না ফেরার দেশে বেবী আপা
দুলাল আচার্য
অবশেষে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে হার মানলেন বেবী মওদুদ। শুক্রবার বিকেলে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তাঁর মৃত্যুতে সাংবাদিক মহল শোকবিহ্বল। তাঁর সুদীর্ঘ কর্মময় জীবন মূল্যায়ন করার মতো সঠিক বা যোগ্য মানুষ আমি নই। তবে আমার কাছে তিনি ছিলেন একজন স্নেহময়ী মা, বড় বোনের প্রতীক। শেখ রেহানা সম্পাদিত সাপ্তাহিক বিচিত্রায় কাজ করতে গিয়ে বেবী আপাকে অনেক কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। একই সঙ্গে তাঁর স্নেহধন্য হওয়ায় অনেক স্মৃতিময় ঘটনায় নিজেকে সম্পৃক্ত করার সৌভাগ্য হয়েছিল। আজ বেবী আপা নেই; কিন্তু তাঁকে ঘিরে অনেক কথা, অনেক স্মৃতি মনে পড়ছে। বিশেষ করে মনে পড়ছে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাইর কথা। তখন বেবী আপা বিচিত্রার টিভি রুমে। সিএসবি চ্যানেল সরাসরি শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার, আদালতে নেয়াসহ নানা দৃশ্য সম্প্রচার করছে। আদালত এলাকায় গাড়ি থেকে নামানোর সময় টানাহেঁচড়ার দৃশ্য টিভিতে দেখে বেবী আপা হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন। প্রিয় বন্ধুর জন্য বন্ধুর এমন ভালবাসা ক’জনের থাকে জানি না? তবে শেখ হাসিনার জন্য তাঁর দু’চোখ বেয়ে পানি ঝরেছে! সেদিন তিনি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেছেন।
শেখ হাসিনা তাঁর কাছে এক বড় আবেগের জায়গা ছিল। সুধা সদনকে মনে করতেন তাঁর সেকেন্ড হোম। প্রতিদিন সুধা সদনে যাওয়া যেন বেবী আপার রুটিন ছিল। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শেখ হাসিনার গ্রেফতারে তিনি প্রচ-ভাবে ভেঙ্গে পড়েন। নিঃসঙ্গ মনে হতো তাঁকে। অসহায়ের মতো বিচিত্রা অফিসে আসতেন। কারও সঙ্গে খুব একটা কথা বলতেন না। আমাদের সবার মনে এক অজানা আতঙ্ক দেখা দেয়। বিচিত্রা অফিসের চারদিকে সব সময়ই গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন ঘুর ঘুর করত। অফিসে আসা-যাওয়ার মাঝেই বিষয়টা আমরা বুঝতে পারতাম। ইতোমধ্যে অনেকেই নানা রহস্যজনক কারণে বিচিত্রায় লেখা বন্ধ করে দেন। এমনকি আয়ের উৎস যে বিজ্ঞাপন তাও অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল তখন। একদিন বেবী আপা বললেন, আর পারছি না। পত্রিকাটি বুঝি আর চালানো যাবে না। কোথায় পাব এত টাকা? সে বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর বিচিত্রা বন্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়ি থেকে শেখ রেহানার সম্পাদনায় নতুনভাবে, নতুন ব্যবস্থাপনায় চলা শুরু হয় বিচিত্রার। একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে বেবী আপার প্রত্যক্ষ নির্দেশে বিচিত্রায় আমারও পথচলা।
সীমিত আয় দিয়েও যে কিভাবে স্বাচ্ছন্দ্য জীবনযাপন করা যায়, এই বিষয়টি আমরা বিচিত্রার অনেকেই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন থেকে শিক্ষা নিয়েছিলাম। সাদামাটা জীবন যে কতটা আনন্দের হতে পারে বেবী আপাকে দেখে সেটা উপলব্ধি করেছি। জীবনে যত বেশি চাহিদা থাকবে জীবন তত জটিল হবে। সুতরাং চাহিদাকে কমিয়ে এনে জীবনকে আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলা- বেবী আপার কাছ থেকে আমি এবং আমার মতো অনেকেই এ শিক্ষা পেয়েছিলাম।
