Tuesday, July 1, 2014

যোগ্য দলগুলোই শেষ আটে পৌঁছেছে

যোগ্য দলগুলোই শেষ আটে পৌঁছেছে
প্রকাশ : ০২ জুলাই, ২০১৪

ফুটবল খেলাটা ছবির মতো সুন্দর। সেটাকেই আরও সুন্দর করে তোলেন ফুটবল শিল্পিরা। অর্থাৎ প্রতিভাবান ফুটবলাররা। তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। তাই বহু বছর ধরে ফুটবল জনপ্রিয় হলেও, যে অসংখ্য ফুটবলার খেলেছেন, সবাই জনপ্রিয় হননি। ফুটবল যেদিন থেকে শুরু হয়েছে, কিছু ফুটবলার সবার থেকে আলাদা থেকেছেন। তারাই ফুটবলকে আরও ছন্দময় করেছেন এবং তাদেরই মানুষ মনে রেখেছে। ১৯৩০ সালে উরুগুয়ে যখন বিশ্বকাপ জেতে তখন নায়ক ছিলেন অ্যানসেলমো, পাবলো দোরাদোরা। আর্জেন্টিনার পুসলি নামের এক ফরোয়ার্ড ছিলেন দেশের হিরো। ১৯৫০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে উরুগুয়ের কাছে স্বাগতিকরা হারার পর প্রায় ২৫ জন ব্রাজিলীয় শোকে আÍহত্যা করেছিলেন। ব্রাজিলের ফিয়াংকো, উরুগুয়ের অ্যানসালমো, সিয়াফেনো ও ঘিঘিয়াদের নিয়ে তখন মাতামাতি। পরেরবার হাঙ্গেরির পুসকাস, ককসিস, ব্রাজিলের ডিডি, সান্তোস ভাইদের গুণগানে বিশ্ব মাতোয়ারা হয়। পেলে, গ্যারিঞ্চার পর বিশ্বকে চমকে দেন নেদারল্যান্ডসের ইয়োহান ক্রুইফ। বেকেনবাওয়ারদের পর ম্যারাডোনা সব হিসাব-নিকাষ উল্টে দেন। প্লাতিনি, তিগানা, জিকো, সক্রেটিস পার হয়ে রোমারিও, রোনালদো, জিদানরা ফুটবলকে নিয়ে যান অন্য এক উচ্চতায়। রোনালদিনহোরা হয়েছেন চিরন্তন। এখন মেসি, নেইমার, রোনাল্ডোদের যুগ। এই বিশ্বকাপে কলম্বিয়ার জেমাস রদ্রিগেজ ছাড়া প্রতিষ্ঠিত তারকাদের ছাপিয়ে এখন পর্যন্ত নতুন তারকা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সুয়ারেজের ভেল্কি দেখার আগেই তার বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে। এই লেখা যখন লিখছি, তখনও আর্জেন্টিনা ও সুইজারল্যান্ড কিংবা বেলজিয়াম ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ম্যাচ শেষ হয়নি। জানি না, কোন দুটি দল কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। তবে এ পর্যন্ত শেষ আটে যারা জায়গা পেয়েছে, আমি বলব যোগ্যতা নিয়েই উতরে এসেছে দলগুলো। চিলির সঙ্গে ভাগ্যের সহায়তা নিয়ে জিতলেও ব্রাজিল বিশ্বকাপের রংটা ধরে রেখেছে। ব্রাজিল হারলে বিশ্বকাপের আবেগ-অনুভূতি-আনন্দ ম্লান হয়ে যেত। সুয়ারেজবিহীন উরুগুয়ের হারটা মেনে নিতে না পারলেও কলম্বিয়ার জয়টা অস্বাভাবিক ছিল না। দক্ষতা দেখিয়ে মেক্সিকোকে হারিয়ে উঠে এসেছে নেদারল্যান্ডস। গ্রিক দৈত্যকে বধ করা মধ্য আমেরিকার দল কোস্টারিকার জয়টা ফ্লুক ছিল না। আমি আগে যা বলেছিলাম, তাই সত্যি হল। নাইজেরিয়া লড়াই করেও ফ্রান্সের কাছে হার মেনেছে। এখানেই বড় দলগুলোর কৃতিত্ব। এই ম্যাচে দু’দলের গোলকিপারকে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার দিতে চাই আমি। অসাধারণ কারিশমা দেখিয়েছেন গোলকিপাররা। আগের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে যে খেলা খেলেছিল নাইজেরিয়া, তার দেখা মেলেনি। আমি হতাশ হয়েছি, সুপার ঈগলদের পারফরম্যান্সে। বিশেষ করে তরুণ আহমেদ মুসা, ভিক্টর মোজেস ম্যাচ বের করে নিতে পারতেন। কিন্তু তা হয়নি। ফ্রান্স ঠিকই জিতেছে। বিশেষ করে ৭০ মিনিটের পর নাইজেরিয়ানরা খেই হারিয়ে ফেলে। যার সুযোগ নেয় জিদানের উত্তরসূরিরা।
একদিকে কোয়ার্টার ফাইনালের হাতছানি। অন্যদিকে প্রতিশোধের নেশা। দু’কারণেই অদম্য হয়ে উঠেছিল আলজেরিয়া। দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছেন ফুটবলাররা। ইউরোপিয়ান পরাশক্তিদের সাধারণ মানে নামিয়ে এনেছিল আফ্রিকানরা। সৌভাগ্য জার্মানির। গোলকিপার নিউয়ার বার্লিন প্রাচীরের মতো দুর্ভেদ্য রেখেছিলেন গোলপোস্ট। অন্যদিকে দুর্ভাগ্যই বলতে হবে আফ্রিকার মুসলিম দেশটির। ৯০ মিনিট জার্মান ট্যাংকদের অকেজো করেও শেষ হাসি হাসতে পারল না। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলায় গোল হয়েছে তিনটি। এখানেই অভিজ্ঞতার কাছে হার মেনেছে নতুনত্ব।
- See more at: http://www.jugantor.com/first-page/2014/07/02/117835#sthash.H5MD6RHI.dpuf

No comments:

Post a Comment