মারাত্মক হুমকিতে জনস্বাস্থ্য ॥ কৃষিতে বিষাক্ত কীটনাশক বিষক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে খাদ্যশস্যে
পবার গবেষণা রিপোর্টে তথ্য
স্টাফ রিপোর্টার ॥ কৃষি খাতে বিষাক্ত কীটনাশকের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এর প্রভাবে উৎপাদিত ফসল বিশেষ করে খাদ্যশস্যে রাসায়নিক বিষক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যের ওপর। সম্প্রতি পরিবেশবাদী সংগঠন পবার এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-গত ১০ বছরে কৃষি খাতে বিষাক্ত কীটনাশকের ব্যবহার ৩২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯৭ সালে বিষাক্ত কীটনাশকের ব্যবহার ছিল ৮ হাজার টন। ২০০০ সালে ১৬ হাজার, ২০০৫-০৬ বছরে ২০ হাজার এবং ২০০৮ সালে ব্যবহার ছিল ৪৮ হাজার ৬৯০ টন। কীটনাশকের ব্যবহার প্রতি হেক্টরে বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৯৮ শতাংশ। এর বার্ষিক আমদানি মূল্য প্রায় ১৭১.৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বলা হয়েছে সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অনেক রাসায়নিক পদার্থের পাশাপাশি রাসায়নিক যৌগ যেমন- এলড্রিন ও এনড্রিন বিক্রি অব্যাহতভাবে হচ্ছে। অথচ একে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা অত্যন্ত বিপজ্জনক হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। কীটনাশক লেবেল ছাড়াই মিথ্যা লেবেলে এবং কৃষকদের কোন সুস্পষ্ট সতর্কবার্তা বা নির্দেশাবলী ছাড়াই বিক্রি করা হচ্ছে অবাধে। এতে বলা হয়েছে, কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষিতে কীটনাশক পরিমাণ মতো ব্যবহারের অনুমোদন দিলেও মাঠপর্যায়ে ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথাযথ নজরদারি করা হচ্ছে না। এ কারণে না জেনে কৃষকরা অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার যেমন করছে, তেমনি কীটনাশক ব্যবহারের একটি নির্দিষ্ট সময় পর শস্য বা ফল বাজারে নেয়ার কথা থাকলেও সে পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই বাজারে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। ফলে দেশে উৎপাদিত চাল, মাছ, সবজি, মসলা এবং ফলমূলে ব্যাপকভাবে বিষাক্ত রাসায়নিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উৎপাদন থেকে বাজারজাত প্রত্যেকটি পর্যায়ে বিষ মেশানো হচ্ছে খাদ্যে। উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা থাকলেও আদৌ মাঠে গিয়ে কৃষককে সচেতন করে তোলার মতো কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা যায় না।
পরিবেশ অধিদফতরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও পবার নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান বলেন, সকল খাদ্যদ্রব্যে বিষ ও ভেজালের ব্যাপকতার বিপরীতে সরকারের পদক্ষেপে ভোক্তা সাধারণের শঙ্কা কাটছে না। কৃৃষি খাতে গত ১০ বছরে বিষাক্ত কীটনাশকের ব্যবহার ৩২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পয়েছে। কীটনাশকজনিত বিষক্রিয়ায় নানা জটিল রোগ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। রাজধানী ঢাকা ফরমালিনমুক্ত করতে সরকার শুধু মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। কিন্তু উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তাপর্যায়ে নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করতে কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সরকারীভাবে উল্লেখযোগ্য কোন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। দেশের জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে বিষমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীর অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কীটনাশক ব্যবহারের তীব্রতা সবজিতে বেশি। বাংলাদেশ থেকে সবজি রফতানি কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার। সবজিতে বিষাক্ত রাসায়নিক অবশিষ্টাংশের প্রভাবে ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, চামড়ার রোগ এবং দীর্ঘমেয়াদে কিডনিসহ মানবদেহে বিভিন্ন রোগ তৈরি করতে পারে। কীটনাশকের দীর্ঘস্থায়ী বিষক্রিয়ায় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি কীটনাশক মাছ, পাখি এবং অনেক গাছপালা ধ্বংসের জন্যও দায়ী। কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, ইন্ট্রিগ্রেটেড পোস্ট ম্যানেজমেন্ট পন্থার ওপর ভিত্তি করে কীটনাশক ব্যবহারের বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেয়া না হলে এর ব্যবহার ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে।
তাদের মতে, দেশে এমনতিইে মৌসুমী ফলসহ অধিকাংশ খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল রয়েছে। মৌসুমী ফলে ফরমালিন মেশানোর প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এ কারণে জনস্বাস্থ্য হুমকির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু কৃষি খাতে এভাবে কীটনাশক মেশানোর কারণে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে কৃষিখাতে বিষাক্ত কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সময়োপযোগী কীটনাশক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া ফলসহ খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন রোধ করতে চাহিদা অনুযায়ী টিসিবির মাধ্যমে ফরমালিন আমদানি করতে হবে। এ ছাড়া পণ্য আমদানি পর্যায়ে এনবিআর কর্তৃক বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যাদিসহ ফরমালিন পরীক্ষা করা। রাসায়নিক দ্রব্যাদি, ফরমালিন, ক্যালসিয়াম কার্বাইড পরীক্ষা করার জন্য আধুনিক গবেষণাগার স্থাপন প্রয়োজন। কোন রকম রাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়াই আইন প্রয়োগে সরকারের প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
