Tuesday, September 23, 2014

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার প্রচারণায় চামড়ার দাম কমিয়েছে ব্যবসায়ীরা। চামড়ার দর বেঁধে দিতে আগ্রহী নন ট্যানারি মালিকরা। সিন্ডিকেট করে স্বল্প মূল্যে চামড়া কিনে তারা গরিব জনসাধারণকে বঞ্চিত করতে চাইছে। সরকারের উচিত সিন্ডিকেটের হঠকারিতা নস্যাৎ করা ও চামড়া শিল্পে বিশেষ নজর দেয়া।

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার প্রচারণায় চামড়ার দাম কমিয়েছে ব্যবসায়ীরা। চামড়ার দর বেঁধে দিতে আগ্রহী নন ট্যানারি মালিকরা। সিন্ডিকেট করে স্বল্প মূল্যে চামড়া কিনে তারা গরিব জনসাধারণকে বঞ্চিত করতে চাইছে। সরকারের উচিত সিন্ডিকেটের হঠকারিতা নস্যাৎ করা ও চামড়া শিল্পে বিশেষ নজর দেয়া।

বাংলাদেশি এই পোষ্টটি ব্লগে দেওয়া হচ্ছে হাল হকীকত জেনে রাখার প্রয়োজনে,আর্থিক সমস্যার সঙ্গে ধর্মীয় আবেগের সহাবস্থানে এক্কেবারেই সহমত নই!
সমস্ত প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত পবিত্র দুরূদ শরীফ ও পবিত্র সালাম মুবারক।
বাংলাদেশের রফতানিজাত পণ্যের মধ্যে প্রথম সারিতেই আছে কাঁচা চামড়া। রফতানি আয়ের দিক দিয়ে কাঁচা চামড়ার অবস্থান তৃতীয়। দেশে প্রস্তুতকৃত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের প্রায় ৯৫ ভাগই বিদেশে রফতানি হয়।
পবিত্র কুরবানী উনার ঈদে আমাদের দেশে সবচাইতে বেশি চামড়া সংগ্রহ করা হয়। চামড়া প্রায় ৬০ শতাংশই আসে এই ঈদে। কিন্তু চামড়া ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা প্রচার করে জানাচ্ছে- এখন প্রতিদিনই প্রায় ফরেন মার্কেটে চামড়ার দাম পড়ে যাচ্ছে।
তারা জানান, গত দুই মাসে ৩০/৪০ লাখ বর্গফুট কাঁচা চামড়ার এলসি বাতিল হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা আমাদের চামড়া শিল্পের পরিবেশগত কারণ দেখিয়ে এই এলসি বাতিল করে। এটা এ ব্যবসার জন্য বড় ধরনের হুমকি। এখন যদি ঈদের সময় এভাবে এলসি বাতিল হতে থাকে তাহলে ব্যবসা করাই কষ্ট।
এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর তথ্যমতে, চামড়া রফতানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। পরিকল্পনার তুলনায় অন্তত ৩৭ শতাংশ কম চামড়া চলতি ২০১৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত রফতানি হয়েছে বলে সংস্থাটির ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে। ২০১৩ সালের তুলনায় আন্তর্জাতিক বাজারে এ পণ্যের দাম কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান তারা।
তাদের মতে, এর প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাজারে। ব্যবসায়ীরা জানান, দুই মাস আগেও যেখানে প্রতিটি ছোট ও মাঝারি ধরনের গরুর চামড়ার দাম ছিল ১ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, তা বর্তমানে ৮০০-৯০০ টাকায় নেমে এসেছে। একইভাবে ৪ হাজার ২০০ টাকার বড় গরুর চামড়া এখন ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা, ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকার মহিষের চামড়া এখন ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ ও ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার ছাগল-ভেড়ার চামড়া ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে পরিসংখ্যান ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম অনেকটাই স্থিতিশীল এবং কিছুটা বাড়তির দিকে। পবিত্র কুরবানী উনার ঈদ উপলক্ষে পরিকল্পিতভাবে সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম কমানো হচ্ছে।
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চামড়ার দর কমছে এ প্রচারণা চালিয়ে পবিত্র কুরবানী উনার ঈদের চামড়ার দর নির্ধারণ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন ট্যানারি মালিকরা। চামড়ার দর বেধে দিলে লোকসান হবে এ কথা বলে দর নির্ধারণ করতে চাইছেন না তারা। তারা চাইছেন, যেভাবেই হোক সাশ্রয়ী মূল্যে চামড়া কিনতে।
