Wednesday, March 26, 2014

আধিপত্য অটুট রেখেছে জামায়াত, পারেনি বিএনপি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

আধিপত্য অটুট রেখেছে জামায়াত, পারেনি বিএনপি

কেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও জাল ভোটের মধ্যেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে নিজেদের অধ্যুষিত এলাকায় আধিপত্য অটুট রেখেছে ১৯ দলের শরিক জামায়াতে ইসলামী। অন্যদিকে নিজেদের অধ্যুষিত এলাকা হাতছাড়া করেছে বিএনপি।
এ পর্যন্ত চট্টগ্রামের ১৩ উপজেলার মধ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনটি উপজেলায় (সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও বাঁশখালী) চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত প্রার্থীর জয়জয়কার হয়েছে। এরমধ্যে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া জামায়াত অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। নিজেদের সীমানার বাইরে গিয়ে বিএনপি অধ্যুষিত বাঁশখালী উপজেলায়ও এবার হানা দিয়েছে জামায়াত।
বিস্ময়কর বিষয় হলো, যুদ্ধাপরাধ ইস্যু ও গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে রাজপথে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা যে ভয়ংকর বিধ্বংসী আন্দোলন চালিয়েছিল তার নেতিবাচক প্রচারণা সত্ত্বেও চট্টগ্রামে উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত এককভাবে প্রার্থী দিয়ে বিজয়ী হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগর জামায়াতের অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি আ জ ম ওবায়দুল্লাহ গতকাল সুপ্রভাতকে বলেন, ‘আমরা যে সত্যের পথে আছি উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীকে মানুষ ভোট দিয়ে সেটা প্রমাণ করেছে। জনস্বার্থের বিরুদ্ধে যদি আমাদের অবস’ান হতো তাহলে তো জনগণ আমাদের ভোট দিতো না।’
‘মিথ্যাবাদী রাখালের মতো যারা প্রতারিত করতে চায় একদিন বাঘ এসে তাদের খেয়ে ফেলবে’ বলেন এ জামায়াত নেতা।
এক প্রশ্নের জবাবে এ জামায়াত নেতা বলেন, ‘চট্টগ্রামে যে তিনটিতে জামায়াতের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে সেগুলো তো আমাদের নিয়ন্ত্রাধীন এলাকা। ভোটের সময় আমাদের নেতাকর্মীরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে একাট্টা হয়ে কাজ করেছে। বিএনপি নিজেদের এলাকা কেন ধরে রাখতে পারেনি সেটা তারাই ভালো জানে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের যে তিনটি উপজেলায় জামায়াত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে সেখানে দলটির নেতাকর্মীরা আঁটগাঁঠ বেধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছে। ছিল না কোনো বিদ্রাহী প্রার্থী। যার ফলে বিজয়ের ফসল তারা ঘরে তুলেছে।
এদিকে নিজেদের অধ্যুষিত এলাকায়ও বিপর্যয় ঘটেছে বিএনপির। নিজেদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সীতাকুণ্ড, বাঁশখালী, ও রাঙ্গুনিয়া হাতছাড়া করেছে এবার বিএনপি। যে তিনটি (হাটহাজারী, মিরসরাই ও পটিয়া) উপজেলায় দলটির চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন তাও ১৯ দলীয় জোটের ব্যানারে। এককভাবে প্রার্থী দিয়ে একটিতেও তারা জয়লাভ করতে পারেনি।
এর কারণ জানতে চাইলে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান সুপ্রভাতকে বলেন, ‘যেভাবে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ভোট ডাকাতি করেছে সেখানে জয়-পরাজয়ের বিষয় তো আর থাকে না।’
প্রশ্নের জবাবে এ বিএনপি নেতা বলেন, ‘যে তিনটি উপজেলায় জামায়াতের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে সেখানে ভোট ডাকাতি হয়নি। তাই তাদের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে।’
দলীয় সূত্র থেকে জানা যায়, বিএনপি তাদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সীতাকুণ্ড, বাঁশখালী, ও রাঙ্গুনিয়া হাতছাড়া করার পেছনে ছিল বিদ্রোহী প্রার্থী ও দলটির নেতাকর্মীদের অনৈক্য-বিভেদ। এছাড়া ভোটের সময় কেন্দ্রে কেন্দ্রে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের যেরকম পাহারা ছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের তা ছিল না। নেতাদের বিরোধের কারণে দলটির নেতাকর্মীরা আঁটগাঁঠ বেঁধে ভোটের মাঠে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ পর্যন্ত চট্টগ্রামের ১৩টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ৬টি আর এলডিপি একটিতে।
http://www.suprobhat.com/?p=141397

No comments:

Post a Comment