Monday, March 10, 2014

বাতাসে বাতাসে বিষকণা বিষকণায় ক্যানস্যার ধর্মোন্মাদ

বাতাসে বাতাসে বিষকণা
বিষকণায় ক্যানস্যার
ধর্মোন্মাদ

পলাশ বিশ্বাস


বাতাসে বাতাসে বিষকণা
বিষকণায় ক্যানস্যার
ধর্মোন্মাদ


পরিবেশ দুষণে কারও মাথাব্যথা
হওয়ার নয় তবু বাতাসে বাতাসে
বিষকণা
বিষকণায় ক্যানস্যার

অখ্যাত গ্রাম জেলা উন্নাও
সাধুর স্বপ্নাদেশ
হয়ে যায়  সোনার কেল্লা

পিপলী লাইভ সরাসরি
স্বপ্নাদেশ নিয়ে
খনন শুরু ইতিহাসের

এই দেশে বাস করি আমরা
দাস ভূমি দাসভূমি দাসভূমি

সারা দুনিয়ায় সবচেয়ে
বেশি মানুষ আজও দাস
দাসপ্রথা আজও চালু

খোলা বাজারে বিকোচ্ছে দাস
ডিজিটাল বাযোমেট্রিক

ওয়ান থার্ড ভারতবর্ষ
শরণার্থী আজ

দেশ ভাগের পর
উন্নয়ণে, সবুজায়নে

ভারতনির্মাণে
ভারত উদয়ে
আর্থিক সংস্কারে
বেসরকারিকরণে

ডিসইনভেস্টমেন্ট
অসংবৈধানিক
আধার কার্ডে
এফডিআই এ

সেজ আণবিক চুল্লিতে
জৈব বীজ জৈব সারে
ইন্ডাস্ট্রিয়্যাল করিডোরে
স্বর্ণিম রাজপথে
টোল প্লাজায়
শপিং মলে

