Tuesday, July 1, 2014

ইউরোপের দুই পরাশক্তি জার্মানি ও ফ্রান্সের কে বিদায় নেবে?

ইউরোপের দুই পরাশক্তি জার্মানি ও ফ্রান্সের কে বিদায় নেবে?
জাহিদুল আলম জয় ॥ শেষ ষোলোর লড়াইয়ে প্রত্যাশিত ফেবারিট দলগুলো জয় পেয়ে শেষ আটে পাড়ি জমিয়েছে। কোয়ার্টার ফাইনালের লাইনআপও জানান দিচ্ছে, অঘটন না ঘটলে ফেবারিটরাই পৌঁছে যাবে সেমিফাইনালে। তবে এই পর্ব থেকে ইউরোপের দুই পরাশক্তি জার্মানি বা ফ্রান্সকে বিদায় নিতে হবে। কেননা শেষ আটে এই দুই দল একে অপরের মুখোমুখি হবে। শুক্রবার সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার হাইভোল্টেজ ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তিনবারের ও একবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
বরাবরের মতোই গ্রুপ পর্বে দাপট দেখিয়ে নকআউট পর্বে উঠে আসে জার্মানি। ‘জি’ গ্রুপে সবার সেরা হয়ে সেরা ষোলোতে পা রাখে ইউরোপের পাওয়ার হাউসরা। তিন ম্যাচে দু’টি জয় ও এক ড্রতে ৭ পয়েন্ট পায় জোয়াকিম লোর দল। প্রথম ম্যাচে পর্তুগালকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে মিশন শুরু করে জার্মানরা। দ্বিতীয় ম্যাচে ঘানার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করলেও শেষ গ্রুপ ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ১-০ গোলের জয় পায় তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এরপর শেষ ষোলোতে আলজিরিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে এসেছে জার্মানি। সোমবার আলজিরিয়ানদের হারাতে অবশ্য ঘাম ঝরাতে হয়েছে লাম, ওজিল, শোয়েনস্টেইগারদের। এরপরও শেষ পর্যন্ত সেরা আটে আসতে পেরে খুশি জার্মান কোচ জোয়াকিম লো। ২০০২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সেমিফাইনালের আগে বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়নি জার্মানদের। যে কারণে ফ্রান্সের মতো বড় দলের বিরুদ্ধে খেলার আগে বাড়তি মনোবল থাকার কথা ইউরোপের পাওয়ার হাউসদের। তবে কোচ জোয়াকিম লো সমীহ করছেন প্রতিপক্ষ ফ্রান্সকে। তিনি বলেন, ফ্রান্স অত্যন্ত শক্তিশালী দল। এ পর্যন্ত তারা অনেক ভাল পারফর্মেন্স প্রদর্শন করেছে। তাদের হারাতে হলে আমাদের সেরাটাই দিতে হবে।
জোয়াকিম লোর এমন ভাবনারও কারণ আছে। ফরাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বরাবরই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় জার্মানদের। এ পর্যন্ত মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে আছে ফ্রান্স। এ পর্যন্ত দু’দলের ২৫ মুখোমুখিতে ফ্রান্সের ১১ জয়ের বিপরীতে জার্মানির জয় ৮ ম্যাচে। বাকি ছয়টি ম্যাচ অমীমাংসিত থাকে। বিশ্বকাপ ফুটবলে এ পর্যন্ত তিন লড়াইয়ে দু’দলের ভা-ারেই জমা একটি করে জয়, পরাজয় ও ড্র। ১৯৮৬ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ফ্রান্স-জার্মানি। অর্থাৎ ২৮ বছর পর। এ পর্যন্ত দু’দল আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলেছে ২২ বার। এখানেও জয়ের পাল্লা ভারি ফরাসীদের। তাদের জয় ১০ ম্যাচে। জার্মানির জয় ৭ ম্যাচে। ৫টি ম্যাচ ড্র হয়। দু’দলের সর্বশেষ মুখোমুখিতে জয় পেয়েছে অবশ্য জার্মানিই। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল জার্মানি।
১৯৯৮ সালে একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ের পর ২০০৬ সালে রানার্সআপ হয়েছিল ফ্রান্স। কিন্তু ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে ব্যর্থ হয় দলটি। এবার তাই ভাল করার লক্ষ্যে ব্রাজিলে এসেছে দিদিয়ের দেশমের দল। অবশ্য বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাদ পড়তে পড়তে ভাগ্যের কৃপায় চূড়ান্ত পর্বে উঠে আসে ফরাসীরা। তবে মূলমঞ্চে এসে ঠিকই জ্বলে উঠেছেন জিনেদিন জিদানের উত্তরসূরিরা। ‘ই’ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেন বেনজেমা, পোগবারা। প্রথম ম্যাচে হন্ডুরাসকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে মিশন শুরু। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে সুইজারল্যান্ডকে ৫-২ গোলের বড় ব্যবধানে হারায় একবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। গ্রুপের শেষ ম্যাচে ইকুয়েডরের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে দেশমের দল।
ফেবারিট হিসেবে শেষ ষোলোতে এসে সোমবার আফ্রিকান দল নাইজিরিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ফ্রান্স। সুপার ঈগলদের বিরুদ্ধেও চোখ ধাঁধানো পারফর্মেন্স প্রদর্শন করেন বেনজেমা, কাবায়ে, ভারানেরা। এখন পর্যন্ত দুরন্ত নৈপুণ্য ফরাসীদের দৃষ্টির পরিধি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে দলটির আপাতত লক্ষ্য সেমিফাইনাল। এ জন্য শেষ আটে জার্মানির বিরুদ্ধে ম্যাচ নিয়েই আপাতত ভাবনা ফরাসী কোচ দেশমের। তিনি বলেন, আমরা একটা দল হিসেবে খেলছি। কোয়ার্টার ফাইনালে কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে। তবে ছেলেরা আত্মবিশ্বাসী সেমিফাইনালে খেলতে।

No comments:

Post a Comment