পুরুষশূন্য আমডাঙায় মহিলাদের পাশে সুভাষিণী
অতনু দাস
বারাসত: বছর চারেকের জাকির সন্ধ্যায় দাওয়ায় এসে বসে৷ হাতে খেলনা বন্দুক৷ জিজ্ঞাসা করলে বলে, 'মাকে পাহারা দিচ্ছি৷ পুলিশ এলেই গুলি করে দেব৷' এমন ছোট্ট শিশুরা ছাড়া আমডাঙার বঁইচগাছা আর টেঙাটেঙি গ্রামে সন্ধ্যার পর কোনও পুরুষ থাকে না৷ অভিযোগ, সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপর নাগাড়ে অত্যাচার করছে পুলিশ৷ সেই অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছেন না মহিলারাও৷ মাঠ থেকে দূরে তাঁবু খাটিয়ে কোনওরকমে রাত কাটাচ্ছেন পুরুষরা৷ তাঁবুতেই লম্ফের আলোয় পরীক্ষার প্রস্ত্ততি নিচ্ছে পরীক্ষার্থীরা৷ সেই গ্রামে গিয়ে ব্যারাকপুরের বাম প্রার্থী সুভাষিণী আলি মহিলাদের সঙ্গে ভোট চাইতে পারলেন না৷ শুধু নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে গেলেন৷
গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই উত্তপ্ত আমডাঙার এই দুই গ্রাম৷ ভোটের ঠিক আগের দিন বঁইচগাছায় সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষের জেরে ভাঙচুর হয় প্রায় দু'শো ঘরবাড়ি৷ আক্রান্ত হয় পুলিশও৷ এরপর নির্বাচনের দিন রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে টেঙাটেঙি৷ তৃণমূল সমর্থকদের ছোঁড়া বোমায় মৃত্যু হয় মাদার আলি বক্স নামে এক সিপিএম কর্মীর৷ এরপর দুটো বুথে পুনর্নির্বাচন হয়৷ অভিযুক্ত দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার বঁইচগাছায় ফের আক্রান্ত হয় পুলিশ৷ জখম পাঁচ পুলিশ কর্মীর মধ্যে এক মহিলা কনস্টেবল এখনও হাসপাতালে ভর্তি৷ জানা গিয়েছে, এরপরই জেলা পুলিশ বিশাল বাহিনী নিয়ে এলাকা জুড়ে তল্লাশি শুরু করেছে৷ ফলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গেলেও তার দায় নিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে৷ অভিযোগ, বেছে বেছে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে পুলিশ৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রামে গিয়ে মেলেনি কোনও পুরুষের খোঁজ৷ মহিলারাও আতঙ্কে কথা বলতে চাননি৷ বুধবার দুপুরে তাঁরা বেরিয়ে এলেন৷ মুসকুরা বিবি জানান, গত শুক্রবার মাঝরাতে তাঁর ঘরে ঢুকে মশারি লণ্ডভণ্ড করেছে পুলিশ৷ ঘরের জিনিসপত্র ছঁুড়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে৷ কারণ জানতে চাওয়ায় পুলিশ অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে তাঁকে মারধর করেছে৷ সায়নারা বিবি জানান, পুলিশ বাড়ির নিরীহ লোককেও মারধর করছে৷ তাই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁরা৷
আর্জিনা বিবি বলেন, 'ছেলেরাও পড়াশুনো বন্ধ রেখে মাঠের গোপন তাঁবুতে রাত কাটাচ্ছে৷'
বাড়িতে থাকতে পারছে না আমীর হোসেন, দিলবয় পেয়াদা, রাকেশ মণ্ডলরা৷ একাদশ বা দ্বাদশ শ্রেণির এই পরীক্ষার্থীরা আত্মীয়ের বাড়িতে থেকেই পরীক্ষা দিচ্ছে৷ কিন্ত্ত তেমন উপায় নেই আজাহার মণ্ডলের৷ মাধবপুর হাই স্কুল থেকে সে উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে৷ সিট পড়েছে মিরহাটি হাই স্কুলে৷ কাছে পিঠে তার কোনও আত্মীয়ের বাড়ি নেই৷ তাই গোপন তাঁবুতে বসেই পড়াশুনো করছে৷ বুধবার দুপুরে গ্রামে গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বললেন সিপিএম প্রার্থী সুভাষিণী আলি৷ জাহানারা খাতুন নামে এক একাদশের ছাত্রী তার কাছে আবেদন করে, 'আমরা যাতে পড়াশুনো করতে পারি, তার ব্যবস্থা করে দিন৷' তার অভিযোগ, পুলিশ আর তৃণমূল নেতা রফিকার-সিরাজরা ওদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে৷ এদিন, সুভাষিণী ওদের বক্তব্য নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন৷ সন্ধ্যায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতা সম্রাট তপাদার গ্রাম দুটিতে গিয়ে কথা বলেন ভুক্তভোগীদের সঙ্গে৷ তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে পুলিশ৷ তিনিও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাবেন বলে জানান৷ যদিও তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক ও রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাদের বাড়িতেই তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ৷' এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্কে নেই বলে দাবি তাঁর৷ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, 'সব অভিযোগ ভিত্তিহীন৷ পুলিশ শুধুমাত্র দাগী দুষ্কৃতীদের বাড়িতেই তল্লাশি করছে৷'
