ঈদ অর্থনীতি এবারের আকার ॥ ৫৫ হাজার কোটি টাকা
০ গতবারের চেয়ে ১০ হাজার কোটি বেশি, নতুন রেকর্ড
০ কেনাকাটা বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ
০ পরিবারপ্রতি ব্যয় বেড়েছে ৫ থেকে ২০ গুণ
০ কেনাকাটা বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ
০ পরিবারপ্রতি ব্যয় বেড়েছে ৫ থেকে ২০ গুণ
এম শাহজাহান ॥ শ্রাবণের আকাশে চলছে সাদা মেঘের লুকোচুরি খেলা। কখনও ঝুম বৃষ্টি, কখনও কড়া রোদের ভ্যাপসা গরম। সঙ্গে ব্যস্ততম নগরী রাজধানীর পরিচিত সেই যানজট। মার্কেটে লোকজনের ঠাসাঠাসি, দম বন্ধ হওয়ার পরিবেশ! কিন্তু সবই তুচ্ছ গৃহবধূ তাহমিনার কাছে। শেষ মুহূর্তের ঈদ কেনাকাটার জন্য স্বামী ও শিশুকন্যা সুমাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন তিনি। এক বা দু’দিন বাদে দেশের বড় ধর্মীয় উৎসব রোজার ঈদ পালিত হবে সারাদেশে। তাই তাহমিনার পরিবারের মতো, গোটা বাংলাদেশ এখন প্রস্তুত ঈদ উদযাপনে। দেশের সব কর্মকা- বর্তমানে আবর্তিত হচ্ছে ঈদ ঘিরে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে রাজনীতির ময়দান সর্বত্রই ঈদের আমেজ বইছে।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, উৎসবের সঙ্গে অর্থনীতির যোগসূত্র নিবিড়ভাবে জড়িত। যে উৎসব যত বড়, তার অর্থনৈতিক কর্মকা-ও তত বেশি। বাংলাদেশে ঈদ, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে দুর্গা ও শ্যামা পুজো এবং ইউরোপ ও আমেরিকায় বড় দিন সামনে রেখে বড় ধরনের অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হয়ে থাকে। পশ্চিমা দেশগুলোতে তৈরি পোশাকের বড় রফতানি হয় বড়দিনের উৎসবকে কেন্দ্র করে। দেশেও পোশাকের সবচেয়ে বেশি কেনাবেচাও হয় ঈদ মৌসুমে।
এ বছর দেশে ঈদ কেনাকটা বেড়েছে ১০-১৫ শতাংশ পর্যন্ত। বেড়েছে পোশাক-আশাকের দামও। এক্ষেত্রে দাম বৃদ্ধির হার ১০-২০ ভাগ। ঈদে পরিবারপ্রতি খরচ বেড়েছে ৫ থেকে ২০ গুণ। তবে এই যে, কেনাকাটা বেড়েছে এর মূলে রয়েছে গত কয়েক বছরে সরকারী-বেসরকারী খাতের বেতন ও মজুরি বৃদ্ধি। এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষে রেমিটেন্স প্রবাহে ইতিবাচক ধারা, উৎসব বোনাসের প্রভাব রয়েছে। ইতোমধ্যে পোশাক শ্রমিকদের বেতন ৩ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়েছে। সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য স্থায়ী পে-কমিশন গঠন করেছে সরকার। এ ছাড়া বেসরকারী অন্যান্য খাতেও বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে মাথাপিছু আয়। এতে এ বছর ঈদ উৎসবের কেনাকাটায় নতুন রেকর্ড অর্জন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত বছর ৪৫ হাজার টাকা কেনাবেচা হয়েছিল। এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৫৫ হাজার কোটি টাকা। তবে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, যেভাবে মানুষ কেনাকাটায় ঝাঁপিয়ে পড়ছে তাতে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেও অবাক হওয়ার মতো কা- হবে না।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট ব্যাঙ্কার ও অর্থনীতিবিদ মামুন রশীদ জনকণ্ঠকে বলেন, ঈদের ব্যাপ্তি প্রতিবছর বাড়ছে। মুসলমানদের পাশাপাশি এই উৎসবে অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও সম্পৃক্ততা বেড়েছে বেশ ভালভাবে। ইফতারি ও কেনাকাটায় তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, রোজায় ইফতারি বাবদ ভোগ্যপণ্যের কেনাকাটা হবে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এখানে মুসলমানদের পাশাপাশি সংখ্যালঘুরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইফতারে অংশগ্রহণ করছেন। তিনি বলেন, পোশাক-আশাকের পাশাপাশি অন্যান্য কেনাকাটা বাড়ায় এ বছর ঈদ অর্থনীতির আকার হবে ৫৫ হাজার কোটি টাকা। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বেশি। ঈদ বেচা-বিক্রি ও লেন-দেনে এটি একটি নতুন রেকর্ড।
