Friday, July 25, 2014

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মের দেড়শ বছর রবীন্দ্রনাথের গল্প নিয়ে এ সময়ের গল্পকাররা

কথাসাহিত্য

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মের দেড়শ বছর

রবীন্দ্রনাথের গল্প নিয়ে এ সময়ের গল্পকাররা (কিস্তি ২)

প্রমা সঞ্চিতা অত্রি | ২৩ অক্টোবর ২০১১ ১১:৩৭ অপরাহ্ন
[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুর ৭০ বছর পরে তাঁর ছোটগল্প নিয়ে কী ভাবছেন এখনকার গল্পলেখকরা? এ সময়ের লেখকদের কাছে রবীন্দ্রনাথের
arts_1.jpgগল্প নিয়ে কিছু প্রশ্ন রাখা হয়। রবীন্দ্রনাথের পরে বাংলা গল্পে কী কী বদল ঘটেছে, রবীন্দ্রগল্পের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য কোনগুলি, রবীন্দ্রনাথের গল্প দিয়ে তিনি কতটা প্রভাবিত বা আদৌ প্রভাবিত কিনা বা তা কোন বৈশিষ্ট্যে আলাদা এবং তাদের প্রিয় রবীন্দ্র ছোটগল্প কোনগুলি–এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। দেখা গেছে, নিজের গল্পে রবীন্দ্রপ্রভাব নিয়ে বলতে গিয়ে গল্পকাররা একেকজন একেক রকম মত প্রকাশ করেছেন। কেউ যেমন নিজের লেখাতে অনেকাংশেই রবীন্দ্রনাথের ছায়া দেখতে পান, তেমনি অনেকেই আবার তাদের লেখায় রবীন্দ্র প্রভাব একেবারে নেই বলেই মনে করেন।
বি. স]
agerkisti.jpg
——————————————————-

রাহাত খান

rahat-khan.jpgজন্ম: ১৯ ডিসেম্বর ১৯৪০
রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর ছোটগল্প নিয়ে বাংলাদেশে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে।গল্পের আঙ্গিক, বিষয়বস্তু, সংলাপ, চরিত্রায়ন, এই বিষয়গুলোতে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের গল্পের যে ভাষা ছিল এবং ছোটগল্প সম্পর্কে তাঁর যে ধারণা ছিল সেগুলো তাঁর পরবর্তী সময়ে বাংলা সাহিত্যের ছোটগল্প লেখকদের মধ্যে তেমন একটা দেখা যায় নি। তাঁর গল্পের মধ্যে যে প্রকৃতি বর্ণনা এবং বিশেষ করে নিম্ন-মধ্যবিত্ত জীবনের চরিত্র-চিত্রণে তাঁর যে দক্ষতা, সেটা পরবর্তী সময়ে আসলে খুব কম লেখকের লেখাতেই পাওয়া যায়। হয়ত হাতে গোনা কয়েকজন লেখকের নাম বলা যাবে যাদের কিছু গল্প হয়ত বিশ্বের শ্রেষ্ঠ গল্পগুলোর মধ্যে পড়ে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের মত এত এত গল্প এবং এত উচ্চমানের গল্প যে আর কেউ লিখতে পারেননি সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহই নেই।

অনেক সময় গল্পে লেখকের কোনো না কোনো অভিজ্ঞতার কথা… তাঁর গল্পে চলে আসে এবং অনেক সময় মনে করা হয় যে সাহিত্য মানেই হচ্ছে যিনি লেখক তার একটা আত্মচরিত। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পে রবীন্দ্রনাথ অনুপস্থিত। দুই-একটা গল্প হয়ত আলাদা যেমন, পোস্টমাস্টার, বোস্টমী, কাবুলিওয়ালা। এই কয়েকটা গল্প ছাড়া বাকি সব গল্পে রবীন্দ্রনাথ অনুপস্থিত থেকেছেন… তার ছোটগল্পে। এটা একটা বিশাল ব্যাপার। এই যে এভাবে নিজেকে… আত্মগোপন করে রাখা, এটা বলতেই হবে যে অসাধারণ একটা বিষয়।

রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের ক্ষেত্রে তিনটা বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে আমরা চিহ্নিত করতে পারি। প্রথম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, রবীন্দ্রনাথ তাঁর গল্পের ভেতরে কখনো প্রবেশ করেননি। যাদের গল্প, তাদের গল্পই তিনি লিখেছেন। অনেক সময় গল্পে লেখকের কোনো না কোনো অভিজ্ঞতার কথা… তাঁর গল্পে চলে আসে এবং অনেক সময় মনে করা হয় যে সাহিত্য মানেই হচ্ছে যিনি লেখক তার একটা আত্মচরিত। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পে রবীন্দ্রনাথ অনুপস্থিত। দুই-একটা গল্প হয়ত আলাদা যেমন, পোষ্টমাস্টার, বোস্টমী, কাবুলিওয়ালা। এই কয়েকটা গল্প ছাড়া বাকি সব গল্পে রবীন্দ্রনাথ অনুপস্থিত থেকেছেন… তার ছোটগল্পে। এটা একটা বিশাল ব্যাপার। এই যে এভাবে নিজেকে… আত্মগোপন করে রাখা, এটা বলতেই হবে যে অসাধারণ একটা বিষয়। এই গেল একটা বৈশিষ্ট্য।
(সম্পূর্ণ…)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মের দেড়শ বছর

রবীন্দ্রনাথের গল্প নিয়ে এ সময়ের গল্পকাররা

প্রমা সঞ্চিতা অত্রি | ৯ মে ২০১১ ৩:২৩ অপরাহ্ন
[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুর ৭০ বছর পরে তাঁর ছোটগল্প নিয়ে কী ভাবছেন এখনকার গল্পলেখকরা? এ সময়ের লেখকদের কাছে রবীন্দ্রনাথের
arts_rabi1.jpgগল্প নিয়ে কিছু প্রশ্ন রাখা হয়। রবীন্দ্রনাথের পরে বাংলা গল্পে কী কী বদল ঘটেছে, রবীন্দ্রগল্পের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য কোনগুলি, রবীন্দ্রনাথের গল্প দিয়ে তিনি কতটা প্রভাবিত বা আদৌ প্রভাবিত কিনা বা তা কোন বৈশিষ্ট্যে আলাদা এবং তাদের প্রিয় রবীন্দ্র ছোটগল্প কোনগুলি–এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। দেখা গেছে, নিজের গল্পে রবীন্দ্রপ্রভাব নিয়ে বলতে গিয়ে গল্পকাররা একেকজন একেক রকম মত প্রকাশ করেছেন। কেউ যেমন নিজের লেখাতে অনেকাংশেই রবীন্দ্রনাথের ছায়া দেখতে পান, তেমনি অনেকেই আবার তাদের লেখায় রবীন্দ্র প্রভাব একেবারে নেই বলেই মনে করেন।
বি. স]
——————————————————-

শফিক রেহমান

shafik-rehman2-11111934.jpg(জন্ম: ১১ নভেম্বর ১৯৩৪)
রবি ঠাকুরের পরে আমাদের দুই বাংলাতেই অনেক ভাল গল্প লেখকের আর্বিভাব ঘটেছে বলে আমি মনে করি। আমার মনে হয় ঔপন্যাসিকের চাইতে গল্পকারই বেশি এসেছে আমাদের বাংলা সাহিত্যে। অনেক ভাল ভাল গল্পকার যেমন, সুবোধ ঘোষ, রমাপদ চৌধুরী, বারীন্দ্রনাথ দাস—যাঁর নাম হয়তো সবাই জানেন না, এরকম আরও অনেকেই আছেন। তারপর আরও আছে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়–যাঁরা একাধারে ঔপন্যাসিকও বটে।

যেহেতু আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে তাই আমি বলছি আমি হয়ত বর্তমান রাজনৈতিক ঘটনার উপরেই বেশি লিখেছি, সেটাই আমাকে বেশি চিন্তিত করে।… হয়ত রবিঠাকুরের সময়ে, তাঁর লেখাতে রাজনীতি অতটা ইম্পর্টেন্ট হয়তো ছিল না। যদিও তার কিছু কিছু লেখায় রাজনীতি এসেছে কিন্তু সেটা তুলনামূলকভাবে কম।

তবে একটা জিনিস আমার কাছে যেটা মনে হয় যে, বাংলাদেশে ছোটগল্পটা ঠিক সেইভাবে হয় নি। এটার জন্য আমি চেষ্টা করেছি। (সম্পূর্ণ…)

