Friday, March 21, 2014

ছোট গল্প

ছোট গল্প

ছোট গল্প

বালুচর : হারুন-অর রশিদ সরকার

সানিই দরজা খুলে দিল।
ছেলেটা একটু বেআক্কেল টাইপের। খালি গায়ে দরজা খুলতে এসেছে। বুক ভর্তি লোম। মেয়ে মানুষের মত বড় বড় স্তন। আমি বিব্রত হয়ে চোখ নামিয়ে নেই।
আর-রে মামুন ভাই যে- বলে সে কোলাকুলি করার জন্য আমাকে জড়িয়ে ধরে।

ভাদ্র মাসের মেলা : আবু নোমান

গোপালনগর থেকে তিন দিক দিয়েই যাওয়া যায়। প্রতি বছর এই সময়টায় শুরু হয় মেলা। ভাদ্র মাসের শুরু হলে মেলারও শুরু। তোড়জোড় আরো আগে থেকে। যে তিন দিক দিয়ে মেলায় যাওয়া যায় তার এক দিকে ইটের পথ চলে গেছে সোনামসজিদের দিকে। ইটের রোড হলেও বুড়ো মানুষের দাঁতের মত ভাঙাচোরা। ভাঙা অংশগুলোয় খিচখিচে কাদা। কাঁকর মিশ্রিত। মানুষের পায়ের অবিরাম ঘর্ষণে এই কাদা মিশ্রিত কালো বর্ণ ধারণ করেছে। মনে হয় এই কাদা কখনো জমাট বাধার নয়। কাদার সঙ্গে মিশিছে গরুর গোবর, ঘোড়ার লাদি। ভালো করে খেয়াল করলে স্থানে স্থানে মানুষের মলও দেখা যায়। এটি অবশ্য গন্ধে সহজেই বুঝা যায়। গরু-ঘোড়ার মালিকদের ভয় পাবারই কথা। কত গরু আর ঘোড়ার ঠ্যাং ভেঙে বহুদিন অকেজো পড়ে থাকে তা গণনা করা কঠিন। মেলায় যাওয়ার অন্য যে পথটি, সেটিকে পথ না বলে সুড়ঙ্গ বলাই উচিত। দুদিকে জমির বিশাল আল। আলের উপর কাঁটার বেড়া। মধ্যে এতটাই সরু পথ যে পোশাক পরলেও বিপদ, না পরলেও। পথের খানা খন্দকতো আছেই। ডানে-বাঁয়ে শেওলাধরা মাটি। কোথাও ভসভসে কাদা। আগে থেকে বুঝার উপায় নেই, পা দিয়ে চাপ দিলেই এক হাঁটু দেবে যাবে কিনা। হাঁটু তো কমই বলা হলো।
পড়া চালিয়ে যেতে 

কিস্তি : মাতিউর রাহমান

বিকেল বিকেল বেশ ভালোই বৃষ্টি হয়ে গেলো। আর মাত্র দুটো কারখানা পরেই আমার গন্তব্যস্থল। কিন্তু না। মেঘরানীর তর সইলো না। বিকেলের হালকা হালকা রোদের মাঝেই পেখম মেলে ঝাঁপিয়ে পড়লো শহরের বুকে। ঢেউ-এর মতো দু একবার গতিটা ওঠা নামা ছাড়া, টানা একঘন্টা বৃষ্টি। পিচরাস্তার দুপাশের অনেকটায় দখলে নিয়েছে পড়ন্ত বিকেলের এই বৃষ্টির ঢল। রাস্তার মধ্যেটা মাছের পিঠের মতো জেগে আছে।
পড়া চালিয়ে যেতে 