এদিকে, ‘বাঙালির উৎসবের অর্থনীতি’ নামক এক গবেষণায়ও বলা হয়েছে রোজায় শুধু ইফতার ও সেহরিতে খরচ হবে ১৮ হাজার কোটি টাকা, ৩ কোটি লোক গড়ে ৫ হাজার টাকা করে ১৫ হাজার কোটি টাকা বোনাস পাবেন, যার পুরোটাই খরচ হবে এই ঈদে। নিম্নবিত্তের ৫ কোটি পরিবার রয়েছে যারা গড়ে ঈদ উপলক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা করে ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করবেন। ট্যাক্স দেয় না কিন্তু ধর্মীয় অনুশাসনের কারণে বিত্তশালীরা ১৫ হাজার কোটি টাকা যাকাত প্রদান করবে। যার পুরোটাই ব্যয় হবে ঈদ উৎসবে। এ ছাড়া উচ্চবিত্তের প্রায় ১ লাখ মানুষ দেশের বাইরে ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কেনাকাটার জন্য পাড়ি জমাবেন। গড়ে এদের ৫০ হাজার টাকা খরচ হলেও তাতে ৫শ’ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এ ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে ঘুরে বেড়ানো, বিভিন্ন আনন্দ বিনোদন বাবদ আরও দেড় থেকে ২ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে এই ঈদে। সব মিলিয়ে এই ঈদে অর্থনীতির ন্যূনতম আকার হবে ৫৫ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে, ঈদকেন্দ্রিক বাণিজ্য করতে যারা বিনিয়োগ করেছেন, তাঁদের এখন দম ফেলার সময় নেই। সারাদিন তো বটেই গভীর রাত পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে চলছে বিকিকিনি। নানা ধরনের সঙ্কটের মধ্যেও গত বছরের চেয়ে এই ঈদে আর্থিক লেন-দেন ও বেচাকেনা বেড়েছে প্রায় ১০-১৫ শতাংশ পর্যন্ত, যা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া দারিদ্র্য হ্রাস, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের ফলে ঈদকেন্দ্রিক লেনদেন প্রতিবছর বাড়ছে।
জানা গেছে, ঈদ কেন্দ্র করে উচ্চবিত্ত পরিবারগুলো সর্বনিম্ন ২০ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় করে থাকে। কোন কোন পরিবারের ব্যয় এর চেয়েও বেশি। অন্যদিকে, উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে ব্যয় হয় সর্বনিম্ন ৫ লাখ টাকা। মধ্য মধ্যবিত্তের ঈদ বাজেট সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা ধরা হয়। আর নিম্ন মধ্যবিত্তের ব্যয় ১০-১৫ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। ঈদবাজারের মোট লেনদেনের ৬০ শতাংশই ৬০ লাখ ধনী মানুষ ব্যয় করে বলে অর্থনীতিবিদরা অভিমত দিয়েছেন।
প্রতিদিন কেনাকাটা হচ্ছে দেড় হাজার কোটি টাকা ॥ ঈদ বাজারে প্রতিদিন কেনাকাটা হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এসএ কাদের কিরন জনকণ্ঠকে বলেন, দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে ২৬ লাখ দোকান রয়েছে। এসব দোকানে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হচ্ছে দেড় হাজার কোটি টাকা। রোজা শুরুর পর থেকে চাঁদ রাত পর্যন্ত বেচাবিক্রির এ ধারা অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষে ইতোমধ্যে প্রবাসীরা বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন। প্রবাসী