প্রতিদিনের রুমাল, ষাট-সত্তরের ঢাকা ও চিরদিনের সাহিত্য

সুমন রহমান | ৩১ জুলাই ২০০৮ ১:৪৯ পূর্বাহ্ন
এক. 
প্রয়াত হলেন আমাদের অন্যতম প্রধান কথাশিল্পী মাহমুদুল হক। বিরাশি সালের পর থেকে আর কিছুই লেখেন নি এই প্রতিভাধর লেখক, সেই অর্থে mah-p-3.jpgএটি তাঁর দ্বিতীয় প্রয়াণ। যাঁর প্রয়াণের ব্যথাটুকু আমরা গত দুদশক ধরেই আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ও রুমালে বয়ন করে চলেছি, তাঁর শরীরী প্রস্থানের ফলে কেবল আমাদের এই অভ্যাসটুকুরই ইতি ঘটল। প্রশ্নটি কিন্তু রয়েই গেল: মাহমুদুল হক আমাদের কেমন আত্মীয়? প্রতিদিনের, নাকি চিরদিনের?
মাহমুদুল হকের পাঠক কিন্তু এই প্রশ্নের জবাবে কোনো পরিষ্কার পজিশন নেয় না। তাঁকে প্রতিদিনের হুমায়ুনের কাতারে রাখতে সে অপারগ, আবার চিরদিনের হাসান-ইলিয়াস চত্বরেও তাঁর আসন পেতে দিতে দোনোমনা সে। কোনো খাপেই যেন এই তলোয়ার ঢোকে না। সমস্যা কি তলোয়ারটির? নাকি আমাদের সাহিত্যরুচির?
লক্ষণীয়, মাহমুদুল হক আটটি উপন্যাস এবং কমপক্ষে এগারটি গল্প লিখেছেন তাঁর দুদশকের সাহিত্যজীবনে। তুলনায় আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এবং হাসান আজিজুল হকের উপন্যাসের সংখ্যা দুইয়ের অধিক না। তবু তাঁর পাঠকের দাবি, অনেক কম লিখেছেন এই লেখক। আবার কোনো কোনো বোদ্ধা ভাবেন যে, বিশাল ক্যানভাসে বা মহৎ কোনো উপন্যাস লেখেন নি তিনি। ধন্দ লাগে, এ হেন প্রত্যাশার হেতু কী? যা লিখেছেন মাহমুদুল হক তা নিয়েই আমরা কেন সন্তুষ্ট হতে পারি না? সে কি আমরা তাঁর মাঝে অমিত সম্ভাবনা দেখেছিলাম বলে, নাকি তিনি আমাদের ক্যাটাগোরাইজেশনের নৌকাটিকে মাঝ নদীতে ছেড়ে গিয়েছেন বলে? টানাহেঁচড়া কিছু হয়েছে, হয়ত আরো হবে, কিন্তু তাতে বিশেষ ফল হয় নি। মাহমুদুল হক আসন পেতেছেন এমন একটি নো-ম্যানস ল্যান্ডে যা বিদ্যমান সাহিত্য সমালোচনাধারার জন্য অস্বস্তির। (সম্পূর্ণ…)

সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ যখন আমি…(কিস্তি ১)