আমার একমাত্র বোনের বিয়েতে বেবী আপা আমাকে আর্থিক সহযোগিতা করেছিলেন। বিয়ের দিন রাতে জসিম ভাইয়ের মাধ্যমে কিছু টাকা তিনি আমাকে দিয়েছিলেন। মাওলা ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত ‘নি:সঙ্গ কারাগারে শেখ হাসিনার ৩৩১ দিন’ বইটি প্রকাশের পর বেবী আপা একদিন আমাকে খবর পাঠালেন আমি যেন তাঁর সঙ্গে দেখা করি। একদিন সন্ধ্যায় লালমাটিয়ার বিডি নিউজ অফিসে তাঁর সঙ্গে দেখা করলাম। তিনি আমাকে একটি খাম দিয়ে বললেন, এটা রাখো, মাওলা ব্রাদার্স লেখক সম্মানী দিয়েছে। আমিতো অবাক! বেবী আপা বিষয়টা বুঝতে পারলেন, তিনি ড্রয়ার থেকে একটি বই বের করে বললেন নাও। এখানে প্রথমদিককার লেখাগুলো তোমার।
বছর দুয়েক আগে বাসসের বাংলা বিভাগে চাকরির ব্যাপারে ইন্টারভিউ দিয়ে বেবী আপার শরণাপন্ন হয়েছিলাম। তখন বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন হেলাল ভাই। বিচিত্রার সুবাদে তাঁর সঙ্গে আমাদের বেশ যোগাযোগ। নিয়োগ বোর্ডের অনেকেই আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন। আপাকে বললাম, আপনি সুপারিশ করলে আমার চাকরিটা হবে। বেবী আপা আক্ষেপ করে বললেন, দুলাল এখানে কেউ আমার কথা শোনে না।
সেদিন অসহায়ের মতো বেবী আপার উক্তিটি আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে। প্রথমে বুঝতে পারিনি তাঁর কথার অর্থ। পরে বুঝেছি ইচ্ছে থাকলেও যে তাঁর সাধ্য ছিল না।
বিচিত্রায় কাজ করতে গিয়ে বেবী আপার কিছু লেখালেখির কাজ খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। আমি নিজে এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে নিজেকে গর্ববোধ করি। শিশুতোষ বই ‘দীপ্তর জন্য ভালোবাসা’ বেবী আপার ছোট ছেলে শফিউল হাসান দীপ্তর (পুটু) জীবনের ছায়া অবলম্বনে। একজন প্রতিবন্ধী শিশুর বেড়ে ওঠার কাহিনী। লেখাটির প্রুফ দেখতে গিয়ে আমি অনেকবার কেঁদেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ সারাবিশ্বে অটিজম শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন। আমি মনে করি ‘দীপ্তর জন্য ভালোবাসা’ বইটি ছোটদের জন্য অসাধারণ দৃষ্টান্ত।
এক সময় দেখতাম বেগম রোকেয়ার নিজের লেখা এবং তাঁর সম্পর্কীয় রেফারেন্স অনেক বই বেবী আপা অফিসে পড়ছেন। আর প্রতিদিনই কিছু কিছু পয়েন্ট চম্পককে কম্পোজ করতে দিতেন। কিছুদিন পর দেখলাম এগুলো সংযুক্ত করে হয়ে গেল ‘পবিত্র রোকেয়া পাঠ।’ বেগম রোকেয়াকে সহজভাবে উপলব্ধি করার একটা অসাধারণ পুস্তিকা।
বেবী আপা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রচুর কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর প্রথম দিককার কাজগুলোতে তাঁর শ্রম খুব কাছ থেকে দেখেছি। বিচিত্রার শেষের পাতায় প্রতি সপ্তাহে বেবী আপার একটি নিয়মিত কলাম বের হতো। ‘অন্তরে বাহিরে’ নামে এই লেখাগুলো সঙ্কলিত হয়ে পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। যাতে তাঁর ব্যক্তি জীবনের ছায়া ছিল।
শুনেছি বেবী আপা আমার ওপর কোন এক কারণে নাকি অসন্তুষ্ট ছিলেন। বিচিত্রা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই কথাটি বিচিত্রার সহকর্মীদের কেউ কেউ আমাকে বলতেন। কিন্তু এর পর যতবারই আমি বেবী আপার সামনে গিয়েছি মনে হয়নি তিনি আমার ওপর অসন্তুষ্ট। তাই কখনও বিষয়টি জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন বোধ করিনি।
