বন্ধ রেডব্যাঙ্ক চা বাগানে শ্রমিকের মৃত্যু
এই সময়, শিলিগুড়ি: জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল ডুয়ার্সের রেডব্যাঙ্ক চা বাগানে৷ বুধবার শেখর নাগরচি (৪০) নামে ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়৷ গত ১৩ অক্টোবর থেকে বাগানটি বন্ধ৷ বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি জন্ডিসে ভুগছিলেন৷ অর্থাভাবে তাঁর চিকিত্সা হচ্ছিল না৷ চা বাগানে সরকারি যে মেডিক্যাল ক্যাম্প চলছে সেখান থেকে শেখরকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্ত্ত হাসপাতালে যাওয়ার মতো বাস ভাড়াও ছিল না৷ মৃতের মা আকচিদেবীর আক্ষেপ, 'দু'বেলা খেতেই পাই না৷ হাসপাতালে যাব কী করে!'
নাগরাকাটায় রেডব্যাঙ্ক গ্রুপের তিনটি চা বাগান-ই৷ ফলে বিপাকে পড়েছেন প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ৷ সপ্তাহে দু'দিন কাঁচা পাতা তোলা হয়৷ বাকি দিনগুলিতে শ্রমিকদের বাইরে কাজ করতে হয়৷ অসুস্থ শেখর পাতা তোলার কাজও করতে পারতেন না বলে নাগরাকাটা বাজারের একটি হোটেলে কাজ করতেন৷ পাতা তুলতেন তাঁর মা৷
শ্রমিকদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের অবহেলার জেরেই ওই চা বাগানে জলবাহিত সংক্রমণ ছড়িয়েছে৷ এলাকার কংগ্রেস বিধায়ক জোসেফ মুণ্ডার কথায়, 'বন্ধ বাগান খোলার ব্যাপারে রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিলেও কিছুই করছে না৷ শ্রমিকরা ন্যূনতম সুবিধাটুকুও পাচ্ছেন না৷ তিনি বলেন, 'বাগানের ঘরে ঘরে নানা রোগ ছড়াচ্ছে৷'
চিকিত্সা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বন্ধ রায়পুর চা বাগানেও৷ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিত্সক দল এই চা বাগানে ক্যাম্প করলেও শ্রমিকদের অভিযোগ, চিকিত্সকেরা রোগী দেখছেন অফিসে বসে৷ তাঁরা শ্রমিক বস্তিতে যেতে চাইছেন না৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে৷
এ দিন বিধানসভায় শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু জানান, বন্ধ চা বাগানগুলি খোলার ব্যাপারে সরকার আন্তরিক ভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে৷ কিন্ত্ত মালিকরা নানা বাহানা করছেন৷ মন্ত্রী আরও দাবি করেন, বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকার রেশন চালু করেছে৷
এ দিকে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি বাদে সমস্ত সংগঠন আগামী কাল শুক্রবার বন্ধ রায়পুর চা বাগানের হাল খতিয়ে দেখতে যাচ্ছে৷ ওই দলে বিজেপির শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-ও থাকবে৷ ওই দিনই বিধানসভার একটি বাম প্রতিনিধি দল রায়পুর যাচ্ছে৷ ইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ বন্ধ চা বাগানগুলি নিয়ে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি দিয়েছেন৷ তাতে তিনি জানিয়েছেন, গত ১২ বছর ধরে বন্ধ ঢেকলাপাড়া চা বাগানে অনাহারে ১৫০ জন, দলমোর বাগানে ৩১ জন, বান্দাপানিতে ১৮ জন, রেডব্যাঙ্কে ২৭ জন এবং রায়পুর বাগানে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ তাঁর অভিযোগ, অথচ রাজ্য সরকার হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে৷ চিঠিতে অশোকবাবু মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেছেন, 'আপনার সরকারের শ্রমমন্ত্রী বলছেন, অপুষ্টির কারণে শ্রমিকদের মৃত্যু হচ্ছে৷ আবার খাদ্যমন্ত্রী বলছেন, অনাহার বা অপুষ্টিতে কেউ মারা যাননি৷ অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে লিভার সিরোসিস-এ ভুগে তাঁরা মারা গিয়েছেন৷ দুই মন্ত্রীর দু'রকম বক্তব্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে৷' তাঁর দাবি, চোলাই মদ খেয়ে মৃতদের পরিবারকে যদি আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়, তাহলে চা বাগানের মৃত শ্রমিকদের পরিবারকেও আর্থিক সাহায্য দিতে হবে৷
গত কয়েক দিনে রায়পুর চা বাগানে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে৷ অভিযোগ, তাঁদের মৃত্যু হয়েছে অনাহারেই৷ মঙ্গলবার শিল্প দপ্তরের বাজেট বিতর্কে বিরোধীরা দাবি জানানো সত্ত্বেও শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র বন্ধ চা বাগানগুলি নিয়ে একটি কথাও বলেননি৷
এই সময়, শিলিগুড়ি: জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল ডুয়ার্সের রেডব্যাঙ্ক চা বাগানে৷ বুধবার শেখর নাগরচি (৪০) নামে ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়৷ গত ১৩ অক্টোবর থেকে বাগানটি বন্ধ৷ বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি জন্ডিসে ভুগছিলেন৷ অর্থাভাবে তাঁর চিকিত্সা হচ্ছিল না৷ চা বাগানে সরকারি যে মেডিক্যাল ক্যাম্প চলছে সেখান থেকে শেখরকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্ত্ত হাসপাতালে যাওয়ার মতো বাস ভাড়াও ছিল না৷ মৃতের মা আকচিদেবীর আক্ষেপ, 'দু'বেলা খেতেই পাই না৷ হাসপাতালে যাব কী করে!'