চঞ্চল আশরাফ | ২৮ এপ্রিল ২০০৮ ২:১১ অপরাহ্ন
hacolor.jpg
হুমায়ুন আজাদ
১৯৯০ সালের খুব সম্ভবত এপ্রিলে, মাঝামাঝি কোনও এক দিনে হুমায়ুন আজাদের সামনে নিজের কবিতা নিয়ে হাজির হওয়ার প্রথম সুযোগটি পাই। অনুষ্ঠানটি হয়েছিল টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ার দক্ষিণপাশে, রোদ-ঝলমল বিকালে, বেশ অনাড়ম্বরভাবে। উদ্যোক্তা ছিল মঙ্গলসন্ধ্যা। মিহির মুসাকী, সরকার আমিন, লিয়াকত জুয়েল কবিতা পড়েছিলেন। সবার শেষে আমার পালা এলে আমি সে-সময়ের লেখা নিজের সবচেয়ে ভালো কবিতাটি পড়ি। পড়ার সময় থেকে বুকে যে কাঁপুনি শুরু হয়েছিল, তা অনুষ্ঠান শেষ-হওয়া পর্যন্ত ছিল। সবার কবিতা পড়া শেষ হলে হুমায়ুন আজাদ সে-সব নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। কার কবিতা নিয়ে কী বলছেন সেদিকে আমার খেয়াল নেই। থাকার কথাও নয়। কারণ, (অন্যরা গোল্লায় যাক) আমার কবিতা নিয়ে তিনি কী বলেন, সেই ভাবনায় আচ্ছন্ন ছিলাম তখন। কিন্তু কিছুই বললেন না। শুধু সামান্য তাচ্ছিল্যের হাসি মিশিয়ে আমাকে দেখিয়ে বললেন, ‘ওকে আল মাহমুদের ছেলে বলেই মনে হয়। এ্যাই, তুমি তার ছেলে না-কি!’
—————————————————————–
আমার কবিতা নিয়ে তিনি কী বলেন, সেই ভাবনায় আচ্ছন্ন ছিলাম তখন। কিন্তু কিছুই বললেন না। শুধু সামান্য তাচ্ছিল্যের হাসি মিশিয়ে আমাকে দেখিয়ে বললেন, ‘ওকে আল মাহমুদের ছেলে বলেই মনে হয়। এ্যাই, তুমি তার ছেলে না-কি!’ 
—————————————————————–
উল্লেখ বাহুল্য নয়, ১৯৯২ সালে আন্ওয়ার আহমদের বাসায় আল মাহমুদের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতেই আমি তা বলি এবং তিনি আমাকে নিজের পুত্র বলে ঘোষণা দেন। শুনে আন্ওয়ার ভাই হেসে ওঠেন। আমি বলি যে ব্যাপারটা নিয়ে গর্ব করা যেত যদি আমি কবিতা না-লিখতাম; যদি বাপের পরিচয়ে আমার চলতে হতো। আর, আমার জন্মদাতা বেঁচে আছেন। যা-ই হোক, সাহিত্যিক হিসেবে হুমায়ুন আজাদের সামনে আমার প্রথম উপস্থিতি সুখকর হয় নি। (সম্পূর্ণ…)

সালমান রুশদির সঙ্গে একটি সন্ধ্যা

সেজান মাহমুদ | ১৮ এপ্রিল ২০০৮ ৩:৫৬ অপরাহ্ন
salman-rushdie-at-florida-s.jpg
ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে স্যার আহমেদ সালমান রুশদি (জন্ম. ১৯/৬/১৯৪৭)
গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে মুসলিম বিশ্বের কাছে বিতর্কিত, পশ্চিমা বিশ্বের লেখক-সমালোচকদের কাছে এ শতাব্দীর একজন অন্যতম শক্তিশালী লেখক সালমান রুশদি আমেরিকার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ট্যালাহাসি শহরে এলেন বক্তৃতা দেয়ার জন্য। এখানে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির আমন্ত্রণে সাতদিনের আনুষ্ঠানমালার সূচনা-বক্তার মর্যাদায় এলেন তিনি। এদিন আমার বাড়িতে মেহমান, অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছে আমার এক চিকিৎসক বন্ধু, আর বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী তপন চৌধুরী। আমার কাছে midnights_children.jpg……
Midnight’s Children (1981)
…….
টিকিট আছে মাত্র দুটো। দ্বিধা কাটালেন তপন দা নিজেই, বললেন, ‘আমার কোনো আগ্রহ নাই যাওয়ার, তোমরা যাও।’ অতএব তপনদাকে প্রতিবেশীর বাসায় রাতের খাবারের নেমন্তন্ন খেতে দিয়ে আমরা চলে এলাম ইউনিভার্সিটির রুবি ডায়ামন্ড অডিটোরিউয়ামে।
সালমান রুশদি এখানে আসবেন এ খবর চাউর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি তাঁর বর্তমান কর্মস্থলে যোগাযোগ করি সামনা-সামনি একক সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য। কিছুটা আশার আলোও দেখা দিয়েছিল, কিন্তু যেই না জানালাম যে আমি বাংলাদেশের লোক, তারপর থেকেই নানান নিরাপত্তামূলক প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে হলো। অগত্যা একক সাক্ষাৎকার না করে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব মেনে নেওয়া ছাড়া গতি থাকে না।
আমি বন্ধুকে নিয়ে অডিটরিয়ামের ভেতরে ইউনিভার্সিটির ফ্যাকালটিদেরshame_book.jpg……
Shame (1983)
…….
ব্যালকনিতে আসন নিলাম। সালমান রুশদি তাঁর আলোচিত-সমালোচিত উপন্যাস স্যাটানিক ভার্সেস লেখার জন্য ইরানের আয়াতুল্লাহ খোমেনীর দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ জারির সাত বছর পর অনেকটা সাবধানতার সঙ্গে জনসমক্ষে আসা শুরু করেছেন। এর মধ্যে আমেরিকার ‘ফিল ডোনাহিউ শো’তে এসছিলেন, এসছিলেন জনপ্রিয় টক শো লেট নাইট উইথ জে লোনো-তে। এছাড়া এই দীর্ঘ বিরতির পর তাঁর নতুন উপন্যাস দ্য মুর’স লাস্ট সাই-এর প্রচারনার কাজে আমেরিকায় অনেকটা সর্বসাধারণের জন্য আধা-উন্মুক্ত (সেমি-পাবলিক) পাঠ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি ‘এমেরি’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ‘বিশিষ্ট আবাসিক লেখক’-এর মর্যাদায় শিক্ষকতা শুরু করেছেন। এই সূত্রেই তিনি আমাদের শহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন, এখান থেকে তাঁর নতুন খণ্ডকালীন কর্মস্থল মাত্র আধা ঘণ্টার বিমান-দূরত্বে। (সম্পূর্ণ…)

