Saturday, July 26, 2014

ইংরেজির প্রতি পক্ষপাত? সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা ঘিরে তুমুল হইচই, আশ্বাস কেন্দ্রের

ইংরেজির প্রতি পক্ষপাত?
সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা ঘিরে তুমুল হইচই, আশ্বাস কেন্দ্রের

দিল্লি, ২৫ জুলাই (সংবাদ সংস্হা)– ইউ পি এস সি পরীক্ষার নতুন ধরনে ইংরেজিভাষীরা বেশি সুবিধে পাচ্ছেন৷‌ এই অভিযোগে দিল্লিতে চলছে তুমুল বিক্ষোভ৷‌ মূলত হিন্দিভাষী তরুণরা নেমেছেন এই বিক্ষোভে৷‌ তাঁদের বক্তব্য, ইংরেজি মাধ্যমে পড়া শহুরে পরীক্ষার্থীরাই এই ব্যবস্হায় বেশি সুবিধে পাচ্ছেন৷‌ মার খাচ্ছেন গ্রামাঞ্চলে বড় হওয়া পরীক্ষার্থীরা৷‌ এই নিয়ে সংসদও আজ তপ্ত হয়ে ওঠে৷‌ বিরোধীরা তো বটেই, বি জে পি সাংসদরাও ক্ষোভ জানান সংসদে৷‌ রাজ্যসভা মুলতুবি হয়ে যায় দু’বার৷‌ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং রাজ্যসভায় আশ্বাস দেন, ভাষার কারণে কেউ যাতে অবহেলিত না হন, তা দেখা হবে৷‌ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গত মার্চে একটি কমিটি গড়া হয়েছিল৷‌ এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে৷‌ সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, দু-তিনদিনের মধ্যেই সরকার কিছু করবে৷‌ পরীক্ষা ২৪ আগস্ট৷‌ বিষয়টি নিয়ে অসম্তোষ তুঙ্গে উঠেছে ইউ পি এস সি অনলাইনে অ্যাডমিট কার্ড ছাড়া শুরু করায়৷‌ গতকাল দিল্লিতে পুলিসের সঙ্গে রীতিমতো মারপিট হয়েছে বিক্ষোভকারীদের৷‌ আজ বিক্ষোভকারীরা সংসদ অভিযানের কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নামলে পুলিস আটকে দেয়৷‌ দুটি মেট্রো স্টেশন কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করেও দিতে হয়৷‌ মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন, অ্যাডমিট কার্ড ইস্যু করা ইউ পি এস সি-র নিজেদের ব্যাপার৷‌ এর জন্য কিছু আটকাবে না৷‌ সমস্যাটির সূত্রপাত ইউ পি এ জমানায়, মনে করিয়ে দেন মন্ত্রী৷‌ 

আই এ এস, আই পি এস, আই এফ এস ইতা্যদিতে নিয়োগের জন্য বসতে হয় ইউ পি এস সি আয়োজিত সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায়৷‌ এই পরীক্ষার তিনটি ধাপ৷‌ প্রাথমিক পরীক্ষা, মূল পরীক্ষা, তারপর ইন্টারভিউ৷‌ প্রাথমিক পর্বে সিভিল সার্ভিস অ্যাপ্টিচিউড টেস্ট (সিস্যাট)-এর দুটি পত্র, প্রতিটিতে ২০০ নম্বর৷‌ মূল আপত্তিটা উঠেছে দ্বিতীয় পত্র (সিস্যাট ২) নিয়ে৷‌ এতে পরীক্ষার্থীদের বোঝার ক্ষমতা, বোঝানোর ক্ষমতা– এ সবের ওপর জোর দেওয়া হয়৷‌ এর একটি অংশ ইংরেজি ভাষা বোঝার ক্ষমতার পরীক্ষা, অর্থাৎ কমপ্রিহেনশন টেস্ট৷‌ দশম শ্রেণীর মানের ওপরই এর প্রশ্ন আসবে, বলা হয়েছে সিলেবাসে৷‌ প্রতিবাদকারীদের বক্তব্য, প্রশ্ন কিন্তু আসলে আরও কঠিন হয়৷‌ দেখা গেল, সংসদে তাঁদের জন্য সরব হওয়ার মতো রাজনীতিকের অভাব নেই৷‌ কংগ্রেস থেকে বি জে পি, স পা থেকে জে ডি (ইউ)– নানা দলই সরব৷‌ তবু এরই মাঝে, কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার এম এস গিল বলে ওঠেন, এদেশে ২২টি স্বীকৃত ভাষা আছে, যার একটিও দেশের সব অঞ্চলের প্রধান ভাষা নয়৷‌ প্রশ্নটা হল, ভারত সরকারের কাজকর্ম কীভাবে চালাবে? ৫০০টা ভাষায় কি পরীক্ষা নেওয়া হবে? ৫০০টা ভাষা জেনে পরীক্ষায় বসতে হবে? গিলের কথায় এই নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়৷‌ নানা দল থেকে সাংসদরা হইহই করে ওঠেন৷‌ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ জানিয়ে দেন, এটা গিলের ব্যক্তিগত মত৷‌ দলের মত জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্য সচেতক সত্যব্রত চতুর্বেদী৷‌ চতুর্বেদী এর আগে বলেন, ভারতীয়রা ইংরেজির ওপর এত বেশি নির্ভর করছে, এটা লজ্জার৷‌ বি জে পি-র বিজয় গোয়েল বলেন, অনেকেই হিন্দিতে ভোট চান, আর জেতার পর সংসদে এসে ইংরেজি বলতে শুরু করেন৷‌ জে ডি (ইউ) নেতা শারদ যাদব বলেন, হিন্দি ও আঞ্চলিক ভাষার পরীক্ষার্থীরা ইউ পি এস সি-তে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন৷‌ তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, এটা হিন্দি বনাম ইংরেজির বিষয় নয়৷‌ সমস্ত আঞ্চলিক ভাষার প্রশ্ন৷‌ সি পি এমের তপন সেন বলেন, কর্পোরেটপম্হী ঝোঁকের কারণেই আঞ্চলিক ভাষার এবং সংখ্যালঘু পরীক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছেন৷‌

No comments:

Post a Comment