Wednesday, March 26, 2014

প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে চাপান-উতোর, কমিশন-সরকার দ্বৈরথ

প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে চাপান-উতোর, কমিশন-সরকার দ্বৈরথ

moili
বেঙ্গালুরু: নির্বাচনের আগে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম না বাড়ানোর যে নির্দেশ নির্বাচন কমিশন দিয়েছে, তা নিয়ে সলিসিটর জেনারেল বা অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলবে সরকার৷ মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে এ কথা জানিয়েছেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী এম বীরাপ্পা মইলি৷ প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা হবে বলে সরকার যে ঘোষণা করেছিল, ভোটপর্ব শেষ হওয়ার আগে তা না করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন৷

মইলি বলেন, 'আমরা এটি (কমিশনের নির্দেশ) বিবেচনা করে দেখছি, কারণ বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেও রয়েছে৷ আমরা সলিসিটর জেনারেল বা অ্যাটর্নি জেনারেলকে বিষয়টি বিবেচনা করতে বলব৷ এ ব্যাপারে আমি আর কোনও মন্তব্য করব না৷' বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ১ এপ্রিল পরবর্তী শুনানি৷

আগামী মাস থেকেই প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম প্রতি ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিটে ৪.২ ডলার থেকে বাড়িয়ে ৮.৩ ডলার করার কথা৷ কিন্ত্ত এই সিদ্ধান্ত রিলায়েন্সের পক্ষে যাওয়ায় তার বিরোধিতা করে আম আদমি পার্টি৷ দিল্লির ৪৮ দিনের আপ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এ নিয়ে মইলি, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও সংস্থার প্রধান মুকেশ আম্বানির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেন ও নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেন যাতে তারা এ ব্যাপারে ছাড়পত্র না দেয়৷

প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করলে রিলায়েন্সের মতো বেসরকারি সংস্থাগুলি সুবিধা পাবে বলে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া পিছিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন৷ তবে মইলির বক্তব্য, সরকার ইতিমধ্যেই দাম ঘোষণা করেছে৷ এখন দাম বাড়ানো পিছিয়ে দিলে দেশের বিনিয়োগের পরিবেশে, মূলত তেল ক্ষেত্রে, তা প্রভাব ফেলবে৷

মইলি বলেন, উত্‍পাদনে প্রভাব পড়লে তার জেরে ভর্তুকির পরিমাণ ঊর্ধ্বমুখী হবে৷ তাঁর কথায়, 'যতক্ষণ উত্‍পাদন না হবে, ততক্ষণ গ্যাসও পাওয়া যাবে না, আমদানিতে খরচ হবে ১৫ থেকে ১৮ ডলার (প্রতি ব্যারেল)৷ অর্থাত্‍ বলা যায়, আমাদের আমদানির উপরেই ভরসা করতে হবে এবং সে জন্য বেশি দাম দিতে হবে৷ এর মানে ভর্তুকি বাড়বে৷' নিয়ম মেনেই রঙ্গরাজন কমিটির সুপারিশ সরকার মেনে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তিনি জানান৷ রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ কৃষ্ণা গোদাবরী অববাহিকায় যে গ্যাস উত্‍পাদন করে সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ এ মাসেই সরকারের সঙ্গে রিলায়েন্সের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে৷

তাঁর কথায়, উত্‍পাদন কমলে ভারত অন্য দেশের 'ক্রীতদাসে' পরিণত হবে৷ মইলি বলেন, 'উত্‍পাদন বন্ধ হলে গ্যাসও মিলবে না৷ এর ফলে প্রতি ব্যারেল গ্যাস আমদানিতে ১৫ থেকে ১৮ ডলার বেশি খরচ হবে৷ অর্থাত্‍, আমদানির উপর নির্ভর করে আমাদের থাকতে হবে৷ ফলে ভর্তুকি বাবদ খরচও বাড়বে৷' তিনি বলেন রঙ্গরাজন কমিটির সুপারিশ মেনে সম্পূর্ণ বিষয়টি খতিয়ে দেখে ও নির্ধারিত পদ্ধতি মেনেই সরকার গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷'

তাঁর মতে, 'তেলের দাম নির্ধারণ করে যে ওপেক (তেল উত্‍পাদন ও রপ্তানিকারী দেশের সংগঠন), তাতে ভারতের কোনও প্রতিনিধিত্ব নেই৷ তারা যে দাম বলে, আমাদের সেই দামই দিতে হয়৷ আমদানিকৃত দাম দাঁড়ায় ১৮ থেকে ১৯ ডলারে (প্রতি ব্যারেল)৷ এক কথায় এটা মারাত্মক৷'

No comments:

Post a Comment