ে বলেন, 'আপনার মতো একজন দাঙ্গাবাজ কখনও প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন না৷' বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে মমতার আরও কটাক্ষ, 'আপনি তো মুসলমানদের দেখতে পারেন না৷ ২০০২ সালে গুজরাটে আপনার সরকার ধরে ধরে মানুষ খুন করেছে৷'

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট পেতেই মমতা বিজেপির এই নেতার বিরুদ্ধে 'মুসলিম আবেগে সুড়সুড়ি দেওয়া' কথাবার্তা আরও বেশি করে বলছেন৷ তৃণমূলের অন্দরের খবর, এ বারের ভোটে মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে৷ মুখ্যমন্ত্রী গত দু'বছর ধরেই বিভিন্ন সভা-সমিতিতে দাবি করছেন, তিনি মুসলিমদের উন্নয়নের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ করে ফেলেছেন৷ বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা মুখ্যমন্ত্রীর ওই দাবির সঙ্গে একমত নন৷ তাঁদের মধ্যে অনেকেই মমতার ওই দাবিকে প্রকাশ্যেই অসত্য বলে বর্ণনা করেছেন৷ এ সব কারণেই মুসলিম সহানুভূতি পাওয়ার জন্য তৃণমূল নেত্রী মোদীকে 'মুসলিম বিরোধী' তকমা দিচ্ছেন৷

আসানসোলের আগে মমতা এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি এবং ক্যানিংয়ে দুটি সভায় ভাষণ দেন৷ তিন সভাতেই মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার দেখতে অনেকে হাজির হয়েছিলেন৷ আকাশ থেকে তাঁর হেলিকপ্টার নামার পরই বহু মানুষ মাঠ ছাড়তে শুরু করেন৷ আসানসোলে মমতার সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকেল ৪টেতে৷ তিনি সভাস্থলে আসেন ৪টে ৪০ মিনিটে৷ তখন মাঠে মাত্র হাজার তিনেক লোক৷ তাঁকে মঞ্চে বসিয়েই একে একে মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী মলয় ঘটক, প্রার্থী দোলা সেন প্রমুখ ভাষণ দেন৷ এক সময় দোলাকে নেত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে শোনা যায়, 'আরও লোক হবে৷ তার পর আপনি বলবেন৷' মমতা প্রায় এক ঘণ্টা ঠায় বসে থাকেন৷ পরে ৫টা ৩৮ মিনিটে তিনি বলতে ওঠেন৷ তখন মেরেকেটে লোক হাজার ছয়েক৷ শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের তো কপালে ভাঁজ৷ তাঁদের অনেককে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা যায়৷ জেলার এক বড় মাপের তৃণমূল নেতার দাবি, ভোটের জন্য অধিকাংশ বাস তুলে নেওয়ায় অন্য এলাকা থেকে লোক আনা যায়নি৷ এত কম লোক দেখে মঞ্চ থেকেই মমতাকে দলের নেতাদের ধমকধামক দিতে শোনা গিয়েছে৷

মোদী ছাড়া কংগ্রেস এবং সিপিএমকেও মমতা যথারীতি একহাত নেন৷ কুলতলি এবং ক্যানিংয়ের সভায় মুখ্যমন্ত্রী নেতাই-কাণ্ডে সিআইডির প্রশংসা করে বলেন, 'নেতাইয়ের গণহত্যার ঘটনায় সিবিআই পলাতক সিপিএম নেতাদের ধরতে পারল না৷ অথচ সিআইডি তাঁদের ধরে ফেলল৷'

প্রতিক্রিয়া বিমান বসু, মিশ্রর বুথ দখলের আশঙ্কাই সত্যি হলো ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন

প্রতিক্রিয়া বিমান বসু, মিশ্রর 
বুথ দখলের আশঙ্কাই সত্যি হলো

ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন

নিজস্ব প্রতিনিধি

কলকাতা, ৩০শে এপ্রিল— তিন দফার ভোটগ্রহণের মধ্যে বুধবারের ভোটগ্রহণ পর্বকে সবচেয়ে খারাপ পর্ব বলে চিহ্নিত করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। বুধবার সাংবাদিকদের বিমান বসু বলেছেন, যতদূর খারাপ হওয়া সম্ভব ততদূর খারাপ নির্বাচন হলো তৃতীয় দফায়। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আশঙ্কার কথা জানিয়ে আগেই যে যে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম কমিশন তা নেয়নি। ফলে সকাল থেকেই একের পর এক বুথ থেকে বামফ্রন্টের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে, বুথ দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস ভোটারদের ভোট দিতে দেয়নি। 

সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা রক্ষিত হয়নি। কেন্দ্রীয় বাহিনী অপর্যাপ্ত ছিল, যা ছিল তাও বাস্তবে ঠিকমতো মোতায়েন করা হয়নি। নির্বাচন কমিশনের বাকি যে সব ব্যবস্থা ছিল তাও কার্যকর করা হয়নি। মাইক্রো অবজার্ভার, ভিডিও রেকর্ডিং, ওয়েব কাস্টিং ব্যবস্থা— কোনোটাই কাজ করেনি।

মিশ্রের বক্তব্য, প্রথম দু’দফার ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো সম্ভাবনা নেই বুঝে তৃতীয় দফায় তৃণমূল পরিকল্পনা করেই নেমেছিল। এদিনের ঘটনাবলী থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী পর্যায়গুলিতে আমাদেরও প্রস্তুত হয়ে নামতে হবে। তৃতীয় দফার নির্বাচনে কমিশনের যে সব শিথিলতা ও ছিদ্র প্রকটভাবে দেখা গেল, তার থেকে শিক্ষা নিয়ে কমিশনেরও উচিত পরবর্তী দফাগুলিতে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ রাখার ব্যবস্থা করা। আর জনগণকেও শিক্ষা নিয়ে নিজেদের ভোটাধিকার রক্ষা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সব পক্ষেরই সতর্কতা দাবি করছে এদিনের ঘটনাবলী।

আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণকে সম্পূর্ণ প্রহসন বলে উল্লেখ করে মিশ্র বলেছেন, কিছু বুথ বাদ দিলে আরামবাগে কার্যত কোনো ভোটগ্রহণই হয়নি। নির্বাচন কমিশন সেখানে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বাকি লোকসভা কেন্দ্রগুলির মধ্যে ৮২৬টি বুথে পুনর্নির্বাচন দাবি করা হয়েছে। এটা কম বেশি ৫শতাংশের মতো হবে। তৃণমূলের সন্ত্রাস, ভোটারদের ভোটদানে বাধা এর চেয়েও অনেক বেশি বুথেই হয়েছে। কিন্তু পুনর্নির্বাচন দাবির কিছু প্রাকশর্ত আছে। আমরা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের মতো সেগুলি বিবেচনা করেই সুনির্দিষ্ট কিছু বুথে পুনর্নির্বাচন দাবি করেছি।

