বৌদি, তুমি এত রোম্যান্টিক, উচ্ছ্বাস দেবের
সুমন বটব্যাল
মেদিনীপুর: ঘাটাল তো মজেই ছিল, মজে আছেন দেবের বিরোধী প্রার্থীর বাড়ির লোকজনও৷ যে প্লেটে দেব রাবড়ি খেয়েছেন তার দিকে মাঝেমাঝেই তাকাচ্ছেন সিপিআই প্রার্থী সন্তোষ রাণার স্ত্রী ভারতী দেবী৷ হোক না বিরোধী প্রার্থী৷ দেব তো! রাজনৈতিক সৌজন্যের এমন ঘনঘোর ভাব রাজ্যে বোধহয় আর দেখা যায়নি৷
চব্বিশ ঘণ্টা পার৷ কিন্তু 'পাগলু-হ্যাংওভার' কাটেনি মেদিনীপুর শহরের বার্জটাউন পোড়াবাংলোর সি ব্লকে৷ এখনও চোখ বুঝলেই মঙ্গলবারের রাত্তিরটা ভেসে উঠছে রাণা পরিবারের সকলের চোখের সামনে৷ সামনে দাঁড়িয়ে ম্যাটিনি আইডল হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন৷ কখনও শেকহ্যান্ড, কখনও বাচ্চাদের গাল টিপে দেওয়া, কখনও ফুল নেওয়া - নায়ক তো নয়, যেন কল্পতরু! বিশ্বাস হচ্ছে না সিপিআই প্রার্থীর বাড়ির লোকেদের৷ বারবার অবাক হয়ে রাবড়ির বাটি আর চায়ের সসপ্যানের দিকে তাকাচ্ছেন ভারতীদেবী৷ প্লেটটা ধোওয়া হয়েছে তো!
সকাল থেকে ফোনে ফোনে তাঁর হাল খারাপ৷ আত্মীয়স্বজনের মুখে একটাই কথা, 'ভারতী তুমিও তো সেলিব্রিটি হয়ে গেলে! যাকে তাকে নয়, এক নম্বর নায়ককে নিজের হাতে রেঁধে খাওয়ালে?' শুনতে শুনতে কেমন ঘোর লাগছে৷ তার মধ্যেই পাড়ার লোকের কৌতূহল, মিডিয়ার নিরন্তর ছবির অনুরোধও রাখতে হচ্ছে৷ সব মিলিয়ে রাণা পরিবারের কর্ত্রী এখন দেবাচ্ছন্ন! তবে শুধু কর্ত্রীই বা কেন? পরিবারের কর্তা, স্বয়ং প্রার্থীই বা কম কীসে? দেবের সঙ্গে দেখা করে আপ্লূত পোড়খাওয়া রাজনীতিকও৷ ভোটের খাতিরে আবেগ প্রকাশে খানিকটা সংযত বটে, তবু সুযোগ পেলেই বলে ফেলছেন, 'দেব সত্যি খুব ভালো ছেলে৷ তৃণমূলের সকলের চেয়ে একদম আলাদা৷'
অবাক হওয়ার মতো কথাই তো বটে! সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন কাণ্ডকারখানা দেখে চোখ ছানাবড়া হয়েছে জেলা রাজনীতির দুঁদে নেতাদেরও৷ যেখানে ভোট মানেই শাসক-বিরোধীর মধ্যে দাঙ্গা আর মারপিট, বোমাবাজি আর খুন জখম, সেখানে কিনা প্রতিপক্ষের বাড়িতে গিয়ে নিমন্ত্রণ খাওয়া? তাতে আবার প্রতিপক্ষের মুখে কান-এঁটো করা হাসি? এ সব হচ্ছেটা কী? কিন্ত্ত হচ্ছে যে, সে তো দেখাই যাচ্ছে৷ আর রুপোলি পর্দার এমনই জাদু যে প্রার্থী সন্তোষ রাণা থেকে সিপিএম জেলা সম্পাদক দীপক সরকার, তৃণমূল বিধায়ক শঙ্কর দোলুই থেকে সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া সকলেই একবাক্যে মানছেন, রাজনীতিতে এক নতুন ধারার জন্ম দিলেন দীপক অধিকারী৷ তা হলে কি এ বার ব্র্যান্ডেড সিপিএম-বাড়ি থেকেও ভোটগুলো যাবে তৃণমূলের ঝুলিতেই? সন্তোষবাবুর সাবধানী জবাব, 'ভালোবাসা আর ভোট তো এক নয়৷ সেখানে সহজে ফাটল ধরবে না৷ আগেও বলছি, এখনও বলছি, অভিনয়ের জগতে দেব সেরা৷ ওর অভিনয় ভালো লাগে, দেখি৷ কাল ওকে মানুষ হিসেবেও দেখলাম৷ খুব ভালো ছেলে৷'
