অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কৌশলগত গুরুত্ব
নাদিরা মজুমদার
অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা নিগ্রহ প্রসঙ্গে হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা নিগ্রহ কৌশলগত কোন হাতিয়ারই নয়; বরং স্ট্র্যাটেজির প্রাদুর্ভাবেরই ঘোষণা দেয়, নিষেধাজ্ঞার মুগুর আসলে দুর্বলতার লক্ষণ। এই কারণেই বোধহয় অনেককাল পর্যন্ত কথায় কথায় অর্থনৈতিক নিগ্রহের মুগুরটি ব্যবহার হয়নি। এই মিলেনিয়ামে বেশ বড় মাপের নিগ্রহের সূচনা হয় ইরানকে দিয়ে। জাতিসংঘের প্রস্তাবনামা পাসটাস করিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটা করে ২০০৬ সালে নিষেধাজ্ঞা বা নিগ্রহের প্রর্বতন হয়। শুরু হয় ইরানি নিগ্রহের ম্যারাথন রেস। এই জাতীয় নিগ্রহ আরোপের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশটিকে নতজানু অবস্থায় নিয়ে আসার কোন উল্লেখযোগ্য প্রমাণাদি নেই বটে তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায় আরোপকারী ও আরোপিত দেশ- দুই পক্ষই মহাধকলের শিকার হয়। যেমন : ২০১৪ সালে পরিচালিত এক স্টাডি অনুযায়ী, ইরানি নিগ্রহবাবদ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ক্ষতির পরিমাণ হয় ১৭৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি এবং কম করে ২৭৯০০০গুলো কর্ম-সুযোগ নষ্ট হয়। এই হিসাবের মধ্যে ইইউসহ বাকি বন্ধুদেশগুলোর কি পরিমাণ গচ্চা গেছে, সেটি ধরলে- পরিমাণটি যে কত বিশাল হবে, কল্পনাও করা যায় না! তবে এইসব ক্ষয়ক্ষতির মহাধাক্কা আসলে নেয় নন্দঘোষরা বা কিউবা। প্রায় র্অধশত বছরেও ফিদেল কাস্ট্রোকে ঘায়েল করা গেল না।
নিগ্রহ আরোপিত এইসব দেশকে বাণিজ্যের জন্য বিকল্প উৎস খুঁজতে হয়। বিশ্বায়িত ব্যবস্থায় অনেককেই পাওয়াও যায়। কারণ, সবাইই কিছু না কিছু বিক্রি করতে চায়, কিছু না কিছু কিনতে চায়। যেমন : পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সংস্থা হলো জাতিসংঘ, প্রায় শ’ দুয়েক দেশ তার সদস্য। নিগ্রহজনিত কারণে সৃষ্ট রেডিমেড বাজারের সুযোগ কি কমবেশি কোন দেশই নেয়ার চেষ্টা করবে না? করবে, করে। আবার নিগ্রহজনিত এই টাইট অবস্থা নিগৃহীতের জন্য ’ইনসেনটিভ’ হিসেবে কাজ করে। যেমন : ইরান ’নিজেই করো’ নীতি চালু করে দেশী গাড়ি বানানো শুরু করে। ফলে, ইরানিদের গাড়ির লাকশারি বির্সজন দিতে হয়নি। কাজেই নতজানু হবে- আশায় না থেকে বরং সংলাপে যাওয়া কি উত্তম নয়? নিগ্রহকারী ও নিগৃহীত- দুই পক্ষই যখন ‘লুজ-লুজ পরিস্থিতির’ মধ্যে বিচরণ করছে, ওবামা-রুহানির মধ্যকার একটি টেলিফোন কল সংলাপের সূচনা করে দিল।
বহুল আলোচিত ইরানি নিগ্রহের যুগের অবসান যখন প্রায় নিশ্চিত, আরেকটি নিগ্রহের নতুন অধ্যায়ের সূচনা বিশ্ব দেখছে। ইউক্রেণে চলমান বিশৃঙ্খলাকে ভিত্তি করে ট্রান্স-আটলান্টিক শক্তি রুশ ফেডারেশনের ওপরে ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা বা নিগ্রহ আরোপ করে যাচ্ছে। অর্থাৎ নিগ্রহের পরিসর ক্রমশ বড় থেকে বড়তর হতে থাকে। এই রুশ-বিরোধী নিগ্রহের শুরুর বিশেষত্ব হলো যে নির্বাচিত রুশ ব্যক্তিত্বকে ও বাণিজ্যকে