এদিন দুপুর ১টার সময় প্রাথমিকভাবে পাওয়া খবরের ভিত্তিতেই বিমান বসু সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, আগে থেকে পরিকল্পনা করে তৃণমূল বুথ দখল করেছে। প্রথম দুই দফার ভোটগ্রহণ দেখার পরে আমরা এরকম ভোটগ্রহণ প্রত্যাশা করিনি। সকাল থেকে একের পর এক বুথে হামলা করে বামফ্রন্টের এজেন্টদের বের করে দেওয়ার খবর পাচ্ছি। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। কমিশনের উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল। যেখানে যেখানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, সেখানেই নির্বাচন কমিশনের উচিত পুনর্নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।

বসু বলেন, আমরা আগে থেকেই আশঙ্কার কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করতে বলেছিলাম ২০১৩সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন ও পৌর নির্বাচনের ভিত্তিতে। সেই অনুযায়ী আমরা তালিকাও দিয়েছিলাম। কিন্তু তা মানা হয়নি। ২০০৯সাল এবং ২০১১সালের নির্বাচনের ভিত্তিতে স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করলে কাজ হবে কী করে!

তবে এসব সত্ত্বেও এদিন ভোটগ্রহণ হওয়া ৯টি লোকসভা কেন্দ্রেরও সংখ্যাগরিষ্ঠ কেন্দ্রে বামফ্রন্টই জয়ী হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি বলেছেন, আক্রমণ সন্ত্রাস সত্ত্বেও বহু মানুষ ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে ভোট দিয়েছেন। ৮০শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। এরজন্য আমরা মানুষকে অভিনন্দন জানাই।

তিনি বলেন, নির্বাচন ঘোষণার পরে আমাদের ৫জন কর্মী শহীদ হয়েছেন। আজও নির্বাচনে ৩৫জনের বেশি আহত হয়েছেন। আজ ৫জন বোমার আঘাতে আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গলসীতে একজনের অবস্থা গুরুতর। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবকাস্টিং ব্যবস্থাসহ পদ্ধতিগুলি ব্যর্থ হলেও মিডিয়াতেই দেখা গেছে ভোটারদের হাতে কালি লাগিয়ে তাদের ভোট দিয়ে দিচ্ছেন শাসক দলের কর্মীরা। মিডিয়ার সেই রিপোর্টিং দেখে কমিশন প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দিয়েছে। শ্রীরামপুর কেন্দ্রে আমাদের বামফ্রন্টের প্রার্থী তীর্থঙ্কর রায় ডোমজুড়ের বাঁকড়ার একটি বুথে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরেও নির্বাচন কমিশন যদি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দাবি করেন তাহলে সেটাকে অতিরঞ্জিত ছাড়া কী বলবো!
- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=55526#sthash.BALsfLiQ.dpuf

তৃণমূল যতো ভোট লুটে নামবে, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় মানুষও ততোই মরিয়া হয়ে উঠবেন গণশক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বললেন সূর্যকান্ত মিশ্র

তৃণমূল যতো ভোট লুটে নামবে,
ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় মানুষও ততোই মরিয়া হয়ে উঠবেন

গণশক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বললেন সূর্যকান্ত মিশ্র

Image

এটা সাধারণভাবে বোঝা গিয়েছিলো যে প্রথম দুই দফায় যেভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে সেভাবে যদি ভোটগ্রহণ হয়, মানুষ যদি ভোট দিতে পারেন তাহলে মানুষের রায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাবে। কিন্তু তৃতীয় দফার ভোটে দেখা গেলো তৃণমূল কংগ্রেস বেশ কিছু জায়গায় আইনকানুনের পরোয়া না করে ব্যাপক হিংসা ও বুথদখলের রাস্তা নিয়েছে। তবে তৃণমূল যতো ভোট লুটে নামবে, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় মানুষও ততোই মরিয়া হয়ে উঠবেন। গণশক্তিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্য মিশ্র। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রসূন ভট্টাচার্য।



প্রশ্ন: লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু প্রথম দুই দফার ভোটগ্রহণের শান্তিপূর্ণ চিত্র তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণে দেখা গেলো না। উত্তরের দিকে প্রথম দুই দফার পরে ভোটগ্রহণের পালা যতোই দক্ষিণবঙ্গে আসছে ততোই কি উত্তেজনা ও অশান্তি বাড়ার ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছেন? 

সূর্যকান্ত মিশ্র: প্রথম দুই দফায় যে ভোটগ্রহণ হয়েছে তাতে দুএকটি কেন্দ্র বাদ দিলে কোথাও তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বামফ্রন্টের সরাসরি লড়াই হয়নি। প্রথম দুই দফায় যেসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়ে গেছে সেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তৃণমূল কংগ্রেস তৃতীয় স্থানে থাকবে। বাকি লোকসভা কেন্দ্রগুলির প্রায় সবকটাতেই লড়াইটা হবে বামফ্রন্টের সঙ্গে তৃণমূলের, সরাসরি। এটা সাধারণভাবে বোঝা গিয়েছিলো যে প্রথম দুই দফায় যেভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে সেভাবে যদি ভোটগ্রহণ হয়, মানুষ যদি ভোট দিতে পারেন তাহলে মানুষের রায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাবে। কিন্তু তৃতীয় দফার ভোটে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস বেশ কিছু জায়গায় আইনকানুনের পরোয়া না করে ব্যাপক হিংসা ও বুথদখলের রাস্তা নিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষিত হয়নি। পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী দেখা যায়নি, তাদের সব জায়গায় কাজে লাগানো হয়নি, রাজ্য পুলিস প্রশাসন বেশ কিছু ক্ষেত্রে শাসকদলের পক্ষ নিতে দেখা গেছে। সাম্প্রতিক কয়েকদিনের মধ্যে তিনজন খুন হয়ে গেছেন। এসত্ত্বেও জনগণ অনেক জায়গায় সন্ত্রাস আক্রমণ উপেক্ষা করে তাঁদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাছাড়া বামপন্থীদের রাজনৈতিক কর্মসূচী, এলাকায় এলাকায় নির্বাচনী কার্যক্রমে, সভা সমাবেশ মিছিলে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থেকে মানুষের মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এতেই তৃণমূল আরো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আত্মবিশ্বাস হারিয়েছেন, স্টার সুপারস্টারদের ছাড়া সভা করতে ভয় পাচ্ছেন। পরাজয়ের এই আতঙ্ক থেকে তৃণমূল মরিয়া হয়ে উঠেছে, বিরোধীদের ওপরে বিশেষত বামপন্থীদের ওপরে আক্রমণ কেন্দ্রীভূত করছে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের কর্মীরাও তাদের আক্রমণ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। আমরা এটাও লক্ষ্য করেছি যে যেখানেই আক্রমণ হচ্ছে, সেখানে প্রতিবাদও হচ্ছে। মানুষ প্রতিরোধ করতে এগিয়ে আসছেন। এটা ঠিক যে মরিয়া শাসকদলের আক্রমণ বাড়ছে, কিন্তু এটাও ঠিক যে মানুষও এসব দেখে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে মরিয়া হয়ে উঠছেন, তাঁদের আটকানোর ক্ষমতা কারো নেই। আক্রমণ যতো বাড়বে, প্রতিরোধের তীব্রতাও ততো বাড়বে। 

প্রশ্ন: আপনি আশা করছেন যে গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে এরাজ্যে যেরকম ভোটগ্রহণ দেখা গেছে এবার তার পুনরাবৃত্তি হবে না? 