সাংবাদিক মহলে বেবী আপাকে নিয়ে উপলব্ধি ভাল-মন্দ মিলিয়েই। শতভাগ ভাল উপলব্ধির সাংবাদিকের সংখ্যা যে খুব একটা বেশি তাও নয়। তবে আমি কাছ থেকে যে বেবী আপাকে দেখেছি সেই আপা একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও স্নেহময়ী আদর্শ। তাঁর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি একজন অকৃত্রিম সুহৃদকে হারিয়েছেন। তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে আর একটি শব্দ যোগ করছি, আমরা একজন সংগ্রামী ‘নিবেদিতপ্রাণ’ সাংবাদিককে হারিয়েছি।
বেবী আপা, আপনি আপনার কাজ দিয়ে আমাদের যা শিখিয়েছেন তা আমরা নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকরা কখনই ভুলব না। অন্যায়কে অন্যায়, অসত্যকে অসত্য বলার দৃঢ় সাহস আমরা আপনার কাছে শিখেছি। বেবী আপা আপনি যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন।
ajoyakash@yahoo.com
শেখ হাসিনা তাঁর কাছে এক বড় আবেগের জায়গা ছিল। সুধা সদনকে মনে করতেন তাঁর সেকেন্ড হোম। প্রতিদিন সুধা সদনে যাওয়া যেন বেবী আপার রুটিন ছিল। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শেখ হাসিনার গ্রেফতারে তিনি প্রচ-ভাবে ভেঙ্গে পড়েন। নিঃসঙ্গ মনে হতো তাঁকে। অসহায়ের মতো বিচিত্রা অফিসে আসতেন। কারও সঙ্গে খুব একটা কথা বলতেন না। আমাদের সবার মনে এক অজানা আতঙ্ক দেখা দেয়। বিচিত্রা অফিসের চারদিকে সব সময়ই গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন ঘুর ঘুর করত। অফিসে আসা-যাওয়ার মাঝেই বিষয়টা আমরা বুঝতে পারতাম। ইতোমধ্যে অনেকেই নানা রহস্যজনক কারণে বিচিত্রায় লেখা বন্ধ করে দেন। এমনকি আয়ের উৎস যে বিজ্ঞাপন তাও অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল তখন। একদিন বেবী আপা বললেন, আর পারছি না। পত্রিকাটি বুঝি আর চালানো যাবে না। কোথায় পাব এত টাকা? সে বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর বিচিত্রা বন্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়ি থেকে শেখ রেহানার সম্পাদনায় নতুনভাবে, নতুন ব্যবস্থাপনায় চলা শুরু হয় বিচিত্রার। একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে বেবী আপার প্রত্যক্ষ নির্দেশে বিচিত্রায় আমারও পথচলা।
সীমিত আয় দিয়েও যে কিভাবে স্বাচ্ছন্দ্য জীবনযাপন করা যায়, এই বিষয়টি আমরা বিচিত্রার অনেকেই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন থেকে শিক্ষা নিয়েছিলাম। সাদামাটা জীবন যে কতটা আনন্দের হতে পারে বেবী আপাকে দেখে সেটা উপলব্ধি করেছি। জীবনে যত বেশি চাহিদা থাকবে জীবন তত জটিল হবে। সুতরাং চাহিদাকে কমিয়ে এনে জীবনকে আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলা- বেবী আপার কাছ থেকে আমি এবং আমার মতো অনেকেই এ শিক্ষা পেয়েছিলাম।
আমার একমাত্র বোনের বিয়েতে বেবী আপা আমাকে আর্থিক সহযোগিতা করেছিলেন। বিয়ের দিন রাতে জসিম ভাইয়ের মাধ্যমে কিছু টাকা তিনি আমাকে দিয়েছিলেন। মাওলা ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত ‘নি:সঙ্গ কারাগারে শেখ হাসিনার ৩৩১ দিন’ বইটি প্রকাশের পর বেবী আপা একদিন আমাকে খবর পাঠালেন আমি যেন তাঁর সঙ্গে দেখা করি। একদিন সন্ধ্যায় লালমাটিয়ার বিডি নিউজ অফিসে তাঁর সঙ্গে দেখা করলাম। তিনি আমাকে একটি খাম দিয়ে বললেন, এটা রাখো, মাওলা ব্রাদার্স লেখক সম্মানী দিয়েছে। আমিতো অবাক! বেবী আপা বিষয়টা বুঝতে পারলেন, তিনি ড্রয়ার থেকে একটি বই বের করে বললেন নাও। এখানে প্রথমদিককার লেখাগুলো তোমার।
