বৈঠক সত্ত্বেও রয়েই গেল ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে ধন্দ
ই সময়: রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ডিগ্রি কোর্সে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) পড়ুয়া ভর্তিতে আসন সংরক্ষণে সমস্যা না-হলেও, বিএড, আইন, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল এবং নার্সিংয়ের মতো কোর্সে আসনবৃদ্ধি নিয়ে সংশয় রয়েই গেল৷ আসন্ন শিক্ষাবর্ষে (২০১৪-১৫) উচ্চশিক্ষায় ওবিসি-দের আসন সংরক্ষণ ও তা কার্যকরে রাজ্যের সব কলেজ অধ্যক্ষদের বৈঠকে ডেকেছিলেন উচ্চশিক্ষা অধিকর্তা দীপকরঞ্জন মণ্ডল৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী হলের ওই বৈঠকে শুক্রবার পাঁচ শতাধিক কলেজের অধ্যক্ষ, অফিসার ও টিচার ইনচার্জ এবং ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও কলেজ পরিদর্শক উপস্থিত ছিলেন৷ কিন্ত্ত তাতে পেশাগত কোর্স নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি৷
এদিন এক রেজিস্ট্রারের বিএডে ওবিসি-দের আসন বাড়ানো নিয়ে অকপট প্রশ্নে বিব্রত হয়ে পড়েন উচ্চশিক্ষা সচিব স্বয়ং৷ আলোচনার শেষ পর্যায়ে নিখিলবঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য বক্তব্য রাখছিলেন৷ তিনি জানান, রাজ্য সরকার উচ্চশিক্ষায় ওবিসি-দের জন্য অতিরিক্ত আসন সংরক্ষণ করেছে৷ সেই নিয়ম মেনেই সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বার অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তি করতে হবে৷ হঠাত্ই উঠে দাঁড়ান গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শ্যামসুন্দর বৈরাগ্য৷ তাঁর প্রশ্ন, বিএড কলেজে কী করে আসন বাড়বে? ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন (এনসিটিই) তো শিক্ষাবর্ষে ১০০ জন করে পড়ুয়া ভর্তির অনুমতি দেয়৷ মানিকবাবুর উত্তর, 'আপনি এতক্ষণ ধরে সব জেনেশুনেও কেন এই প্রশ্ন করছেন?' যোগেশচন্দ্র ল'কলেজের অধ্যক্ষের আরও সংযোজন, 'বিএডের ক্ষেত্রে এনসিটিই এবং আইন কলেজের বিষয়ে বার কাউন্সিল ব্লক করে আসন বাড়ানোর অনুমতি দেয়৷ আপনারা আসন বাড়াতে এদের কাছে আর্জি জানান৷'
তাঁর কথা শেষ হতেই সমাপ্তি ভাষণে উচ্চশিক্ষা সচিব বিবেক কুমার অবশ্য ওই রেজিস্ট্রারের সুরে সুর মিলিয়ে জানান, 'পেশাগত কোর্সের ক্ষেত্রে একটু ধীরে চলুন৷ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আসন বাড়াতে ইতিমধ্যেই এনসিটিই-সহ অন্য কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে চিঠি চালাচালি শুরু করেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর৷' তাঁর উদ্বেগ, 'ওই সব বিষয়ে ছাত্র ভর্তির পর তাঁরা পরীক্ষা দিতে না-পারলে, অথবা শংসাপত্র না-পেলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে৷ সাধারণ ডিগ্রি কলেজে অতিরিক্ত ২, ৩, ৪ ও ৫ শতাংশ ওবিসি পড়ুয়া ভর্তি করুন৷ যাতে সেপ্টেম্বরেই সরকার ঘোষণা করতে পারে উচ্চশিক্ষায় ওবিসি-দের পৃথক সংরক্ষণ চালু হয়েছে৷'
