প্রচারের আলো শুষেও আড়ালেই রইলেন তাপস পাল
মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য
জনসমক্ষে তাঁর হুমকি রুপোলি পর্দার খলনায়কদেরও লজ্জা দিয়েছে৷ মঙ্গলবার তাঁর গা-ঢাকা দেওয়ার ক্ষমতায় ঈর্ষান্বিত হতে পারেন খোদ জেমস বন্ড৷ সারা দেশে আলোড়ন ফেলা তৃণমূল সাংসদের হয়ে মিডিয়ার মুখোমুখি হলেন তাঁর স্ত্রী নন্দিনী৷ কিন্ত্ত 'পকেটে মাল নিয়ে' ঘোরা 'চন্দননগরের মস্তান' সারাদিনে একবারও সংবাদ মাধ্যমের সামনে দাঁড়ানোর সাহস দেখালেন না৷
গল্ফ ক্লাব রোডের স্যাফায়ার কোর্টের সামনে মঙ্গলবার ভোর থেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি৷ কিন্ত্ত আবাসনের দোতলার জোড়া ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়নি কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে৷ কয়েকবার কলিং বেল বাজানোর পর নিতান্ত বাধ্য হয়ে যিনি দরজা খুললেন, তিনি নন্দিনী পাল৷ সোমবার সারাদিন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের বেশিরভাগটাই জুড়ে ছিলেন তাঁর স্বামী৷ মঙ্গলবারের সবক'টি খবরের কাগজও তাপস পালেরই দখলে৷ কিন্ত্ত এই ঘটনা আদৌ গর্বিত করেনি নন্দিনীকে৷ বললেন, 'আমি শুনেছি৷ কিন্ত্ত এই ঘটনা কয়েক দিন আগের৷ ভোটের মুখে ওঁর কেন্দ্রের কয়েকজন ভোটারকে সিপিএমের পক্ষ থেকে খুন ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়৷ তারই পরিপ্রেক্ষিতে মেজাজ হারিয়ে উনি এমন বলেছেন৷ এই ঘটনায় আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত৷ উনি নিজেও দুঃখিত৷ আসলে উনি খুবই ভালো মানুষ৷'
ব্যাস, ওই শেষ৷ সংবাদ মাধ্যমের জন্য এর পর আর জোড়া ফ্ল্যাটের দরজা খোলেনি সারা দিন৷ এর পর থেকে কাজের লোকই জানিয়েছেন, 'বাড়িতে কেউ নেই'- দরজা না খুলেই৷ সংবাদ মাধ্যমের অতন্দ্র প্রহরার মধ্য দিয়ে কী ভাবে বেরিয়ে গেলেন পাল দম্পতি, সেটা অবশ্য বুঝে উঠতে পারেননি উপস্থিত সাংবাদিকরা৷ অবশ্য, রান্নাঘরের জানলা দিয়ে মাঝে মাঝেই যিনি বাইরে উঁকি দিয়ে ভিড় পাতলা হল কি না খোঁজ নিচ্ছিলেন তাঁকে অনেকটা নন্দিনীর মতোই দেখতে৷ মুখের এতটাই মিল যে অনেকেই তাঁকে নন্দিনী বলে ভুল করেছেন৷
সন্ধের পরে আবাসনের কেয়ারটেকার বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের জানান, সাংসদ সকাল ন'টা নাগাদ কৃষ্ণনগরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন৷ কিন্ত্ত নাছোড় সাংবাদিকরা টলেননি৷ সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ সাংসদের ফ্ল্যাটের দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন এক প্রৌঢ় দম্পতি৷
