স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির তাণ্ডব দুঃসহ দিন
কার্টুনচিত্রে ফিরে দেখা
মোরসালিন মিজান ॥ শাহবাগে এখন অনেক মত। পথও একটি নয়। মান অভিমান আছে। দ্বন্দ্ব-সংঘাতও জায়গা করে নিয়েছে। তার পরও, কী আশ্চর্য, শাহবাগ আছে। শাহবাগ জেগে আছে। আর তাই রমজান, ঈদের মাঝেও এখানে আয়োজন করা হয় কার্টুন প্রদর্শনীর। শিরোনাম-ফিরে দেখা ॥ জামায়াত-বিএনপির তাণ্ডব। গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের এ আয়োজন উপলক্ষে গত ক’দিন বেশ মুখরিত ছিল গোটা এলাকা।
শনিবার শেষ দিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, জাদুঘরের সামনের খোলা জায়গায় বিশাল প্যান্ডেল। পুরোটাজুড়ে শিল্পীর আঁকা কার্টুন। অর্ধশতাধিক কার্টুনে জামায়াত-বিএনপির তাণ্ডবের চিত্র। প্রদর্শনী ঘুরে দেখতে দেখতে দুর্বিষহ ২০১৩ সাল দেখা হয়ে যায়। মনে পড়ে, একদিন দু’দিন নয়, দিনের পর দিন হরতাল। হরতালের নামে জ্বালাও পোড়াও। ট্রেনলাইন উপড়ে ফেলা। বগিতে আগুন দেয়া। বিভিন্ন ক্যারিকেচার উঠে এসেছে এসব দৃশ্যে।
মনে পড়ে? চলন্ত বাস। ভেতরে সাধারণ যাত্রী। সারাদিনের কাজ শেষে তাঁদের বাড়ি ফেরার পালা। অথচ সে বাড়ি ফেরা হচ্ছে না। তাঁদের বহনকারী বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। ভয়ঙ্কর পেট্রোলবোমা ছোড়া হচ্ছে। এভাবে দিনদুপুরে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে নিরীহ নির্দোষ মানুষ! চোখের সামনে নারী শিশু বৃদ্ধরা ঝলসে যাচ্ছেন। হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। মারা যাচ্ছেন। অথচ তাঁরা জানেন না, কী তাঁদের অপরাধ! মনে পড়ে? মনে পড়ে সময়টা? প্রদর্শনী সে সময়টাকে তুলে ধরেছে। মনে করিয়ে দিয়েছে, শত শত ট্রাক ভর্তি শাক সবজি, ফলমূল শহরে প্রবেশ করতে পারছে না। পচে-গলে নষ্ট হচ্ছে। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে শত শত মণ চাল। কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা হচ্ছে। হাতের অস্ত্র কেড়ে নেয়া হচ্ছে। সে অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে মারা হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের। প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে দেয়া হচ্ছে। কী ভয়ঙ্কর সে সময়! সারাদিন সংবাদ সংগ্রহে ব্যস্ত সাংবাদিকদের নিরাপত্তা তখন নিরাপত্তা ছিল না। এখানে ওখানে আক্রান্ত হয়েছেন। ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। প্রদর্শনী সেসব অন্যায় বর্বরতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ‘হরতাল অবরোধে বিপন্ন শিক্ষা’ ব্যবস্থার কথা বর্ণনা করে কিছু ক্যারিকেচার। স্মরণ করিয়ে দেয়, সোনামণিদের স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বই পুস্তক-বসার বেঞ্চ এবং চেয়ারও রক্ষা পায়নি।
ভয়াবহ এই দুর্যোগের মাঝে দেশকে ঠেলে দিয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত-শিবির। সে অপশক্তির স্বরূপ উন্মোচন করে প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া কার্টুনগুলো। প্রকৃত সত্য তুলে ধরে বলে, একাত্তরের ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতেই চালানো হয়েছিল এমন বর্বরতা। প্রদর্শনীতে রাজাকারকুল শিরোমনি গোলাম আযম, নিজামী, সাঈদী, মুজাহিদদের পাকিস্তানের প্রেতাত্মা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ব্যঙ্গাত্মক উপস্থাপনা