রুশ হুংকারে ক্রিমিয়া ঘিরে যুদ্ধের শঙ্কা তীব্র
কিয়েভ: ক্রিমিয়া নিয়ে এ বার রণহুংকার দিল রাশিয়া৷ মস্কোর সাফ কথা, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে রুশ ফৌজ ইউক্রেনে ঢুকবে৷ পরিণতির জন্য প্রস্ত্তত থাকুক কিয়েভ৷
শুক্রবার সকাল থেকেই বিভিন্ন ঘটনাক্রমে ক্রিমিয়া ঘিরে পারদ চড়তে থাকে৷ বেলা গড়াতেই বোঝা যায়, আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে রবিবার জনমত নেওয়ার দিকে এগোচ্ছে ক্রিমিয়া প্রশাসন৷ প্রত্যুত্তরে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রস্ত্ততি শুরু করে দেয় জোরকদমে৷ পরিস্থিতি ঘোরালো করে রাতারাতি ক্রিমিয়ায় প্রচুর সেনা পাঠিয়েছে মস্কো৷
রুশ বিদেশমন্ত্রকের তরফে এদিন একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'ইউক্রেনে বসবাসকারী রুশ জনজাতির অধিকার রক্ষায় আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ৷ তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে আমাদের৷' জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের পাল্টা হুঁশিয়ারি, 'সরে আসুক রাশিয়া৷ নইলে কপালে দুঃখ আছে৷ চরম পরিণতির জন্য তৈরি থাকুক মস্কো৷' ভ্লাদিমির পুতিনের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, 'আমরা কিন্ত্ত নিছক হুমকি হিসেবে (রাশিয়ার হুমকি) একে দেখছি না৷ মনে রাখা প্রয়োজন, কিছু ঘটলে তাতে ইউরোপের যা ক্ষতি, একক ভাবে তার চেয়ে অনেক বড় ক্ষতি রাশিয়ার৷'
ইউক্রেন ছেড়ে রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার প্রশ্নে রবিবার ক্রিমিয়ায় জনতার রায় নেবে সেখানকার প্রশাসন৷ ভোট ঠেকাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাবনা বিলি করেছে আমেরিকা৷ কিন্ত্ত অন্যতম স্থায়ী সদস্য রাশিয়া ভেটো প্রয়োগ করে এই প্রস্তাবনা রুখে দিয়েছে৷
এর পরই শেষ চেষ্টা করতে লন্ডনে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের মুখোমুখি বসেন মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি৷ কোনও অবস্থাতেই রাশিয়া ইউক্রেনে ফৌজ ঢোকাবে না, সে আশ্বাস আদায়ের চেষ্টা করেন৷ শোনা যাচ্ছে, রাশিয়া কোনও প্রতিশ্রুতি দেয়নি৷ ল্যাভরভ বলেন, 'অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে, অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে৷ কঠিন পরিস্থিতি৷ দেখা যাক, কী হয়৷'
রাশিয়া যেমন কোনও কথা দেয়নি, তেমনই নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও প্রস্ত্তত হচ্ছে৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, 'রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনার টেবিলে বসেছে, সেটাই সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত দৃশ্য৷ আর এটা যদি না-হয়, তা হলে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকাই ভালো৷'
শুক্রবার সকালেই একটি রুশ যুদ্ধজাহাজ ক্রিমিয়ার বন্দরে ভিড়েছে৷ সেব্যাস্টোপোলের কাছে ক্রিমিয়ার মাটিতে নেমেছে ট্রাক, জওয়ানদের গাড়ি এবং বিশাল সংখ্যক ফৌজ৷ যদিও ক্রিমিয়া প্রশাসনের বক্তব্য, নতুন করে কোনও বাহিনী পাঠায়নি রাশিয়া৷ শুধু তা-ই নয়, সেব্যাস্টোপোলের বাইরে ক্রিমিয়ার কোথাও রুশ সেনা নেই৷ কিন্ত্ত অত্যাধুনিক অস্ত্র হাতে রণসজ্জায় যে বাহিনীকে ক্রিমিয়ার রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে, তারা কারা? উত্তর এড়িয়েছেন ক্রিমিয়ার প্রশাসনিক কর্তারা৷ -- সংবাদসংস্থা
No comments:
Post a Comment