একটি গল্প বা স্মৃতিকথা

নূহের নৌকায় শহীদুল জহির (১১ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৩ - ২৩ মার্চ, ২০০৮)

নাসিমা সেলিম অলীক | ২৯ মার্চ ২০০৮ ৫:০৪ পূর্বাহ্ন
cbazaraug1986.jpg…….
কক্সবাজারে, ১৯৮৬ সালে
……..
ঢাকা শহর থেকে দূরে থাকলে বোঝা যায় একটি হাইজ্যাকার অধ্যূষিত, কাকের-সংখ্যা-বেড়ে-যাওয়া ও কবির-সংখ্যা-কমে-যাওয়া নগরীর মায়া কাটানো কেন কঠিন। বা, প্রায় অসম্ভব। বর্তমানে অন্য একটি মহানগরে থাকতে হয় বিধায় আমি ঢাকার আওয়াজ অদৃশ্যে শুনতে পাই, এবং সেই ধুনেই ‘পূর্ব’ বাংলার গান গাই। নানা খবর বাতাসে কানাকানি করে। শুধু ঢাকা নয়, ঢাকা সহ গোটা বাংলাদেশ বিষয়ে কিছু স্বদেশী আর কয়েকটা বিদেশী কাগজ পড়ে জানতে পারি মানে জানাই ছিল; হঠাৎ আল-গোরের ‘একটি অস্বস্তিকর সত্যি কথা’ শুনে আবারও মনে পড়ে–বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক এলাকা আগামী কুড়ি বছরে ডুবে যেতে পারে, এবং এটা নাকি প্রায় সম্ভব। তাহলে আমরা যারা বিদেশে যেতে পারি নাই বা চাই নাই, তারা কোথায় যাব। এমন কি হতে পারে যে আমরা এই দেশেই কোনোমতে ঠাঁই খুঁজে নেব বা কেউ কেউ অধিক হারে উদ্বাস্তু হব ভারত বা অধিকতর ‘উন্নত’ কোনো দেশে আমাদের রিফ্যুজি কলোনি হবে? এই বিরাট ভরাডুবির ফলে দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল সংখ্যক জনগণ উত্তর-পূর্ব-পশ্চিমাঞ্চলের অপরের কাছে জমির ভাগ চাইবে, নতুন করে বাসা বাঁধবে সেটাই কি স্বাভাবিক নয়? সেক্ষেত্রে আমার একটা জরুরি প্রশ্ন আছে: যদি এমন ঘটে এবং তখনও আমাকে বেঁচে থাকতে হয় এই দেশে বা অন্য কোথাও, তবে আমি সঙ্গে কী নেব? কী ফেলে যাব, আর কী রাখব মনে–জীবনে? সেই বিষয়ে আজকে ভাবনা করতে চাই।
২৩শে মার্চ দুপুর বেলা বন্ধু প্রকাশক ঢাকা থেকে ফোন করে মৃদু স্বরে একবার বলেছিলেন: শহীদুল জহির ভোর রাতে মারা গেছেন। তারপর দুবার বা তিনবার তিনি আরও বিস্তারিত কী বললেন। আমি শুধু বুঝতে পারলাম, বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক ডুবে গেলে যদি কোথাও চলে যেতে হয়, শহীদুল জহির সমগ্রটাই নিতে হবে সঙ্গে। আর কেউ বা আর কিছু থাকুক বা না থাকুক, শহীদুল জহিরের প্রকাশিত-অপ্রকাশিত পুস্তকের অস্তিত্ব জরুরি। কিন্তু দেশ ডুবলে বইগুলিও তো ডুববে, প্রকাশনা সংস্থা দেউলিয়া হবে, পাঠক পড়া ছাড়বে, লেখক হারাবে তার লেখার কলম-কম্প্যুটার অথবা লেখার সময়।(সম্পূর্ণ…)