রেমিটেন্সের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। জামাকাপড়, জুতো, কসমেটিক্স, স্বর্ণ, ও ভোগ্যপণ্যসহ ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং উর্ধতন ব্যাংক কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, আসন্ন ঈদে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হবে। আর এ কারণে দোকানপাট থেকে শুরু করে ব্যাংক, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শিল্প-কারখানার সব কর্মকা- চলছে এখন ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করে। ঈদের পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত উদ্যোক্তাদের বিপুল অঙ্কের ঋণ দিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে ঈদ বাজারে চাহিদামতো সব পণ্য পাচ্ছেন ক্রেতারা।
ঈদ বাজারের সবচেয়ে প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে পোশাক। এর পরেই রয়েছে ভোগ্যপণ্য সামগ্রী। পোশাকের মধ্যে পায়জামা, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, শাড়ি, লুঙ্গি ও টুপি প্রধান। এরপর রয়েছে জুতো, প্রসাধনী ও স্বর্ণালঙ্কার। আর উচ্চবিত্তের জন্য রয়েছে গাড়ি এবং দামী ফার্নিচার। নতুন ফ্ল্যাট কেনাবেচাও বাড়ে এই ঈদে। ঈদ সামনে রেখে অনেক প্রতিষ্ঠিত আবাসন কোম্পানি ফ্ল্যাট বিক্রিতে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে। আর এ কারণে চলতি ঈদ উৎসবে গাড়ি, ফার্নিচারের সঙ্গে ধনাঢ্য ব্যক্তিরা ফ্ল্যাটের বুকিং দিচ্ছেন। এ ছাড়া অপরিহার্য ভোগ্যপণ্য হিসেবে রয়েছে সেমাই, চিনি, ছোলা, ডালসহ আরও অনেক পণ্য।
উৎসব ভাতা, বেতন ও বোনাস সবই ক্রেতারা খরচ করবেন ধর্মীয় এই প্রধান উৎসব উদযাপনকে সামনে রেখে। এ কর্মকা-ের সঙ্গে যোগ হবে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স, সরকারী চাকরিজীবীদের ৭০০ কোটি টাকার বোনাস। এ ছাড়া ৩০ লাখ গার্মেন্টস কর্মীর ২ হাজার কোটি টাকা ও ৮০ লাখ দোকান কর্মচারীর ৪ হাজার কোটি টাকার বোনাসের পুরো অর্থ চলে আসবে এ কর্মকাণ্ডে। পাশাপাশি রয়েছে কর্পোরেট, বেসরকারী অফিস, ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বোনাসের টাকা। ফলে বিপুল পরিমাণ এ অর্থ ব্যয়ের কারণে অর্থনীতিতে বড় ধরনের গতিশীলতা আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ঈদ কেন্দ্র করে দেশী-বিদেশী পণ্যের বিপুল সমাহার ঘটলেও উচ্চবিত্তদের অনেকেই ঈদের বাজার করেন দেশের বাইরে গিয়ে। রোজার মাসের শুরু থেকেই এরা সিঙ্গাপুর, হংকং, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যে সফরে যান। মূলত আভিজাত্য বজায় রাখতেই এরা বিদেশের বাজার থেকে হাল-ফ্যাশনের পোশাক ও অন্যান্য বিলাসসামগ্রী নিয়ে আসেন। এ খাতে ব্যয়ের পরিমাণও প্রায় হাজার কোটি টাকা বলে অর্থনীতিবিদদের ধারণা।
এ ছাড়া বাড়তি কেনাকাটা হওয়ায় সারাদেশে ঈদকেন্দ্রিক প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হচ্ছে। গত বছর পোশাকের বাজারে লেনদেন হয়েছিল প্রায় ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকা। এবার আরও ১০-১৫ শতাংশ কেনাকাটা বাড়ায় ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন এই লেনদেন শেষ পর্যন্ত ৩৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। আর সব মিলিয়ে ঈদে কেনাকাটা ৫৫ হাজার কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রথম সহসভাপতি আবুল কাশেম আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, এ বছর ঈদ কেনাকাটা বাড়বে। রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর হওয়া ও ব্যবসায়ীদের আস্থা ফিরে আসায় অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে দেশের অর্থনীতির আকার বেড়েছে। রাষ্ট্রীয় বাজেট বড় হওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তি খাতের আয় ও খরচ বাড়ছে। ফলে বেড়েছে ঈদের কেনাকাটাও।