তবে কি ছদ্মবেশে? ...মহিলার সঙ্গে নন্দিনী পালের মুখের মিল যথেষ্ট৷ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেল, তাঁরা নন্দিনীর দিদি ও জামাইবাবু৷ দিদি জানালেন, নন্দিনী ঘরেই আছেন৷ মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত৷ জামাইবাবু একটি প্রশ্নেরও উত্তর দিলেন না৷ পরে, আবাসনেরই চার তলার এক মহিলা নীচে নামতে তাঁকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা৷ চার তলায় তাপস পালের আরও একটি ফ্ল্যাটের পাশেই থাকেন মহুয়া লরেন্স৷ জানালেন, 'ওঁদের সঙ্গে আলাপ পরিচয় নেই৷ সাংসদের মন্তব্য টিভিতে শুনেছি৷ অত্যন্ত দুঃখজনক৷ এর বেশি কিছু বলতে পারব না৷'
তবে গত পাঁচ বছরে সংসদে কিন্ত্ত এমন প্রতাপ দেখা যায়নি 'চন্দননগরের মস্তান'-এর৷ উল্টে পরিসংখ্যান বলছে ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে সংসদে মুখে কুলুপ এঁটেই ছিলেন তাপস পাল৷ সংসদে ঈর্ষণীয় ৭২ শতাংশ হাজিরা থাকলেও প্রথম দফায় সাংসদ থাকাকালীন তাপস মুখ খুলেছেন মাত্র ছ'বার৷ বার কয়েক বিতর্কে যোগ দিলেও একটি প্রশ্নও শোনা যায়নি তাঁর মুখে৷ তবে ঘটনাচক্রে ২০১০ সালের অগস্ট মাসে সংসদে প্রথমবার বিতর্কে অংশ নিয়ে যে বিষয়টি তিনি তুলে ধরেছেন তা কিন্ত্ত নারী নির্যাতন৷ রীতিমত তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেছিলেন কী ভাবে কাজের লোভ দেখিয়ে পশ্চিমবঙ্গে নারী পাচারের ঘটনা বেড়েই চলেছে৷ বাম জমানায় সে দিন পশ্চিমবঙ্গে নারীদের অবর্ণনীয় কষ্টের কথা তুলে কিছু তারিফও কুড়িয়েছিলেন তিনি৷
দেশ জুড়ে প্রচারের আলো শুষে নিয়ে এ দিনটা অবশ্য লোকচক্ষুর আড়ালেই কাটালেন জনপ্রতিনিধি৷
জনসমক্ষে তাঁর হুমকি রুপোলি পর্দার খলনায়কদেরও লজ্জা দিয়েছে৷ মঙ্গলবার তাঁর গা-ঢাকা দেওয়ার ক্ষমতায় ঈর্ষান্বিত হতে পারেন খোদ জেমস বন্ড৷ সারা দেশে আলোড়ন ফেলা তৃণমূল সাংসদের হয়ে মিডিয়ার মুখোমুখি হলেন তাঁর স্ত্রী নন্দিনী৷ কিন্ত্ত 'পকেটে মাল নিয়ে' ঘোরা 'চন্দননগরের মস্তান' সারাদিনে একবারও সংবাদ মাধ্যমের সামনে দাঁড়ানোর সাহস দেখালেন না৷
গল্ফ ক্লাব রোডের স্যাফায়ার কোর্টের সামনে মঙ্গলবার ভোর থেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি৷ কিন্ত্ত আবাসনের দোতলার জোড়া ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়নি কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে৷ কয়েকবার কলিং বেল বাজানোর পর নিতান্ত বাধ্য হয়ে যিনি দরজা খুললেন, তিনি নন্দিনী পাল৷ সোমবার সারাদিন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের বেশিরভাগটাই জুড়ে ছিলেন তাঁর স্বামী৷ মঙ্গলবারের সবক'টি খবরের কাগজও তাপস পালেরই দখলে৷ কিন্ত্ত এই ঘটনা আদৌ গর্বিত করেনি নন্দিনীকে৷ বললেন, 'আমি শুনেছি৷ কিন্ত্ত এই ঘটনা কয়েক দিন আগের৷ ভোটের মুখে ওঁর কেন্দ্রের কয়েকজন ভোটারকে সিপিএমের পক্ষ থেকে খুন ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়৷ তারই পরিপ্রেক্ষিতে মেজাজ হারিয়ে উনি এমন বলেছেন৷ এই ঘটনায় আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত৷ উনি নিজেও দুঃখিত৷ আসলে উনি খুবই ভালো মানুষ৷'
