Friday, March 28, 2014

Mohammad Ahsanul Karim ৪৪তম স্বাধীনতা দিবসের ডাক

৪৪তম স্বাধীনতা দিবসের ডাক

মার্ক্সবাদীদের বিশ্বাস, সমাজতস্ত্র উত্তম রাষ্ট্রব্যবস্থা, সমাজতন্ত্রে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি হয়, গণতন্ত্র মানে ধনতন্ত্র। দাসতন্ত্র, ধনতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র হলো অসাম্যমূলক, বৈষম্যমূলক ও শোষণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা। তাই বিশ্বে গণদ্রোহে দাসতন্ত্র, ধনতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র রাষ্ট্রব্যবস্থার পতন হয়েছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় ব্যক্তির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমাধিকার, স্বাধীনতা ও সম্মৃদ্ধি ক্রমশঃ বাড়তে থাকে। এজন্যে গণতন্ত্র হলো প্রগতিশীল রাষ্ট্রব্যবস্থা। রাষ্ট্রব্যবস্থা যত সুষম-গণতান্ত্রিক হবে, রাষ্ট্র তত প্রগতিশীল হবে।

বৃহত্তর রাষ্ট্রের রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তিমূলক তিনটি প্রতিষ্ঠান হলো, পারিবারিক প্রতিষ্ঠান, সরকারব্যবস্থা ও রাষ্ট্র-অবকাঠামো। এ তিনটি প্রতিষ্ঠান যত গণতন্ত্রমুখী হবে, রাষ্ট্রব্যবস্থা তত গণতান্ত্রিক হবে। পলিমাটির কৃষি ও পরিবেশে লালিত এবং সুষম-গণতান্ত্রিক মুসলিম পারিবারিক বিধানে হাজার বছর গড়ে উঠায় বাংলাদেশে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান বিশ্বের সেরা সুষম-গণতান্ত্রিক। কেবল রাষ্ট্র-অবকাঠামো ও সরকারব্যবস্থা গণতন্ত্রমুখী হলে বাংলাদেশ বিশ্বের সেরা গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল রাষ্ট্রব্যবস্থায় পরিনত হবে।

১৯৪৭ উত্তর ৪টি বিভাগ, ১৮টি জেলা ও গড়ে ৬৮টি মহকুমা ক্রমবিভক্ত হওয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্র-অবকাঠামো স্বৈরমুখী ছিল।এতে পাইকারী বাজার প্রতিষ্ঠান কম-প্রতিযোগী হওয়ায় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.০%-এ আবদ্ধ হয়। ১৯৮২ থেকে উপজেলা-জেলা-ইউনিয়ন-বিভাগ গণতন্ত্রমুখী পুনর্গঠনের জন্যে রাষ্ট্র-অবকাঠামো আধা-গণতন্ত্রমুখী হয়ে উঠে। পাইকারী বাজারকাঠামো মধ্যমমাত্রায় প্রতিযোগী হওয়ায় প্রবৃদ্ধির গড় হার ক্রমশঃ ৬.৭%-এ উন্নীত হয়েছে। ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা বিভাগ গঠিত বাজারকাঠামো উচ্চমাত্রায় প্রতিযোগী হবে। বিদ্যমান নীতিমালা-সম্পদেই প্রবৃদ্ধির গড় হার ৯%-এর ঊর্দ্ধে উন্নীত হবে। অন্যান্য পূনর্গঠন/সংস্কারের মাধ্যমে তা ১২%-এর উর্ধে তোলা অসম্ভব নয়।

দলীয় নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে এককক্ষ সংসদব্যবস্থায় সংসদীয় সরকারব্যবস্থা সর্বদাই স্বেচ্ছামুখী, দলমুখী ও স্বৈরমুখী। সংসদে সরকারী দলের আসন বৃদ্ধির সাথে সাথে তা আরও বৃদ্ধি পায়। এ থেকে মুক্তির জন্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রাষ্ট্রপতিকেন্দ্রিক সংসদীয় সরকারব্যবস্থা চালু করেন। তাতে স্বৈরমুখী সরকারব্যবস্থা থেকে জাতির মুক্তি হয়নি। রাজনীতি কোন আমি-তুমি বা দয়া-দাক্ষিণ্যের বিষয় নয়।এ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ দুইকক্ষ সংসদব্যবস্থা।

গণতন্ত্রমুখী সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার সমন্বয়ে আমার এ উন্নয়ণ মডেলটির হলো সম্মৃদ্ধিশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা বিভাগ গঠন এবং দুইকক্ষ সংসদব্যবস্থা চালু হলে তা শেষ হবে। গ্রেটবৃটেন, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, জার্মানীর মতো বাংলাদেশও উচ্চমাত্রায় সম্মৃদ্ধিশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিনত হবে।

আসুন স্বৈরবাদ, সন্ত্রাসবাদ, মোল্লাবাদ ও হরতালবাদ রাজনীতির অভিশাপ থেকে মুক্ত উদার, নৈতিক ও সৃজনশীল তথা “সম্মৃদ্ধিশীল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ” গড়ে তুলি। তাই ১৯৮২ থেকে গণতন্ত্রমুখী উপজেলা-জেলা-বিভাগ গঠনের ধারাবাহিকতায় ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা বিভাগ গঠনসহ দুইকক্ষ সংসদব্যবস্থা ও দ্বিতীয়কক্ষ ভিত্তিক অন্তর্বর্তীকালীণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার জন্যে ১৬শ সংশেধনী এবং স্বল্পসময়ে প্রথমে দ্বিতীয়কক্ষের নির্বাচনের জন্যে সোচ্চার হন।

No comments:

Post a Comment