নাগরাকাটায় রেডব্যাঙ্ক গ্রুপের তিনটি চা বাগান-ই৷ ফলে বিপাকে পড়েছেন প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ৷ সপ্তাহে দু'দিন কাঁচা পাতা তোলা হয়৷ বাকি দিনগুলিতে শ্রমিকদের বাইরে কাজ করতে হয়৷ অসুস্থ শেখর পাতা তোলার কাজও করতে পারতেন না বলে নাগরাকাটা বাজারের একটি হোটেলে কাজ করতেন৷ পাতা তুলতেন তাঁর মা৷
শ্রমিকদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের অবহেলার জেরেই ওই চা বাগানে জলবাহিত সংক্রমণ ছড়িয়েছে৷ এলাকার কংগ্রেস বিধায়ক জোসেফ মুণ্ডার কথায়, 'বন্ধ বাগান খোলার ব্যাপারে রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিলেও কিছুই করছে না৷ শ্রমিকরা ন্যূনতম সুবিধাটুকুও পাচ্ছেন না৷ তিনি বলেন, 'বাগানের ঘরে ঘরে নানা রোগ ছড়াচ্ছে৷'
চিকিত্সা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বন্ধ রায়পুর চা বাগানেও৷ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিত্সক দল এই চা বাগানে ক্যাম্প করলেও শ্রমিকদের অভিযোগ, চিকিত্সকেরা রোগী দেখছেন অফিসে বসে৷ তাঁরা শ্রমিক বস্তিতে যেতে চাইছেন না৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে৷
এ দিন বিধানসভায় শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু জানান, বন্ধ চা বাগানগুলি খোলার ব্যাপারে সরকার আন্তরিক ভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে৷ কিন্ত্ত মালিকরা নানা বাহানা করছেন৷ মন্ত্রী আরও দাবি করেন, বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকার রেশন চালু করেছে৷
এ দিকে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি বাদে সমস্ত সংগঠন আগামী কাল শুক্রবার বন্ধ রায়পুর চা বাগানের হাল খতিয়ে দেখতে যাচ্ছে৷ ওই দলে বিজেপির শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-ও থাকবে৷ ওই দিনই বিধানসভার একটি বাম প্রতিনিধি দল রায়পুর যাচ্ছে৷ ইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ বন্ধ চা বাগানগুলি নিয়ে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি দিয়েছেন৷ তাতে তিনি জানিয়েছেন, গত ১২ বছর ধরে বন্ধ ঢেকলাপাড়া চা বাগানে অনাহারে ১৫০ জন, দলমোর বাগানে ৩১ জন, বান্দাপানিতে ১৮ জন, রেডব্যাঙ্কে ২৭ জন এবং রায়পুর বাগানে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ তাঁর অভিযোগ, অথচ রাজ্য সরকার হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে৷ চিঠিতে অশোকবাবু মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেছেন, 'আপনার সরকারের শ্রমমন্ত্রী বলছেন, অপুষ্টির কারণে শ্রমিকদের মৃত্যু হচ্ছে৷ আবার খাদ্যমন্ত্রী বলছেন, অনাহার বা অপুষ্টিতে কেউ মারা যাননি৷ অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে লিভার সিরোসিস-এ ভুগে তাঁরা মারা গিয়েছেন৷ দুই মন্ত্রীর দু'রকম বক্তব্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে৷' তাঁর দাবি, চোলাই মদ খেয়ে মৃতদের পরিবারকে যদি আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়, তাহলে চা বাগানের মৃত শ্রমিকদের পরিবারকেও আর্থিক সাহায্য দিতে হবে৷
গত কয়েক দিনে রায়পুর চা বাগানে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে৷ অভিযোগ, তাঁদের মৃত্যু হয়েছে অনাহারেই৷ মঙ্গলবার শিল্প দপ্তরের বাজেট বিতর্কে বিরোধীরা দাবি জানানো সত্ত্বেও শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র বন্ধ চা বাগানগুলি নিয়ে একটি কথাও বলেননি৷
No comments:
Post a Comment