কাকতাড়ুয়া : আশরাফ উদদীন আহমদ

চৈত্রের ঝলসানো রোদে গম ক্ষেতের শীষ পাকাটি যেন, বাদামী রঙের চৈত্রের রোদ খেলা করছে ঝিকমিকিয়ে। মাটি বেশ ফাটা-ফাটা, কোথাও বা টনটনে সমতল। আরো ক’ দিন পরই গম কাটা হবে। মাথার ওপর রোদের তীব্র ঝাঁঝঁ ছড়িয়ে যাচ্ছে নীল ওই বিশাল আসমান। চারদিক থেকে হু-হু করে বাতাস এসে বিঁধছে পুতুলের গায়ে। বাতাস বা আকাশের সঙ্গে পুতুলের এতোটুকু সম্পর্ক নেই এখন। তার চোখ ওই গম ক্ষেতের মাঝে মানবাকৃতির কিম্ভূত কিমাকার কাকতাড়–য়ার দিকে। এ বস্তুটির  উপর একসময় পুতুলের বড় কৌতুহল ছিলো, কিন্তু এখন সেটি আর অতোটা না থাকলেও অন্যরকম একটা ভালোবাসা এবং সেই ভালোবাসা থেকে রহস্য রয়েছে খানিকটা। আর সেই রহস্যে প্রতিনিয়ত ঘণীভূত হয় পুতুুলের চোখ। কখনো-সখনো পুতুল নিজেকেই ভাবে সেও একটা কাকতাড়ুয়া।
পড়া চালিয়ে যেতে 

যোগসূত্র : আবু নোমান

বাতাসে নড়ে উঠলো গাছের পাতা। কী মিষ্টি বাতাস। গতকালও এমন বাতাস ছিল না। গাছের ডালগুলোয় সুন্দর কষকষে সবুজ পাতা। এ কারণেই কি বাতাস এমন আরামদায়ক। আবু যায়িদের চোখে আবারো ঘুম জড়িয়ে আসে। কতদিন বৃষ্টি হয় না। ক্ষেতে ফসল হঠাৎ কমে গেছে। গরু-বাছুর শুকিয়ে যাচ্ছে খাওয়ার অভাবে। মানুষ কেনাবেচা কমিয়ে দিয়েছে। কী কিনবে! সবকিছুর দামই যে চড়া। এই বিস্তির্ণ খোলা মাঠে আগে যে ফসল ফলতো তা দিয়ে আবু যায়িদের দু-তিন বছর চলে যেত। মাঠের পশ্চিম পাশের পুকুরের মাছে তাদের একান্নবর্তী পরিবার শুধু নয়, পাড়ার মানুষের প্রয়োজন মিটে যেত। এখন তো তা চিন্তা করাই যায় না।
পড়া চালিয়ে যেতে 

পদ্মাপাড়ের বউ : নাজিব ওয়াদুদ

পিটালুর ছোবড়া দাঁতন ফেলে দিয়ে চারপাশটা একবার দেখল আমেনা। মৃদু বাতাস দিচ্ছে এখন। ভোরের শীতল পরশ শরীরে আদরভেজা আবেশ জাগায়। কাঁখের কলসিটা পায়ের কাছে রাখে। দু’হাতে চুল আউলা-ঝাউলা করে মাথায় বাতাস লাগায়। শাড়িটা খুলে পরে। সারা রাতের গুমোট গরমে ঘিনঘিনে ঘামে ভেজা গোটা শরীর। গায়ের ত্বক তো নয়, যেন সুনীল চামারের বাড়িতে শুকাতে দেওয়া লবনমাখানো চামড়া। ফাঁকা মাঠের শীতল বাতাসে ঘর্মাক্ত দেহখানা জুড়িয়ে যায়। ভোরের এই স্নিগ্ধ ও শান্ত নির্জনতায় কেমন এক পবিত্র আবেশে তার মন-প্রাণ ভরে ওঠে।
পড়া চালিয়ে যেতে 

ভুল-বেভুলের খেলা : বুলবুল চৌধুরী

দুপুরের বিছানায় কাত শুয়ে ঘুমে বিভোর স্বামী ইলিয়াস মোল্লার দিকে নির্নিমেষ চাহনিই মেলে দেয় নববধূ আফিয়া। দীর্ঘদেহী পুরুষ সে। তার মাথায় শোভা পায় কোঁকড়ানো বাবরি চুল। সেদিকে ফিরে যে কেউ ভাবতেই পারে, গায়েন নাকি কোনো! পড়া চালিয়ে যেতে 

No comments:

Post a Comment