সেদিন তুষার ঝরেছিল

ইমতিয়ার শামীম | ২৭ মার্চ ২০০৮ ৮:২৩ অপরাহ্ন
শহীদুল জহিরের মৃত্যুর পরপরই কোনও কিছু লেখার বেলায় আমার ব্যক্তিগত সুবিধা ও অসুবিধা দুটোই হলো, তাঁর সঙ্গে আমার মুখোমুখি পরিচয় ছিল না। দশকওয়ারি সাহিত্যবিভাজনে বিশ্বাসী সম্পাদক ও
sj1.jpg…….
শহীদুল জহির
…….
আলোচকরা যাদের গায়ে আশির দশকের ছাপ লাগিয়েছিলেন, শহীদুল জহিরসহ আমাদের অনেকের গায়েই সেই ছাপ এতদিনে সুস্পষ্টভাবে বসে গেছে অনেকটা জন্মদাগের মতো। আক্ষরিক জন্মের কথা ধরলে তিনি আমার একযুগ আগে পৃথিবীতে এসেছেন। তবু এখন সম্পাদক ও আলোচকদের প্রতি কৃতজ্ঞ আমি,–তাঁরা আমাদের একই সময়ের বৃত্তে আবদ্ধ করেছেন জন্যে। আশির দশকের উল্লেখযোগ্য সব লেখকের সঙ্গেই ধীরে ধীরে আমার পরিচয় হয়েছে। ব্যতিক্রম শুধু শহীদুল জহির। তাঁকে আমি মুখোমুখি দেখি নি। তাঁর সঙ্গে আমার কথা হয় নি।
কালাকালের অর্থে এই দেখা হওয়া না-হওয়া অবশ্য কোনও বড় ব্যাপার নয়। কিন্তু মানুষ যখন বেদনার্ত হয় তখন মহাকালের কথা ভাবে না। মৃত্যুগন্ধী সময়ের আবেগই তাঁর কাছে বড় হয়ে ওঠে। এ জন্যেই হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিটির কথা বলতে গিয়ে হয়তো ব্যক্তিটির সঙ্গে স্মৃতিচারকের স্মৃতিগুলিই বড় হয়ে ওঠে। যতক্ষণ না তা হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিটিকে অবলম্বন করে নিজেকেই বড় করে তোলার মতো না হয় ততক্ষণ তা দৃষ্টিকটূও নয়। সত্যিকার অর্থে মানুষটির প্রতি ব্যক্তিগত মুগ্ধতা ছাড়া এইসব সময়ে অন্য কোনও বয়ান খুব বেশি প্রীতিকর মনে হয় না। অথচ তেমন কোনও সঞ্চয়ই নেই আমার, যা দিয়ে আমি তাঁর সঙ্গে একটু ব্যক্তিগত হতে পারি। (সম্পূর্ণ…)
http://allbanglanewspapers.com/bdnews24-bangla/

No comments:

Post a Comment