চাঙ্গা ফার্নিচার, ইলেক্ট্রনিক্স গাড়ি ও স্বর্ণ শিল্প ॥ পোশাক-আশাক ছাড়িয়ে এই ঈদে চাঙ্গা হয়েছে ফার্নিচার, ইলেক্ট্রনিক্স, গাড়ি ও স্বর্ণ শিল্প। বোনাসের টাকা হাতে আসার পর ক্রেতারা ঘর সাজাতে কিনে নিচ্ছেন ফার্নিচার। এ তালিকায় আছে খাট, আলমারি, শোকেস, সোফাসেট ও ড্রেসিং টেবিল। দেশী ফার্নিচার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অটবি, আকতার, নাভানা, হাতিলসহ সব প্রতিষ্ঠানে বিকিকিনি বেড়েছে। এ ছাড়া বাইরে থেকেও ফার্নিচার আমদানি করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ধানম-ি শোরুমের হাতিলের বিক্রয় কর্মকর্তা শিউলি আক্তার জনকণ্ঠকে বলেন, ঈদে তাদের বেচাবিক্রি কয়েকগুণ বেড়েছে। ক্রেতারা পছন্দমতো ফার্নিচার কিনে নিচ্ছেন। তিনি বলেন, গত ঈদের চেয়ে এ বছর তাদের বিক্রি অনেক বেড়েছে। একই অবস্থা ইলেক্ট্রনিক্স শিল্পেও। টেলিভিশন, ফ্রিজ ও মোবাইল ফোন সেট বিক্রির ধুম পড়েছে। ঈদ সামনে রেখে এ শিল্পে বিক্রি হবে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে বায়তুল মোকাররম মার্কেটের টেলিভিশন বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম জানান, ঈদে তাদের শোরুম থেকে ইতোমধ্যে বিপুল সংখ্যক ফ্রিজ ও টেলিভিশন বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এ বছর বিক্রি-বাট্টা ভাল হওয়ায় তাঁরা বাড়তি বেতন-বোনাস পেয়েছেন। এই মার্কেটের আরেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী জানান, স্বর্ণ বিক্রিতে এ বছর নতুন রেকর্ড হবে। মহিলারা পছন্দ মতো স্বর্ণের গহনা কিনতে ভিড় করছে বায়তুল মোকাররম মার্কেটে। একই অবস্থা রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ক্ষেত্রেও। ঈদ সামনে রেখে জাপানী ব্র্যান্ডের রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ব্যবসা এখন জমজমাট। দীর্ঘদিনের মন্দা কাটিয়ে বাট্টা বিক্রি বাড়ায় খুশি গাড়ি ব্যবসায়ীরা।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, উৎসবের সঙ্গে অর্থনীতির যোগসূত্র নিবিড়ভাবে জড়িত। যে উৎসব যত বড়, তার অর্থনৈতিক কর্মকা-ও তত বেশি। বাংলাদেশে ঈদ, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে দুর্গা ও শ্যামা পুজো এবং ইউরোপ ও আমেরিকায় বড় দিন সামনে রেখে বড় ধরনের অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হয়ে থাকে। পশ্চিমা দেশগুলোতে তৈরি পোশাকের বড় রফতানি হয় বড়দিনের উৎসবকে কেন্দ্র করে। দেশেও পোশাকের সবচেয়ে বেশি কেনাবেচাও হয় ঈদ মৌসুমে।
এ বছর দেশে ঈদ কেনাকটা বেড়েছে ১০-১৫ শতাংশ পর্যন্ত। বেড়েছে পোশাক-আশাকের দামও। এক্ষেত্রে দাম বৃদ্ধির হার ১০-২০ ভাগ। ঈদে পরিবারপ্রতি খরচ বেড়েছে ৫ থেকে ২০ গুণ। তবে এই যে, কেনাকাটা বেড়েছে এর মূলে রয়েছে গত কয়েক বছরে সরকারী-বেসরকারী খাতের বেতন ও মজুরি বৃদ্ধি। এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষে রেমিটেন্স প্রবাহে ইতিবাচক ধারা, উৎসব বোনাসের প্রভাব রয়েছে। ইতোমধ্যে পোশাক শ্রমিকদের বেতন ৩ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়েছে। সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য স্থায়ী পে-কমিশন গঠন করেছে সরকার। এ ছাড়া বেসরকারী অন্যান্য খাতেও বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে মাথাপিছু আয়। এতে এ বছর ঈদ উৎসবের কেনাকাটায় নতুন রেকর্ড অর্জন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত বছর ৪৫ হাজার টাকা কেনাবেচা হয়েছিল। এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৫৫ হাজার কোটি টাকা। তবে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, যেভাবে মানুষ কেনাকাটায় ঝাঁপিয়ে পড়ছে তাতে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেও অবাক হওয়ার মতো কা- হবে না।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট ব্যাঙ্কার ও অর্থনীতিবিদ মামুন রশীদ জনকণ্ঠকে বলেন, ঈদের ব্যাপ্তি প্রতিবছর বাড়ছে। মুসলমানদের পাশাপাশি এই উৎসবে অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও সম্পৃক্ততা বেড়েছে বেশ ভালভাবে। ইফতারি ও কেনাকাটায় তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, রোজায় ইফতারি বাবদ ভোগ্যপণ্যের কেনাকাটা হবে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এখানে মুসলমানদের পাশাপাশি সংখ্যালঘুরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইফতারে অংশগ্রহণ করছেন। তিনি বলেন, পোশাক-আশাকের পাশাপাশি অন্যান্য কেনাকাটা বাড়ায় এ বছর ঈদ অর্থনীতির আকার হবে ৫৫ হাজার কোটি টাকা। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বেশি। ঈদ বেচা-বিক্রি ও লেন-দেনে এটি একটি নতুন রেকর্ড।
এদিকে, ‘বাঙালির উৎসবের অর্থনীতি’ নামক এক গবেষণায়ও বলা হয়েছে রোজায় শুধু ইফতার ও সেহরিতে খরচ হবে ১৮ হাজার কোটি টাকা, ৩ কোটি লোক গড়ে ৫ হাজার টাকা করে ১৫ হাজার কোটি টাকা বোনাস পাবেন, যার পুরোটাই খরচ হবে এই ঈদে। নিম্নবিত্তের ৫ কোটি পরিবার রয়েছে যারা গড়ে ঈদ উপলক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা করে ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করবেন। ট্যাক্স দেয় না কিন্তু ধর্মীয় অনুশাসনের কারণে বিত্তশালীরা ১৫ হাজার কোটি টাকা যাকাত প্রদান করবে। যার পুরোটাই ব্যয় হবে ঈদ উৎসবে। এ ছাড়া উচ্চবিত্তের প্রায় ১ লাখ মানুষ দেশের বাইরে ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কেনাকাটার জন্য পাড়ি জমাবেন। গড়ে এদের ৫০ হাজার টাকা খরচ হলেও তাতে ৫শ’ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এ ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে ঘুরে বেড়ানো, বিভিন্ন আনন্দ বিনোদন বাবদ আরও দেড় থেকে ২ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে এই ঈদে। সব মিলিয়ে এই ঈদে অর্থনীতির ন্যূনতম আকার হবে ৫৫ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে, ঈদকেন্দ্রিক বাণিজ্য করতে যারা বিনিয়োগ করেছেন, তাঁদের এখন দম ফেলার সময় নেই। সারাদিন তো বটেই গভীর রাত পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে চলছে বিকিকিনি। নানা ধরনের সঙ্কটের মধ্যেও গত বছরের চেয়ে এই ঈদে আর্থিক লেন-দেন ও বেচাকেনা বেড়েছে প্রায় ১০-১৫ শতাংশ পর্যন্ত, যা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া দারিদ্র্য হ্রাস, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের ফলে ঈদকেন্দ্রিক লেনদেন প্রতিবছর বাড়ছে।