মিশ্র: না, হুবহু তার পুনরাবৃত্তি সম্ভব নয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন ও প্রচারে বাধা, বুথদখল, গণনায় কারচুপিসহ নির্বাচিত সদস্য ও কর্মকর্তাকে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে। প্রতি পর্যায়েই আক্রমণ অব্যাহত ছিলো। কিন্তু এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিনে নিজের ভোট নিজে দিতে পারাটাই মুখ্য চ্যালেঞ্জ। একথা ঠিক যে ভারতের নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক এক্তিয়ার ও ক্ষমতা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের থেকে অনেক বেশি। রাজ্য সরকার যেভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে অগ্রাহ্য ও উপেক্ষা করতে পেরেছে তা লোকসভা নির্বাচনে সম্ভব নয়। তবে নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ার ও ক্ষমতা সত্ত্বেও আমরা বামপন্থীরা কোনো মোহ নিয়ে চলি না। শেষ পর্যন্ত মানুষের সংগ্রাম ও সংগঠনের ওপরেই সব কিছু নির্ভর করছে। সেখানে নতুন গতি ও উৎসাহ সঞ্চারিত হচ্ছে, এটাই আসল কথা। 

প্রশ্ন: আপনি মানুষের ওপরে নির্ভরতার কথা বলছেন, কিন্তু অনুব্রত মণ্ডলের মতো তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা, এমনকি তাঁদের মন্ত্রীরাও সরাসরি হুমকি দিচ্ছেন। এগুলি কি ভোটপ্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলবে না? এগুলি ঠেকানোর জন্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় আপনারা সন্তুষ্ট?

মিশ্র: তৃণমূলের নেতাদের যেসব উক্তি, হুমকির কথা আপনি বলছেন সেগুলি তাদের হতাশাজনিত বেপরোয়া মনোভাবের প্রতিফলন। ওরা এখন মানুষকে ভয় পাচ্ছেন, তাই হুমকি দিচ্ছেন। কিন্তু ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে দমন করে রাখা যাবে না। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমরা প্রতিটি ঘটনাতেই অভিযোগ জানাচ্ছি, সবক্ষেত্রে প্রতিকার হচ্ছে তা অবশ্য বলতে পারি না। তৃতীয় দফার ভোটে এক হাজারের বেশি বুথে ভোট প্রহসনে পরিণত হয়েছে। বিশেষ পর্যবেক্ষককে পর্যন্ত অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। অবশ্য যে বুথগুলিতে পুনর্নির্বাচনের দাবি আমরা করেছি সেই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। কিন্তু আমি আবারও বলছি, এই সব ঘটনাবলী থেকে শিক্ষা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে তৎপরতার সঙ্গে তথ্যপ্রমাণসহ অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি সমস্ত বুথ এলাকায় মানুষদের প্রতিবাদ প্রতিরোধে সংগঠিত করতে হবে। সেটাই আমাদের মুখ্য কাজ। 

প্রশ্ন: স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা যাচ্ছে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ করতে। তিনি নির্বাচন কমিশনকে আপনাদের অর্থাৎ বিরোধীদের সঙ্গে এক পংক্তিতে বসিয়ে দিয়েছেন। আপনারা নাকি কমিশনের সঙ্গে বসে তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন...

মিশ্র: এটা একটা ফ্যাসিবাদী প্রবণতা। ফ্যাসিবাদী চরিত্রের একটি লক্ষ্মণই হলো সে সব সময় কল্পিত চরিত্র বা শক্তিকে খাড়া করে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হিসাবে বেছে নেয় এবং সব ঘটনার পিছনে তার বিরোধীদের সম্মিলিত চক্রান্ত দেখতে পায়। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষেত্রে এটা আমরা বারবারই দেখতে পাচ্ছি। তিনি সংবাদমাধ্যমের নাম করে আক্রমণ করছেন। মানবাধিকার কমিশন, জাতীয় মহিলা কমিশন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন এদের সবার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন। ফ্যাসিবাদীরা এভাবে একেক সময়ে একেকজনকে আক্রমণের লক্ষ্য বেছে নেয়। ইতিহাস ঘাঁটলেই দেখতে পাবেন যে ফ্যাসিবাদ যাকে মুখ্যপ্রচারক হিসাবে বেছে নেয় তার অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণতা থাকে। নিজের ছায়াকেও ভয় পায়। মেগালোম্যানিয়ার শিকার হয়ে থাকে। লক্ষণীয় হলো, এই বিষয়ে সঙ্ঘ পরিবার যাকে সারা দেশে মুখ্য প্রচারক হিসাবে নামিয়েছে তাঁর সঙ্গে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। 

প্রশ্ন: সম্প্রতি মালদহে হোটেলের ঘরের এসি মেশিনের ধোঁয়া বা বীরভূমের রাস্তায় পাওয়া বিস্ফোরককে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে হত্যার চক্রান্ত বলেছেন। এগুলিকেও কি আপনি ফ্যাসিবাদী সন্দেহপ্রবণতা বলছেন?

মিশ্র: অবশ্যই। উনি মালদহে নিজের পছন্দের হোটেলে ছিলেন। নিজের পছন্দের হোটেলের এসি মেশিনের ধোঁয়াকেও ভয় পাচ্ছেন। রজ্জুতে সর্পভ্রম ছাড়া কি! তার চেয়েও বড় কথা, মুখ্যমন্ত্রীর এই সব প্ররোচনামূলক মন্তব্যের ফলে উৎসাহিত হয়ে বীরভূমে তৃণমূল কর্মীরা শেখ হীরালাল নামের এক সি পি আই (এম) কর্মীকে খুন করে ফেললো। এটাই তো বিপদ। 

প্রশ্ন: আপনারা চিট ফান্ড নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরেই অভিযোগ করছেন। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ তৃণমূলের কয়েকজন নেতাকে নোটিস পাঠিয়েছে, জেরা করেছে। নির্বাচনে কি এর কোনো প্রভাব পড়বে?

