গাজা হামলার সিদ্ধান্ত নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্র
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ : ০২ আগস্ট, ২০১৪
যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তেই গাজায় হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল। হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে ইসরাইলকে আর্থিক ও সামরিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে দেশটি। হামলার মধ্যে আবার যুদ্ধবিরতির ফাঁদ তৈরি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশনায় আর সবকিছুর লক্ষ্য হচ্ছে হামাস ও ফাতাহর ঐক্য ভেঙে ফেলা। দুই সাংবাদিকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গাজার খবর প্রচারের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ওপর বিভিন্ন বাধা-নিষেধ ও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে ওবামা প্রশাসন।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দুটি টেলিভিশন চ্যানেল তাদের দুই সাংবাদিককে বরখাস্ত করে। গাজায় ইসরাইলি আক্রমণের নৃশংসতার গোপন তথ্য ধারণ করায় তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়। এনবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক আয়মান মোহেলদিন গাজায় একদল শিশুর সঙ্গে ফুটবল খেলেছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরই ইসরাইলের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সবাই প্রাণ হারান। চাকরিচ্যুত হওয়ার আগমুহূর্তে নিজের নিরাপত্তাহীনতার আশংকা করে কয়েকটি টুইট করেন আয়মান। জনগণের পক্ষ থেকে প্রবল প্রতিবাদের মুখে আয়মানকে আবার চাকরিতে বহাল করা হয়।
অন্যদিকে গাজায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা দেখে ইসরাইলিদের উল্লাস করার ছবি প্রচারের দায়ে সিএনএন তাদের ইসরাইল প্রতিনিধিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। এই দুটো ঘটনায় বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্র গাজার সঠিক খবর বিশ্ববাসীকে জানতে দিতে চায় না। ইসরাইল লবির মাধ্যমে এ ব্যাপারে মার্কিন গণমাধ্যমে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
তবে অনুসন্ধান বলছে, কেবল খবর প্রচারের নিয়ন্ত্রণ নয়, গাজায় হামলার যাবতীয় সিদ্ধান্ত ও করণীয় ঠিক করছে ওয়াশিংটন। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের জন্য জন কেরি ওই অঞ্চলে সফর করলেও তার একদিন আগে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে আলোচনা করেই শাজাইয়া গ্রামে গণহত্যা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাতে একদিনেই শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়।
খোদ ইসরাইলের গণমাধ্যম বলছে, জনসমুখে যুক্তরাষ্ট্র যাই বলুক না কেন হামলায় দেশটির পুরোপুরি সহযোগিতা আছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারের কথা বললেও ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করার মিশনে তিনি সরাসরি জড়িত।
গত সপ্তাহে মিসরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির যে উদ্যোগ নেয়া হয় তাও ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল সিসির সঙ্গে লবিং করছেন টনি ব্লেয়ার। সিসি আদর্শগতভাবে হামাসের বিরোধী। হামাসের সঙ্গে আদর্শগত মিল রয়েছে মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডের। সিসি মিসরে ব্রাদারহুড নিশ্চিহ্নের মিশনে রয়েছেন। মোট কথা হামাস নিশ্চিহ্ন হলে নেতানিয়াহু ও সিসি দুজনেরই লাভ। তাই গাজার সঙ্গে মিসরের সীমান্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন সিসি। ইসরাইলের মতে মিসরও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ও সামরিক সুবিধাভোগী। ধরেই নেয়া হয়েছিল, মিসরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখ্যান করবে। সেক্ষেত্রে ওয়াশিংটন তুরস্ক ও কাতারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। এই দুটো দেশ হামাসের প্রতি অনেকটাই সহানুভূতিপ্রবণ। তবে মিসরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব একটা ফাঁদ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। এতে ইসরাইল স্থল আক্রমণের মওকা পেয়ে যায়।
সাংবাদিক রাতিভ ড্র–কারের অনুসন্ধান অনুযায়ী, ইসরাইলের বসতি স্থাপন সম্প্রসারণে সরাসরি ভূমিকা রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। আবার জনসমুখে বসতি স্থাপনের নিন্দা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের শর্তানুযায়ী কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দিয়ে যেনতেন শান্তি আলোচনা করা হয়।