ব্যাস, ওই শেষ৷ সংবাদ মাধ্যমের জন্য এর পর আর জোড়া ফ্ল্যাটের দরজা খোলেনি সারা দিন৷ এর পর থেকে কাজের লোকই জানিয়েছেন, 'বাড়িতে কেউ নেই'- দরজা না খুলেই৷ সংবাদ মাধ্যমের অতন্দ্র প্রহরার মধ্য দিয়ে কী ভাবে বেরিয়ে গেলেন পাল দম্পতি, সেটা অবশ্য বুঝে উঠতে পারেননি উপস্থিত সাংবাদিকরা৷ অবশ্য, রান্নাঘরের জানলা দিয়ে মাঝে মাঝেই যিনি বাইরে উঁকি দিয়ে ভিড় পাতলা হল কি না খোঁজ নিচ্ছিলেন তাঁকে অনেকটা নন্দিনীর মতোই দেখতে৷ মুখের এতটাই মিল যে অনেকেই তাঁকে নন্দিনী বলে ভুল করেছেন৷
সন্ধের পরে আবাসনের কেয়ারটেকার বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের জানান, সাংসদ সকাল ন'টা নাগাদ কৃষ্ণনগরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন৷ কিন্ত্ত নাছোড় সাংবাদিকরা টলেননি৷ সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ সাংসদের ফ্ল্যাটের দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন এক প্রৌঢ় দম্পতি৷
তবে কি ছদ্মবেশে? ...মহিলার সঙ্গে নন্দিনী পালের মুখের মিল যথেষ্ট৷ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেল, তাঁরা নন্দিনীর দিদি ও জামাইবাবু৷ দিদি জানালেন, নন্দিনী ঘরেই আছেন৷ মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত৷ জামাইবাবু একটি প্রশ্নেরও উত্তর দিলেন না৷ পরে, আবাসনেরই চার তলার এক মহিলা নীচে নামতে তাঁকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা৷ চার তলায় তাপস পালের আরও একটি ফ্ল্যাটের পাশেই থাকেন মহুয়া লরেন্স৷ জানালেন, 'ওঁদের সঙ্গে আলাপ পরিচয় নেই৷ সাংসদের মন্তব্য টিভিতে শুনেছি৷ অত্যন্ত দুঃখজনক৷ এর বেশি কিছু বলতে পারব না৷'
তবে গত পাঁচ বছরে সংসদে কিন্ত্ত এমন প্রতাপ দেখা যায়নি 'চন্দননগরের মস্তান'-এর৷ উল্টে পরিসংখ্যান বলছে ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে সংসদে মুখে কুলুপ এঁটেই ছিলেন তাপস পাল৷ সংসদে ঈর্ষণীয় ৭২ শতাংশ হাজিরা থাকলেও প্রথম দফায় সাংসদ থাকাকালীন তাপস মুখ খুলেছেন মাত্র ছ'বার৷ বার কয়েক বিতর্কে যোগ দিলেও একটি প্রশ্নও শোনা যায়নি তাঁর মুখে৷ তবে ঘটনাচক্রে ২০১০ সালের অগস্ট মাসে সংসদে প্রথমবার বিতর্কে অংশ নিয়ে যে বিষয়টি তিনি তুলে ধরেছেন তা কিন্ত্ত নারী নির্যাতন৷ রীতিমত তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেছিলেন কী ভাবে কাজের লোভ দেখিয়ে পশ্চিমবঙ্গে নারী পাচারের ঘটনা বেড়েই চলেছে৷ বাম জমানায় সে দিন পশ্চিমবঙ্গে নারীদের অবর্ণনীয় কষ্টের কথা তুলে কিছু তারিফও কুড়িয়েছিলেন তিনি৷
দেশ জুড়ে প্রচারের আলো শুষে নিয়ে এ দিনটা অবশ্য লোকচক্ষুর আড়ালেই কাটালেন জনপ্রতিনিধি৷
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/Tapas-Pal-didnt-face-Press-after-controversial-speech-went-public/articleshow/37590448.cms
No comments:
Post a Comment