মিশ্র: চিট ফান্ডের বিপদের কথা আজ নয়, আমরা ৩ বছর আগে থেকে বলে আসছি। চিট ফান্ড বিপর্যয় ঘটার আগে থেকে সতর্ক করেছি। গত বিধানসভা নির্বাচনের পরেই আমরা বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে এই বিপদের কথা জানিয়েছিলাম। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান সরকারকেও তা জানানো হয়েছিলো। এতদিনে সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার পরে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির কিছুটা তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তার চেয়েও বেশি তৎপরতা দেখাচ্ছেন বিষয়টি চাপা দিতে। যে আমানতকারীরা টাকা খুইয়েছেন তাঁদের স্বার্থরক্ষার পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রী প্রতারকদের স্বার্থ সুরক্ষিত করার দিকে বেশি নজর দিয়েছেন। প্রমাণ লোপাটের কাজে অসম্ভব তৎপরতা দেখাচ্ছেন। সারদার ব্যাঙ্ক লকার নিয়ে সেই ঘটনাই দেখা গেলো। গৌতম দেব, সুজন চক্রবর্তীর ওপরে পুলিস দিয়ে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে। এসব করে লাভ হবে না, রাজ্যের মানুষ সব দেখছেন, তাঁদের বোকা ভাবাটা ভুল। কেবল নির্বোধরাই মানুষকে বোকা ভাবে। সুপ্রিম কোর্টে সারদা মামলার শেষ পর্যন্ত কী হবে তা দেখা যাবে। কিন্তু ‘জনগণের সুপ্রিম কোর্ট’ যে এর বিরুদ্ধে রায় দেবেন সেই বিষয়ে আমরা আস্থাশীল। 

প্রশ্ন: নরেন্দ্র মোদীও তো এখন সারদা নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বলছেন.... 

মিশ্র: নরেন্দ্র মোদীর কোনো দরকার পশ্চিমবঙ্গের মানুষের নেই। উনি এতদিনে সারদা কেলেঙ্কারির কথা জানলেন! চার মাস আগে উনি যখন ব্রিগেডে এসে ভাষণ দিয়েছিলেন তখন জানতেন না? তখন তো লাড্ডুর লোভ দেখিয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে চিট ফান্ডের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বামপন্থীদেরই লড়তে হবে, মোদী বরং ওঁর দলের ইয়েদুরাপ্পাদের দুর্নীতিগুলো সামলান।

প্রশ্ন: এরাজ্যে বামফ্রন্টের প্রচারে কি তৃণমূল সরকারের স্বৈরতন্ত্র, দুর্নীতি ইত্যাদি বিষয়গুলিই মুখ্য হয়ে উঠছে? এটা তো লোকসভার নির্বাচন, রাজ্যের ইস্যুগুলির থেকে সর্বভারতীয় ইস্যুই কি বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়? 

মিশ্র: বামপন্থীদের প্রচারে সর্বভারতীয় ও রাজ্যের বিষয়গুলিকে সম্পূর্ণ আলাদা করে দেখা হয় না। এগুলি একে অপরের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। আমরা কংগ্রেসের জনবিরোধী নীতি এবং বি জে পি-র সাম্প্রদায়িকতার বিপদের উল্লেখ করে দেশে অকংগ্রেসী ও অ-বিজেপি দলগুলিকে নিয়ে একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক জনস্বার্থবাহী বিকল্প গড়ে তোলার ডাক দিয়েছি। ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও জনস্বার্থবাহী এই তিনটি বিষয়ের ওপরেই আমরা জোর দিয়েছি এবং ১০দফা বিকল্প কর্মসূচীর ঘোষণাও করেছি। কিন্তু বামপন্থীদের শক্তিশালী করতে না পারলে এই বিকল্প জনস্বার্থবাহী থাকবে কী করে! দেশের নতুন সরকার কোন পথে চলবে, বিকল্প শক্তি কতটা জনস্বার্থবাহী থাকবে, তা নির্ভর করছে বামপন্থীদের শক্তির ওপরে। আর বামপন্থীদের শক্তি বাড়াতে হলে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের অপশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাদের নির্ধারকভাবে পরাস্ত করে সর্বোচ্চ সংখ্যক আসনে বামপন্থীদের জয়ী হতেই হবে। কেবলমাত্র তাহলেই দেশে বামপন্থীরা তৃতীয় শক্তি হয়ে উঠতে পারবে। পশ্চিমবঙ্গ বামপন্থী আন্দোলনের শক্তিশালী দুর্গ, পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার আসনের সংখ্যাও বেশি, তাই দেশে বামপন্থীদের শক্তিশালী করে তোলায় পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বও বেশি। আমাদের নির্বাচনী প্রচারে সামগ্রিকভাবে এইভাবেই আমরা এগোচ্ছি। 

প্রশ্ন: এই বছরের গোড়ায় ব্রিগেডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির জনসভার আগে আপনি তাঁকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন, বি জে পি-র বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুন। ব্রিগেডের সেই সভায় মুখ্যমন্ত্রী বি জে পি-র বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। সেইসময় ব্রিগেডে বি জে পি-র জনসভায় এসে নরেন্দ্র মোদীও তৃণমূলের বিরুদ্ধাচারণ করেননি। কিন্তু এখন কী বলবেন? এখন তো মুখ্যমন্ত্রী বি জে পি-র বিরুদ্ধেও বলছেন। 

মিশ্র: নির্বাচনী প্রচারের একেবারে শেষদিকে সাম্প্রতিক সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বি জে পি-র বিরুদ্ধে যা বলছেন, তা খানিকটা বাধ্য হয়েই বলছেন। এটা অবশ্যই লোক দেখানো, মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য। পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে তিনিই হাত ধরে বি জে পি-কে ডেকে এনেছিলেন। আজ মুখ্যমন্ত্রী যাকে হরিদাস পাল বলছেন, তাঁকেই একদিন ফুল পাঠিয়েছিলেন। লক্ষ্য করার বিষয় হলো এই যে, মুখ্যমন্ত্রী এখনো একবারের জন্যও অতীতের অবস্থানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেননি, ভুল স্বীকার করেননি। তিনি যে ভবিষ্যতে আবার আর এস এস এবং বি জে পি-র সঙ্গে যাবেন না সেই প্রতিশ্রুতিও দেননি। গুজরাতে সাম্প্রদায়িক গণহত্যার জন্য নরেন্দ্র মোদীও ক্ষমা চাননি। তাঁর মনোভাবটা হলো ‘আদালত আমায় ফাঁসি দেয় দিক, কিন্তু আমি ক্ষমা চাইবো না।’ এখানেই নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একই রকম অবস্থান আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর। ভুল, অন্যায়ের জন্য কিছুতেই ক্ষমা না চাওয়ার ঔদ্ধত্যে তাঁরা এক।
- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=55507#sthash.9FhkvCda.dpuf