নিগ্রহ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করে, যেন বা রুশদেরস মেনে নিতে সুবিধা হয় যাতে, সেভাবে আরোপিত হতে থাকে। ফলে, মোটামুটিভাবে পাল্টা-নিগ্রহ আরোপের মাধ্যমে ক্ষিপ্ত উত্তেজনা প্রকাশের লক্ষণ রুশ পক্ষ দেখায়নি খুব একটা। কিন্তু ট্রান্স-আটলান্টিক শক্তি ২৯ জুলাই র্সবশেষ যে নিগ্রহ আরোপ করে, রুশরা ঘটা করে তার একটা পাল্টা জবাব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। নিগ্রহ-আরোপকারী দেশগুলো থেকে এক বছরের জন্য খাদ্য ও কৃষিজ পণ্য আমদানি স্থগিত করে। এই পাল্টা-নিগ্রহ তালিকায় মাছ, মাংস, সবজি, ফলমূল, দুধ ও দুগ্ধজাতীয় পণ্যসহ সম্ভাব্য সবকিছুই সংযুক্ত। এইসব হরেক রকমের খাদ্যপণ্য রফতানি করে থাকে ইইউ-র দেশগুলো; গতবছর কম করে তারা ১২ বিলিয়ণ ডলার আয় করেছে। এ বছর (২০১৪) পরিমাণটি বেড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার হতো। কিন্তু রুশরা পাল্টা-নিগ্রহ জারি করে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের বিপাকে ফেলেছে। বিশেষ করে ফল ও সবজির ’ঘরে তোলার মাসে’ পণ্যের কি গতি হবে? যেমন : মোট উৎপাদিত আপেলের ৫০ শতাংশ পোলিশ আপেল কোন গুদামে থাকবে, বা যুক্তরাজ্য কি চেক রিপাবলিক ট্রাকভর্তি নানা স্বাদের পনিরের কি হিল্লা করবে? জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, গ্রিস ইত্যাদি ছোট বড় সব দেশই হঠাৎ করে বাড়তি খাদ্যপণ্য নিয়ে বিপদে পড়েছে। এটি আসলে ইইউরই মহাবিপদ।
বর্তমানে, এই নিগ্রহ ও পাল্টা নিগ্রহ- রাজনৈতিক ও র্অথনৈতিক, দুই লেভেলে অবস্থান করছে। ধাপে ধাপে এমনভাবে নিগ্রহ আরোপ প্রক্রিয়া চলে, যাতে আরোপকারীর বন্ধুত্ব বা বন্ধুভাবাপন্নতাও বজায় থাকে, আবার অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটিও সহ্যসীমার মধ্যে থাকে। কিন্তু, ২৯ জুলাইয়ের নিগ্রহ প্যাকেজটির পরিণতি স্বরূপ আর্থিক ক্ষতির পরিমাণটি যথেষ্ট হতে বাধ্য। যেমন : প্রাথমিক হিসেব মতে, নিগ্রহকারীর তালিকাভুক্ত হয়েও জার্মানিতেই ২৫ হাজার চাকরিজীবী র্কমবিহীন হবে, বা ছোট্ট দেশ চেক রিপাবলিকে কম করে আড়াই হাজার লোক বেকার হবে। অথচ জার্মানি হলো ইউরোজোনের ও ইইউ-র আর্থ-কর্মকা-ের পাওয়ার হাউস বা চেক রিপাবলিক মূলত রফতানি র্নিভর দেশ। আর মুমূর্ষু ইউরোজোনের কি হাল হবে, অনুমান করা যায়! র্অথাৎ, গণ-বেকারত্বের ঝুঁকির এই মুহূর্তে, নিগ্রহ- পাল্টা নিগ্রহের যন্ত্রণা প্রসূত ‘মানি রিস্কে’র সিংহভাগই ইইউ-র ঘাড়ে পড়েছে।
নিগৃহীত রুশরা সর্বশেষ নিগ্রহ-প্যাকেজের কারণে অত্যাধুনিক বিশেষ যন্ত্রপাতির সরবরাহ না পেলে, সুমেরু এলাকায় অনুসন্ধান কর্ম কতটুকু চালিয়ে নিতে পারবে, বলা মুশকিল। বিকল্প উৎস পেতে সময় লাগবে। তবে এইসব নিগ্রহ রুশদের যে রাজনৈতিক অবস্থানে নিয়ে আসে, তারই প্রতি-উত্তর হিসেবে - রুশদের ভীত, সন্ত্রস্ত করা যাবে না - মেসেজটি পাঠানো হয়- সব রকমের খাদ্য ও কৃষিজ পণ্যের (লাকশারি আইটেমসহ) ওপরে নিষেধাজ্ঞা বা পাল্টা-নিগ্রহ আরোপ করে।
