Saturday, August 16, 2014

‘দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর যত ভালবাসা পেয়েছেন আমরাও তা পাইনি’ জাতীয় শোক দিবসের আলোচনাসভায় শেখ হাসিনা

‘দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর যত ভালবাসা পেয়েছেন আমরাও তা পাইনি’
জাতীয় শোক দিবসের আলোচনাসভায় শেখ হাসিনা
বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জেনারেল জিয়াও যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, তা আত্মস্বীকৃত খুনী ফারুক-রশীদের বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারই তার প্রমাণ। ওই দুই খুনী প্রকাশ্য সাক্ষাতকার দিয়ে বলেছে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে তারা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল, জিয়া তাদের ইশারায় জানিয়ে দিয়েছে তাদের সঙ্গে সেও রয়েছে। কিন্তু ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। আজ খুনী ও তাদের দোসর এবং ইতিহাস বিকৃতকারীদের মুখোশ ও চরিত্র জাতির সামনে স্পষ্ট হয়ে গেছে।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন। বাকরুদ্ধ কণ্ঠে ছোটভাই শিশু রাসেলসহ সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে অঝোরধারায় কেঁদেছেন তাঁর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা। কাঁদিয়েছেন মিলনায়তন ভর্তি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ শ্রেণী-পেশার মানুষকে। প্রায় ৩৫ মিনিটের বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রায়শই আবেগে জড়িয়ে পড়েন, কান্নায় তাঁর কণ্ঠ জড়িয়ে যায়। একপর্যায়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার বাবা দেশের দুঃখী মানুষকে যতটা ভালবেসে গেছেন আমরা সন্তানরাও সে ভালবাসা পায়নি। পিনপতন নীরবতায় এই নির্মম হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা শুনে আবেগাক্রান্ত নেতাকর্মীরা খুনী ও তাদের দোসরদের বিচার চেয়ে মুহুর্মুহু স্লোগানে পুরো মিলনায়তন প্রকম্পিত করে তোলেন। দলের সিনিয়র নেতারাও জাতীয় শোক দিবসে ভুয়া জন্মদিনের নামে কেক কেটে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার উল্লাস প্রকাশের ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে তাঁর প্রতি ধিক্কার ও নিন্দা জানান।
বক্তব্যে রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের কিছু সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, শত বাধা-বিপত্তি ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের মানুষ সুখে-শান্তিতে রয়েছে-এটা দেশের কিছু মানুষের ভাল লাগে না। কারণ তাদের অপরের দাসত্ব আর তোষামোদি করাই প্রধান কাজ। এরা দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও উন্নয়নে বিশ্বাস করে না। যারা পরের দাসত্ব করার অভ্যাস তাদের কোনকিছুই ভাল লাগবে না-এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যতই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করা হোক না কেন, বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে পিছপা হব না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। কেউ-ই তা রুখতে পারবে না।
সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডিমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট এনামুল হক, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, আহমদ হোসেন ও এনামুল হক শামিম। ড. হাছান মাহমুদ ও অসীম কুমার উকিলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় কবিতা আবৃত্তি করেন কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট শুধু একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়নি, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে খুনী ও তাদের দোসররা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ও স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস করে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের একটি প্রদেশ বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ভাবধারায় ইসলামী রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু ওই সময় তীব্র জনমতের চাপে সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়।
আবেগজড়িত কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, গত ৩৯ বছর ধরে আমরা দুই বোন সব হারানোর ব্যথা-বেদনা বুকে ধারণ করে দিন কাটাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে ফেরার চেষ্টা করলেও জেনারেল জিয়া আমাকে দেশে আসতে দেয়নি। ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে চরম বেইমানি ও মোনাফেকি করেছিল খুনী মোশতাক। কিন্তু পলাশীর যুদ্ধে বেইমান মীরজাফর ক্ষমতা দখল করেও যেমন তিন মাস টিকতে পারেনি, খুনী মোশতাকও তিন মাস ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।