খোলা বাজারের
করপোরেট জায়নবাদী
নিরন্কুশ ধর্মোন্মাদে

প্রতি একজনা
তিন জনের মধ্যে
আজ ইন্টারন্যাল রিফুইজি

সব কটি
আদিবাসী এলাকার বিরুদ্ধে
রাষ্ট্রের যুদ্ধঘোষণা

অস্পৃশ্য ভূগোলে
ইতিহাসের সৈণ্য শাসণ
সশস্ত্র সৈন্য বিশেষাধিকার
ধর্ষণের,হত্যার

অস্পৃশ্য ভুগোলের
প্রতিটি নাগরিক
অসুর মহিসাসুর
রং ভেদে ধর্মের
জয় জয়কার

রাশ্ট্রশক্তি
অখন্ড মহিষমর্দিনী
পারমাণবিক
অস্পৃশ্য ভূগোল
মহিষাসুর যুগে যুগে

ধর্ম রক্ষার্থে
ক্ষমতা দখলে
একচেটিয়া আগ্রাসনে
যুগে যুগে অবতার
মনমোহন অবতার

বিদেশি পুঁজি অবাধ
নিরন্কুশ করপোরেট রাজ
বিল্ডার রাজ
মাফিযা রাজ

কয়লা খেলে
রং সবচেয়ে পরিস্কার
তেল পান করলে
রং ইংরেজ
দিকে দিকে
রংরেজ

পাড়ার পাঁচু
চুরির দায়ে
ধরা পড়লে
সোজা গণ ধোলাই

রাষ্ট্রনেতারা ধরা
পড়লে হয়ত লালূর মতোই
জেল,নয়ত ক্ষমতায় নির্বাসন

আম্বানি,বিড়লা,জিন্দাল,টাটা
ধরা পড়লে সরাসরি
এফআইআর ইকোনোমির বিরুদ্ধে

রেটিং ধড়াম
শেয়ার বাজার ধড়াম
উন্নয়ন সুচক ধড়াম

আইন রাস্তা বদলে
নিজের কাজ করে চলে
আমরা স্বস্তিতে অবশেষে

করপোরেট রাজ চলছে
বিনোদন চলছে
ধর্মোন্মাদ চলছে

তোমার ঘরে
বাস করে
কয়জনা
সবাই মহাজন


দেদার পেশিশক্তি
দেদার বেহিসাব
কাঁচা টাকা

বিষকণা বিষকণা
বিষকণায় অভ্যস্ত
এই বধ্যভূমি অনন্ত
এই দাসভূমি অনন্ত

রাজকার্য ধার্মিক
আস্থা উত্সব
পুজো বিনোদন

পুজো করপোরেট
পুজো বাজার
পুজো নিঃশব্দ
ঘৃণা অভিযান

যেমন উন্নাও
খনন অভিযান
সরাসরি প্রসারণ

টিভির পর্দা
ফ্যাশন প্যারেড
ধারাবাহিক

জাপানী তেলের
বিগ্য়াপন
প্রতিটি শিরোণাম
ঘোষণার পর
ঘোষমার আগে

এত জাপানী তেল দিলে
কামদুনি না হয়ে
কি আর হবে বলুন

মানুষ কন্ডোম হয়ে
চলে অলীলায়
প্রযুক্ত প্রযুক্তির
রমরমা

আমরা উইজেট
আমারা গেজেট
আমরা টুল

আমরা দাস
আমরা শরণার্থী
আমরা ডিজিটাল

আমরা বায়োমেট্রিক
আমরা অনলাইন
আমরা বধ্য

আমরা অসুর
আমরা মহিষাসুর

দেবি জলে চলে যায়
জল থাকে ডাঙ্গায়
জৈব দুর্দশা কাণায়
খানায়  বিষকণায়

আমরা ব্যবহ্রত
আমরা অভ্যস্ত

অভ্যস্ত গণ ধর্ষণে
অভ্যস্ত গণ সংহারে
অভ্যস্ত ধর্মীয় উন্মাদণায়

অভ্যস্ত অঘোষিত
সাম্প্রদায়িকতায়

অভ্যস্ত জাতপাতে
অভ্যস্ত পুরোহিতের
অশুদ্ধ সংস্কৃত
উছ্চারণে

অভ্যস্ত জল চলাচলে
অভ্যস্ত মোসাহেবিতে
অভ্যস্ত প্রতিনিয়ত
ভয়াদোহনে,সন্ত্রাসে

বিনা প্রতিবাদ
আমরা সোচ্চার শ্লোগানে
আমরা সোচ্চার মিছিলে

বিরিয়াণির ভাগ নিয়ে
কাড়কাড়ি,একচেটিয়া
আধিপাত্য পরিবর্তন
হয়না কখনো

তবু পরিবর্তন আসে
আমরা হারমাদ তাড়াই
আমরা হারমাদ নিয়ে
লিভ ইন করি

আমরা অভ্যস্ত হারমাদে
হারমাদের রং পাল্টে যায়
আমরা ভাবি, বাহ
এই ত পরিবর্তন

রাজধানী বদলে যায়
আমরা প্রত্যাশা করি
নিয়তি বদলে যাবে

কর্মফলের নিয়তি
শুদ্ধ অশুদ্ধ বিশুদ্ধ
আমরা ভাগ ভাগ
আমরা দাস দাস দাস

গণতন্ত্রে
আইন আছে