নিগ্রহ ও পাল্টা-নিগ্রহের মুগুরবাজিতে দুই পক্ষই যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বা হচ্ছে, বলাই বাহুল্য। তবে নিগ্রহ ও পাল্টা নিগ্রহ, দুইই যে ইইউ-র ২৮টি দেশের কপালে বেশ দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে, বলা যায়। প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে বিভিন্ন দেশের উচ্চ ক্ষমতাশালী প্রতিনিধির দল মস্কোতে যাচ্ছে। যেমন প্রকাশ্য উদাহরণ : ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট, বা চেক রিপাবলিকের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল বা স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট নিগ্রহ-বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন। পোল্যান্ড, বাল্টিক রিপাবলিকগুলো রুশদের বিরুদ্ধে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় মামলা ঠুকে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। একইভাবে, জার্মান, ফরাসি, স্পেনীয়সহ ছোটবড় নির্বিশেষে সব দেশের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আর্থিক খেসারত চাইছে। ক্ষতিপূরণের বিশেষ একটি ফান্ড ইইউ-র রয়েছে। কিন্তু এই বছর মেয়াদি পাল্টা-নিগ্রহের ক্ষতি যে বছর-মেয়াদিই থাকবে, হলফ করে কে বলবে?
এই প্রসঙ্গে আসার আগে রুশদের ওপরে মনস্তাত্ত্বিক কি প্রভাব ফেলেছে, দেখা যাক। কারণ, পাল্টা-নিগ্রহ রুশ সমাজের প্রত্যেককেই কোন না কোনভাবে স্পর্শ করতে বাধ্য। চেক রিপাবলিকের রাষ্ট্রীয় টিভির মস্কোস্থিত রিপোর্টার মিরোস্লাভ কারাস-য়ের লাইভ প্রোগ্রামে দেখছি যে অধিকাংশ রুশ, কমসে কম ৮৭ শতাংশ, পাল্টা-নিগ্রহকে অনুমোদন করছে। বলছে রুশ হিসেবে তারা গর্বিত। কেউবা মন্তব্য করে যে ‘পুরো সময়টা ধরে আমাদের ওরা চড়চাপড় দিয়েই যাচ্ছে, আর আমাদের কেন চুপচাপ হজম করতে হবে?’ বা ‘পোল্যান্ড, বাল্টিক রিপাবলিকগুলো পর্যন্ত দেদার যা খুশি, তাই বলবে, আর আমাদের তা শুনতে হবে?’ দুর্ভিক্ষ বা ক্ষুধায় কষ্ট পাওয়ার ভয় কি আশঙ্কা তাদের নেই, সোভিয়েত আমলের দোকানপাটে আধা পূর্ণ শেলফের অভিজ্ঞতা হয় তাদের রয়েছে, বা শুনে শুনে স্মৃতিবন্দী হয়ে আছে। আবার রুশ অর্থোডক্স গির্জা সমর্থন করার কারণ হিসেবে বলে যে রুশরা আবার সরল জীবনযাপন করতে শিখবে। রুশদের পাল্টা-নিগৃহীতের দলে ইইউ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ক্যানাডা ও নরওয়ে অন্তর্ভুক্ত।
রুশ সরকার কর্তৃক সবধরনের খাদ্যপণ্যের আমদানির ওপরে নিষেধাজ্ঞার মুগুর বসানোর ফলে অন্তত দুটো ক্ষেত্রে ’ইনসেনটিভ’ সৃষ্টির ইন্ধন হতে পারে। যেমন : রুশ কৃষিব্যবস্থা গত ২০ বছর ধরে ক্রান্তিকালের মধ্যেই বন্দী হয়ে রয়েছে। এইবার, তাড়াহুড়ো করে ক্রান্তিকালের অবসান ঘটানোর সুযোগ এসেছে তার। দ্বিতীয়ত, অপ্রত্যাশিত প্রকা- এক নতুন বাজার বিশাল বিরাট সুযোগের দ্বার খুলে দিয়েছে। বিশ্বীয় সাপ্লাই চেইনের ওপরে পশ্চিমের প্রভাব প্রতিপত্তি আর নেই বলে পৃথিবীর অনেক অনেক দেশই বিকল্প সরবরাহকারীর প্রস্তুতি নিয়ে তৈরি হয়ে রয়েছে। ফলে, রুশ সরকার অনায়াসে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে নতুন নতুন খাদ্য চুক্তি সই করছে, তুরস্ক, মিসর, চীন ও ভারতও কিছু সরবরাহ করবে, থাইল্যান্ডও। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এমন সুযোগ বার বার আসবে না, সেধে কেউ দেবে না। বরং তৈরি বাজার একবার হাতছাড়া হয়ে গেলে, ফিরে আর পাওয়া যায় না।
