শরীর-মন সুস্থ রাখতে হিংসা থেকে বিরতির আর্জি মমতার
খুন-ধর্ষণের হুমকি দিয়ে তাঁর দলের সাংসদ শিরোনামে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় অবশ্য হিংসা থেকে বিরত থাকারই আর্জি৷ যেন কিছুটা বাইবেলের বাণী থেকে অনুপ্রেরণায়! সোমবার রাজনৈতিক হিংসায় আকীর্ণ পশ্চিমবঙ্গে 'হিংসা' থেকে বিরত থাকার আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সাঁওতাল বিদ্রোহের স্মরণে হুল দিবসে তিনি বলেন, 'হিংসা আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু৷ হিংসা করলে মাথার কোষগুলি নষ্ট হয়৷ শরীর নষ্ট হয়৷' মানুষকে তাঁর সতর্কবার্তা, শরীরই সম্পদ৷ যদি শরীর আর মাথা ভালো থাকে, তবে হারানোর কিছু নেই৷
লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তী পর্যায়ে রাজ্য-রাজনীতিতে হিংসার বলি শুধু বাম বা বিজেপির মতো বিরোধী শিবিরের লোকজন নন, হতাহত হয়েছেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা৷ পরিস্থিতির ঘনঘটায় বামফ্রন্টের নেতারা শুধু রাজনৈতিক বিবৃতি দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি, বিতর্কের ঝড় তুলে তাঁরা সটান হাজির হয়েছেন প্রশাসনিক সদর দপ্তর নবান্নেও৷ হিংসা থামাতে তিনি যাতে উদ্যোগী হন, সে জন্য দরবার করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে৷ গত তিন বছরে বাম শিবিরে হিংসার 'শিকার' হয়েছেন, এমন মানুষদের বিস্তারিত তালিকাও তাঁরা তুলে দিয়েছেন মমতার হাতে৷ সেদিন মমতাও বিমান বসু-মঞ্জুকুমার মজুমদার-ক্ষিতি গোস্বামীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিনি হিংসাত্মক ঘটনাগুলির অভিযোগ 'কেস টু কেস' খতিয়ে দেখবেন৷
এদিন ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী তফসিলি জাতি-উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেণির ছাত্রছাত্রী ও মানুষদের সাইকেল, চেক, বই, পাট্টা, ধামসা-মাদল বিতরণের পাশাপাশি হিংসার বিপক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে শারীরবৃত্তীয় দৃষ্টিকোণ থেকে রীতিমতো বিধিসম্মত সতর্কতা জারি করেছেন৷ তাঁর বক্তব্যের সমর্থন মিলেছে চিকিত্সক মহলেও৷ যেমন, ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রির অধিকর্তা প্রদীপ সাহার মত, 'মুখ্যমন্ত্রী মনোবিজ্ঞানের গূঢ় কথাই বলেছেন৷ ঈর্ষা বা হিংসার মতো প্রবৃত্তি মস্তিষ্কের নিউরোন বা নার্ভ কোষের ক্ষতি (পড়ুন, ডিজেনারেশন) করে৷ মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাস অংশে এই ধরণের প্রবণতার বেশি ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়৷' নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজির এক প্রবীণ নিউরোলজিস্ট বলেন, 'মস্তিষ্ক কোষে হিংসা বা এই ধরনের প্রবৃত্তির কোনও সরাসরি প্রভাব আছে বলে জানা নেই৷ তবে একটা পরোক্ষ প্রভাব তো থাকেই৷ যেমন রাগ বা ভায়োলেন্স থেকে রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে স্ট্রোক হতে পারে৷ আর স্ট্রোকের কারণে হেমারেজ হলে মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি তো হবেই৷'
তা হলে সমাধানের উপায় কী? উন্নততর কর্মসংস্কৃতির জয়গান গেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, যে মানুষ কাজে ডুবে থাকেন, তাঁর মস্তিষ্কও সচল থাকে৷ তাঁর মতে, 'কাজের মধ্যে দিয়ে সময় অতিবাহিত করলে, মস্তিষ্কের পুষ্টিসাধন হয়৷ সময়ের আগেই কাজ শেষ করুন৷ আমি সব সময় এটাই করার চেষ্টা করি৷'
হুল দিবস উপলক্ষ্যে প্রান্তিক মানুষদের আন্দোলন ও বিপ্লবের ইতিহাস হূদয় দিয়ে বোঝার উপর জোর দেন মমতা৷ তিনি মনে করিয়ে দেন, সিপাহি বিদ্রোহের দু'বছর আগে ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন বীরভূমের আশপাশে যে সিধো ও কানহুর নেতৃত্বে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল৷ তিনি বলেন, 'এই মানুষগুলির ছবি দেখুন৷ হাঁটুর উপর ধুতি, গায়ে জামা নেই, পায়ে নেই জুতো৷ সশস্ত্র ব্রিটিশের বিরুদ্ধে তাদের সম্বল ছিল সামান্য তির-ধনুক৷ তাঁরা এই আন্দোলন ও বিপ্লবের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করেছিলেন, শহিদ হয়েছিলেন৷'
মুখ্যমন্ত্রীর মতে, লড়াই করে যে বাঁচে, তাকে কখনও মাথা নিচু করতে হয় না৷ সংগ্রাম ও কষ্টের মধ্য দিয়ে যে জীবন তৈরি হয়, তা সোনার জীবন৷ অন্য দিকে, যে মানুষদের জন্ম মুখে সোনার চামচ দিয়ে, তারা ভুলে যায় আগের প্রজন্মের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই আজ তারা সব পেয়েছে৷ এক প্রজন্ম কষ্ট করে গড়ে, তিন প্রজন্ম তা ভোগ করে৷ তার পর আবার নতুন করে সব গড়ে তুলতে হয়৷ প্রশ্ন একটাই, এই চেতাবনির মধ্য দিয়ে রাজ্যে ক্ষমতাসীন দলের নয়া প্রজন্মের উঠতি নেতাদের কি চোখে আঙুল দিয়ে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী যে, সংযত হয়ে চলাটাই বাঞ্ছনীয়!
লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তী পর্যায়ে রাজ্য-রাজনীতিতে হিংসার বলি শুধু বাম বা বিজেপির মতো বিরোধী শিবিরের লোকজন নন, হতাহত হয়েছেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা৷ পরিস্থিতির ঘনঘটায় বামফ্রন্টের নেতারা শুধু রাজনৈতিক বিবৃতি দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি, বিতর্কের ঝড় তুলে তাঁরা সটান হাজির হয়েছেন প্রশাসনিক সদর দপ্তর নবান্নেও৷ হিংসা থামাতে তিনি যাতে উদ্যোগী হন, সে জন্য দরবার করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে৷ গত তিন বছরে বাম শিবিরে হিংসার 'শিকার' হয়েছেন, এমন মানুষদের বিস্তারিত তালিকাও তাঁরা তুলে দিয়েছেন মমতার হাতে৷ সেদিন মমতাও বিমান বসু-মঞ্জুকুমার মজুমদার-ক্ষিতি গোস্বামীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিনি হিংসাত্মক ঘটনাগুলির অভিযোগ 'কেস টু কেস' খতিয়ে দেখবেন৷
এদিন ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী তফসিলি জাতি-উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেণির ছাত্রছাত্রী ও মানুষদের সাইকেল, চেক, বই, পাট্টা, ধামসা-মাদল বিতরণের পাশাপাশি হিংসার বিপক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে শারীরবৃত্তীয় দৃষ্টিকোণ থেকে রীতিমতো বিধিসম্মত সতর্কতা জারি করেছেন৷ তাঁর বক্তব্যের সমর্থন মিলেছে চিকিত্সক মহলেও৷ যেমন, ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রির অধিকর্তা প্রদীপ সাহার মত, 'মুখ্যমন্ত্রী মনোবিজ্ঞানের গূঢ় কথাই বলেছেন৷ ঈর্ষা বা হিংসার মতো প্রবৃত্তি মস্তিষ্কের নিউরোন বা নার্ভ কোষের ক্ষতি (পড়ুন, ডিজেনারেশন) করে৷ মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাস অংশে এই ধরণের প্রবণতার বেশি ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়৷' নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজির এক প্রবীণ নিউরোলজিস্ট বলেন, 'মস্তিষ্ক কোষে হিংসা বা এই ধরনের প্রবৃত্তির কোনও সরাসরি প্রভাব আছে বলে জানা নেই৷ তবে একটা পরোক্ষ প্রভাব তো থাকেই৷ যেমন রাগ বা ভায়োলেন্স থেকে রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে স্ট্রোক হতে পারে৷ আর স্ট্রোকের কারণে হেমারেজ হলে মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি তো হবেই৷'
তা হলে সমাধানের উপায় কী? উন্নততর কর্মসংস্কৃতির জয়গান গেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, যে মানুষ কাজে ডুবে থাকেন, তাঁর মস্তিষ্কও সচল থাকে৷ তাঁর মতে, 'কাজের মধ্যে দিয়ে সময় অতিবাহিত করলে, মস্তিষ্কের পুষ্টিসাধন হয়৷ সময়ের আগেই কাজ শেষ করুন৷ আমি সব সময় এটাই করার চেষ্টা করি৷'
হুল দিবস উপলক্ষ্যে প্রান্তিক মানুষদের আন্দোলন ও বিপ্লবের ইতিহাস হূদয় দিয়ে বোঝার উপর জোর দেন মমতা৷ তিনি মনে করিয়ে দেন, সিপাহি বিদ্রোহের দু'বছর আগে ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন বীরভূমের আশপাশে যে সিধো ও কানহুর নেতৃত্বে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল৷ তিনি বলেন, 'এই মানুষগুলির ছবি দেখুন৷ হাঁটুর উপর ধুতি, গায়ে জামা নেই, পায়ে নেই জুতো৷ সশস্ত্র ব্রিটিশের বিরুদ্ধে তাদের সম্বল ছিল সামান্য তির-ধনুক৷ তাঁরা এই আন্দোলন ও বিপ্লবের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করেছিলেন, শহিদ হয়েছিলেন৷'
মুখ্যমন্ত্রীর মতে, লড়াই করে যে বাঁচে, তাকে কখনও মাথা নিচু করতে হয় না৷ সংগ্রাম ও কষ্টের মধ্য দিয়ে যে জীবন তৈরি হয়, তা সোনার জীবন৷ অন্য দিকে, যে মানুষদের জন্ম মুখে সোনার চামচ দিয়ে, তারা ভুলে যায় আগের প্রজন্মের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই আজ তারা সব পেয়েছে৷ এক প্রজন্ম কষ্ট করে গড়ে, তিন প্রজন্ম তা ভোগ করে৷ তার পর আবার নতুন করে সব গড়ে তুলতে হয়৷ প্রশ্ন একটাই, এই চেতাবনির মধ্য দিয়ে রাজ্যে ক্ষমতাসীন দলের নয়া প্রজন্মের উঠতি নেতাদের কি চোখে আঙুল দিয়ে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী যে, সংযত হয়ে চলাটাই বাঞ্ছনীয়!
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/mamatas-suggestions-to-stay-away-from-dispute/articleshow/37558398.cms?
No comments:
Post a Comment