বি জে পি নেতাদের কথা মানুষ শুনবেন৷ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর হিসেব নিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ২০০ বিধানসভা আসনে বি জে পি প্রার্থীদের জামানত জব্দ হয়েছে৷ মানুষই এদের প্রত্যাখ্যান করেছে৷ বাংলার ভার মমতার হাতে মানুষ তুলে দিয়েছেন৷ বি জে পি নেতাদের কথা, তাই আমরাও গুরুত্ব দিইনি৷ শনিবার তৃণমূল ভবনে এই মম্তব্য করেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায়৷ এদিন তৃণমূল ভবনে ২৮ আগস্ট ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রস্তুতিসভার বৈঠক ডাকা হয়৷ এই বৈঠকে মুকুল রায়, পার্থ চ্যাটার্জি, সুব্রত বক্সি ছাত্রদের সতর্ক করে দেন৷ প্রত্যেকেই বলেন, ছাত্রদের শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে হবে৷ দলের ভাবমূর্তি যাঁরা নষ্ট করতে চাইছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্হা নেওয়া হবে৷ মুকুল বলেন, বিভিন্ন কলেজ থেকে টাকা তোলার অভিযোগ কেন আমাদের শুনতে হবে? আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, তখন হাতেগোনা কয়েকটি কলেজে তৃণমূলের ইউনিয়ন ছিল৷ ক্ষমতায় আসার পর এত বাড়বাড়ম্ত কীভাবে হল? ছাত্র পরিষদ কিন্তু তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনেনি৷ পার্থ বলেন, কলেজে পুরনো সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে হবে৷ যেখানে গোলমাল হবে, সেখানে ব্যবস্হা নেওয়া হবে৷ কলেজে গোলমাল বন্ধ করতে হবে৷ আমরাই এই গোলমাল বন্ধ করে দেব৷ ছাত্র ছাড়া কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে দলের অন্য নেতারা ঢুকতে পারবে না৷ পঠন-পাঠনের দিকে জোর দিতে হবে৷ মেধার ভিত্তিতে কলেজে অনলাইনে ভর্তি করা হবে৷ আমরা সবদিকে এখন থেকে নজর রাখছি৷ মুকুল বলেন, যারা কলেজে গোলমাল করছে, তাদের দায় কিন্তু দল নেবে না৷ ছাত্রদের আরও ভদ্র, সভ্য হতে হবে৷ এদিনের বৈঠকে উপস্হিত ছিলেন তাপস রায়, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, শঙ্কুদেব পণ্ডা ছাড়াও জেলার ছাত্র পরিষদের সভাপতি, ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও বিভিন্ন ইউনিটের সভাপতিরা৷ এ ছাড়াও ছিলেন দলের অন্য নেতারাও৷ মুকুল, পার্থ ও বক্সি শঙ্কুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সংগঠনের রাশ আলগা করলে চলবে না৷ সমস্ত বিষয় সামলাতে হবে৷ শঙ্কু বলেন, সবাই যে খারাপ তা নয়৷ দু’একজন ছাত্র কলেজে গোলমাল করছে৷ আমরা নজর রাখছি৷ মুকুল এদিন বলেন, ২৮ আগস্ট মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির নিচে ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে আগের তুলনায় এবার সভায় বেশি ভিড় হবে৷ ওই দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ছাত্রদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দেবেন৷ ছাত্রদের নিয়ে বৈঠকের পর এদিন মুকুল তৃণমূল ভবনের উঠোনে সাংবাদিক বৈঠক করেন৷ সেখানে ছিলেন ইন্দ্রনীল সেন, ইকবাল আহমেদ, সৌমিত্র খান, কর্নেল সব্যসাচী বাগচী, শঙ্কুদেব পণ্ডা, শাম্তনু সেন ও সুজিত শ্যাম৷ এদিন সি পি এম, কংগ্রেস, বি জে পি ও জনবাদী ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে বহু নেতানেত্রী দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন৷ বেলডাঙা পুরসভার ৪ কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে আসেন৷ এঁদের নিয়ে আসেন ইন্দ্রনীল সেন৷ মুকুল বলেন, মমতা ব্যানার্জি যেভাবে বাংলার উন্নয়ন করছেন, তাতে অন্য দলের নেতা ও কর্মীরা তাঁদের দলে আর থাকতে পারছেন না৷ তাঁরা তৃণমূলে এসে এই উন্নয়নে সামিল হতে চাইছেন৷ আমরা তাঁদের উপযুক্ত সম্মান দেব৷ তিনি বলেন, খানাকুলের বিধায়ক ইকবাল আহমেদের নেতৃত্বে প্রায় ২০০ জন সি পি এমের সমর্থক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন৷ উত্তর রাজারহাটে নির্বাচিত বি জে পি-র পঞ্চায়েত সদস্যরাও দল ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন৷ এ ছাড়া হাওড়া জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি এদিন তৃণমূল ভবনে আসেন৷ মুকুল বলেন, দলে যোগ দেওয়ার ধারা বজায় রয়েছে৷ মোদিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, বারবারই বলছেন তিনি, আচ্ছে দিনের কথা৷ মানুষের জন্য আচ্ছে দিন আসেনি৷ এসেছে বি জে পি-র জন্য৷ অরুণ জেটলিকেও আক্রমণ করেছেন মুকুল৷ তিনি বলেন, যেভাবে রেলভাড়া বাড়ানো হয়েছে, অতীতে আগে কখনও হয়নি৷ সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কেও এক হাত নিয়েছেন মুকুল৷ মুকুলের বক্তব্য, উনি বোধহয় জানেন না, লোকসভা নির্বাচনে তাঁর দলের ২০০ আসনে বি জে পি প্রার্থীদের জামানত জব্দ হয়েছিল৷ এটাও জেনে রাখুন, বাংলা মমতার হাতে৷ মানুষই শেষ কথা বলবে৷ লোকসভা নির্বাচনে মানুষ উপযুক্ত জবাব দিয়েছে৷ তাঁর বক্তব্য, সি পি এম ও কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন বিধায়ক তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন৷
|
No comments:
Post a Comment