কমিশনের কাছে ইয়েচুরি পুনরায় ভোট না হলে দুষ্কৃতীরা উৎসাহ পাবে

কমিশনের কাছে ইয়েচুরি পুনরায় ভোট না হলে দুষ্কৃতীরা উৎসাহ পাবে

নিজস্ব প্রতিনিধি : নয়াদিল্লি, ৩০শে এপ্রিল — পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাস ও হিংসার বাতাবরণে চলেছে অবাধে ভোট লুট। দেশের নির্বাচনে আজকের দিনটি বিকৃত গণতন্ত্র দিবস বলেই চিহ্নিত থাকবে। বুধবার পশ্চিমবঙ্গে ভোটে অবাধ রিগিং নিয়ে একথা জানিয়েছেন সি পি আই (এ‌ম) নেতা সীতারাম ইয়েচুরি। এদিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে রাজ্যের ভোটে বুথ দখল নিয়ে বিস্তারিত তথ্যসহ ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। ইয়েচুরি বলেন, তৃতীয় দফার নির্বাচনে চলেছে অবাধ বুথ দখল। তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলের এজেন্টদের। বহু এলাকায় মানুষ তাদের রায় দিতে পারেননি। তৃণমূলের বাহিনী বুথ দখল করে দেদার ছাপ্পা ভোট করেছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী মজুত থাকলেও বুথ দখল আটকাতে কোনো কাজে লাগানো হয়নি। নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছিল প্রতি বুথে থাকবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে নজরদারি ক্যামেরা। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ১৭ হাজার ৩৩০টি বুথের মধ্যে মাত্র ৩২৪টি ক্যামেরার ব্যবস্থা ছিল। ফলে নির্বাচন কমিশন অবাধ নির্বাচনের পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়েছে। মোট বুথের মাত্র ২ শতাংশ বুথে ক্যামেরা ছিল। নজরদারিই ঠিক মতো হয়নি।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের তরফে বিনোদ জুৎসি দাবি করেন, ‘শান্তিপূর্ণ’ ভোট হয়েছে। ৮১ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে, তবে তা ৮৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। যেসব অভিযোগ এসেছে আগামীকাল ১১টায় তা কমিশন তার পদ্ধতি অনুসারে পরীক্ষা করবে। পুনর্নির্বাচনের কোনো সিদ্ধান্ত হলে তখনই হবে।

রাজ্যে এখনও ২৩টি আসনে ভোট বাকি রয়েছে। এদিন ইয়েচুরি কমিশনকে বাকি আসনগুলিতে অবাধ ভোট নিশ্চিত করতে রাজ্যে যেসব বুথে ভোট লুট হয়েছে সেখানে পুনরায় ভোট করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি জানান, অবাধ ভোট নিশ্চিত করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কীভাবে ভোট লুট হয়েছে তার খবর নিতে রাজ্য সরকারের উপর নির্ভর করে লাভ নেই বলে তিনি জানিয়ে দেন। বলেন, নির্বাচন কমিশনের উচিত বিভিন্ন চ্যানেল, সংবাদমাধ্যমে এনিয়ে তথ্য সংগৃহীত হয়েছে তা জোগাড় করা। তাহলে ছবি স্পষ্ট হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এই অনিয়ম দূর করে পুনরায় ভোটের ব্যবস্থা করার মধ্যে বুঝিয়ে দিতে হবে এই অরাজকতা বরদাস্ত করবে না কমিশন। যদি তা না করা হয় তবে বাকি কেন্দ্রে নির্বাচনে আরো হিংসা সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়বে। এছাড়া যে দুর্বৃত্তরা এই কাণ্ডে জড়িত তারাও ব্যবস্থা না নিলে বার্তা পাবে যে তারা যা ইচ্ছা তা করে পার পেয়ে যেতে পারে। যা অবাধ ভোট সংগঠিত করার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করবে।

এদিকে মোট আটটি আসনের ৮ শতাধিক বুথে বুথ দখল করে চলেছে অবাধ ভোট লুট। আরামবাগ কেন্দ্রে তো পুরোই ভোটপ্রক্রিয়া বিপর্যস্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে যাঁরা ভোট করানোর দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা কেউ কেউ দায়িত্ব পালন করেননি। ইয়েচুরি বলেন, যারা ঐ দায়িত্ব পালন করেননি তাঁদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এক প্রশ্নে ইয়েচুরি বলেন, তৃণমূল দেখেছে, পঞ্চায়েত পৌরসভায় রিগিং ছাড়া তাদের জেতার কোনো রাস্তা নেই। সেকারণে এবারে লোকসভাতে তারা ঐ একই পদ্ধতিতে ভোট লুট করেছে।

নির্বাচনে যেভাবে মানুষকে তার রায় দেওয়ায় বাধা দেওয়া হয়েছে তা অতীতে ১৯৭২ সালের কথা অনেককে মনে করিয়ে দিয়েছে। এই নিয়ে প্রশ্নে ইয়েচুরি বলেন, ১৯৭২-এ কী হয়েছিল, তা সকলে জানেন। বামফ্রন্টের সময়ে গণতান্ত্রিক আবহাওয়ায় ভোট হতো। সি পি আই (এম) যদি এই পদ্ধতিতে ভোট করতো তবে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস কখনো ক্ষমতায় আসতো না। তৃণমূল কংগ্রেস একই অভিযোগ করতো বলে প্রশ্নে ইয়েচুরি বলেন, ইতিহাসটা দেখুন। ২০০৪ সালের নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ হয়েছে বলে কমিশনের প্রশংসা করেছিল তৃণমূল।

প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মোদীর রাজ্যের ভাষণ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, বাংলাদেশী বলে যে মন্তব্য করেছেন মোদী তা আর এস এস-র নিজস্ব তত্ত্ব। এটা সঙ্ঘ প্রচার করে। সেটাই মোদী বলেছেন। ঐ তত্ত্বের জন্য বাঙালীরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে হয়রানির শিকার হন। দিল্লি, মুম্বাই, গুজরাট সর্বত্রই তাদের বাংলাভাষীদের বাংলাদেশীর নামে হয়রান করা হয়। মোদীর তৃণমূলের বিরোধিতা নিয়ে ইয়েচুরি বলেন, পুরোটা ম্যাচ ফিক্সিং। নির্বাচন পরবর্তী দরকষাকষির অঙ্গ। এতে ম্যাচ ফিক্সিং ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, এতে তৃণমূল কংগ্রেস মোদীর বিরোধিতা করে সংখ্যালঘু ভোটকে নিজের দখলে আনতে চাইছে আর সংখ্যাগুরু ভোট এভাবে বাড়াতে চাইছে বি জে পি। নয়তো ঐ ভোট বামপন্থীদের পক্ষে যাবে। এটা বুঝে দু’দলের গড়াপেটা খেলা চলছে।