ইসরাইলি বিশ্লেষক নোয়াম শোজাফের মতে, আব্বাস ও হামাসের সমঝোতাই নেতানিয়াহুর মাথাব্যথার কারণ। এদের সামান্য সাফল্য ইসরাইলের চরম ক্ষতি। ইসরাইল তাই কোনোভাবেই ফিলিস্তিন ঐক্য সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যেতে অনিচ্ছুক। আর এসব কিছুর পরামর্শদাতা ও সহযোগী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
- See more at: http://www.jugantor.com/ten-horizon/2014/08/02/129104#sthash.SwSUppQI.dpufগাজার খবর প্রচারের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ওপর বিভিন্ন বাধা-নিষেধ ও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে ওবামা প্রশাসন।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দুটি টেলিভিশন চ্যানেল তাদের দুই সাংবাদিককে বরখাস্ত করে। গাজায় ইসরাইলি আক্রমণের নৃশংসতার গোপন তথ্য ধারণ করায় তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়। এনবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক আয়মান মোহেলদিন গাজায় একদল শিশুর সঙ্গে ফুটবল খেলেছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরই ইসরাইলের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সবাই প্রাণ হারান। চাকরিচ্যুত হওয়ার আগমুহূর্তে নিজের নিরাপত্তাহীনতার আশংকা করে কয়েকটি টুইট করেন আয়মান। জনগণের পক্ষ থেকে প্রবল প্রতিবাদের মুখে আয়মানকে আবার চাকরিতে বহাল করা হয়।
অন্যদিকে গাজায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা দেখে ইসরাইলিদের উল্লাস করার ছবি প্রচারের দায়ে সিএনএন তাদের ইসরাইল প্রতিনিধিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। এই দুটো ঘটনায় বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্র গাজার সঠিক খবর বিশ্ববাসীকে জানতে দিতে চায় না। ইসরাইল লবির মাধ্যমে এ ব্যাপারে মার্কিন গণমাধ্যমে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
তবে অনুসন্ধান বলছে, কেবল খবর প্রচারের নিয়ন্ত্রণ নয়, গাজায় হামলার যাবতীয় সিদ্ধান্ত ও করণীয় ঠিক করছে ওয়াশিংটন। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের জন্য জন কেরি ওই অঞ্চলে সফর করলেও তার একদিন আগে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে আলোচনা করেই শাজাইয়া গ্রামে গণহত্যা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাতে একদিনেই শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়।
খোদ ইসরাইলের গণমাধ্যম বলছে, জনসমুখে যুক্তরাষ্ট্র যাই বলুক না কেন হামলায় দেশটির পুরোপুরি সহযোগিতা আছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারের কথা বললেও ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করার মিশনে তিনি সরাসরি জড়িত।
গত সপ্তাহে মিসরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির যে উদ্যোগ নেয়া হয় তাও ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল সিসির সঙ্গে লবিং করছেন টনি ব্লেয়ার। সিসি আদর্শগতভাবে হামাসের বিরোধী। হামাসের সঙ্গে আদর্শগত মিল রয়েছে মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডের। সিসি মিসরে ব্রাদারহুড নিশ্চিহ্নের মিশনে রয়েছেন। মোট কথা হামাস নিশ্চিহ্ন হলে নেতানিয়াহু ও সিসি দুজনেরই লাভ। তাই গাজার সঙ্গে মিসরের সীমান্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন সিসি। ইসরাইলের মতে মিসরও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ও সামরিক সুবিধাভোগী। ধরেই নেয়া হয়েছিল, মিসরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখ্যান করবে। সেক্ষেত্রে ওয়াশিংটন তুরস্ক ও কাতারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। এই দুটো দেশ হামাসের প্রতি অনেকটাই সহানুভূতিপ্রবণ। তবে মিসরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব একটা ফাঁদ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। এতে ইসরাইল স্থল আক্রমণের মওকা পেয়ে যায়।
সাংবাদিক রাতিভ ড্র–কারের অনুসন্ধান অনুযায়ী, ইসরাইলের বসতি স্থাপন সম্প্রসারণে সরাসরি ভূমিকা রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। আবার জনসমুখে বসতি স্থাপনের নিন্দা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের শর্তানুযায়ী কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দিয়ে যেনতেন শান্তি আলোচনা করা হয়।
ইসরাইলি বিশ্লেষক নোয়াম শোজাফের মতে, আব্বাস ও হামাসের সমঝোতাই নেতানিয়াহুর মাথাব্যথার কারণ। এদের সামান্য সাফল্য ইসরাইলের চরম ক্ষতি। ইসরাইল তাই কোনোভাবেই ফিলিস্তিন ঐক্য সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যেতে অনিচ্ছুক। আর এসব কিছুর পরামর্শদাতা ও সহযোগী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
No comments:
Post a Comment