প্রদর্শনীর প্রতি সাধারণ মানুষকে বিশেষ আগ্রহী করে তুলে। জামায়াতের পাশাপাশি প্রদর্শনীর বিষয় হয়েছে বিএনপি। সব ধরনের অপকর্মে আড়াল থেকে জামায়াত-শিবির মৌলবাদী গোষ্ঠীকে সহায়তা দেয়ার অভিযোগে দলটির নেত্রীকে বেদেনী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন কার্টুনিস্ট। তেমন একটি কার্টুনে দেখা যায়, বীন বাজিয়ে জামায়াত-শিবিরকে শাপের মতো নাচাচ্ছেন খালেদা জিয়া। কখনও তিনি অপশক্তির পক্ষে বলছেন। কখনও এদের তাণ্ডব দেখেশুনে কানে কুলুপ এঁটেছেন। বলার নেই কিছু। প্রদর্শনীতে যুদ্ধাপরাধীদের দেশ ও জাতির শত্রু হিসেবে উপস্থাপন করে এদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানায় প্রদর্শনী।
প্রদর্শনী দেখতে প্রতিদিনই এসেছেন সাধারণ মানুষ। শিল্পী- সাহিত্যিক সাংবাদিক থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ-মন্ত্রী- এমপিরাও প্রদর্শনী ঘুরে গেছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলেছে বিশেষ এই আয়োজন। আয়োজকদের পক্ষে এফএম শাহীন বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগে একত্রিত হয়েছিলাম আমরা। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে সূচিত হয়েছিল গণআন্দোলনের। বিপরীতে যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধে ২০১৩ সালে সারাদেশে জামায়াত-শিবির তা-ব চালিয়েছে। এমন দুর্বিষহ অতীত মনে না রাখা স্বাভাবিক। কিন্তু একেবারে বিস্তৃত থাকারও বিপদ আছে। অসতর্কতার সুযোগে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে অপশক্তি। নাশ করতে পারে সকল শান্তি-সুখ। আর তাই ‘ফিরে দেখা ॥ জামায়াত-বিএনপির তাণ্ডব’ শিরোনামে এ প্রদর্শনীর আয়োজন বলে জানান তিনি।
২০ জুলাই শুরু হওয়া প্রদর্শনী শনিবার শেষ হয়েছে। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী নিজামীর ২৫ ফুট উচ্চতার কুশপুতুল পোড়ানোর মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিশেষ এই আয়োজন।
শনিবার শেষ দিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, জাদুঘরের সামনের খোলা জায়গায় বিশাল প্যান্ডেল। পুরোটাজুড়ে শিল্পীর আঁকা কার্টুন। অর্ধশতাধিক কার্টুনে জামায়াত-বিএনপির তাণ্ডবের চিত্র। প্রদর্শনী ঘুরে দেখতে দেখতে দুর্বিষহ ২০১৩ সাল দেখা হয়ে যায়। মনে পড়ে, একদিন দু’দিন নয়, দিনের পর দিন হরতাল। হরতালের নামে জ্বালাও পোড়াও। ট্রেনলাইন উপড়ে ফেলা। বগিতে আগুন দেয়া। বিভিন্ন ক্যারিকেচার উঠে এসেছে এসব দৃশ্যে।
মনে পড়ে? চলন্ত বাস। ভেতরে সাধারণ যাত্রী। সারাদিনের কাজ শেষে তাঁদের বাড়ি ফেরার পালা। অথচ সে বাড়ি ফেরা হচ্ছে না। তাঁদের বহনকারী বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। ভয়ঙ্কর পেট্রোলবোমা ছোড়া হচ্ছে। এভাবে দিনদুপুরে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে নিরীহ নির্দোষ মানুষ! চোখের সামনে নারী শিশু বৃদ্ধরা ঝলসে যাচ্ছেন। হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। মারা যাচ্ছেন। অথচ তাঁরা জানেন না, কী তাঁদের অপরাধ! মনে পড়ে? মনে পড়ে সময়টা? প্রদর্শনী সে সময়টাকে তুলে ধরেছে। মনে করিয়ে দিয়েছে, শত শত ট্রাক ভর্তি শাক সবজি, ফলমূল শহরে প্রবেশ করতে পারছে না। পচে-গলে নষ্ট হচ্ছে। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে শত শত মণ চাল। কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা হচ্ছে। হাতের অস্ত্র কেড়ে নেয়া হচ্ছে। সে অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে মারা হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের। প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে দেয়া হচ্ছে। কী ভয়ঙ্কর সে সময়! সারাদিন সংবাদ সংগ্রহে ব্যস্ত সাংবাদিকদের নিরাপত্তা তখন নিরাপত্তা ছিল না। এখানে ওখানে আক্রান্ত হয়েছেন। ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। প্রদর্শনী সেসব অন্যায় বর্বরতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ‘হরতাল অবরোধে বিপন্ন শিক্ষা’ ব্যবস্থার কথা বর্ণনা করে কিছু ক্যারিকেচার। স্মরণ করিয়ে দেয়, সোনামণিদের স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বই পুস্তক-বসার বেঞ্চ এবং চেয়ারও রক্ষা পায়নি।
ভয়াবহ এই দুর্যোগের মাঝে দেশকে ঠেলে দিয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত-শিবির। সে অপশক্তির স্বরূপ উন্মোচন করে প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া কার্টুনগুলো। প্রকৃত সত্য তুলে ধরে বলে, একাত্তরের ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতেই চালানো হয়েছিল এমন বর্বরতা। প্রদর্শনীতে রাজাকারকুল শিরোমনি গোলাম আযম, নিজামী, সাঈদী, মুজাহিদদের পাকিস্তানের প্রেতাত্মা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ব্যঙ্গাত্মক উপস্থাপনা প্রদর্শনীর প্রতি সাধারণ মানুষকে বিশেষ আগ্রহী করে তুলে। জামায়াতের পাশাপাশি প্রদর্শনীর বিষয় হয়েছে বিএনপি। সব ধরনের অপকর্মে আড়াল থেকে জামায়াত-শিবির মৌলবাদী গোষ্ঠীকে সহায়তা দেয়ার অভিযোগে দলটির নেত্রীকে বেদেনী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন কার্টুনিস্ট। তেমন একটি কার্টুনে দেখা যায়, বীন বাজিয়ে জামায়াত-শিবিরকে শাপের মতো নাচাচ্ছেন খালেদা জিয়া। কখনও তিনি অপশক্তির পক্ষে বলছেন। কখনও এদের তাণ্ডব দেখেশুনে কানে কুলুপ এঁটেছেন। বলার নেই কিছু। প্রদর্শনীতে যুদ্ধাপরাধীদের দেশ ও জাতির শত্রু হিসেবে উপস্থাপন করে এদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানায় প্রদর্শনী।
প্রদর্শনী দেখতে প্রতিদিনই এসেছেন সাধারণ মানুষ। শিল্পী- সাহিত্যিক সাংবাদিক থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ-মন্ত্রী- এমপিরাও প্রদর্শনী ঘুরে গেছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলেছে বিশেষ এই আয়োজন। আয়োজকদের পক্ষে এফএম শাহীন বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগে একত্রিত হয়েছিলাম আমরা। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে সূচিত হয়েছিল গণআন্দোলনের। বিপরীতে যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধে ২০১৩ সালে সারাদেশে জামায়াত-শিবির তা-ব চালিয়েছে। এমন দুর্বিষহ অতীত মনে না রাখা স্বাভাবিক। কিন্তু একেবারে বিস্তৃত থাকারও বিপদ আছে। অসতর্কতার সুযোগে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে অপশক্তি। নাশ করতে পারে সকল শান্তি-সুখ। আর তাই ‘ফিরে দেখা ॥ জামায়াত-বিএনপির তাণ্ডব’ শিরোনামে এ প্রদর্শনীর আয়োজন বলে জানান তিনি।
২০ জুলাই শুরু হওয়া প্রদর্শনী শনিবার শেষ হয়েছে। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী নিজামীর ২৫ ফুট উচ্চতার কুশপুতুল পোড়ানোর মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিশেষ এই আয়োজন।
No comments:
Post a Comment