পঁচাত্তর পরবর্তী ক্ষমতা দখলকারী জেনারেল জিয়াউর রহমানের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা একাত্তরে রাজাকার-আলবদর-আলশামস সৃষ্টি করে দেশে গণহত্যা চালিয়েছিল, মা-বোনের সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছিল, সেই যুদ্ধাপরাধীদের অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়া শুধু ছেড়েই দেয়নি রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছে। প্রায় ১১ হাজার সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের জেল থেকে ছেড়ে দিয়ে কাউকে প্রধানমন্ত্রী, কাউকে মন্ত্রী-উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন জায়গায় পুনর্বাসন করেছে এই জিয়া। এমনকি নাগরিকত্ব হারানো গোলাম আযমসহ অন্য যুদ্ধাপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে এনে নাগরিকত্ব ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও তাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়া হয়। একাত্তরে বীর বাঙালী যাদের যুদ্ধ করে পরাজিত করেছিল, সেই পরাজিত শত্রুদেরই ক্ষমতায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে এই জিয়া।
এ সময় বিএনপি নেতা শমসের মবিন চৌধুরীর প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পায়ে গুলি খেয়েছিল বিএনপি নেত্রীর বর্তমান ওই নেতা। তাঁকে বঙ্গবন্ধু জার্মানি থেকে চিকিৎসা করিয়ে এনে সুস্থ করে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও দয়া করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি দিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়ার নির্দেশে বর্তমানে ওই বিএনপি নেতা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের লিবিয়াতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিল এবং বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল। এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতি ওই নেতার প্রতিদান।
তিনি বলেন, জেনারেল জিয়া ক্ষমতা দখলের পর ’৭৫ থেকে ’৮৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ১১ বছর প্রতিরাতে কারফিউ দিয়ে দেশ চালিয়েছে সামরিক স্বৈরাচাররা। প্রায় ১৯টি ক্যুর ঘটনায় জিয়াউর রহমান সামরিক বাহিনীর প্রায় আড়াই হাজার অফিসার ও সৈনিককে হয় গুলি করে নয়ত ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে। একমাত্র বিমানবাহিনীরই ৬৬০ জন অফিসারকে জিয়ার নির্দেশে হত্যা করা হয়। তিনি বলেন, এই জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশে প্রথম সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার কাজ শুরু করেছিল। তার পরবর্তী ক্ষমতায় আসা সকল সামরিক স্বৈরাচাররাও একই কাজ করেছে। যে কাজটি এখন করছেন বিএনপি নেত্রী (খালেদা জিয়া)।
দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনীরা দম্ভভরে বলেছিল তাদের কেউ বিচার করতে পারবে না। কিন্তু ’৯৬ সালে দেশের জনগণ দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে দেশসেবার সুযোগ দিয়েছিল বলেই আল্লাহর রহমতে আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছি, খুনীদের দ-াদেশ কার্যকর করেছি। বীর বাঙালীর কপালে লেপিয়ে দেয়া কলঙ্কের তিলক মুছে ফেলেছি। নানা ষড়যন্ত্র চক্রান্ত সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে মাথানত করি না। আমার কোন ভয়ভীতি নেই, মৃত্যুকেও পরোয়া করি না। এ দেশের জন্য আমার মা-বাবা, ভাইসহ সবাই জীবন দিয়ে গেছেন, দেশের জন্য লাখো শহীদ তাঁদের জীবনকে উৎসর্গ করে গেছেন। সেই তুলনায় আমার জীবন তো তুচ্ছ। আর আমার হারাবার কিছু নেই। জনগণের মঙ্গলের জন্য আমার জীবনকে উৎসর্গ করেছি। যতক্ষণ বেঁচে থাকব দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাব। জীবনে কী পেলাম বা কী পেলাম না, সেটি আমার কাছে বড় নয়, আমার কাছে সবচেয়ে বড় দেশের মানুষকে কী দিতে পারলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের আর ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বিদেশে ঘুরতে হয় না। অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ আজ শক্তিশালী, সারাবিশ্বে আমাদের দেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে। তাই যত বাধাই আসুক না কেন, সবকিছু মোকাবেলা করে আমরা বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলবই। জাতির পিতা স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণই এবারের জাতীয় শোক দিবসে আমাদের প্রতিজ্ঞা।
ভুয়া জন্মদিনের নামে কেক কেটে উল্লাস প্রকাশে নিন্দা-প্রতিবাদে ফেটে পড়েন জ্যেষ্ঠ নেতারা ॥ আলোচনাসভায় রক্তাক্ত-শোকাবহ জাতীয় শোক দিবসে ভুয়া জন্মদিনের নামে কেক কেটে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার উল্লাস প্রকাশের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি তাঁকে ধিক্কার-ঘৃণা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ১৫ আগস্ট সংঘটিত করেই জিয়াউর রহমানের উত্থান হয়েছিল। ১৫ আগস্ট ঘটিয়ে জিয়া প্রধান সামরিক প্রশাসক এবং পরে রাষ্ট্রপতি এবং তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তাই বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীতে খালেদা জিয়া কেক কেটে উল্লাস করবেন-এটাই স্বাভাবিক। শোক দিবসে মিথ্যা জন্মদিন পালন করে নিজের পরিবারের চরিত্র হনন না করার জন্য খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একজনের একাধিক জন্মদিন থাকলে প্রশ্ন উঠে সে কোন বাবা-মার সন্তান?
