যমুনায় নৌকাডুবি: নিখোঁজদের খুঁজছে স্বজনরা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2014-08-02 19:07:15.0 BdST Updated: 2014-08-02 19:40:16.0 BdST
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় এখনো অন্তত ১৪ জন নিখোঁজ রয়েছে।
ঘটনার দুদিন পরও পরিবারের লোকজন নদীর তীরে খুঁজে বেড়াচ্ছেন নিখোঁজ স্বজনদের।
বৃহস্পতিবার শতাধিক যাত্রী নিয়ে যমুনা নদীতে নৌকাডুবির পর আট জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, আর কোনো মৃতদেহ না পাওয়ায় দুই দিন পর শুক্রবার সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করেছে প্রশাসন।
মধ্যজোতপাড়ার আবুল কালাম জানান, অনেক খোঁজাখুজি করেও তিনি স্ত্রী শাহনাজ পারভীন (৩৫) ও মেয়ে তানজিয়া পারভীনের কোনো সন্ধান পাননি।
চরসলিমাবাদ গ্রামের অমূল্য দাস তার ৭ ও ৩ বছর বয়সী দুই নাতিকে এখনো পাগলের মতো খুঁজে ফিরছেন যমুনার তীরে এখানে ওখানে। নৌকাডুবির পর পরিবারের অন্য সদস্যরা তীরে উঠতে পারলেও ওই দুই নিখোঁজ হয়।
দক্ষিণজোতপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক স্ত্রী সাজেদা খাতুনের (৪৩) খোঁজ এখনো পাননি। শনিবারও সারাদিন তিনি যমুনার তীরে খুঁজেছেন স্ত্রীকে।
স্থানীয় আব্দুল লতিফ ও হাসান জানান, ঘটনার তিন দিনের দিন নিখোঁজদের স্বজনরা ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় খোঁজাখুজি করছে। কেউ কেউ নদীতীরে অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছে। আবার কেউ কেউ নৌকা নিয়ে নদীতে খুঁজছে।
কেউ কেউ নদীর ভাটির দিকের মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও পাবনার বিভিন্ন স্থানেও নানাভাবে স্বজনদের খোঁজ নিচ্ছে বলে তারা জানান।
চৌহালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হাসান জানান, দুই জন নারী ও তিনটি কন্যা শিশু নিখোঁজের তালিকা অফিসে রয়েছে। বাকিদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে মাইকিং করা হয়েছে এবং কোথাও লাশ ভেসে উঠলে প্রশাসনকে অবগত করতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি খাস পুকুরিয়া ও বাগুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যানরাও নিখোঁজদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে তালিকা প্রণয়ন করছে।
চৌহালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ঘটনার পর থেকে দুদিন নৌবাহিনীর ডুবুরি দল, ঢাকা, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এবং দৌলতদিয়া ঘাট থেকে বিআইডাব্লিউটিএ এর উদ্ধারকারী জাহাজ আশা-১ এবং ডুবুরিরা অনেক চেষ্টা করেও কোনো নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান পায়নি।
ইউএনও জানান, প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যহত হয়, যে কারণে ডুবে যাওয়া নৌকাটির সন্ধান পাওয়া গেলেও এখনো উদ্ধার করা যায়নি। এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করা হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক বিল্লাল হোসেন জানান, নিখোঁজদের বিষয়ে যমুনা নদীর তীরবর্তী পাবনা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ ও ঢাকার জেলা প্রশাসকদের ওয়্যারলেস ম্যাসেজ ও পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
“এসব এলাকার নদীর চরাঞ্চলগুলোতে কোনো লাশ ভেসে উঠলে বা গেলে তারা আমাদের অবগত করবে,” বলেন তিনি।
ঈদের দুদিন পর বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা সদরের মিটুয়ানী বাজার ঘাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকাটি চর সলিমাবাদ ঘাটে যাওয়ার জন্য রওনা হয়। কিন্তু ঘাটের কাছে নদীর মধ্যে একটি ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লাগলে নৌকাটি ডুবে যায়।
অধিকাংশ যাত্রী সাঁতরে কূলে উঠলেও বাকিরা নিখোঁজ হয়। এ পর্যন্ত আটটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment