Thursday, October 23, 2014

উন্নয়ন সেকি শুধু টাকার খেলা,যেখানে সভ্যতা সংস্কৃতির আলো নিষিদ্ধ? বাড়ি কি এখন শুধুই বাজার? আমি চাইনা এই মুক্ত বাজার। সেই হিমালয় আর হিমালয় নেই। সেখানেও র্ক্তনদীর প্লাবন। পর্কৃতিতে অকসিজেন নেই। উত্তরাখন্ডের বাঙালিরা অনেকেই এখন কোটিপতি। কিন্তু তাঁরা কতটা বাঙালি আছেন এখনো , জানিনা। পলাশ বিশ্বাস

উন্নয়ন সেকি শুধু টাকার খেলা,যেখানে সভ্যতা সংস্কৃতির আলো নিষিদ্ধ? বাড়ি কি এখন শুধুই বাজার?

আমি চাইনা এই মুক্ত বাজার।

সেই হিমালয় আর হিমালয় নেই

সেখানেও র্ক্তনদীর প্লাবন

পর্কৃতিতে অকসিজেন নেই

উত্তরাখন্ডের বাঙালিরা অনেকেই এখন কোটিপতি

কিন্তু তাঁরা কতটা বাঙালি আছেন এখনো , জানিনা


পলাশ বিশ্বাস



সাত বছর পর উত্তরাখন্ডে বাঙালি উদ্বাস্তু উপনিবেশ দিনেশপুরে ফিরে নিজেকে আউটসাইডার মনে হচ্ছে


বাসন্তীপুরে নেজির বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আমি এবং সবিতা থ,নিজের বাড়িই চিনতে পারছি না।


কাঁচা মাটির দেওয়ালে গাঁথা গাছ গাছালিতে ভরা বাড়ি আর নেই।

ভাইপো টুটুল পাকাবাড়ি বানিয়েছে দোতলা।


দিনেশপুরে আশেপাশের সব গ্রাম এখন দিনেশপুর শহরের মধ্য়ে।


ছত্রিশ বাঙালি গ্রামের আশে পাশে প্রতিটি উদ্বাস্তু গ্রামের পাশে আরও অনেক বাঙালি গ্রাম।


পুরাতন উদ্বাস্তু কলোনি এবং একাত্তরের পরে যারা এসেছেন ,তাঁরা সকলেই তরাই অন্চলে জম জায়গা খুইয়ে পরিবর্তে লাখোলাখ টাকা নিয়ে বাড়ি গাড়ি হাঁকিয়ে প্রতেকেই মহারাজা


তাঁরা এখন আমায় চিনতে ও পারছেন না


বাঙালি গ্রামগুলির বুকে এক এক গজিয়ে উঠছে কল কারখানা,নলেজ ইকোনামির নানা রং বেরং প্রতিষ্ঠান,শপিং মল,হাসপাতাল,আবাসিক কলোনি,বাজার আরো বাজার।


কাল গিয়েছিলাম রুদ্রপুর ট্রান্জিট ক্য়াম্পে,যেখানে এক একড় জমি বিক্রি করে এক কোটি টাকা পেয়ে প্রত্যেকটি পরিবারই কোটিপতি


তাঁদের পুনর্বাসনের লড়াই লড়েছেন বাবা,সঙ্গে যতদিন পেরেছি থেকেছি আমি


সেই ছোটবেলা থেকে প্রতিটি পরিবারে আমার আনাগোনা

আমি ছিলাম তাঁদের নয়নের মণি


আজ তাঁরা আমায় চিনবেন না


আমি কোন ছার ,যে রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি, বন্কিম, শরত, বিবেকানন্দ,নজরুল,ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরিচয়ে পাহাড়ে তরাইয়ে তাঁরা পরিচিত ছিলেন একদা,সেই তাঁদেরও ভুলেছেন তাঁরা


তাঁরা ভুলেছেন রবীন্দ্র সঙ্গীত,ভুলেচছেন নজরুল সঙ্গীত,অধিকাংশই বাংলায় কথা বলতে পারেন না।


তাঁরা ভুলেছেন তাঁদের সংগ্রামের,জমির লড়াইয়ের ইতিহাস,ভুলেছেন পুলিনবাবুকে।


যে মুর্তি তাঁরা পুলিনবাবুর গড়েছিলেন,সেই মুর্তির এখন হাত ভাঙ্গা

আমার ভাইঝি নিন্নি বলল,দাদুর হাতে ফ্রাক্চার

সব মুর্তিই গড়া হয় বিসর্জনের জন্য়

আমাদের আবেদন পুলিনবাবুর মুর্তিখানিও বিসর্জনে যাক

তাঁকে মুক্তি দিলেই হয়

বাঙালি উপনিবেশে পুলিনবাবূ মরেছেন তেরো বছর আগে,তাঁকে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই যখন এই বাঙালি উপনিবেশে বাঙালিয়ানা বলতে দুর্গোত্সব আর কালিপুজো ছাড়া কিছুই বেঁচে নেই

বাঙালি গ্রাম একের পর এক কারখানা হয়ে যাচ্ছে

আমার গ্রাম এখনো বেঁচে আছে,আগামি বার ফিরব যখন,তখন হয়ত দেখতে পাব আমার গ্রাম বাসন্তীপুরও আস্ত একটি বাজার বা একটি কারখানা

ই বাজারে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়

আমি চাইনা এই মুক্ত বাজার।

সেই হিমালয় আর হিমালয় নেই

সেখানেও র্ক্তনদীর প্লাবন

পর্কৃতিতে অকসিজেন নেই

উত্তরাখন্ডের বাঙালিরা অনেকেই এখন কোটিপতি

কিন্তু তাঁরা কতটা বাঙালি আছেন এখনো ,জানিনা

একজন এমবিবিএস ডাক্তার হচ্ছেনা

একজন অফিসার হচ্ছে না।

একজন প্রোফেসার হচ্ছে না।

একজন শিল্পী হচ্চে না

একজন সাহিত্যিক হচ্ছে না

একজন সাংবাদিক হচ্ছে না

তবে টাকা হয়েছে প্রচুর

টাকার গরম হয়েছে প্রচুর

পরিবর্তে স্বজন হারিয়েছি আমরা

শহরে কারখানায় আমরা শ্রমজীবী বাঙালি হয়ে রয়েচি

উন্নয়ন সেকি শুধু টাকার খেলা,যেখানে সভ্যতা সংস্কৃতির আলো নিষিদ্ধ? বাড়ি কি এখন শুধুই বাজার?




No comments:

Post a Comment