মনিরুল-মামলায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে তিন নিহতের মা
এই সময়: পাড়ুইয়ের পর লাভপুর৷ অনুব্রত মণ্ডলের পর মনিরুল ইসলাম৷ বীরভূমে শাসকদলের জেলা সভাপতি অনুব্রতের পর জেলার লাভপুরে দলের দাপুটে বিধায়ক মনিরুল ইসলামের অস্বস্তি বাড়ল আদালতে নতুন মামলার সূত্রে৷
পাড়ুইয়ে সাগর ঘোষ হত্যাকাণ্ডের মতোই চার বছর আগে লাভপুরে সিপিএম সমর্থক তিন ভাইয়ের খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে মামলা দায়ের হল হাইকোর্টে৷ নিহত ধানু শেখ, কটুন শেখ ও তুরুক শেখের মা জারিনা বিবি ও এক ভাই আনারুল শেখ সোমবার এই মামলা দায়ের করেছেন৷ তাঁদের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই যে কোনও দিন শুনানি হতে পারে৷ যোগাযোগ করা হলে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি মনিরুল৷
তদন্তে জেলা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে নিহতদের পরিবারের তরফে এর আগেই অবশ্য হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল৷ সেই মামলার শুনানি চলাকালীনই কেন আবার সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা? এই প্রশ্নে সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, আগের মামলায় বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত গত ১১ এপ্রিল ওই পরিবারটিকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ কিন্ত্ত সেই নির্দেশ পালন করেনি জেলা পুলিশ৷ ফলে অভিযুক্তরা অনবরত হুমকি দিয়ে চলেছে৷ পুলিশ সব জেনেও চুপ করে রয়েছে৷ হুমকির জেরে জারিনার পরিবারের সদস্যরা চার বছর ধরে বাড়ি ছাড়া৷ এক রকম আত্মগোপন করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন৷ জারিনার অভিযোগ, তাঁর নাতি-নাতনিরা স্কুলে পর্যন্ত যেতে পারছে না৷ তাঁদের চাষবাসও বন্ধ৷
সুব্রতবাবুর অভিযোগ, হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও জারিনা বিবিদের জন্য পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা না হলেও মূল অভিযুক্ত লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলামকে চার থেকে সাত জন নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে৷ আর সেই সুযোগেই প্রতি দিন তিনি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে চলেছেন৷ ধানু শেখদের তিন ভাইকে খুনের কথা অবশ্য প্রকাশ্যেই কবুল করেছেন মনিরুল৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ২১ জুলাই বীরভূমের সাঁইথিয়ায় তৃণমূলের এক নির্বাচনী জনসভায় মনিরুল বলেছিলেন, গলায় পা দিয়ে জারিনার তিন ছেলেকে তিনিই মেরেছেন৷ সেই ভাষণের ভিডিও টেপ থাকা সত্ত্বেও অবশ্য পুলিশ মনিরুলের নাম খুনের মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দিয়েছে৷ এ ক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষ থেকে এই মর্মে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে যে, জারিনারা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিতে জানিয়েছিলেন, মনিরুল ওই খুনের ঘটনায় যুক্ত নন৷ কিন্ত্ত জারিনার দুই নাতি-নাতনিকে অপহরণ করে জোর করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ওই মিথ্যা জবানবন্দি দেওয়ানো হয়েছে বলেই দাবি সুব্রতবাবুর৷ অপহরণ সংক্রান্ত সেই অভিযোগেও অবশ্য কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না৷ এ দিকে মনিরুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে অভিযোগ এনে সম্প্রতি জেলাশাসকের কাছে অনুমতি চেয়েছে পুলিশ৷ যদিও জেলাশাসকের কাছে সেই অনুমতি চার বছর আগেই এক বার চাওয়া হয়েছিল৷ তখন সেই অনুমতি দেওয়াও হয়েছিল৷ সুব্রতবাবুর মন্তব্য, 'এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে পুলিশ তদন্তের নামে প্রহসন চালাচ্ছে৷' তাঁর দাবি, সারা দেশে একাধিক ক্ষেত্রে নজির রয়েছে, কোনও ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের কোনও ব্যক্তির জড়িত থাকার অভিযোগ থাকলে, নিরপেক্ষতার স্বার্থেই সেই রাজ্যের পুলিশকে তদন্ত করতে না দিয়ে দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে৷ এই রাজ্যেও রিজওয়ানুর থেকে নেতাই-সহ একাধিক ঘটনায় হাইকোর্ট ইতিপূর্বে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে৷
অভিযোগ, ২০১০-এর ৩ জুন ময়ূরাক্ষীর বালিঘাটের দখল নিয়ে বিবাদ মেটাতে মনিরুল ইসলামের বাড়িতে (ঘটনার সময় ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা, পরে লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক) সালিশি সভা ডাকা হয়েছিল৷ বেলা দুটো নাগাদ মনিরুলের নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি জারিনার ছেলেদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে৷ ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় জারিনার দুই ছেলে ধানু শেখ ও কটুন শেখের৷ অন্য দুই ভাই তুরুক শেখ ও সানোয়ার শেখকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়ার পথেই তুরুকের মৃত্যু হয়৷ দীর্ঘ চিকিত্সার পর সানোয়ার সুস্থ হয়ে মনিরুলদের বিরুদ্ধে লাভপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন৷ কিন্ত্ত চার বছর কেটে গেলেও পুলিশ তদন্তে না এগোনোয় সানোয়ার হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন৷ বিচারপতি কৈফিয়ত্ তলব করতেই পুলিশ গত মাসে নিম্ন আদালতে চার্জশিট দাখিল করে৷ কিন্ত্ত মূল অভিযুক্ত মনিরুল ও বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতার নাম সুকৌশলে সেই চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে৷ পুলিশে তাই প্রবল অনাস্থা জারিনাদের৷ সিবিআই তদন্তেই একমাত্র বিহিত সম্ভব মনে করেই নতুন করে মামলা হল হাইকোর্টে৷
