মনের জোরে জয় জার্মানির
স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ : ০২ জুলাই, ২০১৪
খাতা-কলমে লড়াইটা অসম। জার্মানির সামনে আলজেরিয়া। কিন্তু তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ছেড়ে কথা বলেনি আফ্রিকানরা। ম্যাচ শেষে ফলটা হল জার্মানির ২-১ গোলের জয়। স্কোর লাইন দেখে কেউ যদি ভেবে থাকেন, যেমন ভাবা হয়েছিল তেমন সহজ জয়ই পেয়েছে জার্মানি, তাহলে ভুল হবে। ১২০ মিনিট লড়াই করেছে। তারপর মাথা উঁচু করে বিশ্বকাপের মঞ্চ ছেড়েছে আলজেরিয়া। প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে উঠার পর বীরত্বেই শেষ হয়েছে তাদের ব্রাজিল বিশ্বকাপ। আর বহু শংকার প্রহর কাটানো জয় নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে এখন জার্মানি। শুক্রবার মারাকানায় ফ্রান্সের সঙ্গে হচ্ছে দেখা। পোর্তো আলেগ্রেতে ম্যাচের সারমর্ম বলতে গেলে, আলজেরিয়ার প্রাণপণ আক্রমণ সেখানে ওঠে আসে। থাকে জার্মান গোলকিপার ম্যানুয়েল নিউয়েরের শাসরুদ্ধকর কয়েকটি সেভের কথা। থাকে আফ্রিকানদের ডিফেন্সেও বাধার দেয়াল তুলে দেয়ার গল্প। জার্মান ফরোয়ার্ডদের প্রবল আঘাতে সেই দেয়ালও ভাঙে। কিন্তু তারপর গিয়ে শেষ প্রহরী গোলকিপার ম্যান অব দ্য ম্যাচ রাইস এমবোলহির কাছে হার মানতে হয়। শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে ৯২ মিনিটে রাইস হার মানেন। চেলসি ফরোয়ার্ড আন্দ্রে শুরলে লিড এনে দেন। ১২০ মিনিটে মেসুত ওজিল ব্যবধান বাড়ান। অতিরিক্ত সময়ে স্টপেজ টাইমে আবদুল মুমিন দিয়াবু সান্ত্বনার এক গোল এনে দেন আলজেরিয়াকে। ১৯৮২ বিশ্বকাপে জার্মানিকে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে না পারার শোধ এবার নেয়া হল না তাদের। তবে আলজেরিয়ার বিপক্ষের পারফরম্যান্স কাঁপিয়ে দিয়েছে কোচ জোয়াচিম লো। ১৯৮২ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের মতো একটি ক্লাসিক। তিনি আশা করছেন কোয়ার্টার ফাইনালে, ফ্রান্সের বিপক্ষে। কিন্তু এভাবে খেললে চলবে! দলের কাছে লো আরও ভালো খেলার দাবি তুলেছেন, ‘আমরা জিতলাম মনের জোরে। ফ্রান্সের বিপক্ষে আমাদের ফিনিশিং আরও ভালো হতে হবে।’ ডিফেন্সের ভুল, প্রতিপক্ষকে আক্রমণের সুযোগ দেয়া, বল হারিয়ে ফেলা, নানা ব্যাপারে দলের কাছে অভিযোগ কোচের।
তা ম্যাচে জার্মানরা নিশ্চিত ফেভারিট হিসেবেই নেমেছিল। শুরুর আক্রমণ তবু আসে কিন্তু আলজেরিয়ার কাছ থেকে। ইসলাম স্লিমানির নিশানা করে নেয়া গোলের শট ঝাঁপিয়ে বাঁচিয়েছেন নিউয়ের। এরপর অফ-সাইডে স্লিমানির হেড কিংবা আলজেরিয়ানদের দূরপাল্লার শট, ভয় ধরাচ্ছিল জার্মানদের। প্রথমার্ধের একমাত্র সুযোগটা জার্মানরা পায় আলজেরিয়ার ডিফেন্সের ভুলে। কিন্তু না ক্রুস, ওজিল না গোয়েতজে, মুলার কিছু করতে পেরেছেন। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য মুলারের দুর্ধর্ষ হেডের বল ঠেকিয়ে গোল বাঁচিয়েছেন আলজেরিয়ার গোলকিপার। স্লিমানি, ফেগুলি কিংবা সুদানিদের চেষ্টা নিউয়ের, বোয়াটেংরা রুখেছেন। মুলার এদিন ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল পাননি। দ্বিতীয়ার্ধে সুযোগ হারানো জার্মানরা অতিরিক্ত সময় শুরু করেই পেয়েছে আরাধ্য গোল। শুরলে মাতিয়েছেন উৎসবে। শেষ বাঁশি বাজার আগে ওজিলও গোল করেন। জয় নিশ্চিত করা গোল। ২-০ কে ২-১ করেন দিয়াবু।
এই ম্যাচ আ্যলজেরিয়ার বেড়ে ওঠা আত্মবিশ্বাসে দিয়েছে স্বস্তির হাওয়া। আর জার্মানদের কাছে পাঠিয়েছে সতর্ক সংকেত। ফ্রান্সের বিপক্ষে সুযোগ কাজ লাগানোর সুযোগ মিস করলে চলবে!
No comments:
Post a Comment