এদিকে নির্বাচন পরবর্তী জোট নিয়ে ফলাফল বেরোনোর পরই সব বলা যাবে বলে জানান ইয়েচুরি। তিনি বলেন, কে প্রধানমন্ত্রী হবে, তা কখনো আগাম বলা যায় না। সবটাই ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর স্থির হয়। যেমন ইউ পি এ-র প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, এন ভি এ-র অটলবিহারী বাজপেয়ী, সংযুক্ত মোর্চার এইচ ভি দেবেগৌড়া। সকলেই স্থির হয়েছিল ফলাফল প্রকাশের পর। এনিয়ে যাবতীয় প্রশ্নের জবাব ফল বেরোলেই দেওয়া যাবে।
- See more at: http://ganashakti.com/bengali/breaking_news_details.php?newsid=1768#sthash.GqXLsUTO.dpuf

ভোট লুট রুখতে নিজেরাই প্রতিরোধে নামুন : বৃন্দা কারাত


ভোট লুট রুখতে নিজেরাই প্রতিরোধে নামুন : বৃন্দা কারাত

image1398881765.jpg
মধুসূদন চ্যাটার্জি : রাইপুর, ৩০শে এপ্রিল — এরাজ্যে বুধবার তৃতীয় দফার ভোটে তৃণমূলবাহিনী অসংখ্য বুথে ভোট লুট করেছে। একদিকে যেমন ভোট লুট হয়েছে, অন্যদিকে মানুষ বহু জায়গায় প্রতিরোধে নেমে তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন ভোট দিয়ে। আগামী ৭ই মে বাঁকুড়া জেলায় রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোট হতে যাচ্ছে। আপনারা কী চান আপনাদের ভোট লুট হোক? হাজারো কণ্ঠে ভেসে এলো একটাই শব্দ, না। আমরা চাই না আমাদের ভোট লুট হোক। তাহলে প্রতিরোধে নামুন। নিজের ভোট নিজে দিন। বুধবার বাঁকুড়া জেলার জঙ্গলমহল রাইপুরের ফু লকুসমা ও সারেঙ্গার দু’টি নির্বাচনী জনসভায় এ আহ্বান জানালেন সি পি আই (এম) পলিট ব্যুরোর সদস্যা বৃন্দা কারাত। এদিন তিনি ফুলকুসমা বাজার সংলগ্ন মাঠ ও সারেঙ্গার মিশন ময়দানে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী বাসুদেব আচারিয়ার সমর্থনে দু’টি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। দু’টি সমাবেশেই মানুষের ভিড় উপচে পড়েছিল। প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে মানুষজন দুপুর থেকেই বিভিন্ন গ্রাম থেকে মিছিল শুরু করেন। যাঁরা এদিনের সমাবেশে এসেছিলেন তাঁরা অনেকেই সমাবেশস্থলে এসে জানান সারাদিনই বিভিন্ন চ্যানেলে রাজ্যের বিভিন্ন কেন্দ্রে তৃণমূলবাহিনীর ভোট লুটের দৃশ্য দেখেছেন, শুনেছেন। এসব চলবে? নির্বাচন কমিশন কী ভূমিকা দেখালেন? এসব প্রশ্ন করেছেন মানুষজন। মানুষজনের বক্তব্য তৃণমূল কংগ্রেসের হিংস্র রূপটা ফের মানুষ দেখলেন।

এদিনের সমাবেশে বৃন্দা কারাত বলেন, বর্তমান ইউ পি এ-২ সরকার আদিবাসী মানুষজনের জন্য একটা কাজও করেনি। আদিবাসীদের জন্য বি জে পি-রও কোনো ভাবনা নেই। তিনি বলেন, বামপন্থীরাই সংসদের অভ্যন্তরে, বাইরে আদিবাসী মানুষজনের জন্য লড়াই চালিয়ে এসেছে। বৃন্দা কারাত বলেন, বি জে পি-তৃণমূলের এখনকার ঝগড়া আসলে অভিনয়। ২০০২ সালে গুজরাটে সংখ্যালঘু গণহত্যার সময়ে তাকেই সমর্থন করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা ব্যানার্জি চাইছেন, সারদার কেলেঙ্কারির নায়কদের বাঁচাতে। তিনি বলেন, এই আদিবাসী এলাকায় আদিবাসী বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা আজ তাঁদের প্রাপ্যভাতা পাচ্ছেন না। অরণ্যের পাট্টা বন্ধ। মুখ্যমন্ত্রী বলছে জঙ্গলমহল হাসছে। উন্নয়নের নামে একের পর এক শিলাপোঁতা হয়েছে। সেখানে কাজ হয়নি। তিনি বলেন, এখানকার প্রার্থী বাসুদেব আচারিয়া খালি এখানকার মানুষের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তা নয়। তামাম দেশের গরিব খেটেখাওয়া মানুষ যে কোনো প্রয়োজনে তাঁর কাছে যান। তিনি তাঁদের প্রতিটি লড়াই আন্দোলনে থাকেন। এরকম প্রার্থীই তো আমাদের দরকার।

এদিন সারেঙ্গার সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অমিয় পাত্র বলেন, ৩৪ মাসে তৃণমূল কংগ্রেস যা কাজ করলো তাতে যারা ভোট দিয়ে তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনলো তাঁরাও আজ বীতশ্রদ্ধ, তৃণমূলের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তৃণমূল নেত্রী যত এটা বুঝতে পারছেন ততই তিনি হিংস্র হয়ে উঠছেন। এদিন সারেঙ্গার সভায় বক্তব্য রাখেন সি পি আই নেতা শ্রীকুমার মুখার্জি, সি পি আই (এম) নেতা অজিত চ্যাটার্জি। ফুলকুসমায় বক্তব্য রাখেন সি পি আই (এম) নেতা উপেন কিসকু। সারেঙ্গায় সভাপতিত্ব করেন পার্টিনেতা রণজিৎ মণ্ডল ও ফুলকুসমায় পার্টির রাইপুর জোনাল সম্পাদক ধ্রুব মণ্ডল।
- See more at: http://ganashakti.com/bengali/breaking_news_details.php?newsid=1769#sthash.pRQDn4uI.dpuf

নারায়ণগঞ্জবাসী আর কত লাশ দেখবে? আবুল খায়ের

নারায়ণগঞ্জবাসী আর কত লাশ দেখবে?