পাড়ুইয়ে সাগর ঘোষ হত্যাকাণ্ডের মতোই চার বছর আগে লাভপুরে সিপিএম সমর্থক তিন ভাইয়ের খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে মামলা দায়ের হল হাইকোর্টে৷ নিহত ধানু শেখ, কটুন শেখ ও তুরুক শেখের মা জারিনা বিবি ও এক ভাই আনারুল শেখ সোমবার এই মামলা দায়ের করেছেন৷ তাঁদের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই যে কোনও দিন শুনানি হতে পারে৷ যোগাযোগ করা হলে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি মনিরুল৷
তদন্তে জেলা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে নিহতদের পরিবারের তরফে এর আগেই অবশ্য হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল৷ সেই মামলার শুনানি চলাকালীনই কেন আবার সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা? এই প্রশ্নে সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, আগের মামলায় বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত গত ১১ এপ্রিল ওই পরিবারটিকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ কিন্ত্ত সেই নির্দেশ পালন করেনি জেলা পুলিশ৷ ফলে অভিযুক্তরা অনবরত হুমকি দিয়ে চলেছে৷ পুলিশ সব জেনেও চুপ করে রয়েছে৷ হুমকির জেরে জারিনার পরিবারের সদস্যরা চার বছর ধরে বাড়ি ছাড়া৷ এক রকম আত্মগোপন করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন৷ জারিনার অভিযোগ, তাঁর নাতি-নাতনিরা স্কুলে পর্যন্ত যেতে পারছে না৷ তাঁদের চাষবাসও বন্ধ৷
সুব্রতবাবুর অভিযোগ, হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও জারিনা বিবিদের জন্য পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা না হলেও মূল অভিযুক্ত লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলামকে চার থেকে সাত জন নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে৷ আর সেই সুযোগেই প্রতি দিন তিনি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে চলেছেন৷ ধানু শেখদের তিন ভাইকে খুনের কথা অবশ্য প্রকাশ্যেই কবুল করেছেন মনিরুল৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ২১ জুলাই বীরভূমের সাঁইথিয়ায় তৃণমূলের এক নির্বাচনী জনসভায় মনিরুল বলেছিলেন, গলায় পা দিয়ে জারিনার তিন ছেলেকে তিনিই মেরেছেন৷ সেই ভাষণের ভিডিও টেপ থাকা সত্ত্বেও অবশ্য পুলিশ মনিরুলের নাম খুনের মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দিয়েছে৷ এ ক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষ থেকে এই মর্মে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে যে, জারিনারা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিতে জানিয়েছিলেন, মনিরুল ওই খুনের ঘটনায় যুক্ত নন৷ কিন্ত্ত জারিনার দুই নাতি-নাতনিকে অপহরণ করে জোর করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ওই মিথ্যা জবানবন্দি দেওয়ানো হয়েছে বলেই দাবি সুব্রতবাবুর৷ অপহরণ সংক্রান্ত সেই অভিযোগেও অবশ্য কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না৷ এ দিকে মনিরুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে অভিযোগ এনে সম্প্রতি জেলাশাসকের কাছে অনুমতি চেয়েছে পুলিশ৷ যদিও জেলাশাসকের কাছে সেই অনুমতি চার বছর আগেই এক বার চাওয়া হয়েছিল৷ তখন সেই অনুমতি দেওয়াও হয়েছিল৷ সুব্রতবাবুর মন্তব্য, 'এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে পুলিশ তদন্তের নামে প্রহসন চালাচ্ছে৷' তাঁর দাবি, সারা দেশে একাধিক ক্ষেত্রে নজির রয়েছে, কোনও ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের কোনও ব্যক্তির জড়িত থাকার অভিযোগ থাকলে, নিরপেক্ষতার স্বার্থেই সেই রাজ্যের পুলিশকে তদন্ত করতে না দিয়ে দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে৷ এই রাজ্যেও রিজওয়ানুর থেকে নেতাই-সহ একাধিক ঘটনায় হাইকোর্ট ইতিপূর্বে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে৷
অভিযোগ, ২০১০-এর ৩ জুন ময়ূরাক্ষীর বালিঘাটের দখল নিয়ে বিবাদ মেটাতে মনিরুল ইসলামের বাড়িতে (ঘটনার সময় ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা, পরে লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক) সালিশি সভা ডাকা হয়েছিল৷ বেলা দুটো নাগাদ মনিরুলের নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি জারিনার ছেলেদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে৷ ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় জারিনার দুই ছেলে ধানু শেখ ও কটুন শেখের৷ অন্য দুই ভাই তুরুক শেখ ও সানোয়ার শেখকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়ার পথেই তুরুকের মৃত্যু হয়৷ দীর্ঘ চিকিত্সার পর সানোয়ার সুস্থ হয়ে মনিরুলদের বিরুদ্ধে লাভপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন৷ কিন্ত্ত চার বছর কেটে গেলেও পুলিশ তদন্তে না এগোনোয় সানোয়ার হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন৷ বিচারপতি কৈফিয়ত্ তলব করতেই পুলিশ গত মাসে নিম্ন আদালতে চার্জশিট দাখিল করে৷ কিন্ত্ত মূল অভিযুক্ত মনিরুল ও বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতার নাম সুকৌশলে সেই চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে৷ পুলিশে তাই প্রবল অনাস্থা জারিনাদের৷ সিবিআই তদন্তেই একমাত্র বিহিত সম্ভব মনে করেই নতুন করে মামলা হল হাইকোর্টে৷
No comments:
Post a Comment