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ খালেদা জিয়াকে নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতার পর এই জিয়াই খালেদা জিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু জিয়াকে ডেকে বলেছিলেন, বউকে আর কষ্ট দিও না, একসঙ্গে থাক। অথচ সেই খালেদা জিয়াই আজ বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদিনে ভুয়া জন্মদিনের নামে কেক কেটে উল্লাস করেন! তাঁকে ঘৃণা ও ধিক্কার জানাই। খালেদা জিয়ার মতো এমন নিষ্ঠুর ও হৃদয়হীন নেত্রী কখনও দেশের মানুষের নেতৃত্ব দিতে পারে না। খুনীদের দোসর ও জাতীয় শোক দিবসে প্রতিহিংসাবশত মিথ্যা জন্মদিন পালনকারীদের সঙ্গে কখনও সংলাপ হতে পারে না। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে পৃথিবীর কোন শক্তিই আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে পারবে না।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত খালেদা জিয়াকে ‘নির্বোধ ও অর্বাচীন নেত্রী’ আখ্যায়িত করে বলেন, দেশের মানুষের সহ্যের একটা সীমা রয়েছে। জনগণ আর রক্তাক্ত ১৫ আগস্টে নকল মিথ্যা জন্মদিনের নামে প্রতিহিংসার কেক কেটে উল্লাস আর সহ্য করবে না। আগামীতে এই নির্বোধ ও অর্বাচীন নেত্রীকে তাঁরা মিথ্যা জন্মদিন পালন করতে দেবে না, প্রতিহত করবে।
মতিয়া চৌধুরী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, চোখ রাঙানীর দিন শেষ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, দুর্ভিক্ষের অর্থনীতির দেশ নয়। আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই, কিন্তু প্রভুত্ব নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত নির্বাচনের ইতিহাস এবং একাত্তরে নগদ অর্থ দিয়ে কেনা খাদ্যের জাহাজ আটকিয়ে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির ইতিহাসও বিশ্ববাসী জানে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আগামীতে শোকাবহ আগস্ট মাসে বিএনপিকে রাজনৈতিক তৎপরতা পরিচালনার সুযোগ না দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, ৭০ বছর বয়সে পাতলা শিফন শাড়ি পরে খালেদা জিয়ার ভুয়া জন্মদিনের নামে কেক কেটে উল্লাস দেখে দেশের জনগণ ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছে। আগামীতে তাদের এমন সুযোগ আর জনগণ দেবে না। দেশের জনগণই তাঁর প্রতিহিংসা ও কুরুচিপূর্ণ উল্লাসের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত আইনজীবী ড. শাহদীন মালিকের লেখার সমালোচনা করে বলেন, দেশে কিছু মানুষ আছে তারা কে কী দোকান খুলে কী বলছে তা বুঝি না। অনেকটাই বস্ত্রালয়ে আটা বিক্রির মতো। মানবাধিকার সংস্থার নেতারা পদ্মা সেতুর কথা বলেন, আবার নির্বাচন নিয়ে যাঁদের কাজ তারা কথা বলেন রাস্তাঘাট নিয়ে। দেশের সুশীল সমাজের যদি এমন অবস্থা হয় তবে দেশের কী হবে?
দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, দলের মধ্যে অনেকে আছেন যাঁরা সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি করেন। এরা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী নয়, দুর্বল করতে চায়। শোক দিবসে ওমুক-তমুকের নামে বানানো ব্যানার-ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধুকে দেখা যায় না, তাদের ছবিই যেন মুখ্য। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অতীতে এমনটি ছিল না। নিজেদের পরিশুদ্ধ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা, বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু রয়েছে তাঁর আদর্শ ও মহান ত্যাগের অমূল্য ইতিহাস। তাই আমাদের প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুকে বড়ই প্রয়োজন, তাঁর আদর্শ নিয়েই সবাইকে দেশের অগ্রযাত্রায় শামিল হতে হবে।
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html

No comments:

Post a Comment