ব্যাপক পরিসরের বিচারে, নিগ্রহ-পাল্টা নিগ্রহের মুগুরবাজির আরও বাড়তি কিছু লাভ-ক্ষতির বিষয় জড়িয়ে রয়েছে। ১৯৪৪ সাল থেকে, ব্রেটন উডস কনফারেন্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্ব-কারেন্সিতে ডলার যে একমেবাদ্বিতীয়মের ভূমিকা পালন করে আসছিল, ২০০৮ সালের বিশ্ব সঙ্কটের সময় থেকে ডলারের সেই দীপ্তি ম্লানতর হতে থাকে। প্রেসিডেন্ট নিক্সনের আমলে যুক্তরাষ্ট্র স্বর্ণ-স্ট্যান্ডার্ডকে নাকচ করে দেয় এবং আমেরিকান ডলার বিশ্ব-রিজার্ভ কারেন্সিতে পরিণত হয়। ফলস্বরূপ, নির্দিষ্ট কিছু পণ্য, যেমন : তেল- তার উৎস দেশ যে-ই হোক, মূল্য নির্ধারিত হতেই হবে ডলারে। কিন্তু বিগত তেরো বছরে ডলারের দীপ্তি তথা বিশ্বীয়-কারেন্সি রিজার্ভের পরিমাণ ৭১ শতাংশ থেকে নেমে দাঁড়িয়েছে ৬১ শতাংশে। ২০১০ সালে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো নিজেদের মধ্যে তো বটেই, তৃতীয় পার্টির সঙ্গেও যার যার মুদ্রায়, কখনো বা বার্টার পদ্ধতিতে লেনদেন শুরু করে। ইউক্রেনীয় বিশৃঙ্খলাকে কেন্দ্র করে এপ্রিল থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে পাঁচবার ট্রান্স-আটলান্টিক শক্তি রুশ ফেডারেশনের ওপরে নিগ্রহ আরোপ করে। তাই ব্লুমবার্গ (আগস্ট ৬) আশঙ্কা প্রকাশ করে লিখেছে যে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আরোপিত নিগ্রহ-প্যাকেজ হয়ত বা বুমেরাং হয়ে- ’ডলারে’র দীপ্তিকে আরও ম্লানতর করার প্রক্রিয়াকেই ত্বরান্বিত করবে। কারণ যেমন : জুলাই মাসে (১৪- ১৬ জুলাই) ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ব্রিকসের ষষ্ঠ সামিটে নতুন উন্নয়ন ব্যাঙ্ক বা নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ব্যাংকের ঋণ প্রদান ব্যবস্থা অ-ব্রিকস দেশগুলোর জন্যও উন্মুক্ত রাখা হবে।
আপাতদৃষ্টে মনে হয় যে ইইউ ও ন্যাটো দ্বারা সম্পূর্ণভাবে বৃত্তাবদ্ধ না হওয়ার উপায় সন্ধানে রুশরা জোরালো পিভট প্রসেসে মনোনিবেশ করেছে। চীনও। ফলে মে মাসে রুশ-চীনের ‘ডীল অব দি সেঞ্চুরি’ গ্যাস চুক্তি সই হয়। ইরানের সঙ্গেও পাঁচ বছর মেয়াদি তেল চুক্তি সই হয়েছে। রুশ সরকার কর্তৃক এক বছরের জন্য খাদ্য ও কৃষিজ পণ্যের সম্পূর্ণ প্যাকেজের আমদানি নিষিদ্ধকরণ বর্ধিত পিভট প্রক্রিয়ার অংশ মাত্র।
আমাদের সাধারণ বুদ্ধিবিবেচনার সঙ্গে কিসিঞ্জারের চিন্তাভাবনার মিল পাওয়া যেতে পারে। কারণ, নিগ্রহের মুগুর বসানোর আসল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো রুশ আর্থব্যবস্থায় আচ্ছামতো কামড় বসানো। কিন্তু কত গভীর কামড় রুশরা অনুভব করছে? যেমন : নিগ্রহের কারণে নাসা তার এ্যাটলাস-৫ রকেটের জন্য রুশ ইঞ্জিন কিনতে পারছে না। তাছাড়াও, নভোচারীর উৎক্ষেপণও রুশরা ছাড়া অন্য বিকল্পও রেডি নেই। অর্থাৎ ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কামড় খায় সবাই বা ট্রান্স-আটলান্টিক শক্তির কৃষকরা অপ্রত্যাশিতভাবে, ফসল ঘরে তোলার মাসে, খাদ্য ও কৃষিপণ্য নিয়ে যে মহাফাঁপরে পড়েছে, তারই বা কি হবে!