বছর দুয়েক আগে বাসসের বাংলা বিভাগে চাকরির ব্যাপারে ইন্টারভিউ দিয়ে বেবী আপার শরণাপন্ন হয়েছিলাম। তখন বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন হেলাল ভাই। বিচিত্রার সুবাদে তাঁর সঙ্গে আমাদের বেশ যোগাযোগ। নিয়োগ বোর্ডের অনেকেই আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন। আপাকে বললাম, আপনি সুপারিশ করলে আমার চাকরিটা হবে। বেবী আপা আক্ষেপ করে বললেন, দুলাল এখানে কেউ আমার কথা শোনে না।
সেদিন অসহায়ের মতো বেবী আপার উক্তিটি আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে। প্রথমে বুঝতে পারিনি তাঁর কথার অর্থ। পরে বুঝেছি ইচ্ছে থাকলেও যে তাঁর সাধ্য ছিল না।
বিচিত্রায় কাজ করতে গিয়ে বেবী আপার কিছু লেখালেখির কাজ খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। আমি নিজে এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে নিজেকে গর্ববোধ করি। শিশুতোষ বই ‘দীপ্তর জন্য ভালোবাসা’ বেবী আপার ছোট ছেলে শফিউল হাসান দীপ্তর (পুটু) জীবনের ছায়া অবলম্বনে। একজন প্রতিবন্ধী শিশুর বেড়ে ওঠার কাহিনী। লেখাটির প্রুফ দেখতে গিয়ে আমি অনেকবার কেঁদেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ সারাবিশ্বে অটিজম শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন। আমি মনে করি ‘দীপ্তর জন্য ভালোবাসা’ বইটি ছোটদের জন্য অসাধারণ দৃষ্টান্ত।
এক সময় দেখতাম বেগম রোকেয়ার নিজের লেখা এবং তাঁর সম্পর্কীয় রেফারেন্স অনেক বই বেবী আপা অফিসে পড়ছেন। আর প্রতিদিনই কিছু কিছু পয়েন্ট চম্পককে কম্পোজ করতে দিতেন। কিছুদিন পর দেখলাম এগুলো সংযুক্ত করে হয়ে গেল ‘পবিত্র রোকেয়া পাঠ।’ বেগম রোকেয়াকে সহজভাবে উপলব্ধি করার একটা অসাধারণ পুস্তিকা।
বেবী আপা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রচুর কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর প্রথম দিককার কাজগুলোতে তাঁর শ্রম খুব কাছ থেকে দেখেছি। বিচিত্রার শেষের পাতায় প্রতি সপ্তাহে বেবী আপার একটি নিয়মিত কলাম বের হতো। ‘অন্তরে বাহিরে’ নামে এই লেখাগুলো সঙ্কলিত হয়ে পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। যাতে তাঁর ব্যক্তি জীবনের ছায়া ছিল।
শুনেছি বেবী আপা আমার ওপর কোন এক কারণে নাকি অসন্তুষ্ট ছিলেন। বিচিত্রা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই কথাটি বিচিত্রার সহকর্মীদের কেউ কেউ আমাকে বলতেন। কিন্তু এর পর যতবারই আমি বেবী আপার সামনে গিয়েছি মনে হয়নি তিনি আমার ওপর অসন্তুষ্ট। তাই কখনও বিষয়টি জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন বোধ করিনি।
সাংবাদিক মহলে বেবী আপাকে নিয়ে উপলব্ধি ভাল-মন্দ মিলিয়েই। শতভাগ ভাল উপলব্ধির সাংবাদিকের সংখ্যা যে খুব একটা বেশি তাও নয়। তবে আমি কাছ থেকে যে বেবী আপাকে দেখেছি সেই আপা একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও স্নেহময়ী আদর্শ। তাঁর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি একজন অকৃত্রিম সুহৃদকে হারিয়েছেন। তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে আর একটি শব্দ যোগ করছি, আমরা একজন সংগ্রামী ‘নিবেদিতপ্রাণ’ সাংবাদিককে হারিয়েছি।
বেবী আপা, আপনি আপনার কাজ দিয়ে আমাদের যা শিখিয়েছেন তা আমরা নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকরা কখনই ভুলব না। অন্যায়কে অন্যায়, অসত্যকে অসত্য বলার দৃঢ় সাহস আমরা আপনার কাছে শিখেছি। বেবী আপা আপনি যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন।
ajoyakash@yahoo.com
http://allbanglanewspapers.com/janakantha/
No comments:
Post a Comment