শাসন আছে
আইনের শাসন নেই

সংবিধান আছে
অবশ্য পাঠ্য সংবিধান
এই সংবিধান
প্রতি মুহুর্তে

আততায়ীর
একচেটিয়া আগ্রাসণে
ক্রুশবিদ্ধ,আমরা
শুধু যীশুর মুখ দেখতে পাই

আমরা শুধু নীরার হাত
দেখতে পাই
সেই হাত ছুঁয়ে
থাকতে চাই

সুখে দুঃখে
গভীর অসুখের সময়
বিপর্যয়ে অনাহারে

বেকারত্বের গহণ জ্বালায়
অনিশ্চিত ভবিষ্যতের
অন্ধেকারে তলিয়ে যেতে যেতে

আত্মহত্যার বিকল্প নির্বাচনে
তবু বিনোদন চাই
শুধুই বিনোদন

রাত দিন সাত দিন
চব্বিশ ঘন্টা
শুধু বিনোদন

শুধু বিনোদন
শুধু কন্ডোম

শুধু কন্ডোম
শুধু জাপানী তেল

শুধু জাপানী তেল
অসুর মহিসাসুর বধ
চলতেই থাকে

অসুরের বাবা
অসুরের মা
অসুর নিজে
কিচ্ছু টের পায়না

নরবলি চলতে থাকে
আমরা চিত্কার করে বলি
রাজনৈতিক সন্ত্রাস

নরবলি চলতে থাকে
আমরা চিত্কার করে বলি
ধর্মীয় উত্সব

নরবলি চলতে থাকে
আমরা চিত্কার করে বলি
বাঙালির জাতিসত্বা

ইতিহাস বদল হয়না
বার বার ফিরে
আসে ইতিহাস

দেশভাগের রক্তঝরা
দিনগুলি
সত্তর দশকের

বৈপল্বিক স্বপ্ন
বার বার ফিরে আসে

ফিরে আসে নির্মম নির্যাতন
যাতনা যতরকম
জীবনযাপনে দহন
শ্বাস প্রশ্বাসে বিষকণা

ফিরে আসে যুদ্ধ
গৃহযুদ্ধ ফিরে ফিরে
আসে বার বার

কখনো মরিচঝাঁপি
কখনো নন্দীগ্রাম
কখনো জঙ্গলমহল
নক্সাল বাড়ি হয়ে যায়

বুটের শব্দে
আততায়ীর পদক্ষেপে
বেযনটের ডগায়
বাঁধা হয়ে তাকে
গণতন্ত্র চিরদিন

গণতন্ত্র শুধুই বুঝি
পতাকার রং
মানুষের মন নেই
মানুষজীবন নেই
ন্যায় অন্যায়
সাম্যঅসাম্য
কিছুই নেই গণতন্ত্রে

গণতন্ত্র শুধুই
পুরোহিতের ভূল
উচ্চারণে
মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাপটে

প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে
মোড়ে মোড়ে
রবীন্দ্র সঙ্গীতের বদলে
জায়কাবদল টন্ডীপাঠ

ফিরে আসে কাঁটা তার
বার বার বার
ফিরে আসে দেশ ভাগ
বার বার বার

ইতিহাসের সাম্রাজ্যে
শরণার্থী ভুগোল
ইতিহাসের
একচেটিয়া আধিপাত্যে
আমরা দাস দাস দাস


গোবলয়ে গোল্ড রাশ
অনির্বাণ ঘোষ


উন্নাও (উত্তরপ্রদেশ): হাট, মেলা, নাকি রাজনৈতিক মসিহার জনসভা---গুলিয়ে যাওয়ার জোগাড়৷ মাটি খুঁড়ে হাজার টন সোনা মিলবে কি না, জানা নেই৷ কিন্ত্ত রাতারাতি 'পিপলি লাইভ'-এর মতোই হাজার ওয়াটের আলোর ফোকাসে উন্নাও জেলার গণ্ডগ্রাম ডৌড়িয়া খেড়া৷ যোগগুরু শোভন সরকারের স্বপ্নের এমনই মহিমা৷ তা না-হলে গো-বলয়ের যে অজ পাড়াগাঁয়ে এখনও ঠিকমতো বিজলি আসেনি, সাইকেল, ভ্যান চলে মেঠো-কাদা রাস্তা বেয়ে, সেখানে কী ভাবে এখন পেপসি-কোকের ক্যানও দেদার বিকোয়? চিনেবাদাম থেকে শুরু করে পাঁপড়, জিলেইবি, চানা, গোলগাপ্পা, কিংবা বেলুন, প্লাস্টিকের খেলনা, মায় বিন্দিয়া-পায়েল আর অন্যান্য মেয়েলি সাজের পসরাতেও রমরমা বিকিকিনি দিনভর৷ যোগগুরু স্বপ্নাদেশ পেয়েছেন, মাটির নীচে আছে রাশি রাশি সোনা৷ তার জন্য কী হুড়োহুড়ি৷



