Saturday, July 26, 2014

ব্যাঙ্ক লেনদেনের কোনও নথি সি বি আই-কে দেয়নি ‘সিট’, ২০ জনকে জেরার প্রস্তুতি

ব্যাঙ্ক লেনদেনের কোনও নথি সি বি আই-কে দেয়নি ‘সিট’, ২০ জনকে জেরার প্রস্তুতি

Aajkaal: the leading bengali daily newspaper from Kolkata

সব্যসাচী সরকার
সারদা-তদম্তে সুদীপ্ত সেনের ব্যাঙ্ক লেনদেনের যাবতীয় নথির কিছুই সি বি আই-কে দেওয়া হয়নি৷‌ সুদীপ্ত সেন গ্রেপ্তার হওয়ার দু’মাস আগে বহু ব্যাঙ্কে টাকা লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে সি বি আই৷‌ সে বিষয়েই রাজ্য সরকারের তৈরি সিট-কে সি বি আই জানিয়েছিল ব্যাঙ্ক লেনদেনের নথি দিতে৷‌ তদম্তকারী সংস্হার সন্দেহ, ওই নথি দেওয়ার ক্ষেত্রে গড়িমসি করার কোনও কারণই নেই, কেন না, টাকা লেনদেনের বিষয়টির মধ্যেই সারদা-কাণ্ডের মূল রহস্য লুকিয়ে৷‌ এই গড়িমসির অবশ্য কোনও ব্যাখ্যাও সি বি আই পায়নি ‘সিট’-এর কাছ থেকে৷‌ ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যাঙ্ক নথি-সহ অন্যান্য কাগজ জমা না দিলে মামলা করার কথা আগেই জানিয়েছিল সি বি আই৷‌ এবং সুপ্রিম কোর্টের কাছেও লিখিতভাবে তদম্ত সংস্হা জানিয়ে দেবে, কেন এত ‘গোপনীয়তা’৷‌ সি বি আই যে সমস্ত নথি এখনও পর্যম্ত পেয়েছে, তা তদম্তের একটা অংশ৷‌ কিন্তু, বাজেয়াপ্ত করা বাড়ি, জমি, গাড়ি, টাকা, সোনাদানার তালিকা থেকে প্রমাণ হয় না কারা জড়িত৷‌ সি বি আই বারবার তাই ব্যাঙ্ক নথিপত্রের ওপর জোর দিচ্ছে৷‌ সি বি আই ‘তদম্ত প্রভাবিত’ করা হয়েছে, এমন ঘটনারও সন্ধান পেয়েছে৷‌ প্রায় ২০ জন প্রভাবশালীর নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে৷‌ যদি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সি বি আই সব কাগজপত্র বুঝে না পায়, সেক্ষেত্রে ‘ব্যক্তির’ নামেই আলাদা এফ আই আর করে তাদের বিরুদ্ধে তদম্ত শুরু করবে৷‌ ‘এই সিদ্ধাম্ত থেকে এখনও সরে আসার কোনও প্রশ্ন নেই’– জানান সি বি আইয়ের এক কর্তা৷‌ সি বি আই মনে করে, শুধু প্রভাবশালীদের আড়াল করার জন্য নয়, কেন ব্যাঙ্ক নথি ও সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক ক্ষেত্রের তদম্ত-তথ্য দেওয়া হচ্ছে না, তার পেছনে উদ্দেশ্য রয়েছে৷‌ সুদীপ্ত সেনের প্রায় আড়াইশোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছিল ‘সিট’৷‌ সেই ব্যাঙ্কের যাবতীয় নথিপত্র ‘সিট’ নিজের হাতেই রেখেছে৷‌ সি বি আইয়ের সন্দেহ, সারদা গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত কিছু প্রভাবশালীর ভূমিকা প্রকাশ্যে এসে যাওয়ার ভয়েই তা দেওয়া হচ্ছে না৷‌ যে সমস্ত ব্যক্তিকে জেরা করার জন্য সি বি আই চিহ্নিত করেছে, তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের দুটি দপ্তরের কয়েকজন অফিসার রয়েছেন৷‌ যাঁদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় দিনের পর দিন সারদা গোষ্ঠী ব্যবসা চালিয়ে গেছে৷‌ কেন্দ্রীয় সরকারের দুটি দপ্তরের কয়েকজন অফিসারের সঙ্গে এ রাজ্যের কয়েকজন প্রভাবশালীর যোগ মিলেছে, যাঁরা যে-কোনও ভাবেই হোক, সারদার কাজকর্মকে আড়াল করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন৷‌ দিল্লিতে সুদীপ্ত সেনের কাছের লোকজনের সঙ্গে ওই দুটি দপ্তরের কয়েকজন অফিসারের নিয়মিত যোগাযোগের তথ্য পেয়েছে সি বি আই৷‌ সুদীপ্ত সেন একটা সময়ে দিল্লিতে নানা কারণে যাতায়াত করতেন, তারও প্রমাণ মিলেছে৷‌ সি বি আই কর্তার কথায়, প্রত্যেকেরই স্বার্থ ছিল, কোনও না কোনও ব্যাপারে৷‌ কোম্পানি ও ভুয়ো কোম্পানি, দুটি সমাম্তরাল পদ্ধতি কৌশলে ব্যবহার করে আদতে লগ্নিকারীদেরই বোকা বানানো হয়েছে৷‌ অস্তিত্বহীন সংস্হাগুলির নামেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে৷‌ আবার কিছুদিন পর সেই অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷‌ আগামী সপ্তাহে কয়েকজন প্রভাবশালীকে দিল্লিতেই ডেকে জেরা করতে পারে সি বি আই৷‌

No comments:

Post a Comment