nadirahmajumdar@gmail.com
নিগ্রহ আরোপিত এইসব দেশকে বাণিজ্যের জন্য বিকল্প উৎস খুঁজতে হয়। বিশ্বায়িত ব্যবস্থায় অনেককেই পাওয়াও যায়। কারণ, সবাইই কিছু না কিছু বিক্রি করতে চায়, কিছু না কিছু কিনতে চায়। যেমন : পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সংস্থা হলো জাতিসংঘ, প্রায় শ’ দুয়েক দেশ তার সদস্য। নিগ্রহজনিত কারণে সৃষ্ট রেডিমেড বাজারের সুযোগ কি কমবেশি কোন দেশই নেয়ার চেষ্টা করবে না? করবে, করে। আবার নিগ্রহজনিত এই টাইট অবস্থা নিগৃহীতের জন্য ’ইনসেনটিভ’ হিসেবে কাজ করে। যেমন : ইরান ’নিজেই করো’ নীতি চালু করে দেশী গাড়ি বানানো শুরু করে। ফলে, ইরানিদের গাড়ির লাকশারি বির্সজন দিতে হয়নি। কাজেই নতজানু হবে- আশায় না থেকে বরং সংলাপে যাওয়া কি উত্তম নয়? নিগ্রহকারী ও নিগৃহীত- দুই পক্ষই যখন ‘লুজ-লুজ পরিস্থিতির’ মধ্যে বিচরণ করছে, ওবামা-রুহানির মধ্যকার একটি টেলিফোন কল সংলাপের সূচনা করে দিল।
বহুল আলোচিত ইরানি নিগ্রহের যুগের অবসান যখন প্রায় নিশ্চিত, আরেকটি নিগ্রহের নতুন অধ্যায়ের সূচনা বিশ্ব দেখছে। ইউক্রেণে চলমান বিশৃঙ্খলাকে ভিত্তি করে ট্রান্স-আটলান্টিক শক্তি রুশ ফেডারেশনের ওপরে ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা বা নিগ্রহ আরোপ করে যাচ্ছে। অর্থাৎ নিগ্রহের পরিসর ক্রমশ বড় থেকে বড়তর হতে থাকে। এই রুশ-বিরোধী নিগ্রহের শুরুর বিশেষত্ব হলো যে নির্বাচিত রুশ ব্যক্তিত্বকে ও বাণিজ্যকে নিগ্রহ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করে, যেন বা রুশদেরস মেনে নিতে সুবিধা হয় যাতে, সেভাবে আরোপিত হতে থাকে। ফলে, মোটামুটিভাবে পাল্টা-নিগ্রহ আরোপের মাধ্যমে ক্ষিপ্ত উত্তেজনা প্রকাশের লক্ষণ রুশ পক্ষ দেখায়নি খুব একটা। কিন্তু ট্রান্স-আটলান্টিক শক্তি ২৯ জুলাই র্সবশেষ যে নিগ্রহ আরোপ করে, রুশরা ঘটা করে তার একটা পাল্টা জবাব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। নিগ্রহ-আরোপকারী দেশগুলো থেকে এক বছরের জন্য খাদ্য ও কৃষিজ পণ্য আমদানি স্থগিত করে। এই পাল্টা-নিগ্রহ তালিকায় মাছ, মাংস, সবজি, ফলমূল, দুধ ও দুগ্ধজাতীয় পণ্যসহ সম্ভাব্য সবকিছুই সংযুক্ত। এইসব হরেক রকমের খাদ্যপণ্য রফতানি করে থাকে ইইউ-র দেশগুলো; গতবছর কম করে তারা ১২ বিলিয়ণ ডলার আয় করেছে। এ বছর (২০১৪) পরিমাণটি বেড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার হতো। কিন্তু রুশরা পাল্টা-নিগ্রহ জারি করে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের বিপাকে ফেলেছে। বিশেষ করে ফল ও সবজির ’ঘরে তোলার মাসে’ পণ্যের কি গতি হবে? যেমন : মোট উৎপাদিত আপেলের ৫০ শতাংশ পোলিশ আপেল কোন গুদামে থাকবে, বা যুক্তরাজ্য কি চেক রিপাবলিক ট্রাকভর্তি নানা স্বাদের পনিরের কি হিল্লা করবে? জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, গ্রিস ইত্যাদি ছোট বড় সব দেশই হঠাৎ করে বাড়তি খাদ্যপণ্য নিয়ে বিপদে পড়েছে। এটি আসলে ইইউরই মহাবিপদ।
