ফিলিস্তিনকে মুক্ত কর, হত্যা থামাও
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ জুলাই, ২০১৪
মুক্ত কর, মুক্ত কর, ফিলিস্তিনকে মুক্ত কর, হত্যা থামাও, যুদ্ধ থামাও- ইসরাইলবিরোধী এই স্লোগানগুলোই এখন বিশ্ববাসীর মুখে মুখে। ইসরাইলের গাজা হামলার শুরুর পর থেকেই (৮ জুলাই) যুদ্ধবিরোধী মানুষ পথে নেমেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিদিনই দানা বাঁধছে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় সহিংসতা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় টাইম স্কয়ারের এ বিক্ষোভে দুই থেকে তিন হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ারের ব্যস্ত রাস্তায় প্রতিবাদকারীদের একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখতে হিমশিম খায় পুলিশ।
প্রতিবাদকারীরা ফিলিস্তিনে পতাকা প্রদর্শন করে ও ইসরাইলি হামলার নিন্দা সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করে। অনেক বিক্ষোভকারী ইসরাইলকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ করার দাবি জানান।
তবে কারা এই প্রতিবাদের আয়োজন করেছেন তা জানা যায়নি। কয়েক মাইল দূর থেকে মিছিল করে এরা নগরীর কেন্দ্রস্থলে চলে আসে।
নিউইয়র্কের বাসিন্দা ফিলিস্তিনি-আমেরিকান রামসে জামালি (৩৭) বলেন, ‘আমরা সামরিক অভিযান ও ফিলিস্তিনিদের হত্যা বন্ধ করার চেষ্টা করছি। আমরা শুধু চাই তাদের মানুষের মতো বাস করতে দেয়া হোক।’
জামালির কাঁধে তার আট বছরের ছেলে ছিল। মূসা নামে ছেলেটির হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘ইসরাইল, আমি একজন শিশু। অনুগ্রহ করে আমাকে হত্যা করো না।’ এই লেখার পাশে শিশুর রক্তাক্ত হাতের একটি ছাপ ছিল।
গাজা থেকে হামাস যোদ্ধাদের রকেট নিক্ষেপ বন্ধ করার কথা বলে চলতি মাসের প্রথম দিকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল।
এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গাজার নিহতের সংখ্যা ১৮০০-এ পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে, ইসরাইলের পক্ষে নিহত হয়েছে ৩৮ জন, এদের মধ্যে ৩৫ জন সেনা ও তিনজন বেসামরিক।
ইসরাইলের দূতাবাস বন্ধে তুরস্কে বিক্ষোভ
ইসরাইলের দূতাবাস বন্ধের দাবিতে শুক্রবার তুরস্কজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক কুদস দিবসের মিছিল কার্যত ইসরাইলি দূতাবাস বন্ধের দাবির মিছিলে পরিণত হয়। রাজধানী আঙ্কারায় বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলি দূতাবাসের সামনে জড়ো হন এবং ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার জনগণের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।
এ সময় তারা ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধের দাবি জানান। তবে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দূতাবাসে ভবনের কাছে যেতে দেয়নি এবং সম্ভাব্য যে কোনো ধরনের সংঘর্ষ ঠেকানোর ব্যবস্থা করে। পরে বিক্ষোভকারীরা ইহুদিবাদী ইসরাইল ও সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার পতাকা পোড়ান।
পরিবারের ১৮ জন নিহত
গাজায় ১২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি শুরুর মাত্র কিছুক্ষণ আগে শনিবার বর্বর ইসরাইলের ট্যাংকের গোলার আঘাতে দক্ষিণ গাজা উপত্যকার একটি পরিবারের ১৮ জন নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, খান ইউনিসের পূর্বের খুজা গ্রামের আল-নাজাফের পরিবার বৃহস্পতিবার থেকেই তাদের ভবনে আটকা পড়ে ছিল।
ইসরাইলি ট্যাংকের গোলায় ওই পরিবারের আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানান কিদরা।
এ নিয়ে গত ১৮ দিনের ইসরাইলি বর্বর হামলায় অন্তত ৯০০-এর অধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের প্রায় সবাই নিরীহ নাগরিক। ইসরাইলি হামলায় এর আগেও গাজায় বেশ কয়েকটি পরিবারের বহু সদস্য নিহত হয়েছেন।
সেনাদের উৎসাহ দিতে ইসরাইলি নারীদের নগ্ন ছবি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) প্রতি বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে। কিন্তু ফিলিস্তিনে হামলার জন্যে ইসরাইলি নাগরিকরা সেনাবাহিনীকে নানাভাবে উৎসাহ জোগাচ্ছে।
বুধবার ইসরাইলি যুবতীরা দেশটির সেনাবাহিনীকে হামলার জন্য উৎসাহ জোগাতে একটি ফেসবুক পেজে শতাধিক অর্ধনগ্ন ছবি পোস্ট করেছে।
এ ছবিতে দেখা যাচ্ছে, নারীরা তাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে লিখেছে ‘আই লাভ আইডিএফ’। ওই ফেসবুক পেজে তৎক্ষণাৎ ১২ হাজারেরও বেশি লাইক পড়েছে।
৮ জুলাই থেকে ফিলিস্তিনে এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এতে ফিলিস্তিনিদের নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৪৪ জন। এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি।
No comments:
Post a Comment