এদিনের বৈঠকে এমনই নানা প্রশ্নে জেরবার হয়েছেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা৷ বাংলা, ইতিহাস, এডুকেশন, সংস্কৃত, দর্শন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মতো নন-ল্যাব বিষয়ে অতিরিক্ত পড়ুয়া ভর্তির ক্ষেত্রে সে ভাবে সমস্যার কথা ওঠেনি৷ কিন্ত্ত লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার ল্যাবনির্ভর বিষয়ে কী ভাবে আসন বাড়িয়ে অতিরিক্ত পড়ুয়া ভর্তি করা হবে, তা জানতে চান৷ অনেক অধ্যক্ষই এ ব্যাপারে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানান৷
কলকাতার একাধিক কলেজ অধ্যক্ষের মতে, উচ্চমাধ্যমিকে পড়ুয়ার সংখ্যা ও উত্তীর্ণের হার বাড়ায়, গত তিন বছরে দু'দফায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকস্তরে ১০ শতাংশ করে আসন বাড়ানো হয়েছে৷ ফলে কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট চাপে৷ সেইসঙ্গে আগামী ছ'বছরে নয়া আইন মেনে ওবিসি-দের জন্য ধাপে ধাপে ১৭ শতাংশ আসন সংরক্ষিত করতে গেলে, পাল্লা দিয়ে বাড়বে তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের মতো সংরক্ষিতদের আসনও৷ সব মিলিয়ে ৩২ শতাংশ সংরক্ষিত আসন বাড়াতে হবে৷
বর্তমানে ১০০ জনের মধ্যে সাধারণ প্রার্থী ৬৯ জন৷ কিন্ত্ত ওবিসি-দের সঙ্গে অন্য সংরক্ষিত প্রার্থীদের আসন বাড়লে, সাধারণ জাতিভুক্ত উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ প্রার্থীরা বঞ্চিত হবেন৷ অথচ, উচ্চমাধ্যমিকে সাধারণ প্রার্থীদেরই দাপট বেশি৷ যদিও এ সব সমস্যা নিয়ে বৈঠকের বাইরে কেউই মুখ খুলতে চাননি৷ উচ্চশিক্ষা সচিবও সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে গিয়েছেন৷
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/obc-reservation/articleshow/32063180.cms
ই সময়: রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ডিগ্রি কোর্সে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) পড়ুয়া ভর্তিতে আসন সংরক্ষণে সমস্যা না-হলেও, বিএড, আইন, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল এবং নার্সিংয়ের মতো কোর্সে আসনবৃদ্ধি নিয়ে সংশয় রয়েই গেল৷ আসন্ন শিক্ষাবর্ষে (২০১৪-১৫) উচ্চশিক্ষায় ওবিসি-দের আসন সংরক্ষণ ও তা কার্যকরে রাজ্যের সব কলেজ অধ্যক্ষদের বৈঠকে ডেকেছিলেন উচ্চশিক্ষা অধিকর্তা দীপকরঞ্জন মণ্ডল৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী হলের ওই বৈঠকে শুক্রবার পাঁচ শতাধিক কলেজের অধ্যক্ষ, অফিসার ও টিচার ইনচার্জ এবং ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও কলেজ পরিদর্শক উপস্থিত ছিলেন৷ কিন্ত্ত তাতে পেশাগত কোর্স নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি৷
এদিন এক রেজিস্ট্রারের বিএডে ওবিসি-দের আসন বাড়ানো নিয়ে অকপট প্রশ্নে বিব্রত হয়ে পড়েন উচ্চশিক্ষা সচিব স্বয়ং৷ আলোচনার শেষ পর্যায়ে নিখিলবঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য বক্তব্য রাখছিলেন৷ তিনি জানান, রাজ্য সরকার উচ্চশিক্ষায় ওবিসি-দের জন্য অতিরিক্ত আসন সংরক্ষণ করেছে৷ সেই নিয়ম মেনেই সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বার অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তি করতে হবে৷ হঠাত্ই উঠে দাঁড়ান গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শ্যামসুন্দর বৈরাগ্য৷ তাঁর প্রশ্ন, বিএড কলেজে কী করে আসন বাড়বে? ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন (এনসিটিই) তো শিক্ষাবর্ষে ১০০ জন করে পড়ুয়া ভর্তির অনুমতি দেয়৷ মানিকবাবুর উত্তর, 'আপনি এতক্ষণ ধরে সব জেনেশুনেও কেন এই প্রশ্ন করছেন?' যোগেশচন্দ্র ল'কলেজের অধ্যক্ষের আরও সংযোজন, 'বিএডের ক্ষেত্রে এনসিটিই এবং আইন কলেজের বিষয়ে বার কাউন্সিল ব্লক করে আসন বাড়ানোর অনুমতি দেয়৷ আপনারা আসন বাড়াতে এদের কাছে আর্জি জানান৷'
তাঁর কথা শেষ হতেই সমাপ্তি ভাষণে উচ্চশিক্ষা সচিব বিবেক কুমার অবশ্য ওই রেজিস্ট্রারের সুরে সুর মিলিয়ে জানান, 'পেশাগত কোর্সের ক্ষেত্রে একটু ধীরে চলুন৷ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আসন বাড়াতে ইতিমধ্যেই এনসিটিই-সহ অন্য কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে চিঠি চালাচালি শুরু করেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর৷' তাঁর উদ্বেগ, 'ওই সব বিষয়ে ছাত্র ভর্তির পর তাঁরা পরীক্ষা দিতে না-পারলে, অথবা শংসাপত্র না-পেলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে৷ সাধারণ ডিগ্রি কলেজে অতিরিক্ত ২, ৩, ৪ ও ৫ শতাংশ ওবিসি পড়ুয়া ভর্তি করুন৷ যাতে সেপ্টেম্বরেই সরকার ঘোষণা করতে পারে উচ্চশিক্ষায় ওবিসি-দের পৃথক সংরক্ষণ চালু হয়েছে৷'
এদিনের বৈঠকে এমনই নানা প্রশ্নে জেরবার হয়েছেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা৷ বাংলা, ইতিহাস, এডুকেশন, সংস্কৃত, দর্শন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মতো নন-ল্যাব বিষয়ে অতিরিক্ত পড়ুয়া ভর্তির ক্ষেত্রে সে ভাবে সমস্যার কথা ওঠেনি৷ কিন্ত্ত লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার ল্যাবনির্ভর বিষয়ে কী ভাবে আসন বাড়িয়ে অতিরিক্ত পড়ুয়া ভর্তি করা হবে, তা জানতে চান৷ অনেক অধ্যক্ষই এ ব্যাপারে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানান৷
কলকাতার একাধিক কলেজ অধ্যক্ষের মতে, উচ্চমাধ্যমিকে পড়ুয়ার সংখ্যা ও উত্তীর্ণের হার বাড়ায়, গত তিন বছরে দু'দফায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকস্তরে ১০ শতাংশ করে আসন বাড়ানো হয়েছে৷ ফলে কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট চাপে৷ সেইসঙ্গে আগামী ছ'বছরে নয়া আইন মেনে ওবিসি-দের জন্য ধাপে ধাপে ১৭ শতাংশ আসন সংরক্ষিত করতে গেলে, পাল্লা দিয়ে বাড়বে তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের মতো সংরক্ষিতদের আসনও৷ সব মিলিয়ে ৩২ শতাংশ সংরক্ষিত আসন বাড়াতে হবে৷
বর্তমানে ১০০ জনের মধ্যে সাধারণ প্রার্থী ৬৯ জন৷ কিন্ত্ত ওবিসি-দের সঙ্গে অন্য সংরক্ষিত প্রার্থীদের আসন বাড়লে, সাধারণ জাতিভুক্ত উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ প্রার্থীরা বঞ্চিত হবেন৷ অথচ, উচ্চমাধ্যমিকে সাধারণ প্রার্থীদেরই দাপট বেশি৷ যদিও এ সব সমস্যা নিয়ে বৈঠকের বাইরে কেউই মুখ খুলতে চাননি৷ উচ্চশিক্ষা সচিবও সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে গিয়েছেন৷
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/obc-reservation/articleshow/32063180.cms
No comments:
Post a Comment