বৃষ্টির দাপটে দশেরার মার খাওয়া ব্যবসায় হঠাত্‍ উজান সোনালি স্বপ্নের সৌজন্যে৷ স্বর্ণসন্ধানীদের ভিড়ে শুক্রবার ভোর থেকেই থিকথিক করছে উন্নাও জেলার গণ্ডগ্রাম ডৌড়িয়া খেড়ায়৷ সিপাহি বিদ্রোহের 'হিরো' রাজা রামবক্স সিংয়ের খণ্ডহরে এ দিন বেলা ১১টায় ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই) খনন শুরু করতেই বাঁধ ভাঙল সেই জনসমাগমের৷ দেখে বোঝার উপায় নেই, গোটা জেলাতেই বৃহস্পতিবার রাত থেকে কার্যকর হয়ে গিয়েছে ১৪৪ ধারা৷ রণে ভঙ্গ দিলেন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের শ'তিনেক কর্মী৷



গত ৩ সেপ্টেম্বর যোগগুরু শোভন সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজনকে চিঠি লিখে জানান, উনিশ শতকের রাজা রামবক্স সিং তাঁকে স্বপ্নাদেশ দিয়েছেন, ওই গ্রামের মাটির তলায় হাজার টন সোনা লুকোনো আছে৷ চিঠি গেল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চরণদাস মোহন্তের কাছেও৷ চরণদাসই যোগাযোগ করলেন জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ও আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে৷ জিএসআই মাটি পরীক্ষা করে কিছু একটা গন্ধ পেলেন৷ সিদ্ধান্ত হল, খোঁড়া হবে মাটি৷



কিন্তু হাজার টন সোনা মিলছে কি? নরেন্দ্র মোদীরা যতই কটাক্ষ করুন, স্থানীয় ও বহিরাগত মিলিয়ে অন্তত ১৫ হাজার লোক (ছাপার ভুল নয়, হিসেবটা স্থানীয় প্রশাসনের) জুটে গিয়েছিল সংগ্রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত অখ্যাত এই দেহাতে৷ ফলে দুপুর গড়ানোর আগেই ধুলোর ঝড়ে ঢাকা পড়েছে সনিয়া গান্ধীর কেন্দ্র রায়বেরিলি লাগোয়া ডৌড়িয়া খেড়ায়৷ লাগোয়া আহরোড়া, সিকন্দরপুর থেকে তো বটেই, লখনউ, কানপুর, ইটাওয়া, ফতেপুরের শহুরে বাবুদের দু'চাকা-চারচাকারও বিরাম নেই৷ টিভিওয়ালাদের লাইভ দেখে গোড়ায় নিরুত্‍সাহী জনতাও শেষমেশ সামলে উঠতে পারেননি সোনার টান৷ সটান বাইক-গাড়ি হাঁকিয়ে হাজির হয়েছেন দিল্লি-লখনউ হাইরোড থেকে অন্তত ৫০ কিলোমিটার দূরের প্রত্যন্ত গ্রামে৷ উত্‍সুক জনতা, প্রশাসনিক পদাধিকারী আর মিডিয়ার দৌড়োদৌড়ি দেখে স্থানীয় গ্রামবাসীরা নিশ্চিত, 'বাবা কি স্বপনে সচ হোকে নিগলেগা৷'