বর্তমানে, এই নিগ্রহ ও পাল্টা নিগ্রহ- রাজনৈতিক ও র্অথনৈতিক, দুই লেভেলে অবস্থান করছে। ধাপে ধাপে এমনভাবে নিগ্রহ আরোপ প্রক্রিয়া চলে, যাতে আরোপকারীর বন্ধুত্ব বা বন্ধুভাবাপন্নতাও বজায় থাকে, আবার অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটিও সহ্যসীমার মধ্যে থাকে। কিন্তু, ২৯ জুলাইয়ের নিগ্রহ প্যাকেজটির পরিণতি স্বরূপ আর্থিক ক্ষতির পরিমাণটি যথেষ্ট হতে বাধ্য। যেমন : প্রাথমিক হিসেব মতে, নিগ্রহকারীর তালিকাভুক্ত হয়েও জার্মানিতেই ২৫ হাজার চাকরিজীবী র্কমবিহীন হবে, বা ছোট্ট দেশ চেক রিপাবলিকে কম করে আড়াই হাজার লোক বেকার হবে। অথচ জার্মানি হলো ইউরোজোনের ও ইইউ-র আর্থ-কর্মকা-ের পাওয়ার হাউস বা চেক রিপাবলিক মূলত রফতানি র্নিভর দেশ। আর মুমূর্ষু ইউরোজোনের কি হাল হবে, অনুমান করা যায়! র্অথাৎ, গণ-বেকারত্বের ঝুঁকির এই মুহূর্তে, নিগ্রহ- পাল্টা নিগ্রহের যন্ত্রণা প্রসূত ‘মানি রিস্কে’র সিংহভাগই ইইউ-র ঘাড়ে পড়েছে।
নিগৃহীত রুশরা সর্বশেষ নিগ্রহ-প্যাকেজের কারণে অত্যাধুনিক বিশেষ যন্ত্রপাতির সরবরাহ না পেলে, সুমেরু এলাকায় অনুসন্ধান কর্ম কতটুকু চালিয়ে নিতে পারবে, বলা মুশকিল। বিকল্প উৎস পেতে সময় লাগবে। তবে এইসব নিগ্রহ রুশদের যে রাজনৈতিক অবস্থানে নিয়ে আসে, তারই প্রতি-উত্তর হিসেবে - রুশদের ভীত, সন্ত্রস্ত করা যাবে না - মেসেজটি পাঠানো হয়- সব রকমের খাদ্য ও কৃষিজ পণ্যের (লাকশারি আইটেমসহ) ওপরে নিষেধাজ্ঞা বা পাল্টা-নিগ্রহ আরোপ করে।
নিগ্রহ ও পাল্টা-নিগ্রহের মুগুরবাজিতে দুই পক্ষই যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বা হচ্ছে, বলাই বাহুল্য। তবে নিগ্রহ ও পাল্টা নিগ্রহ, দুইই যে ইইউ-র ২৮টি দেশের কপালে বেশ দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে, বলা যায়। প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে বিভিন্ন দেশের উচ্চ ক্ষমতাশালী প্রতিনিধির দল মস্কোতে যাচ্ছে। যেমন প্রকাশ্য উদাহরণ : ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট, বা চেক রিপাবলিকের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল বা স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট নিগ্রহ-বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন। পোল্যান্ড, বাল্টিক রিপাবলিকগুলো রুশদের বিরুদ্ধে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় মামলা ঠুকে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। একইভাবে, জার্মান, ফরাসি, স্পেনীয়সহ ছোটবড় নির্বিশেষে সব দেশের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আর্থিক খেসারত চাইছে। ক্ষতিপূরণের বিশেষ একটি ফান্ড ইইউ-র রয়েছে। কিন্তু এই বছর মেয়াদি পাল্টা-নিগ্রহের ক্ষতি যে বছর-মেয়াদিই থাকবে, হলফ করে কে বলবে?