২০১৩ সালেও পবিত্র কুরবানী করার পশুর চামড়ার দর নিয়ে ট্যানারি মালিকরা রক্ষণশীল পথে হেঁটেছিলো। শেষ পর্যন্ত মৌসুমি ব্যবসায়ী, পাইকারি ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকদের মধ্যে জটিলতা দেখা দেয়। ঈদের দিন বিকাল পর্যন্ত ট্যানারি মালিকদের ভাষ্য ছিল- আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আড়তদারদের চামড়া কেনা উচিত ছিল প্রতি বর্গফুট ৬০-৬৫ টাকায় কিন্তু কেনা হয় ৭০-৭৫ টাকায়। তবে শেষপর্যন্ত বেশি দামেই চামড়া কিনতে হয়েছিল ট্যানারি মালিকদের।
তবে এবারও বিশ্বের বাজারে দাম কমার অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। বিশেষ করে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা।
ইনডেক্স মুন্ডি ডটকম সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম কমেনি, বরং তা কিছুটা বাড়তির দিকে। সামনের সময়ে তা আরো বাড়বে বলেই অনুমান করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। ২০১৪ সালের জুনে প্রতি পাউন্ড চামড়ার দাম ছিল ১ ডলার ৮ সেন্ট, জুলাইয়েও এ দাম অব্যাহত ছিল। আর আগস্টে চামড়ার দাম ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বাড়ে। তবে ট্যানারি ব্যবসায়ীদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ২০-২৫ সেন্ট কমেছে। বাংলাদেশ যাদের কাছে চামড়া রফতানি করে, সেসব দেশে এর দাম কম বলে জানিয়েছেন তারা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চামড়ার দাম কমলে ফড়িয়া, আড়তদার, ট্যানারী মালিক তথা কুরবানীদাতা নয়, গরিব দুস্থ মানুষই সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়ে। সম্মানিত ইসলামী আহকাম মতে, পবিত্র কুরবানী উনার পশুর চামড়ার বিক্রয়কৃত টাকা ছহীহ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের, এতিমখানা ও গরিব দুঃস্থদের দান করাটাই নিয়ম। পবিত্র কুরবানী উনার চামড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থে এসব প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক খরচের একটি বড় অংশ নির্বাহ করা হয়। কিন্তু চামড়ার দাম প্রতি বছর কমতে থাকায় প্রতিষ্ঠান চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এ ব্যাপারে আমরা সরকারের যথাযথ হস্তক্ষেপ কামনা করি।
জানা গেছে, চামড়ার যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের নিয়ে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর (২০১৪) বৈঠক করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, এক্ষেত্রে সরকার দরিদ্র জনসাধারণের কথা চিন্তা করে, বিশেষত ছহীহ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক খরচের মূল আয় হিসেবে সহমর্মিতা প্রকাশ করে যথাযথ মূল্য নির্ধারণে বিশেষ উদ্যোগী হবে।
পাশাপাশি উল্লেখ্য, বর্তমানে সারাবিশ্বে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের বাজার রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ মাত্র এক বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করছে। মূল্য সংযোজন ও পরিবেশবান্ধব চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পখাত থেকেই আগামী ১০ বছরের মধ্যে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি করা সম্ভব। এ উদ্যোগ দেশে ৪৪ লাখ নতুন কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি করবে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা জোরদার করে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে চামড়া শিল্পের অবদান দেশের তৈরি পোশাকশিল্পের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বলাবাহুল্য, সরকার যদি এক্ষেত্রে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে তবে চামড়া শিল্পের প্রবৃদ্ধি রফতানী আয় বৃদ্ধির সাথে সাথে দুঃস্থ জনসাধারণ বিশেষতঃ ইয়াতীম ও গরিব তালিবে ইলম উনাদের প্রকৃত কল্যাণ সাধিত হবে তথা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার-প্রসার হবে।
মূলত, এসব উপলব্ধি ও অনুভূতি আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ তাওয়াজ্জুহ মুবারক। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারকেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

No comments:

Post a Comment