আবুল খায়ের
নারায়ণগঞ্জবাসী আর কত লাশ দেখবে? ইতিপূর্বে মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীসহ বেশ কয়েকজন ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতার হত্যাকাণ্ড নিয়ে শোক কাটতে না কাটতে আবারো নারায়ণগঞ্জে রক্তের হোলিখেলা। গতকাল বুধবার বন্দর থানাধীন শীতলক্ষ্যা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৬ জনের লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। অপর ৪ জন হলেন নজরুল ইসলামের গাড়ি চালক তাজুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান স্বপন, লিটন এবং নিখোঁজ আইনজীবী চন্দন সরকারের গাড়ির চালক ইব্রাহীম। 

গত রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজিরা দিয়ে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম সহযোগীদের নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। একই সময় আইনজীবী চন্দন সরকার ফতুল্লা জালকুড়ির বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। উভয়ের গাড়ি আগে পিছে ছিল। ফতুল্লা স্টেডিয়ামের কাছে গেলে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও প্রবীণ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। তিনদিন পর গতকাল দুপুরে বন্দর থানা পুলিশ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৬টি লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের সংবাদ পেয়ে নিখোঁজ সাতজনের স্বজনরা শীতলক্ষ্যা তীরে যান। প্রথমে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং পরে একে একে ৫টি লাশ শনাক্ত করেন স্বজনরা। সর্বশেষ আইনজীবী চন্দন সরকারের লাশ শনাক্ত করেন তার কন্যা সেজুতি সরকার। নিখোঁজ রয়েছেন কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের চালক জাহাঙ্গীর। সংবাদ পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে শত শত লোক বন্দর থানার শীতলক্ষ্যা তীরে যান। স্বজনদের আহাজারিতে শীতলক্ষ্যার তীরে শোকের ছায়া নেমে আসে। সবার কণ্ঠে একই দাবি, নারায়ণগঞ্জবাসী আর কত লাশ দেখবে? আমরা এর প্রতিকার চাই। চাই খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। সিদ্ধিরগঞ্জ জুড়ে শোকের ছায়া আর আহাজারি। 

নজরুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। এলাকাটি সিদ্ধিরগঞ্জ। লাশ সনাক্তের পর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বুকফাটা কান্নার জোয়ার নেমে আসে। এ কান্নার শেষ কোথায়? রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, আধিপত্য বিস্তার, জমিজমা নিয়ে বিরোধ, লেনদেন, দখল-পাল্টা দখল, নারায়ণগঞ্জ শহর ও জেলা জুড়ে অপহরণ, গুম ও নিখোঁজের ঘটনা অহরহ ঘটছে বলে সুশীল সমাজ, র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাসূত্রে জানা যায়।

৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তত্কালীন বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে টানা ২২ দিনের অসহযোগ আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে সরকার ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বন্দুকযুদ্ধে ২২ জনের প্রাণহানি ঘটে। অর্থাত্ গড়ে প্রতিদিন একটি করে লাশ পড়ে। ওই ঘটনার পর থেকে সন্ত্রাসের জনপদ হিসাবে নারায়ণগঞ্জ দেশব্যাপী আলোচনায় উঠে আসে। 

নারায়ণগঞ্জের সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ বলছেন, একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও কোন ঘটনার বিচার না হওয়ায় পরবর্তীতে খুনিরা উত্সাহিত হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আবু বকর সিদ্দিক ওরফে লিটুকে প্রকাশ্যে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ভূঁইগড়ের দেলপাড়াস্থ ভূঁইয়া ফিলিং স্টেশনের কাছ থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর আবারো প্রমাণিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা নাজুক। এর আগে একইদিন ভোরে মুন্সীগঞ্জ থেকে অপহূত হাদিস আলী নামে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ ফতুল্লা এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরের দিন অর্থাত্ গতমাসেই ফতুল্লার বক্তাবলী এলাকার একটি ডোবা থেকে ২ দিন আগে নিখোঁজ এক ইট ভাটা শ্রমিকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। 

২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে ব্যবসায়ী ভুলু সাহার লাশ নিখোঁজের ২ দিন পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। ৮ মার্চ মেধাবী স্কুল ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর লাশ উদ্ধার করা হয় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে নারায়ণগঞ্জসহ দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনা অব্যাহত আছে। একই বছরের ১৯ এপ্রিল রাতে সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের ঝাউগড়া এলাকার নিজ বাড়িতে খুন হয় পিরোজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের স্ত্রী, শ্যালক এবং বাড়ির ২ গৃহপরিচারিকা। ওই ঘটনায় শামীম আহমেদ নামে এক আসামি সোনারগাঁ থানায় নির্যাতনের কারণে নিহত হয়।

এছাড়া চলতি বছরের ২৮ মার্চ সোনারগাঁয় সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেনকে এবং একই দিন রূপগঞ্জে স্কুল শিক্ষক মেহেদী হাসানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর ৭ দিন পর গত ৪ এপ্রিল রূপগঞ্জের বালু নদী থেকে নিখোঁজ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার শিক্ষক রাজীব আহাম্মদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত ৬ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ শহরের ব্যবসা কেন্দ্র নিতাইগঞ্জের নায়না ফ্লাওয়ার মিলের ভেতর থেকে জবাই করা অবস্থায় নৈশ প্রহরী আবদুল আজিজ এবং হেলপার হোসেন মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। এই জোড়া খুনের সন্দেহ ভাজন শ্রমিক আবু তাহেরকে এখনো গ্রেফতারই করতে পারেনি পুলিশ। গত ১৪ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশ থেকে গলাকাটা যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। 

এছাড়া গত ফেব্রুয়ারি মাসে তরুণ ব্যবসায়ী দেওভোগ মাদ্রাসা এলাকায় রকিকে মাদক ব্যবসায়ীরা কুপিয়ে হত্যা করে। ৪ মার্চ ফতুল্লার একটি ডোবা থেকে মিনা বেগম নামে নিখোঁজ এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৬ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর একটি খাল থেকে সাব্বির নামে নিখোঁজ এক স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়। ২২ মার্চ ফতুল্লার কাশীপুর এলাকার একটি ডোবা থেকে শোয়েব হোসেন নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। ২৩ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অজ্ঞাত পরিচয় ২ ব্যক্তির পচন ধরা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসব ঘটনা ছাড়াও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে অসংখ্য অজ্ঞাত পরিচয় লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

এদিকে গত দুই মাসেই ৪ জন শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছে। অপহরণের পরে মুক্তিপণ আদায়, পূর্বশত্রুতা ও তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে এসব শিক্ষার্থীদের অকালে জীবন দিতে হয়েছে। অপহরণের ৩৫ দিন পর নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মালিভিটা এলাকার একটি ডোবা থেকে স্কুল ছাত্র রাকিবুল ইসলাম ইমনের (১৪) বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে বন্দর থানা পুলিশ। গত ২৯ জানুয়ারি বন্দরে মুক্তিপণ হিসেবে মোটা অংকের টাকা আদায়ের জন্য ইমনের আপন চাচাতো ভাই আল আমিনের পরিকল্পনায় অপহূত হয় ইমন। ওই রাতেই তাকে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে ডোবার পানিতে লুকিয়ে রাখা হয়। গত ২ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার ফতুল্লার পিঠালীপুল এলাকায় একটি মোবাইল ফোন নিয়ে মোস্তফা মিয়া (১২) নামে এক স্কুল ছাত্র তারই বয়সী খেলার সঙ্গীদের হাতে খুন হয়। ১ ফেব্রুয়ারি রূপগঞ্জের সদর ইউনিয়নের ভিংরাব এলাকা থেকে নাঈম মিয়া (১৪) নামে অপর এক স্কুল ছাত্রের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গত ২১ জানুয়ারী সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুর এলাকা থেকে অপহরণের শিকার হয় দুই স্কুল ছাত্র জাহিদুল ইসলাম ও সাকিন আলম। ২২ জানুয়ারী একই এলাকার সাদিপুর ইউপির ভারগাঁও বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে অপহূত স্কুল ছাত্র জাহিদুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৬ জানুয়ারী কাঁচপুর ইউপির বেহাকৈর মোল্লা বাড়ির বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে অপহূত অপর স্কুল ছাত্র সাকিন আলমের গলাকাটা বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। 