তবে সবথেকে উচ্ছ্বসিত সম্ভবত সন্তোষবাবুর স্ত্রী ভারতীদেবীই, যাঁর হাত থেকে গোলাপফুল নিয়ে দেব বলেছেন, 'উফ বৌদি, ভাবিনি তুমি এত রোম্যান্টিক! তোমার দেওয়া এই গোলাপটাই আমার আশীর্বাদ৷' যাঁর হাতের চা, রাবড়ি, হালুয়া চেটেপুটে খেয়েছেন নায়ক৷ স্বামীর সঙ্গে সরাসরি টক্কর যাঁর, তাঁকে নিয়ে বুধবারও আহ্লাদ গোপন করতে পারলেন না ভারতী৷ বললেন, 'এত ভালো ছেলে সত্যি আগে দেখিনি৷ কে বলবে ওর সঙ্গে প্রথম পরিচয় হল? কথা বলার সময় মনে হচ্ছিল যেন কতদিনের সম্পর্ক! বিলিভ মি, ওর মতো স্টারকে এত কাছ থেকে দেখতে পাব, আড্ডা দেব ভাবতেই পারিনি৷ আসলে কী জানেন, মানুষকে দূর থেকে এক রকম লাগে৷ কাছে এলে অন্য রকম৷ দেবও তাই৷ তৃণমূল দলটা নীতিহীন জানি৷ অন্যরা খারাপ৷ কিন্ত্ত দেব ব্যতিক্রমী৷ সত্যি ওর মতো কেউ নেই৷' ভারতীদেবীর বড় ছেলে আবির, ছোট ছেলে অভিষেক, বড় বৌমা নিমা সকলেই একমুখ হেসে স্বীকার করছেন, 'রোমিও' তাঁদের মনে পাকা জায়গা করে নিয়েছেন৷ এমনকি সাড়ে চার বছরের নাতনি সোনাইও আধো আধো স্বরে গপ্পো শোনাচ্ছে - ' আমাকে কোলে নিয়ে পাগলু বলল, তুমি খুব সুইট৷ আমি বললাম পাগলু তুমিও!'
মেদিনীপুর: ঘাটাল তো মজেই ছিল, মজে আছেন দেবের বিরোধী প্রার্থীর বাড়ির লোকজনও৷ যে প্লেটে দেব রাবড়ি খেয়েছেন তার দিকে মাঝেমাঝেই তাকাচ্ছেন সিপিআই প্রার্থী সন্তোষ রাণার স্ত্রী ভারতী দেবী৷ হোক না বিরোধী প্রার্থী৷ দেব তো! রাজনৈতিক সৌজন্যের এমন ঘনঘোর ভাব রাজ্যে বোধহয় আর দেখা যায়নি৷
চব্বিশ ঘণ্টা পার৷ কিন্তু 'পাগলু-হ্যাংওভার' কাটেনি মেদিনীপুর শহরের বার্জটাউন পোড়াবাংলোর সি ব্লকে৷ এখনও চোখ বুঝলেই মঙ্গলবারের রাত্তিরটা ভেসে উঠছে রাণা পরিবারের সকলের চোখের সামনে৷ সামনে দাঁড়িয়ে ম্যাটিনি আইডল হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন৷ কখনও শেকহ্যান্ড, কখনও বাচ্চাদের গাল টিপে দেওয়া, কখনও ফুল নেওয়া - নায়ক তো নয়, যেন কল্পতরু! বিশ্বাস হচ্ছে না সিপিআই প্রার্থীর বাড়ির লোকেদের৷ বারবার অবাক হয়ে রাবড়ির বাটি আর চায়ের সসপ্যানের দিকে তাকাচ্ছেন ভারতীদেবী৷ প্লেটটা ধোওয়া হয়েছে তো!
