Tuesday, July 1, 2014

যশোর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৬ চট্টগ্রামে গার্মেন্টস কর্মীর মৃত্যু

যশোর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৬
চট্টগ্রামে গার্মেন্টস কর্মীর মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার, যশোর/নিজস্ব সংবাদদাতা, বেনাপোল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ১০ জন নিহত ও অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে ঝিকরগাছার গদখালি বেনেয়ালি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বৃষ্টির কারণে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে দুর্ঘটনায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার বেরতলা এলাকায় ট্রাকের চাপায় সিএনজিচালিত অটোরিক্সার চালকসহ ৬ জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৫ জন রয়েছে।
যশোরের সহকারী পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সোহাগ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী (ঢাকা মেট্রো-ব- ১৪-৩৮৯০) গদখালি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ সময় গাড়িটি রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই অন্তত ৬ জন নিহত হন। আহত হন আরও অন্তত ২০ জন। পরে আহতদের মধ্যে ১ জন ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ৩ জন যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। আহত অপর ১৬ জনকে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন, ঢাকার ডেমরা এলাকার সারুলিয়া বসুন্ধরা রোডেরা বজলুর রহমানের ছেলে জামান (৪০), ঢাকার ধোলাইখাল গোলান নগর লেনের বাসুদেবের ছেলে বিদ্যুৎ ঘোষ (৪৫), মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি হাসাইল গ্রামের আব্দুস সালাম (৩০), শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার গোয়াখী গ্রামের রণজিৎ পালের ছেলে প্রসেনজিৎ পাল (৩৪), ঢাকার ধোলাইখাল এলাকার রজমান আলী (৩৫), কিশোরগঞ্জের অষ্ট্রগ্রামের মৃত যোগেন সাহার ছেলে নির্মল চন্দ্র সাহা (৫৫), তাঁর স্ত্রী হেনা সাহা (৪০), রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ইলিশপোল গ্রামের বাসিন্দা ও বাসে হেলপার মোমিন (৩৮), কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের তুলারাও গ্রামের আনোয়ার আলীর ছেলে মোমিন উদ্দিন (৩৫) ও ঢাকার নবাবগঞ্জের গোবিন্দপুর গ্রামের দিলীপ পালের ছেলে রঞ্জন পাল (৪০)।
ঘটনাস্থলে নিহত ৬ জনের লাশ ঝিকরগাছা থানায় এবং ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন ও যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ৩ জনের মরদেহ রয়েছে।
আহতদের মধ্যে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও ঝিকরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, ঢাকার ৬৭/১ উত্তর গোলাপবাগ এলাকার আফতাব হোসেন ঝন্টু (৩৫), ঢাকার নবাবগঞ্জ রোড এলাকার রূপলাল সাহার ছেলে হরিদাস সাহা (৫৫), বিক্রমপুর এলাকার সুমন (৩০), ঢাকার শ্যামপুর কদমতলী এলাকার রাকিব (৩০), তাঁতীপাড়ার শিবু ঘোষের ছেলে জনি ঘোষ (৩৫), তাঁতী বাজার এলাকার জীবন সরকারের ছেলে রণজিৎ সরকার (৩৫), গীতালী ঘোষ (৪৫), ঢাকার ১১২ আর কে মিশন রোডের গোপীবাগের আবুল কাসেমের মেয়ে সালমা আকতার রুবি (৩০), ঢাকার বংশালের আব্দুল হাদি লেনের আবিদুর রহমানের ছেলে জাহিদুর রহমান ওয়ালিদ (৩০), ঢাকার বিক্রমপুরের নুরুল ব্যাপারীর মেয়ে ময়না (২৫) ও ঢাকা উত্তর যাত্রাবাড়ীর কাসেম হাওলাদারের ছেলে আবুল কালাম ওরফে সুমন (৩০)।
স্থানীয়রা জানান, সকালে যশোরাঞ্চলে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টির মধ্যেই যাত্রীবাহী বাসটি গদখালি বেনেয়ালি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ সময় গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে যশোর-বেনাপোল সড়কের পাশে বিশালকায় গাছে আঘাত হানে। দুর্ঘটনায় বাসের ছাদসহ ওপরের অংশ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে বাসের যাত্রীদের সবাই হতাহত হন।
পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করে। খবর পেয়ে ঝিকরগাছা থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা উদ্ধার প্রক্রিয়ায় যোগ দেন বলে জানান ঝিকরগাছা থানার ওসি মোশাররফ হোসেন।
যশোরের সহকারী পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, দুর্ঘটনায় হতাহতদের প্রায়ই ভারতে যাওয়ার জন্য বেনাপোলে যাচ্ছিলেন। এদের অধিকাংশের বাড়ি ঢাকা ও আশপাশের এলাকায়। ইতোমধ্যে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। পরিবারের স্বজনরা এলে তাদের কাছে লাশগুলো হস্তান্তর করা হবে।
গণজাগরণ মঞ্চের শোক
যশোরের ঝিকরগাছায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক মুক্তিযোদ্ধা নির্মল চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী হেনা সাহাসহ অন্যদের মৃত্যুতে গণজাগরণ মঞ্চ গভীর শোক প্রকাশ করেছে। শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গণজাগরণ মঞ্চ গভীর সমবেদনা জানিয়েছে।

এক পরিবারের ৫ জন নিহত
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেড়তলা নামক স্থানে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জন নিহত হয়েছে। এ সময় আরও ৩ জন আহত হয়েছে। জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের বেড়তলা নামক স্থানে মাধবপুর থেকে ছেড়ে আসা একটি মালবাহী ট্রাকের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী সিএনজির মুখোমুখি সংর্ঘষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই চালক এবং সিএনজিতে থাকা একই পরিবারের ৫ সদস্যের মৃত্যু হয়। এরা হলো বুধল গ্রামের মিজান মিয়া (৫০), তাঁর স্ত্রী নিলুফা বেগম (৪০), তাদের শিশুপুত্র জুবায়ের ইসলাম (০১), তার ভাতিজা মাফুজ মিয়া (২৫) ও তার পুত্র মাসুদ (০৫)। আহতদের মধ্যে ৩ জনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সিএনজির যাত্রীরা আশুগঞ্জ থেকে বুধল আসার পথে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। সড়ক দুর্ঘটনার পর ওই মহাসড়কে প্রায় ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। বিশ্বরোড হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ সার্জেন্ট নুর এ হতাহতের ঘটনা নিশ্চিত করেন।
গার্মেন্টস কর্মীর মৃত্যু
চট্টগ্রাম অফিস জানায়, চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার নিউমুরিং মোড় এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত জেসমিন আকতার (২২) বরিশাল জেলার কোতোয়ালি থানার জনৈক সোহাগ খলিফার কন্যা। মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই পঙ্কজ বড়ুয়া সাংবাদিকদের জানান, কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পতিত হন পোশাককর্মী জেসমিন। যাত্রীবাহী একটি বাস তাকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। গুরুতর অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html

No comments:

Post a Comment