Saturday, March 15, 2014

মিডিয়া বিক্রি হয়ে গিয়েছে, বলল আপ

মিডিয়া বিক্রি হয়ে গিয়েছে, বলল আপ

gul
নয়াদিল্লি ও মুম্বই: দেশের সংবাদমাধ্যম সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করে ফের সমালোচনার মুখে আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কড়া প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ে তিনি ওই মম্তব্য থেকে দূরত্ব তৈরির চেষ্টাও করেন৷ সাংবাদিক মহলও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷

বৃহস্পতিবার রাতে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে এক চ্যারিটি ডিনারে কেজরিওয়াল অভিযোগ করেন, বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর প্রচারের জন্য দেশের পুরো সংবাদমাধ্যম বিকিয়ে গিয়েছে, এবং তিনি ক্ষমতায় এলে দোষী সাংবাদিকদের জেলে পুরবেন৷ তাঁর কথায়, 'গত একবছর ধরে সংবাদমাধ্যমগুলি শুধু মোদীর খবরই দিয়ে যাচ্ছে৷ কিছু টিভি চ্যানেল তো দাবি করছে, রামরাজ্য চলে এসেছে, আর দুর্নীতি নির্মূল হয়ে গিয়েছে! আসলে মোদীকে তুলে ধরার জন্য ওই সব টিভি চ্যানেলকে মোটা টাকা দেওয়া হয়েছে৷ গত ১০ বছরে গুজরাটে আটশো জন চাষি আত্মহত্যা করেছেন৷ অনেক চাষি একটাকার বিনিময়ে বেসরকারি কোম্পানিকে জমি বেচতে বাধ্য হচ্ছেন৷ মিডিয়ায় তার কোনও খবর নেই৷ পুরো সংবাধ্যম বিক্রি হয়ে গিয়েছে৷ এটা বিশাল একটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র৷ আমরা সরকার গড়লে এ নিয়ে তদন্ত করাবো, আর মিডিয়ার দোষী লোকজনকে জেলে পুরব৷'

এই ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পরই জাতীয় রাজনীতিতে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়৷ শুক্রবার মহারাষ্ট্রের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কেজরিওয়াল বলেন, 'আমি ওই কথা বলিনি৷ আমি কোনও কিছুই বলিনি৷ আপনাদের সম্পর্কে আমি কী ভাবেই বা হতাশ হতে পারি!'

কিন্ত্ত তার মধ্যে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে৷ ফুঁসে উঠেছে অন্যান্য রাজনৈতিক দল৷ বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভি বলেন, 'ইনি তো 'কাশি-বাবা'র থেকে মাফি-বাবা হয়ে গিয়েছেন৷ প্রথমে মন্তব্য করেন৷ তারপর ক্ষমা চান৷' কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির কথায়, 'গণতন্ত্রে মিডিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ৷ যাঁরা রাজনীতি এবং জনতার কাজ করেন তাঁদের তো মিডিয়ার সমালোচনার মুখোমুখি থাকার জন্য তৈরি থাকতেই হয়৷' সিপিআই নেতা ডি রাজার প্রতিক্রিয়া, 'কেজরিওয়াল আজকাল মন্তব্য করার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে ফেলছেন৷ তিনিও তো একসময় মিডিয়ার ভালোরকম সমর্থন পেয়েছিলেন৷' বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভেড়করের দাবি,
'কেজরিওয়াল স্বৈরাচারী ও জরুরি অবস্থাকালীন মনোভাবের পরিচয় দিচ্ছেন৷ উনি কংগ্রেসের হয়ে কাজ করছেন৷ রাহুল গান্ধীর সম্পর্কে একটাও কথা বলছেন না৷ শুধু মোদীকে নিশানা করে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন৷'

এ প্রসঙ্গে এডিটর্স গিল্ডের তরফে বলা হয়েছে, 'কেজরিওয়াল যে ভাবে বারবার মিডিয়াকে আক্রমণ করছেন, তা গণতান্ত্রিক বিতর্কের আবহকে নষ্ট করছে৷' ব্রডকাস্ট এডিটর্স অ্যাসোসিয়েশন (বিইএ) বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে, 'মিডিয়া ন্যায্য এবং পক্ষপাতহীন ভাবে কাজ করছে৷ আপ নেতাদের মন্তব্য পুরোপরি দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অস্পষ্ট৷'

আপ নেতারা অবশ্য স্বাভাবিক ভাবেই কেজরিওয়ালকে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন৷ আপের মুখপাত্র সঞ্জয় সিং বলেন, 'কেজরিওয়াল বলেছেন, মিডিয়ার একাংশ বিকিয়ে গিয়েছে৷ সত্‍ সাংবাদিক এবং সাংবাদিকরা তো রয়েছেন, যাঁরা ভালো কাজ করতে চান৷' আপ নেতারা মূলত তিনটি সংবাদ চ্যানেলের বিরুদ্ধে স্পষ্ট ভাবে 'টাকা খাওয়া'র অভিযোগ এনেছেন৷ এ নিয়ে প্রমাণ-সহ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা৷ কেজরিওয়ালের সহযোগী মণীশ শিশোদিয়ার কথায়, 'মিডিয়া শুধু বলছে গুজরাটে উন্নয়ন হয়েছে৷ মোদী-শাসিত গুজরাটে দুর্নীতির কথাটা তারা পুরোপুরি এড়িয়ে যাচ্ছে৷'

অন্য দিকে, উত্তরপ্রদেশের আমেঠিতে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়া আপ নেতা কুমার বিশ্বাস শুক্রবার দাবি করেন যে, কামরৌলি থানা এলাকার সিন্দুরওয়া গ্রামে তাঁর সমর্থকদের উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়েছে ২০-২৫ জন কংগ্রেস কর্মী৷ কুমারের অভিযোগ, এই হামলায় জনা পনেরো আপ কর্মী আহত হয়েছেন৷ দু'জন আপ কর্মীকে নাকি কংগ্রেস আটকে রেখেছে৷ তিনটি গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে৷ -সংবাদসংস্থা

No comments:

Post a Comment