বারাসত: বছর চারেকের জাকির সন্ধ্যায় দাওয়ায় এসে বসে৷ হাতে খেলনা বন্দুক৷ জিজ্ঞাসা করলে বলে, 'মাকে পাহারা দিচ্ছি৷ পুলিশ এলেই গুলি করে দেব৷' এমন ছোট্ট শিশুরা ছাড়া আমডাঙার বঁইচগাছা আর টেঙাটেঙি গ্রামে সন্ধ্যার পর কোনও পুরুষ থাকে না৷ অভিযোগ, সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপর নাগাড়ে অত্যাচার করছে পুলিশ৷ সেই অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছেন না মহিলারাও৷ মাঠ থেকে দূরে তাঁবু খাটিয়ে কোনওরকমে রাত কাটাচ্ছেন পুরুষরা৷ তাঁবুতেই লম্ফের আলোয় পরীক্ষার প্রস্ত্ততি নিচ্ছে পরীক্ষার্থীরা৷ সেই গ্রামে গিয়ে ব্যারাকপুরের বাম প্রার্থী সুভাষিণী আলি মহিলাদের সঙ্গে ভোট চাইতে পারলেন না৷ শুধু নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে গেলেন৷
গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই উত্তপ্ত আমডাঙার এই দুই গ্রাম৷ ভোটের ঠিক আগের দিন বঁইচগাছায় সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষের জেরে ভাঙচুর হয় প্রায় দু'শো ঘরবাড়ি৷ আক্রান্ত হয় পুলিশও৷ এরপর নির্বাচনের দিন রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে টেঙাটেঙি৷ তৃণমূল সমর্থকদের ছোঁড়া বোমায় মৃত্যু হয় মাদার আলি বক্স নামে এক সিপিএম কর্মীর৷ এরপর দুটো বুথে পুনর্নির্বাচন হয়৷ অভিযুক্ত দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার বঁইচগাছায় ফের আক্রান্ত হয় পুলিশ৷ জখম পাঁচ পুলিশ কর্মীর মধ্যে এক মহিলা কনস্টেবল এখনও হাসপাতালে ভর্তি৷ জানা গিয়েছে, এরপরই জেলা পুলিশ বিশাল বাহিনী নিয়ে এলাকা জুড়ে তল্লাশি শুরু করেছে৷ ফলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গেলেও তার দায় নিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে৷ অভিযোগ, বেছে বেছে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে পুলিশ৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রামে গিয়ে মেলেনি কোনও পুরুষের খোঁজ৷ মহিলারাও আতঙ্কে কথা বলতে চাননি৷ বুধবার দুপুরে তাঁরা বেরিয়ে এলেন৷ মুসকুরা বিবি জানান, গত শুক্রবার মাঝরাতে তাঁর ঘরে ঢুকে মশারি লণ্ডভণ্ড করেছে পুলিশ৷ ঘরের জিনিসপত্র ছঁুড়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে৷ কারণ জানতে চাওয়ায় পুলিশ অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে তাঁকে মারধর করেছে৷ সায়নারা বিবি জানান, পুলিশ বাড়ির নিরীহ লোককেও মারধর করছে৷ তাই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁরা৷
আর্জিনা বিবি বলেন, 'ছেলেরাও পড়াশুনো বন্ধ রেখে মাঠের গোপন তাঁবুতে রাত কাটাচ্ছে৷'
বাড়িতে থাকতে পারছে না আমীর হোসেন, দিলবয় পেয়াদা, রাকেশ মণ্ডলরা৷ একাদশ বা দ্বাদশ শ্রেণির এই পরীক্ষার্থীরা আত্মীয়ের বাড়িতে থেকেই পরীক্ষা দিচ্ছে৷ কিন্ত্ত তেমন উপায় নেই আজাহার মণ্ডলের৷ মাধবপুর হাই স্কুল থেকে সে উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে৷ সিট পড়েছে মিরহাটি হাই স্কুলে৷ কাছে পিঠে তার কোনও আত্মীয়ের বাড়ি নেই৷ তাই গোপন তাঁবুতে বসেই পড়াশুনো করছে৷ বুধবার দুপুরে গ্রামে গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বললেন সিপিএম প্রার্থী সুভাষিণী আলি৷ জাহানারা খাতুন নামে এক একাদশের ছাত্রী তার কাছে আবেদন করে, 'আমরা যাতে পড়াশুনো করতে পারি, তার ব্যবস্থা করে দিন৷' তার অভিযোগ, পুলিশ আর তৃণমূল নেতা রফিকার-সিরাজরা ওদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে৷ এদিন, সুভাষিণী ওদের বক্তব্য নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন৷ সন্ধ্যায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতা সম্রাট তপাদার গ্রাম দুটিতে গিয়ে কথা বলেন ভুক্তভোগীদের সঙ্গে৷ তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে পুলিশ৷ তিনিও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাবেন বলে জানান৷ যদিও তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক ও রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাদের বাড়িতেই তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ৷' এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্কে নেই বলে দাবি তাঁর৷ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, 'সব অভিযোগ ভিত্তিহীন৷ পুলিশ শুধুমাত্র দাগী দুষ্কৃতীদের বাড়িতেই তল্লাশি করছে৷'
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/copy-on-subhashini-ali/articleshow/32315098.cms
No comments:
Post a Comment