সোনালি চতুর্ভুজের ঝাঁ-চকচকে রাস্তা উধাও আচলগঞ্জ মোড় থেকেই৷ 'সোনা কা খজানা কিস তরফ' প্রশ্নেই চোখমুখ উজ্জ্বল পথচলতি যুবকের৷ পথনির্দেশ বাতলে দেওয়ার সময়েই গর্বে ছাতি ফুলে যায় বছর পঁচিশেকের মনোজ বর্মার৷ যে রাস্তায় ট্রাক্টর, ট্রেকার ছাড়া আর কোনও গাড়ির দেখা মেলে না, সেখানে এখন শহরের মতোই গাড়ির লাইন৷ ঠিক যেন কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে৷ দু'ধারে কাশফুল, খানাখন্দ বাঁচিয়ে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত ভালো রাস্তা৷ ৩০ কিলোমিটার পথ ঠেলে লালকুঁয়া পৌঁছনোর পর রাস্তাটাই যেন উধাও৷ স্টোনচিপ সর্বস্ব রাস্তাতেও হেলায় গাড়ি নামিয়ে দিয়ে ট্যাক্সিচালক জিতেন শর্মার ঠোঁটে হাসি, 'থ্যাঙ্ক ইউ দাদা৷ ইচ্ছে ছিল আসার৷ কিন্ত্ত সওয়ারি মিলছিল না৷ ভাগ্যিস আপনি এলেন৷' হক কথা৷ প্রায় চার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে উন্নাওয়ের রাজা রামবক্স সিংয়ের কেল্লার ভগ্নাবশেষ৷ সংকীর্ণ গেঁয়ো পথ আচমকাই উন্মুক্ত বিশাল গড়ে৷ শহিদ রাজার রামেশ্বর শিবালয়ের মন্দির ছড়িয়ে চারদিকে৷ তারই মাঝে লম্বা ত্রিশূল চূড়োয় নিয়ে একটি শিবমন্দির৷ এএসআই-এর পরিভাষায়-এক্সক্যাভেশন সাইট৷ কিন্ত্ত আসল খননকার্যের জায়গাটা সম্পূর্ণ ভাবেই পুলিশি ঘেরাটোপে ব্যারিকেডে মোড়া৷ তার বাইরে অবশ্য শিবালয় ঘিরে হিন্দু-মুসলিম-শিখ সকলের ভিড়৷



১০০ কিলোমিটার দূরের ফতেপুর থেকে পাঁচ বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন আসিফ ইমাম৷ সোনা তোলা দেখতে এসে হতাশ হয়েছেন৷ শুনেছেন, মাস খানেকের আগে কিছু বোঝার উপায় নেই৷ ছেলের বায়না সামলাতে একে একে মুমফলি, বেলুন ইত্যাদি কিনতে হয়েছে৷ কানপুর থেকে স্কুটি চালিয়ে ষোড়শী কন্যাকে নিয়ে হাজির গুরশরণ কউর৷ সাইটের কাছে ঘেঁষতেই খেদিয়ে দিয়েছে পুলিশ৷ লখনউ থেকে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে এসেছিলেন কলেজ পড়ুয়া মণীশ গুপ্তা৷ মেলা-ভিড়ে সময় কাটিয়ে তিনিও ফেরার পথ ধরেছেন৷ বাদাম বিক্রেতা লক্ষ্মণ যাদব বলছিলেন, 'বাজার যা, কাল-পরশু (শনি ও রবিবার) অউর ভিড় হোগা৷ ভাবছি, সামোসার স্টলও দেব৷' দিনভর এএসআই মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার খনন করলেও, উত্‍সাহে ভাটা পড়েনি পঞ্চায়েত সদস্য রামশরণ যাদবের৷ বলছিলেন, 'জরুর সোনা হোগা৷ তা না-হলে এত সরকারি অফিসার কেন?'

সাইটের পাশে দাঁড়িয়ে স্থানীয় মহকুমাশাসক বিজয়শঙ্কর সিং দীর্ঘশ্বাস ফেলছিলেন৷ ভিড় দেখতে দেখতে বিরক্ত এসডিও সাহেবের প্রতিক্রিয়া, 'প্রশাসনিক জীবনে এমন অভিজ্ঞতা এই প্রথম৷ ১৪৪-ও কেউ মানছে না৷ ফাউল ইনটেনশন নেই বলে, আমরাও অবশ্য একটু ঢিলে দিচ্ছি৷' গ্রামবাসীদের ইনটেনশন কী? নিছকই কৌতূহল৷ বাবা শোভন সরকার কি মাঙ্গে পুরি হোগি কি নেহি৷ তাঁরা বিলক্ষণ জানেন, সোনা যদি পাওয়াও যায়, তার ছিটেফোঁটাও জুটবে না ওঁদের কপালে৷ পুরোটাই জমা হবে ভারতীয় কোষাগারে৷ তবুও৷ সোনা না-হোক, একচিলতে সোনালি আভাও যদি চাক্ষুষ করা যায়! দিন আনতে পান্তা ফুরনো রুটিনে তা-ই বা কম কী!



*
ওই ওই! ওই তো চকচক করছে!! ওখান থেকেই তো ঠং করে আওয়াজ এল!! ঘড়ির কাঁটায় বেলা এগারোটা বেজে কুড়ি। ঠিক কুড়ি মিনিট আগেই শুরু হয়েছে স্বাধীন ভারতে সবচেয়ে বড় যখের ধন অভিযান। হেমেন্দ্রকুমার রায়ের গল্প নয় রীতিমতো আটঘাট বেঁধে সরকারি নির্দেশে, সরকারি খরচে প্রাচীন কেল্লার মাটি খুঁড়ে সোনা খুঁজতে নামা। বইয়ের পাতায় বা সিনেমার পর্দায় পৃথিবীর তাবৎ গুপ্তধন-কাহিনি মানেই গা-ছমছম, গোপন অপারেশন। তার এমন 'লাইভ' সংস্করণ দেখার অভিজ্ঞতা হয় কই? গাঁ-গেরাম ঝেঁটিয়ে তাই জড়ো হয়েছে জনতা। কোলে-কাঁখে সন্তান নিয়ে ঘোমটা টানা গৃহবধূরাও হাজির! হাজির তাবৎ সংবাদমাধ্যম! রাস্তার দু'ধারে বসে গিয়েছে নানা মুখরোচক খাবারের দোকান। সবিস্তার...
*
বাতাসেই বিষ কলকাতার! সে কারণেও ফুসফুসের ক্যানসারের অন্যতম আঁতুড়ঘর এই শহর। দীর্ঘদিন ধরেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-র নতুন ঘোষণায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এ কথা। তাদের বক্তব্য, বাতাসের দূষণও ক্যানসারের অন্যতম প্রধান কারণ। হু-র এই হুঁশিয়ারিতে এ বার কি হুঁশ ফিরবে কল্লোলিনীর? সেজেগুজে সুন্দরী হবে, নজর কাড়বে বিশ্বের এ স্বপ্ন দেখতেই পারে কলকাতা। কিন্তু বায়ুদূষণের সঙ্গে ক্যানসারের যোগাযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরে বিজ্ঞানী থেকে পরিবেশবিদ, সকলেই এক সুরে বলছেন, আগে নির্মল হোক কলকাতার হৃদয়। স্বচ্ছ হোক তার ফুসফুস। কারণ এই মুহূর্তে সেটাই সব চেয়ে বেশি জরুরি। বায়ু দূষণে দীর্ঘদিন ধরেই দেশের এক নম্বর জায়গাটিতে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে কলকাতা। জেনেশুনে যাঁরা বিষাক্ত ধোঁয়া নেন ফুসফুসে, তাঁদের জন্য উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় ধূমপানবিরোধী প্রচার এ রাজ্যে কম হয়, এমনটা নয়। সবিস্তার...
*
