Saturday, August 16, 2014

কবি শামসুর রাহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

কবি শামসুর রাহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ সব সময়ই পুনর্নির্মাণের পথে হেঁটেছেন কবি শামসুর রাহমান। ছন্দোময় ও শিল্পিত শব্দের প্রক্ষেপণে দেশ ও মানুষের কথা বলে গেছেন কবিতায়। সমকালীনতা ধারণকারী অনন্য প্রতিভায় উজ্জ্বল এই নাগরিক কবি ছিলেন বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। তাঁর লেখা কবিতা আজও বাঙালীর দুঃসময়ে সাহস ও প্রেরণা যোগায়। চরণে চরণে উচ্চারিত হয় অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক চেতনার কথা। কাব্য রচনায় সৃষ্টি ও মননের দ্যুতিময় উপস্থাপনা তাঁকে দিয়েছে কবিতার বরপুত্রের উপাধি। আজ রবিবার দেশ, মাটি ও মানুষের কথা বলা এ কবির অষ্টম প্রয়াণবার্ষিকী। ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট তিনি পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। ঢাকার বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরে শায়িত আছেন তিনি। কবির শেষ ইচ্ছানুযায়ী সেখানেই তাঁকে সমাহিত করা হয়। কবির প্রয়াণ দিবসের আগের দিন শনিবার কথা হয় তাঁর স্নেহধন্য পুত্রবধূ টিয়া রহমানের সঙ্গে। বাকরুদ্ধ কণ্ঠে বললেন, সম্পর্কে শ্বশুর হলেও তিনি ছিলেন আমার বাবার মতো। আজও তাঁর ঘরের লিখতে বসার চেয়ার, টেবিলসহ সবকিছু একইরকম আছে। সবই আছে, শুধু মানুষটি নেই। জীবন থেকে হারিয়ে চলে গেলেন স্মৃতির পাতায়। ১৭ আগস্টের বিশেষ দিনটিতে পরিবারের সবাই নিমজ্জিত হন তাঁকে হারানোর বেদনায়। এসব কথার পর শোকের বাতাবরণ থেকে বেরিয়ে টিয়া রহমান বললেন, আজ রবিবার সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে কবির বনানীর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
পরিবারের বাইরে কবির প্রয়াণ বার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে জাতীয় কবিতা পরিষদ ও শামসুর রাহমান স্মৃতি পরিষদ। সকালে এ দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে শামসুর রাহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানো হবে।
এ বিষয়ে পরিষদের সভাপতি কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী জানান, কবির প্রয়াণ দিবসে বড় কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় না, এবারও হচ্ছে না। আগামী ২৩ অক্টোবর তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
এছাড়া কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গুরুত্বসহ জাতীয় দৈনিকগুলোতে সংবাদ প্রকাশিত হবে। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমও বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। আর মৃত্যুবার্ষিকীর একদিন আগে শনিবার সকালে শামসুর রাহমান স্মরণে সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারে হলে আলোচনাসভা ও কবিতা পাঠের আয়োজন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন শিল্পিত। একই অনুষ্ঠানে স্মরণ করা চল্লিশের দশকের প্রধান আবুল হোসেনকে।
পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে মর্নিং নিউজে সাংবাদিকতার মাধ্যমে পেশাগত জীবনে প্রবেশ ঘটে তাঁর। এর পর ১৯৫৭ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত রেডিও পাকিস্তানের অনুষ্ঠান প্রযোজক ছিলেন। এর মাঝে আবার ফিরে আসেন পুরানো কর্মস্থল দৈনিক মর্নিং নিউজ-এ। সেখানে ১৯৬০ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সহযোগী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৪ সালে নবেম্বর থেকে শুরু করে সরকারী দৈনিক পাকিস্তানের সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ১৯৭৭-এর জানুয়ারি পর্যন্ত। ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৮৭ তে সামরিক সরকারের শাসনামলে তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এ সময় তিনি মাসিক সাহিত্য পত্রিকা অধুনার সম্পাদকের দায়িত্ব¡ পালন করেন।
শামসুর রাহমানের বাবা মুখলেসুর রহমান চৌধুরী ও মা আমেনা বেগম। ১৩ ভাই-বোনের মধ্যে কবি ছিলেন চতুর্থ। পুরানো ঢাকার পোগোজ ইংলিশ হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন ১৯৪৫ সালে। ১৯৪৭ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিষয়ে ভর্তি হন এবং তিন বছর নিয়মিত ক্লাসও করেন সেখানে। শেষ পর্যন্ত আর মূল পরীক্ষা দেননি। পাসকোর্সে বিএ পাস করে তিনি ইংরেজী সাহিত্যে এম এ (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলেও শেষ পর্বের পরীক্ষায় অংশ নেননি।
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html

No comments:

Post a Comment