এ ছাড়া খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা প্রয়োজন। স্টকহোম কনভেনশন স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে ডিডিটি ও হেপ্টাক্লোরের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে জরুরীভিত্তিতে কার্যক্রম গ্রহণ করা। কীটপতঙ্গের হাত থেকে ফসল রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড পেস্ট ম্যানেজমেন্ট জোরদার করা ছাড়াও রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈবসার ব্যবহারে কৃষককে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা দেয়া প্রয়োজন।
বলা হয়েছে সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অনেক রাসায়নিক পদার্থের পাশাপাশি রাসায়নিক যৌগ যেমন- এলড্রিন ও এনড্রিন বিক্রি অব্যাহতভাবে হচ্ছে। অথচ একে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা অত্যন্ত বিপজ্জনক হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। কীটনাশক লেবেল ছাড়াই মিথ্যা লেবেলে এবং কৃষকদের কোন সুস্পষ্ট সতর্কবার্তা বা নির্দেশাবলী ছাড়াই বিক্রি করা হচ্ছে অবাধে। এতে বলা হয়েছে, কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষিতে কীটনাশক পরিমাণ মতো ব্যবহারের অনুমোদন দিলেও মাঠপর্যায়ে ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথাযথ নজরদারি করা হচ্ছে না। এ কারণে না জেনে কৃষকরা অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার যেমন করছে, তেমনি কীটনাশক ব্যবহারের একটি নির্দিষ্ট সময় পর শস্য বা ফল বাজারে নেয়ার কথা থাকলেও সে পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই বাজারে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। ফলে দেশে উৎপাদিত চাল, মাছ, সবজি, মসলা এবং ফলমূলে ব্যাপকভাবে বিষাক্ত রাসায়নিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উৎপাদন থেকে বাজারজাত প্রত্যেকটি পর্যায়ে বিষ মেশানো হচ্ছে খাদ্যে। উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা থাকলেও আদৌ মাঠে গিয়ে কৃষককে সচেতন করে তোলার মতো কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা যায় না।
পরিবেশ অধিদফতরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও পবার নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান বলেন, সকল খাদ্যদ্রব্যে বিষ ও ভেজালের ব্যাপকতার বিপরীতে সরকারের পদক্ষেপে ভোক্তা সাধারণের শঙ্কা কাটছে না। কৃৃষি খাতে গত ১০ বছরে বিষাক্ত কীটনাশকের ব্যবহার ৩২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পয়েছে। কীটনাশকজনিত বিষক্রিয়ায় নানা জটিল রোগ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। রাজধানী ঢাকা ফরমালিনমুক্ত করতে সরকার শুধু মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। কিন্তু উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তাপর্যায়ে নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করতে কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সরকারীভাবে উল্লেখযোগ্য কোন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। দেশের জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে বিষমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীর অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কীটনাশক ব্যবহারের তীব্রতা সবজিতে বেশি। বাংলাদেশ থেকে সবজি রফতানি কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার। সবজিতে বিষাক্ত রাসায়নিক অবশিষ্টাংশের প্রভাবে ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, চামড়ার রোগ এবং দীর্ঘমেয়াদে কিডনিসহ মানবদেহে বিভিন্ন রোগ তৈরি করতে পারে। কীটনাশকের দীর্ঘস্থায়ী বিষক্রিয়ায় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি কীটনাশক মাছ, পাখি এবং অনেক গাছপালা ধ্বংসের জন্যও দায়ী। কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, ইন্ট্রিগ্রেটেড পোস্ট ম্যানেজমেন্ট পন্থার ওপর ভিত্তি করে কীটনাশক ব্যবহারের বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেয়া না হলে এর ব্যবহার ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে।
তাদের মতে, দেশে এমনতিইে মৌসুমী ফলসহ অধিকাংশ খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল রয়েছে। মৌসুমী ফলে ফরমালিন মেশানোর প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এ কারণে জনস্বাস্থ্য হুমকির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু কৃষি খাতে এভাবে কীটনাশক মেশানোর কারণে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে কৃষিখাতে বিষাক্ত কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সময়োপযোগী কীটনাশক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া ফলসহ খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন রোধ করতে চাহিদা অনুযায়ী টিসিবির মাধ্যমে ফরমালিন আমদানি করতে হবে। এ ছাড়া পণ্য আমদানি পর্যায়ে এনবিআর কর্তৃক বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যাদিসহ ফরমালিন পরীক্ষা করা। রাসায়নিক দ্রব্যাদি, ফরমালিন, ক্যালসিয়াম কার্বাইড পরীক্ষা করার জন্য আধুনিক গবেষণাগার স্থাপন প্রয়োজন। কোন রকম রাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়াই আইন প্রয়োগে সরকারের প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
এ ছাড়া খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা প্রয়োজন। স্টকহোম কনভেনশন স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে ডিডিটি ও হেপ্টাক্লোরের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে জরুরীভিত্তিতে কার্যক্রম গ্রহণ করা। কীটপতঙ্গের হাত থেকে ফসল রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড পেস্ট ম্যানেজমেন্ট জোরদার করা ছাড়াও রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈবসার ব্যবহারে কৃষককে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা দেয়া প্রয়োজন।
http://allbanglanewspapers.com/janakantha/
No comments:
Post a Comment