জানা গেছে, ঈদ কেন্দ্র করে উচ্চবিত্ত পরিবারগুলো সর্বনিম্ন ২০ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় করে থাকে। কোন কোন পরিবারের ব্যয় এর চেয়েও বেশি। অন্যদিকে, উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে ব্যয় হয় সর্বনিম্ন ৫ লাখ টাকা। মধ্য মধ্যবিত্তের ঈদ বাজেট সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা ধরা হয়। আর নিম্ন মধ্যবিত্তের ব্যয় ১০-১৫ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। ঈদবাজারের মোট লেনদেনের ৬০ শতাংশই ৬০ লাখ ধনী মানুষ ব্যয় করে বলে অর্থনীতিবিদরা অভিমত দিয়েছেন।
প্রতিদিন কেনাকাটা হচ্ছে দেড় হাজার কোটি টাকা ॥ ঈদ বাজারে প্রতিদিন কেনাকাটা হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এসএ কাদের কিরন জনকণ্ঠকে বলেন, দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে ২৬ লাখ দোকান রয়েছে। এসব দোকানে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হচ্ছে দেড় হাজার কোটি টাকা। রোজা শুরুর পর থেকে চাঁদ রাত পর্যন্ত বেচাবিক্রির এ ধারা অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষে ইতোমধ্যে প্রবাসীরা বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন। প্রবাসী রেমিটেন্সের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। জামাকাপড়, জুতো, কসমেটিক্স, স্বর্ণ, ও ভোগ্যপণ্যসহ ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং উর্ধতন ব্যাংক কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, আসন্ন ঈদে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হবে। আর এ কারণে দোকানপাট থেকে শুরু করে ব্যাংক, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শিল্প-কারখানার সব কর্মকা- চলছে এখন ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করে। ঈদের পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত উদ্যোক্তাদের বিপুল অঙ্কের ঋণ দিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে ঈদ বাজারে চাহিদামতো সব পণ্য পাচ্ছেন ক্রেতারা।
ঈদ বাজারের সবচেয়ে প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে পোশাক। এর পরেই রয়েছে ভোগ্যপণ্য সামগ্রী। পোশাকের মধ্যে পায়জামা, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, শাড়ি, লুঙ্গি ও টুপি প্রধান। এরপর রয়েছে জুতো, প্রসাধনী ও স্বর্ণালঙ্কার। আর উচ্চবিত্তের জন্য রয়েছে গাড়ি এবং দামী ফার্নিচার। নতুন ফ্ল্যাট কেনাবেচাও বাড়ে এই ঈদে। ঈদ সামনে রেখে অনেক প্রতিষ্ঠিত আবাসন কোম্পানি ফ্ল্যাট বিক্রিতে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে। আর এ কারণে চলতি ঈদ উৎসবে গাড়ি, ফার্নিচারের সঙ্গে ধনাঢ্য ব্যক্তিরা ফ্ল্যাটের বুকিং দিচ্ছেন। এ ছাড়া অপরিহার্য ভোগ্যপণ্য হিসেবে রয়েছে সেমাই, চিনি, ছোলা, ডালসহ আরও অনেক পণ্য।
উৎসব ভাতা, বেতন ও বোনাস সবই ক্রেতারা খরচ করবেন ধর্মীয় এই প্রধান উৎসব উদযাপনকে সামনে রেখে। এ কর্মকা-ের সঙ্গে যোগ হবে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স, সরকারী চাকরিজীবীদের ৭০০ কোটি টাকার বোনাস। এ ছাড়া ৩০ লাখ গার্মেন্টস কর্মীর ২ হাজার কোটি টাকা ও ৮০ লাখ দোকান কর্মচারীর ৪ হাজার কোটি টাকার বোনাসের পুরো অর্থ চলে আসবে এ কর্মকাণ্ডে। পাশাপাশি রয়েছে কর্পোরেট, বেসরকারী অফিস, ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বোনাসের টাকা। ফলে বিপুল পরিমাণ এ অর্থ ব্যয়ের কারণে অর্থনীতিতে বড় ধরনের গতিশীলতা আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ঈদ কেন্দ্র করে দেশী-বিদেশী পণ্যের বিপুল সমাহার ঘটলেও উচ্চবিত্তদের অনেকেই ঈদের বাজার করেন দেশের বাইরে গিয়ে। রোজার মাসের শুরু থেকেই এরা সিঙ্গাপুর, হংকং, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যে সফরে যান। মূলত আভিজাত্য বজায় রাখতেই এরা বিদেশের বাজার থেকে হাল-ফ্যাশনের পোশাক ও অন্যান্য বিলাসসামগ্রী নিয়ে আসেন। এ খাতে ব্যয়ের পরিমাণও প্রায় হাজার কোটি টাকা বলে অর্থনীতিবিদদের ধারণা।
এ ছাড়া বাড়তি কেনাকাটা হওয়ায় সারাদেশে ঈদকেন্দ্রিক প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হচ্ছে। গত বছর পোশাকের বাজারে লেনদেন হয়েছিল প্রায় ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকা। এবার আরও ১০-১৫ শতাংশ কেনাকাটা বাড়ায় ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন এই লেনদেন শেষ পর্যন্ত ৩৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। আর সব মিলিয়ে ঈদে কেনাকাটা ৫৫ হাজার কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রথম সহসভাপতি আবুল কাশেম আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, এ বছর ঈদ কেনাকাটা বাড়বে। রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর হওয়া ও ব্যবসায়ীদের আস্থা ফিরে আসায় অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে দেশের অর্থনীতির আকার বেড়েছে। রাষ্ট্রীয় বাজেট বড় হওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তি খাতের আয় ও খরচ বাড়ছে। ফলে বেড়েছে ঈদের কেনাকাটাও।
চাঙ্গা ফার্নিচার, ইলেক্ট্রনিক্স গাড়ি ও স্বর্ণ শিল্প ॥ পোশাক-আশাক ছাড়িয়ে এই ঈদে চাঙ্গা হয়েছে ফার্নিচার, ইলেক্ট্রনিক্স, গাড়ি ও স্বর্ণ শিল্প। বোনাসের টাকা হাতে আসার পর ক্রেতারা ঘর সাজাতে কিনে নিচ্ছেন ফার্নিচার। এ তালিকায় আছে খাট, আলমারি, শোকেস, সোফাসেট ও ড্রেসিং টেবিল। দেশী ফার্নিচার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অটবি, আকতার, নাভানা, হাতিলসহ সব প্রতিষ্ঠানে বিকিকিনি বেড়েছে। এ ছাড়া বাইরে থেকেও ফার্নিচার আমদানি করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ধানম-ি শোরুমের হাতিলের বিক্রয় কর্মকর্তা শিউলি আক্তার জনকণ্ঠকে বলেন, ঈদে তাদের বেচাবিক্রি কয়েকগুণ বেড়েছে। ক্রেতারা পছন্দমতো ফার্নিচার কিনে নিচ্ছেন। তিনি বলেন, গত ঈদের চেয়ে এ বছর তাদের বিক্রি অনেক বেড়েছে। একই অবস্থা ইলেক্ট্রনিক্স শিল্পেও। টেলিভিশন, ফ্রিজ ও মোবাইল ফোন সেট বিক্রির ধুম পড়েছে। ঈদ সামনে রেখে এ শিল্পে বিক্রি হবে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে বায়তুল মোকাররম মার্কেটের টেলিভিশন বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম জানান, ঈদে তাদের শোরুম থেকে ইতোমধ্যে বিপুল সংখ্যক ফ্রিজ ও টেলিভিশন বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এ বছর বিক্রি-বাট্টা ভাল হওয়ায় তাঁরা বাড়তি বেতন-বোনাস পেয়েছেন। এই মার্কেটের আরেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী জানান, স্বর্ণ বিক্রিতে এ বছর নতুন রেকর্ড হবে। মহিলারা পছন্দ মতো স্বর্ণের গহনা কিনতে ভিড় করছে বায়তুল মোকাররম মার্কেটে। একই অবস্থা রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ক্ষেত্রেও। ঈদ সামনে রেখে জাপানী ব্র্যান্ডের রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ব্যবসা এখন জমজমাট। দীর্ঘদিনের মন্দা কাটিয়ে বাট্টা বিক্রি বাড়ায় খুশি গাড়ি ব্যবসায়ীরা।
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html
No comments:
Post a Comment