সকাল থেকে ফোনে ফোনে তাঁর হাল খারাপ৷ আত্মীয়স্বজনের মুখে একটাই কথা, 'ভারতী তুমিও তো সেলিব্রিটি হয়ে গেলে! যাকে তাকে নয়, এক নম্বর নায়ককে নিজের হাতে রেঁধে খাওয়ালে?' শুনতে শুনতে কেমন ঘোর লাগছে৷ তার মধ্যেই পাড়ার লোকের কৌতূহল, মিডিয়ার নিরন্তর ছবির অনুরোধও রাখতে হচ্ছে৷ সব মিলিয়ে রাণা পরিবারের কর্ত্রী এখন দেবাচ্ছন্ন! তবে শুধু কর্ত্রীই বা কেন? পরিবারের কর্তা, স্বয়ং প্রার্থীই বা কম কীসে? দেবের সঙ্গে দেখা করে আপ্লূত পোড়খাওয়া রাজনীতিকও৷ ভোটের খাতিরে আবেগ প্রকাশে খানিকটা সংযত বটে, তবু সুযোগ পেলেই বলে ফেলছেন, 'দেব সত্যি খুব ভালো ছেলে৷ তৃণমূলের সকলের চেয়ে একদম আলাদা৷'
অবাক হওয়ার মতো কথাই তো বটে! সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন কাণ্ডকারখানা দেখে চোখ ছানাবড়া হয়েছে জেলা রাজনীতির দুঁদে নেতাদেরও৷ যেখানে ভোট মানেই শাসক-বিরোধীর মধ্যে দাঙ্গা আর মারপিট, বোমাবাজি আর খুন জখম, সেখানে কিনা প্রতিপক্ষের বাড়িতে গিয়ে নিমন্ত্রণ খাওয়া? তাতে আবার প্রতিপক্ষের মুখে কান-এঁটো করা হাসি? এ সব হচ্ছেটা কী? কিন্ত্ত হচ্ছে যে, সে তো দেখাই যাচ্ছে৷ আর রুপোলি পর্দার এমনই জাদু যে প্রার্থী সন্তোষ রাণা থেকে সিপিএম জেলা সম্পাদক দীপক সরকার, তৃণমূল বিধায়ক শঙ্কর দোলুই থেকে সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া সকলেই একবাক্যে মানছেন, রাজনীতিতে এক নতুন ধারার জন্ম দিলেন দীপক অধিকারী৷ তা হলে কি এ বার ব্র্যান্ডেড সিপিএম-বাড়ি থেকেও ভোটগুলো যাবে তৃণমূলের ঝুলিতেই? সন্তোষবাবুর সাবধানী জবাব, 'ভালোবাসা আর ভোট তো এক নয়৷ সেখানে সহজে ফাটল ধরবে না৷ আগেও বলছি, এখনও বলছি, অভিনয়ের জগতে দেব সেরা৷ ওর অভিনয় ভালো লাগে, দেখি৷ কাল ওকে মানুষ হিসেবেও দেখলাম৷ খুব ভালো ছেলে৷'
তবে সবথেকে উচ্ছ্বসিত সম্ভবত সন্তোষবাবুর স্ত্রী ভারতীদেবীই, যাঁর হাত থেকে গোলাপফুল নিয়ে দেব বলেছেন, 'উফ বৌদি, ভাবিনি তুমি এত রোম্যান্টিক! তোমার দেওয়া এই গোলাপটাই আমার আশীর্বাদ৷' যাঁর হাতের চা, রাবড়ি, হালুয়া চেটেপুটে খেয়েছেন নায়ক৷ স্বামীর সঙ্গে সরাসরি টক্কর যাঁর, তাঁকে নিয়ে বুধবারও আহ্লাদ গোপন করতে পারলেন না ভারতী৷ বললেন, 'এত ভালো ছেলে সত্যি আগে দেখিনি৷ কে বলবে ওর সঙ্গে প্রথম পরিচয় হল? কথা বলার সময় মনে হচ্ছিল যেন কতদিনের সম্পর্ক! বিলিভ মি, ওর মতো স্টারকে এত কাছ থেকে দেখতে পাব, আড্ডা দেব ভাবতেই পারিনি৷ আসলে কী জানেন, মানুষকে দূর থেকে এক রকম লাগে৷ কাছে এলে অন্য রকম৷ দেবও তাই৷ তৃণমূল দলটা নীতিহীন জানি৷ অন্যরা খারাপ৷ কিন্ত্ত দেব ব্যতিক্রমী৷ সত্যি ওর মতো কেউ নেই৷' ভারতীদেবীর বড় ছেলে আবির, ছোট ছেলে অভিষেক, বড় বৌমা নিমা সকলেই একমুখ হেসে স্বীকার করছেন, 'রোমিও' তাঁদের মনে পাকা জায়গা করে নিয়েছেন৷ এমনকি সাড়ে চার বছরের নাতনি সোনাইও আধো আধো স্বরে গপ্পো শোনাচ্ছে - ' আমাকে কোলে নিয়ে পাগলু বলল, তুমি খুব সুইট৷ আমি বললাম পাগলু তুমিও!'
http://eisamay.indiatimes.com/state/boudi-u-r-so-romantic-says-dev/articleshow/32763101.cms?
No comments:
Post a Comment