গত বছরের ১৩ জুন ফতুল্লার দুর্গম চরাঞ্চল বক্তাবলী ইউনিয়নের চর রাধানগরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে স্কুল ছাত্র ইমনকে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশ ৯ টুকরা করে ধঞ্চে ক্ষেতের পানিতে লুকিয়ে রাখা হয়। ২৩ নভেম্বর শহরের মাসদাইর আদর্শ স্কুলের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম আহমেদকে প্রতিবেশী ফারুক মন্ডলের ছেলে মেহেদী হত্যার পর লাশ মুন্সিগঞ্জে নিয়ে ফেলে দেয়। ৮ নভেম্বর গভীর রাতে বন্দরের মদনগঞ্জ শান্তিনগর এলাকায় ডাকাতদের গুলিতে স্কুল ছাত্র সালমান ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। ৭ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার ৯০ নং জালকুড়ি পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্র রমজান শিকদার মাত্র ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণের জন্য খুন হয়। ২২ জুলাই আড়াইহাজারে স্কুল ছাত্র মাহাবুবকে হত্যার পর নাক ও কান কেটে নেয়ার পাশাপাশি চোখ উপড়ে ফেলা হয়। ৯ জুলাই ফতুল্লার পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র নাজমুল হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ৩ জুলাই রূপগঞ্জের সিনহা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মৌসুমী আক্তারকে (১৮) পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এসব নির্মম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে বেশীর ভাগ সময়ে পুলিশ প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। খুনিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বড়ায় এলাকায়। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে নারায়ণগঞ্জে একের পর এক লাশ পড়তো না বলে প্রশাসন, সুশীল সমাজ ও স্বজনহারাদের দাবি।
The Daily Ittefaq

ভোট দিয়েই মোদির সেলফি

লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি আজ বুধবার সকালে আহমেদাবাদে নিজের ভোট দেওয়ার পর কালিযুক্ত আঙুলসহ সেলফি (নিজেই নিজের ছবি তোলা) তুলেছেন। পরে তিনি এ ছবি নিজের টুইটারে পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ভোট দিলাম। এই আমার সেলফি।’ (ভোটেড! হিয়ার ইজ মাই সেলফি)।
ভোট দেওয়ার পর কেন্দ্রের সামনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন মোদি। সেখানে তিনি হাতে দলের প্রতীক পদ্ম ফুলের (কাগজের) নমুনাসহ সেফলি করেন। আজ এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এ ছাড়া তাঁর ভোট দেওয়ার এক ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি ভোটকক্ষে ঢুকে একটি শিশুর সঙ্গে করমর্দন করেন। ভারতের আহমেদাবাদে আজ নিজের ভোট দিয়ে মোবাইল ফোনে ‘সেলফি’ তুলছেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: রয়টার্সভোট দেওয়ার পর সেখানে থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের তাঁর কালি লাগানো আঙুল দেখান।
টুইটারে মোদির পোস্ট দেওয়ার কয়েক মিনিট পরেই আম আদমি পার্টির (এএপি) নেতা আশুতোষ টুইটারে লেখেন, ‘নির্বাচনের দিন বিজেপি ইশতেহার প্রকাশ করেছে। মোদি অন্যান্য নির্বাচনের দিন রোড শো করেছেন এবং আজ দলের প্রতীক নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। নির্বাচন কমিশন কী এর প্রতিক্রিয়া দেখাবে?’
কংগ্রেসও গুজরাটে একই বিষয় নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছে। কমিশন সূত্র জানিয়েছে, মোদি নির্বাচনী বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন কি না, তা তারা দেখবে।
তবে এত সব বিতর্ক থাকার পরও মোদি অনেকটাই নির্বিকার; বরং তিনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সমর্থন বাড়ানোর দিকেই নজর তাঁর। তিনি তাঁর সেলফি টুইটারে পোস্ট করে তা মানুষকে শেয়ার করতে বলেন।
আজ সকাল থেকে মোদি টুইট করা শুরু করেন। ভোট দিতে যাওয়ার সময় তিনি লেখেন, আমি ভোট দিতে যাওয়ার পথে। আদভানি জির নির্বাচনী এলাকার ভোটার হিসেবে আমি নিজেকে খুবই আশীর্বাদপুষ্ট ও সৌভাগ্যবান মনে করছি।

সাংবাদিকের সঙ্গে দিগ্বিজয়ের প্রেম

সাংবাদিকের সঙ্গে দিগ্বিজয়ের প্রেম


দিগ্বিজয় সিং ও অমৃতা রায়দিগ্বিজয় সিং ও অমৃতা রায়টেলিভিশন সাংবাদিক অমৃতা রায়ের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করেছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দিগ্বিজয় সিং। তাঁদের দুজনের সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষা শুরু হওয়ার পর খুদে ব্লগ লেখার সাইট টুইটারে এক বার্তায় তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।

অমৃতার সঙ্গে দিগ্বিজয়ের একটি ছবি কয়েক দিন আগে ইন্টারনেটে ফাঁস হয়ে যায়। এরপর দিগ্বিজয় সিং গতকাল বুধবার টুইটারে এক বার্তায় বলেন, ‘অমৃতা রায়ের সঙ্গে আমার সম্পর্কের বিষয়টি গ্রহণ করে নিতে আমার কোনো দ্বিধা নেই। অমৃতা ও তাঁর স্বামী উভয়ই ইতিমধ্যে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে বিচ্ছেদের কাগজপত্র দাখিল করেছেন।’
অমৃতার বিচ্ছেদের বিষয়টি চূড়ান্ত হলেই তাঁরা সম্পর্কের বিষয়টি পাকাপাকি করে নেবেন বলেও জানান দিগ্বিজয়। টুইটারে আরেক বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘বিষয়টা চূড়ান্ত হলেই আমরা আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেব। তবে আমাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অনধিকার চর্চার আমি নিন্দা জানাই।’ এক বছর আগে ক্যানসারে দিগ্বিজয়ের স্ত্রীর মৃত্যু হয়।
অমৃতাও তাঁদের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘আমি আমার স্বামীর সঙ্গে আর নেই...আমি দিগ্বিজয় সিংকে বিয়ে করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ সিএনএন-আইবিএন।