*বাম জমানায় শহরের রাস্তায় দেদার চলত 'কাটা তেলের' অটোরিকশা। পেট্রোল-কেরোসিনের মিশ্রণে তৈরি ওই জ্বালানির দূষণ শহরের বাতাসকে দিন দিন আরও বিষাক্ত করে তুলছিল। বিজ্ঞানী-পরিবেশবিদদের হাজারো আপত্তিতেও প্রশাসন তখন নড়ে-চড়ে বসেনি। শেষমেশ আদালতের নির্দেশে অটোয় কাটা তেল বন্ধ হয়। তার জায়গায় চালু হয় এলপিজি অটো। আশা জেগেছিল, এ বার দূষণের মাত্রাতেও লাগাম পড়বে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে শাসনক্ষমতায় পালাবদলের পরে অটোরিকশার 'জ্বালানি-সংস্কার' থমকে গিয়েছে। এলপিজি-অটোর মতো গায়ে সবুজ রং মেখে এখনও বহু জায়গায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কাটা তেলের অটো। উপরন্তু গাঁয়ে-গঞ্জে হইহই করে চলছে মোটরচালিত ভ্যান-রিকশা (ভ্যানো), যা দেখে প্রমাদ গুনছেন বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদেরা। সবিস্তার...
*
মা মনসার কোপে চাঁদ সদাগরের সপ্তডিঙা ডুবে গিয়েছিল। কপালকুণ্ডলায় রসুলপুর নদীতে ডুবেছিল নবকুমারের বজরা। সে সব অনেক কাল আগের কথা। হালে ডুবল এম ভি বিঙ্গো। কলকাতা-হলদিয়া-সাগরদ্বীপের মধ্যে এ রকম প্রায় ১১৫টি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ বা রেক জমে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কলকাতা বন্দরের নথিপত্র ঘেঁটেই এই হিসেব মিলেছে। ১৮৭০ সালে কলকাতা পোর্ট কমিশন তৈরি হয়। তখন থেকেই হুগলি জলপথ সংক্রান্ত রেকর্ড রাখা শুরু করে তারা। তখনও বেশ কিছু পুরনো জাহাজডুবির ঘটনা তারা নথিভুক্ত করতে পেরেছিল। বন্দর সূত্রের খবর, সাগরের স্যান্ডহেড থেকে কলকাতা পর্যন্ত ২১২ কিলোমিটার লম্বা জলপথে ১১৫টি জাহাজের খোল নদীতে ডুবে রয়েছে। এর মধ্যে তিনশো বছরের পুরনো কাঠের তৈরি সওদাগরি ময়ূরপঙ্খী নৌকোও আছে। তেমনই রয়েছে এম বি ধনলক্ষ্মী বা এমভি ট্যালেন্টের মতো বড় জাহাজও। সবিস্তার...
*
প্লাবিত এলাকাগুলি থেকে জল নামছে বলে শুক্রবার দাবি করল রাজ্য সরকার। এ দিন পাঞ্চেত এবং মাইথন জলাধার থেকে মোট ৩৭ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিভিসি। বৃহস্পতিবারের তুলনায় যা পাঁচ হাজার কিউসেক বেশি। তবে ডিভিসি-র দাবি, জলাধারগুলিতে জলের চাপ না বাড়লে আজ, শনিবার থেকে জল ছাড়া বন্ধ করা হবে। আজ, শনিবারই বেলা ১১টায় দিল্লিতে শ্রমশক্তি ভবনে জল ছাড়ার জন্য ডিভিসি-রাজ্য গোলমাল নিয়ে বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্র। কারণ, কেন্দ্র বিষয়টা মিটিয়ে নিতে চায়। রাজ্যের চার জেলা হাওড়া, হুগলি এবং দুই মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় গত কয়েক দিন ধরে ডিভিসি-কে দুষছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিভিসি কর্তৃপক্ষও বারবার দাবি করে এসেছেন, জলাধারগুলিতে জল বিপদসীমার ছাড়ানোতেই বাধ্য হয়ে তাঁরা জল ছেড়েছেন। সবিস্তার...

No comments:

Post a Comment