Wednesday, March 26, 2014

সন্ত্রাসী ফজলের সমর্থকদের উল্লাস, এলাকায় আতংক

সন্ত্রাসী ফজলের সমর্থকদের উল্লাস, এলাকায় আতংক

রাউজানের নোয়াপাড়া চৌধুরী হাটে যুবলীগ নেতা মোবারক হোসেন নিহত হওয়ার পর মোবারকের অনুসারীরা হতাশ হয়ে পড়েছে, এদিকে শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হকের অনুসারী উল্লাস প্রকাশ করেছে, এ ঘটনায় এলাকার  সাধারণ মানুষের মধ্যে  চরম আতংক  নেমে আসছে ।  রাউজান উপজেলার ১৩ নং নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের চৌধুরী হাট ঘাটকুল এলাকার মৃত নাসিরের পুত্র যুবলীগ নেতা মোবারক হোসেন (৩৮) তার সহযোগী সেকান্দর (৩৮) জসিম (৩৬) সহ গত শনিবার সন্ধায় বাড়ির পার্শ্বে চৌধুরী হাট এলাকায় বসে আলোচনা করছিল। এ সময় পার্শ্ববর্তী পালোয়ান পাড়া এলাকার বুদুরুস মেহেরের পুত্র সন্ত্রাসী আবদুর রসিদ, তার সহযোগী  লোকমান হোসেন প্রকাশ লাডুম এর নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কামরু হাসান টিটু সহ তাদের সহযোগীরা  অতর্কিতভাবে যুবলীগ নেতা মোবারক হোসেন, তার সহযোগী সেকান্দর হোসেন, জসিম উদ্দিনের উপর হামলা চালায় । সন্ত্রাসীরা এলাপাথারী কুপিয়ে ও গুলি করে বীরদর্পে চলে যায় । এ সময় চৌধুরী হাটের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে ব্যবসায়ীরা নিরাপদ স্থানে চলে যায় । পরে রাত সাড়ে আটটার  সময় রাউজান নোয়াপাড়া পুলিশ ফাড়ীঁর এসআই টুটুন মজুমদার সহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা আহত যুবলীগ নেতা মোবারক হোসেন ও তার সহযোগী সেকান্দর ও জসিম কে উদ্বার করে নোয়াপাড়া পথের হাটস্থ পাইওনিয়ার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন । এসময় দায়িত্বরত চিকিৎসক যুবলীগ নেতা মোবারক হোসেন কে মৃত ঘোষনা করেন । রাতে সেকান্দর ও জসিম কে চট্টগ্রাম শহরের বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে  যায় তাদের স্বজনেরা । মোবারকের লাশ গত শনিবার দিবাগত রাতে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায় । ময়না তদন্ত শেষে তার স্বজনেরা মোবারকের লাশ মর্গে থেকে নিয়ে আসে । গতকাল রবিবার বিকালে লাশ তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয় । স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,  মোবারক হোসেনকে হত্যার নৈপথ্যে  রয়েছে সৌদি আরবে আত্বগোপনে চলে যাওয়া রাউজানের শীর্ষ  সন্ত্রাসী ফজল হক । শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হক মোবারক হোসেনকে তার পথের কাঁটা মনে করতো। সরোজমিনে পরিদর্শন কালে এলাকার লোকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে  সুপ্রভাত বাংলাদেশকে জানান, হত্যাকান্ডে অংশ নেওয়া ডাকাত আবদুর রশিদ, লোকমান হোসেন লাডুম, সন্ত্রাসী কামরুল হাসান টিটু সহ তাদের সহযোগীরা শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হকের অনুসারী। ফজল হক হত্যাকান্ডে অংশ নেওয়া সন্ত্রাসীদেরকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোবারক হোসেন এক সময়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের দেওয়া মামলার কারনে সন্ত্রাসী হিসাবে পরিচিত লাভ করলে ও গত কয়েক বৎসরের মধ্যে সে কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিলনা । কর্ণফুলী নদীর ছায়ার চর এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করে তা সরবরাহ করে যে টাকা পেতো তা দিয়ে মোবারক ও তার সহযোগীরা চলতো। এছাড়াও এলাকার উন্নয়ন কাজের ঠিকাদার থেকে সাব ঠিকাদারী নিয়ে ঠিকাদারী করে মোবারক ও তার সহযোগীরা পরিবার পরিজনের ব্যায়ভার বহন করতো বলে স্থানীয় মেম্বার করিম বক্স ও এলাকার লোকজন জানান ।
শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হকের অনুসারী ডাকাত আবদুর রশিদ, লোকমান হোসেন লাডুম, কামরুল হাসান টিটু সহ তাদের সহযোগীরা এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও চুরি ডাকাতি করার চেষ্টা করলে যুবলীগ নেতা মোবারক ও তার সহযোগীরা তাদেরকে প্রতিরোধ করায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে যুবলীগ নেতা মোবরক হোসেনকে হত্যা করেছে বলে এলাকার লোকজন জানান।
রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ দিদারুল আলম জানান, গত শনিবার সন্ধায় ঘটনাস্থল নোয়াপাড়া চৌধুরী হাটে আমি একটি দোকানে বসা অবস্থায় হঠাৎ করে সন্ত্রাসীরা মোবারক হোসেন ও তার সহযোগী সেকান্দর ও জসিম কে এলাপাথাড়ি কুপিয়ে ও গুলি করে চলে যায়। মোবারক হোসেন ও তার সহযোগীদের পুর্বে ও একাধিকবার হত্যার চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে । এদিকে মোবারক হোসেন হত্যা ও তার দুই সহযোগী সেকান্দর, জসিম আহত হওয়ার ঘটনার পর যুবলীগ নেতা মোবারকের অনুসারীরা হতাশ হয়ে পড়লে ও আত্বগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হকের অনুসারীদের চলছে উল্লাস । মোবারক হত্যা ও দুই সহযোগী আহত হওয়ার ঘটনার ব্যাপারে রাউজান থানায় কোন মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে রাউজান থানার ওসি এনামুল হক জানান, জানাজার নামাজ শেষ করে ও লাশ দাফন করে মামলা করবে বলে জানিয়েছে তার স্বজনেরা । হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদেরকে এখনো পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। নিহত যুবলীগ নেতা মোবারকের বিরুদ্ধে কোন মামলা আছে কিনা জানতে চাইলে ওসি এনামুল হক মামলা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে বলে জানান ।
আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ :
সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত যুবলীগ নেতা মোবারক হোসেন হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন খানের নেতৃত্বে এক বিক্ষোভ মিছিল রাউজানের নোয়াপাড়া পথের হাট থেকে শুরু হয়ে নিহত যুবলীগ নেতা মোবারক হোসেনের বাড়িতে গিয়ে শেষ হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুল ইসলাম, দিদারুল আলম চেয়ারম্যান, দুলাল বড়ুয়া, চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন, চন্দন দে, বাবুল মিয়া, নুরুল ইসলাম শাহাজাহান, আবদুল লতিফ, যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসেন ছোটন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর জমির উদ্দিন পারভেজ, ছাত্রলীগ দক্ষিন রাউজান শাখার সভাপতি সৈয়দ আবদুল জব্বার সোহেল, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ । বিক্ষোভ মিছিল শেষে চৌধুরী হাটে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্টিত হয় । এতে বক্তারা যুবলীগ নেতা মোবারক হোসেনের হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বিএনপি জামাত জোটের লালিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান ।
http://www.suprobhat.com/?p=77058

No comments:

Post a Comment