Thursday, March 27, 2014

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির ফোন ট্যাপের অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির ফোন ট্যাপের অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য

এই সময়: কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি প্রতাপকুমার রায়ের মোবাইলে আড়ি পাতার অভিযোগ ঘিরে রাজ্য প্রশাসনে তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে৷ তিনি বর্তমানে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের (ক্যাট) কলকাতা বেঞ্চের প্রধান৷

অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস নজরুল ইসলামের পদোন্নতি সংক্রান্ত মামলায় তাঁর রায় রাজ্য সরকারের বিপক্ষে গিয়েছিল৷ আবার তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিভাগীয় তদন্তের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে নজরুল ইসলাম আরও একটি মামলা করেছিলেন ক্যাটে৷ ওই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা ৩১ মার্চ৷ সেই মামলাটি বর্তমানে প্রতাপবাবু এবং দিল্লির পাঠানো প্রশাসনিক সদস্য পিকে বসুর বেঞ্চে বিচারাধীন৷ বিচারপতি রায়ের বেঞ্চের নিরপেক্ষতা চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছে রাজ্য সরকার৷ দু'পক্ষের এই টানাপোড়েনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠানো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির এহেন অভিযোগ যথেষ্ট তাত্‍পর্যপূর্ণ৷ ক্যাটের রেজিস্ট্রার কে বিসওয়ালের মাধ্যমে মন্ত্রকে পাঠানো অভিযোগে প্রতাপবাবু আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তাঁর মোবাইলে গত কয়েক দিন ধরেই আড়ি পাতা হচ্ছে৷ তবে কে বা কারা আড়ি পাতছে, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট ভাবে কোনও অভিযোগ করেননি তিনি৷

বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন তত্‍কালীন বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ এনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ঘটনাচক্রে, তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধেও ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা৷ কিন্ত্ত একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে চিঠি নজিরবিহীন বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরে এ নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে৷ যদিও স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এক শীর্ষ আধিকারিক বৃহস্পতিবার বলেন, 'আমরা এ নিয়ে এখনও লিখিত ভাবে কিছু পাইনি৷ স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির ফোনে আড়ি পাতার কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি৷' প্রসঙ্গত, কারও ফোনে আড়ি পাততে হলে নির্দিষ্ট ফর্মে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের সই প্রয়োজন হয়৷

নজরুল ইসলামের পদোন্নতি সংক্রান্ত মামলায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রায়ের বেঞ্চ রাজ্য সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে৷ যদিও ক্যাটের নির্দেশের বিপক্ষে রায় দেয় হাইকোর্ট৷ এ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল৷ নজরুল ইসলামের অন্য মামলার শুনানিকে কেন্দ্র করে বিচারপতি রায় এবং পিকে বসুর বেঞ্চের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের 'সম্পর্কে'র অবনতি হয়৷ ক্যাট এই মামলায় মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যমন্ত্রীর সচিব গৌতম সান্যালকে তলব করে৷ মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব হাজির হলেও গৌতমবাবু ক্যাটে হাজিরা দেননি৷ বেঞ্চের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয় সরকার৷ হাইকোর্টের বিচারপতি নিশীথা মাত্রের বেঞ্চ এই মামলাটি শুনতে রাজি না-হওয়ায় তা প্রধান বিচারপতির বিবেচনার জন্য ফেরত যায়৷ প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হবে৷

No comments:

Post a Comment