এই প্রসঙ্গে আসার আগে রুশদের ওপরে মনস্তাত্ত্বিক কি প্রভাব ফেলেছে, দেখা যাক। কারণ, পাল্টা-নিগ্রহ রুশ সমাজের প্রত্যেককেই কোন না কোনভাবে স্পর্শ করতে বাধ্য। চেক রিপাবলিকের রাষ্ট্রীয় টিভির মস্কোস্থিত রিপোর্টার মিরোস্লাভ কারাস-য়ের লাইভ প্রোগ্রামে দেখছি যে অধিকাংশ রুশ, কমসে কম ৮৭ শতাংশ, পাল্টা-নিগ্রহকে অনুমোদন করছে। বলছে রুশ হিসেবে তারা গর্বিত। কেউবা মন্তব্য করে যে ‘পুরো সময়টা ধরে আমাদের ওরা চড়চাপড় দিয়েই যাচ্ছে, আর আমাদের কেন চুপচাপ হজম করতে হবে?’ বা ‘পোল্যান্ড, বাল্টিক রিপাবলিকগুলো পর্যন্ত দেদার যা খুশি, তাই বলবে, আর আমাদের তা শুনতে হবে?’ দুর্ভিক্ষ বা ক্ষুধায় কষ্ট পাওয়ার ভয় কি আশঙ্কা তাদের নেই, সোভিয়েত আমলের দোকানপাটে আধা পূর্ণ শেলফের অভিজ্ঞতা হয় তাদের রয়েছে, বা শুনে শুনে স্মৃতিবন্দী হয়ে আছে। আবার রুশ অর্থোডক্স গির্জা সমর্থন করার কারণ হিসেবে বলে যে রুশরা আবার সরল জীবনযাপন করতে শিখবে। রুশদের পাল্টা-নিগৃহীতের দলে ইইউ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ক্যানাডা ও নরওয়ে অন্তর্ভুক্ত।
রুশ সরকার কর্তৃক সবধরনের খাদ্যপণ্যের আমদানির ওপরে নিষেধাজ্ঞার মুগুর বসানোর ফলে অন্তত দুটো ক্ষেত্রে ’ইনসেনটিভ’ সৃষ্টির ইন্ধন হতে পারে। যেমন : রুশ কৃষিব্যবস্থা গত ২০ বছর ধরে ক্রান্তিকালের মধ্যেই বন্দী হয়ে রয়েছে। এইবার, তাড়াহুড়ো করে ক্রান্তিকালের অবসান ঘটানোর সুযোগ এসেছে তার। দ্বিতীয়ত, অপ্রত্যাশিত প্রকা- এক নতুন বাজার বিশাল বিরাট সুযোগের দ্বার খুলে দিয়েছে। বিশ্বীয় সাপ্লাই চেইনের ওপরে পশ্চিমের প্রভাব প্রতিপত্তি আর নেই বলে পৃথিবীর অনেক অনেক দেশই বিকল্প সরবরাহকারীর প্রস্তুতি নিয়ে তৈরি হয়ে রয়েছে। ফলে, রুশ সরকার অনায়াসে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে নতুন নতুন খাদ্য চুক্তি সই করছে, তুরস্ক, মিসর, চীন ও ভারতও কিছু সরবরাহ করবে, থাইল্যান্ডও। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এমন সুযোগ বার বার আসবে না, সেধে কেউ দেবে না। বরং তৈরি বাজার একবার হাতছাড়া হয়ে গেলে, ফিরে আর পাওয়া যায় না।
ব্যাপক পরিসরের বিচারে, নিগ্রহ-পাল্টা নিগ্রহের মুগুরবাজির আরও বাড়তি কিছু লাভ-ক্ষতির বিষয় জড়িয়ে রয়েছে। ১৯৪৪ সাল থেকে, ব্রেটন উডস কনফারেন্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্ব-কারেন্সিতে ডলার যে একমেবাদ্বিতীয়মের ভূমিকা পালন করে আসছিল, ২০০৮ সালের বিশ্ব সঙ্কটের সময় থেকে ডলারের সেই দীপ্তি ম্লানতর হতে থাকে। প্রেসিডেন্ট নিক্সনের আমলে যুক্তরাষ্ট্র স্বর্ণ-স্ট্যান্ডার্ডকে নাকচ করে দেয় এবং আমেরিকান ডলার বিশ্ব-রিজার্ভ কারেন্সিতে পরিণত হয়। ফলস্বরূপ, নির্দিষ্ট কিছু পণ্য, যেমন : তেল- তার উৎস দেশ যে-ই হোক, মূল্য নির্ধারিত হতেই হবে ডলারে। কিন্তু বিগত তেরো বছরে ডলারের দীপ্তি তথা বিশ্বীয়-কারেন্সি রিজার্ভের পরিমাণ ৭১ শতাংশ থেকে নেমে দাঁড়িয়েছে ৬১ শতাংশে। ২০১০ সালে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো নিজেদের মধ্যে তো বটেই, তৃতীয় পার্টির সঙ্গেও যার যার মুদ্রায়, কখনো বা বার্টার পদ্ধতিতে লেনদেন শুরু করে। ইউক্রেনীয় বিশৃঙ্খলাকে কেন্দ্র করে এপ্রিল থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে পাঁচবার ট্রান্স-আটলান্টিক শক্তি রুশ ফেডারেশনের ওপরে নিগ্রহ আরোপ করে। তাই ব্লুমবার্গ (আগস্ট ৬) আশঙ্কা প্রকাশ করে লিখেছে যে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আরোপিত নিগ্রহ-প্যাকেজ হয়ত বা বুমেরাং হয়ে- ’ডলারে’র দীপ্তিকে আরও ম্লানতর করার প্রক্রিয়াকেই ত্বরান্বিত করবে। কারণ যেমন : জুলাই মাসে (১৪- ১৬ জুলাই) ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ব্রিকসের ষষ্ঠ সামিটে নতুন উন্নয়ন ব্যাঙ্ক বা নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ব্যাংকের ঋণ প্রদান ব্যবস্থা অ-ব্রিকস দেশগুলোর জন্যও উন্মুক্ত রাখা হবে।
আপাতদৃষ্টে মনে হয় যে ইইউ ও ন্যাটো দ্বারা সম্পূর্ণভাবে বৃত্তাবদ্ধ না হওয়ার উপায় সন্ধানে রুশরা জোরালো পিভট প্রসেসে মনোনিবেশ করেছে। চীনও। ফলে মে মাসে রুশ-চীনের ‘ডীল অব দি সেঞ্চুরি’ গ্যাস চুক্তি সই হয়। ইরানের সঙ্গেও পাঁচ বছর মেয়াদি তেল চুক্তি সই হয়েছে। রুশ সরকার কর্তৃক এক বছরের জন্য খাদ্য ও কৃষিজ পণ্যের সম্পূর্ণ প্যাকেজের আমদানি নিষিদ্ধকরণ বর্ধিত পিভট প্রক্রিয়ার অংশ মাত্র।
আমাদের সাধারণ বুদ্ধিবিবেচনার সঙ্গে কিসিঞ্জারের চিন্তাভাবনার মিল পাওয়া যেতে পারে। কারণ, নিগ্রহের মুগুর বসানোর আসল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো রুশ আর্থব্যবস্থায় আচ্ছামতো কামড় বসানো। কিন্তু কত গভীর কামড় রুশরা অনুভব করছে? যেমন : নিগ্রহের কারণে নাসা তার এ্যাটলাস-৫ রকেটের জন্য রুশ ইঞ্জিন কিনতে পারছে না। তাছাড়াও, নভোচারীর উৎক্ষেপণও রুশরা ছাড়া অন্য বিকল্পও রেডি নেই। অর্থাৎ ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কামড় খায় সবাই বা ট্রান্স-আটলান্টিক শক্তির কৃষকরা অপ্রত্যাশিতভাবে, ফসল ঘরে তোলার মাসে, খাদ্য ও কৃষিপণ্য নিয়ে যে মহাফাঁপরে পড়েছে, তারই বা কি হবে!
nadirahmajumdar@gmail.com
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html
No comments:
Post a Comment